স্বামীজির অ্যাডজাস্টমেন্ট ল
====================
যে সাতটি আচরণের উল্লেখ জরথ্রুস্ট করেছিলেন
সর্ব প্রথম । মেয়েদের সম্মানের কথাটাই ছিল তার
রেখে যাওয়া সাতটি আচরণের একটি । স্বামীজি
অনেক ক্ষেত্রে জরাথ্রুস্টের কথিত আচরণ মনে
প্রাণে বিশ্বাসও করতেন । আমাদের সর্বপল্লী
রাধাকৃষ্ণানও অনেক সময় জরাথ্রুস্টের
মতবাদকে উদাহরণ স্বরূপ ব্যাখ্যা করেছেন ।
স্বামীজি তার একটি লেখায় ধর্মীয় আচরণে
অনেক সময় পুরনো অবস্হানকে প্রয়োজনে
মেনে নেওয়ার কথাও বলেছেন । Adjustment
এর কথা বলেছেন। কারণ জরথ্রুস্ট ও তার অনুগামীদের তাদের নিজের দেশ ছাড়তে
হয়েছিল ( যাদের আমরা পার্শি বলি )।
স্বামীজি এই দেশের অনেক ভাষা ও বহু
ধর্মের ভাবধারায় লালিত হয়েছিলেন ।
একের মধ্যে বহুত্বের প্রয়োজনে স্বামীজি
তাই অদ্বৈত্ববাদের বিপ্লবী হতে চাননি কিন্তু
ভারত তীর্থের উপযুক্ত করে তার কথা শুনিয়ে
গেছেন । স্বামীজি এই সমাজ থেকে বেরিয়ে গিয়ে
ধর্মীয় বিপ্লবের দিকে পা বাড়াননি । মূর্তি
পুজোয় বিশ্বাসী রাজারাজদের আথিতেয়তা
নিয়েছেন সহজেই । কমিউনিস্টদের মতো
অটল থেকে নিজের মতকে অবিশ্বাসীও
করে যাননি এখন এটা সত্য বলে প্রমাণিত ।
স্বামীজি নিজে বেদান্তের উপাসনা করেছেন
আবার বেলুড় মঠে দুর্গা পুজোর আয়োজন
করেছেন গোঁড়া হিন্দুদের দুর্গা পুজোর বই
কিনে এনে সেই মতো আচরণ করেছেন ।
এমনকি পাঁঠাবলিও ধর্মের আচরণে যেহেতু
ছিলো তাই তিনিও সেটা বাদ দেননি ।
শ্রীশ্রীমায়ের ইচ্ছেতে বলি বাদ পড়ে । তিনি
এটাও জানতেন সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে
রামমোহন অধিক ও বিদ্যাসাগরকেও কিছু
কষ্ট পেতে হয়েছিল । স্বামীজি হিন্দু ধর্মের একটি
দিক অর্থাৎ অদ্বৈতবাদকেই প্রচারের অভিমুখ
করেছেন । স্বামীজি তবু যেন অনেকভাবেই
জরথ্রুস্টের ধর্মমতের কাছাকাছি ছিলেন ।
সামনে শ্রীরামকৃষ্ণ না থাকলেও নরেন্দ্রনাথ
স্বামীজি ঠিকই হতেন । শ্রীরামকৃষ্ণের থেকেও
শ্রীশ্রীমাকে তিনি সাক্ষাৎ দুর্গা ভাবতেন । তিনিও
শ্রীঅরিবন্দ ও সুভাষচন্দ্রের মতো স্বাধীনতার
জন্যে আকুল হয়েছেন । সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে তার
একান্ত আলোচনা কেউ আজ জানতেই পারেনি
এই ভারতীয় সমাজের ধর্মীয় মনোভাব তিনি
পাল্টাতে পারবেননা তা তিনি টের পেয়েছিলেন
তাই তাকে কখনো দেখি তিনি অদ্বৈতবাদী
কখনও সমাজ সংস্কারে জরথ্রুস্টবাদী কখনও
বুঝেছেন তার এই গরীব-মুর্খ দেশবাসীর কি
করে প্রাণ সঞ্চারিত হবে । শ্রীরামকৃষ্ণের
মায়ের মন্দিরে বার বার গিয়ে কি তিনি তবে
ভারতবাসীর জন্যই চেয়েছিলেন সেই
ঐতিহাসিক চাওয়া । স্বামীজির লেখা বক্তৃতা
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হয়তো আংশিক কিন্তু
স্বামীজির আচরিত ধর্মের কি প্রতিষ্ঠা হয়েছে
এই ভারতের কোথাও ? হয়তো সেইভাবে
হয়নি । যদি স্বামীজি শুধুমাত্র ধর্ম নিয়ে
কোনো বিপ্লবী পদক্ষেপ নিতেন তাহলে
হয়তো এই যে আমরা স্বামীজিকে এতটা
জানতে পেরেছি তা হয়তো কোনোদিনই
পারতাম না । স্বামীজি খুব বড় জোর
রামমোহন রায় হয়ে বেঁচে থাকতেন ।
আমি বলবো স্বামীজির আদর্শের ইচ্ছেগুলি
সঠিক ঠিকানা পেয়েছে ও দিশা পেয়েছে ।
তার ADJUSTMENT LAW মনে হয়
ভারতীয়রা ধর্মীয়ভাবে মেনে নিয়েছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন