সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৮

Netaji Subhas Chandra Bose, Poetry of Alok Kumar Kundu

আমার সুভাষ  / অলোক কুন্ডু

আমার সুভাষ রাত পেরিয়ে
স্বদেশ ছাড়লো যেদিন
সেদিন থেকেই স্বাধীনতা বুঝি
কুয়াশা ঢেকেছে মুখ
আমরা বুঝিনি দলে দলে গেছি
নেতাজির ছবি বুকে
কদম কদম বাড়িয়ে দিয়েছি
প্রভাত ফেরির মুখে ।
যখন বুঝেছি দেরি হয়ে গেছে
ভুল হয়ে গেছে বেশ
উপঢৌকনে তেইশে জানুয়ারি
ভরিয়ে দিয়েছি ফুলে
রাশিয়ার জেল তাইহুক থেকে
জাপান কোহিমা ঘুরে
কমিশন তোমাকে লুটেপুটে নিয়ে
লালিপপ গেছে দিয়ে ।
উইপোকাতে খেয়ে গেছে সব
চাপানে-উতরে বেশ
শেষের দিনের খবর এসেছে
গোল্লায় গেল দেশ
বুকের বাতাসে শ্বাসপ্রশ্বাসে
এখনো প্রহর গণি
কদম কদম বাড়ায়ে যা
সেতো তোমার পদধ্বনি ।
© অলোক কুন্ডু

রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

Poetry of Alok Kumar Kundu

দেখি কী আছে মুঠোয়  / অলোক কুন্ডু

ফড়িং ওড়া একমাথা
উলুঘাসের মাঝখানে দেখা
সেই দেখা নিরন্তর নদীর মতো একবুক জল
আদিগন্ত যতদূর দেখা যায় শুধুই দুজন
মেয়েটা জিজ্ঞেস করেছিল --দেখি কী আছে মুঠোয়
‌উচ্চারণের ধ্বনি থেকে প্রতিধ্বনি
তরঙ্গের মতো শোনা যায়--দেখি কী আছে মুঠোয়
দেখি কী আছে মুঠোয় ।
কথাগুলো ঠিক যেন
তোতা চন্দনা শালিখ বুলবুলি কোকিলের সমস্বর
জলতরঙ্গ কোথাও বেজেছিল যেন
এ এক আশ্চর্য স্বর ঠিক পাখির মতোই বুঝি হবে
কখন যে উড়ে আসতো কখন যে চলে যেত
তার হিসেব মেলাতে পারেনি ছেলে ।

ইমিটেশনের হারটা লুকোনো বৃথাই ছিল
তবু মেয়েটা একবার হারটা দেখতে চাইতেই
প্রাণপণে সে মুঠো খুলে দিয়েছিল
কাশক্ষেতের ধারে প্রজাপতির দল
হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে
মেয়েটার মাথার চার পাশে ঘুরে ঘুরে উড়ছিল
মেয়েটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিল আর দেখছিল
চোখের তৃপ্তি কাকে বলে
সেই প্রথম দেখে ফেলেছিল
তুলোর মতো নরম গলায় মেয়েটা বলেছিল
--খুউব সুন্দর ।
ব্যস ওইখানে যদি শেষ হয়ে যেত !
এই দৃশ্য সত্যি সত্যি সে দেখেছিল
চোখ আর কানের ভুল হতেই পারেনা কখনো
সবুজ ক্ষেতজুড়ে এক আহ্লাদের ঢেউ আর ঢেউ
হলুদ বর্ণের সকালে মাথা সমান উলুঘাস
তার একপাশে সবুজ বরবটি ক্ষেতের মাচায়
দোল খাওয়া ঝিঙে ফুল
আর কী সুন্দর করে বলা -দেখি কী আছে মুঠোয়
সেইথেকে ছেলেটার মনে থাকে সব
তবু দিন যায় জল যায় কতভাবে যেন
যে গুণতে পারে সেই শুধু জানে
আকাশ পাতাল কত দূর হবে ।

আরও একদিন সরষে ক্ষেতের হলুদ রঙের বনে
আকাশ মেঘলা হয়ে এলে
মেয়েটার সঙ্গে আবার দেখা হয়েছিল
সেদিন‌ও হারটা নিলনা কিছুতেই
মিহি গলায় বলেছিল --পরে নেব ।
সেই থেকে নদীপাড়ে বালি চাপা পড়ে থাকে দুবেলা
এইসব প্রজাপতি কৌটো ঝিঙে ফুলের দোলা
মাথা সমান উলুঘাস রোদ বৃষ্টি শীতে
মাঝে মাঝে এখনও ছেলেটা একা আসে
কৌটায় রাখা হারখানা দেখে রেখে দেয়
আর যতবার কৌটাটা খোলে
ঠিক ততবার প্রজাপতিগুলো 
উড়তে উড়তে এপাশ ওপাশ ঘুরে আসে
কী আশ্চর্য
এইসব এখনও পরিষ্কার দেখতে পায় সে 
একটু নির্জন হলেই
পুণরায় হার সহ কৌটোটা বালি চাপা দেয়
বালিগুলো হাতে মাখামাখি
কে যেন বলে ওঠে -- দেখি কী আছে মুঠোয়
শুধু নির্বিকার মুখ থেকে অস্ফুট স্বর শোনা যায়
হয়তো আবার পরশু ছেলেটা আসবে ।

© অলোক কুন্ডু

যে তুমি পূজারী Poetry of Alok Kumar Kundu

যে তুমি পূজারী রাজার / অলোক কুন্ডু

যে তুমি পুরোহিত রাজার
প্রতিমায় ফুল দাও জল দাও
অবিনাশী অভয় শোনাও মন্ত্র থেকে মন্ত্রে
তোমার এই নিত্য উপাসনা
ঈশ্বর কিংবা হয়তোবা রাজার
তোমার মন্ত্রপূত জল রাজার মাথায় দাও
প্রত্যেকটি মন্ত্র তোমার রাজাকে বাঁচাতে
প্রজার বঞ্চনার কথা তুমি জানবে কীকরে
রাজার জন্য তোমার এই আজন্ম লালিত শ্রম
রাজাকেই ঘিরে
রাজার রক্ত মাখা হাত তোমার চরণ মাখে রোজ
তোমার প্রতিটি মন্ত্র উচ্চারণে
রক্ত চন্দন যেন রক্তের মতোই
তোমার উত্তরীয় মাখে প্রতিটি হিংসার উৎস
যে মন্তপূত পৈতে তোমাকে হিতৈষী করেছে রাজার
তুমি ভাবো সেই পৈতেই তোমার শক্তির পরিচয়
অথচ প্রতিটি অভিশাপ লেখা হয় প্রতিটি গাছায়
যে ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে রাজা
রক্ত তাকে সাবলীল জানে
অভিসম্পাতগুলো ছারখার করতে তাকে
তুড়ি বাজালেই হলো
কিন্তু হে পূজারী তুমিতো রাজা নও
যে তুমি রাজার মন্দিরে থাকো
ভক্ত সমারোহে আকূল কান্নাজল তোমাকেই জানে
তোমার পায়ের ধুলো যে মাখে মাথায়
সে কেন স‌ইবে বল দানবতন্ত্রের বাহুবল
কী তবে ধর্মের ভান্ডার সাজাও দুহাতে
ফুল চন্দন ধূপের গন্ধে কীসের তবে ওই উচ্চারণ
রাজাকে পাপী বলতে যে তুমি পারোনা
সে তবে ধর্ম নয় ফাঁকির অঙ্ক এক বড়‌ই অসুচি
পুরোহিত--তবে তুমি ভন্ড এক রক্তে মাখামাখি ।
© অলোক কুন্ডু

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...