#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন
অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী। বিসিসিএল-এ দেশের অসংগঠিত শ্রমিকরা নানা গুরুতর সমস্যা নিয়ে কাজ করে থাকে। তাদের নানা সমস্যা তুলে ধরে চারবারের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক তরুণ মজুমদার একটি ডকুমেন্টারি-ফিচার তৈরি করছিলেন। এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রে শ্রম সংকটের উপর আলোকপাত করেছিলেন। ভারতে শ্রমশক্তির প্রায় ৯০% এখনও অসংগঠিত। তরুণ মজুমদার ৪ বছরের দীর্ঘ বিরতি ভেঙেছিলেন যখন তার সর্বশেষ পরিচালনা 'ভালোবাসার বাড়ি' মুক্তি পেয়েছিল। ২০০৬ সালে 'চাঁদের বাড়ি'-এর মতো বক্স অফিস হিট হয়েছিল। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন: ১৯৩১, অধুনা বাংলাদেশের বগুড়াতে। একজন বাঙালি চিত্রপরিচালক হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রগুলি ছিল মধ্যবিত্তের আটপৌরে জীবনে ব্যতিক্রমী প্রেমের গল্প অথবা জীবনের দর্শনে ব্যতিক্রমী কাহিনীর দুর্বার প্রকাশ। তাঁর সংগ্রহে রয়ে গেল চারটি জাতীয় পুরস্কার, সাতটি বি.এফ.জে.এ. সম্মান, পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও একটি আনন্দলোক পুরস্কার। ১৯৯০ সালে তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত চাওয়া পাওয়া (১৯৫৯) তরুণ মজুমদারের প্রথম পরিচালিত ছবি। তার পরিচালিত প্রথম জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবি কাঁচের স্বর্গ (১৯৬২) এরপরে
পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে (১৯৭৫),
গণদেবতা — এই সব ছবি সমালোচক মহলে বহুল প্রশংসিত হয়। তিনি বালিকা বধূ তৈরি করেন ১৯৬৭ তে।
কুহেলী-১৯৭১, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ -১৯৭৩, ফুলেশ্বরী-
১৯৭৪, দাদার কীর্তি -১৯৮০, ভালোবাসা ভালোবাসা-
১৯৮৫, পরশমণি -১৯৮৮ ও আপন আমার আপন -১৯৯০। এই সব ছবি বিপুল বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করে। তরুণ মজুমদার 'যাত্রিক' ব্যানারে কাজ শুরু করেন। ১৯৫৯ ' চাওয়া-পাওয়া দিয়ে। স্বাধীনভাবে, নিজের নিজের কাজ শুরু করেন ১৯৬৫ সাল নাগাদ।কিন্তু 'যাক' ব্যানারে কাজও, 'পলাতক'-১৯৬৩-তে তিনি বাঙালিকে উপহার দিয়েছিলেন, এক ঘর-পালানো উদাসী বাউন্ডুলের গল্প। আজও ভোলেনি বাঙালি।
তিনি শচীন মুখার্জি এবং দিলীপ মুখার্জির সাথে তার পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যাত্রিক নামের পর্দার অধীনে , যেখানে ১৯৫৯ সালের বাংলা চলচ্চিত্র চাওয়া পাওয়ায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন সুচিত্রা সেন এবং উত্তম কুমার।১৯৬২ -তে কাঁচের স্বর্গের জন্য তার প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান । তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সন্ধ্যা রায় তাঁর বহু ছবিতে এবং তাপস পাল তাঁর ৮ টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। মৌসুমী চ্যাটার্জি , মহুয়া রায়চৌধুরী , অয়ন ব্যানার্জী এবং তাপস পিলকে তিনি রুপালি পর্দায় পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। কিশোর প্রেম বা বলা যায় সদ্য যুবার প্রেম বিষয়ক কাহিনীগুলিকে তিনি বাঙালিদের জন্য আবিষ্কার করেছিলেন। ভালোবাসা-প্রেম ছিল তাঁর চলচ্চিত্রের ফোকাস। এছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যতিক্রমী কাহিনী নিয়ে চলচ্চিত্র করেছেন যেমন গণদেবতা, পলাতক, ফুলেশ্বরী। মানুষের মনের খিদে মেটানোর চলচ্চিত্রগুলি