রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮

Chaniya Coli of Bhuj ©® Alok Kundu

চানিয়া চোলি, ল-গার্ডেন, ভুজৌড়ি ও রানী কি
হাজিরাতে কচ্ছের ক্র্যাফট / ©® অলোক কুন্ডু

গুজরাটের কচ্ছের ট্রাইবাল আর্টিস্টদের কাচ বসানো এমব্রয়ডারি কাজ যুক্ত মেয়েদের ঘাঘরার স্থানীয় নাম চানিয়া চোলি ( চ্যানিয়া চোলি ) চোলি অর্থাৎ ভারতীয় মহিলাদের সনাতন ড্রেসকোডের উপরাংশ অর্থাৎ ব্লাউজ । চানিয়া চোলি অথবা ঘাঘরা চোলি বা লেহেঙ্গা চোলি ভারতবর্ষের মধ্য ও উত্তর ভারত এবং নেপাল জুড়ে তিনপিসের ( ঘাঘরা চোলি দোপাট্টা/চুনরি) এই ট্র্যাডিশনাল ড্রেসটি উৎসব ও বিয়ে বাড়িতে মেয়েদের মহান পোশাক হিসেবে ১০ ম সেঞ্চুরি থেকে উঠে এসেছে এবং মোঘল আমলে এই পোশাকের রমরমা ও বৈচিত্র্যময়তায় প্রভাব পড়ে ।
তবে এই ঘাঘরা চোলির গুজরাটি সংস্করণ চানিয়া চোলি তৈরি করতে ২০ দিন সময়
লাগে । গুজরাটের কচ্ছে বহুল পরিমাণে ঘরে ঘরে তৈরি হয় । সকলেই জানেন কচ্ছে লবণ পাওয়া যায় , উটের আন্তর্জাতিক দৌড় প্রতিযোগিতা হয় , ঘরে ঘরে পালিত হয় মোষ,
তাই প্রচুর ঘি-দুধ পাওয়া যায় । ভুজে আমির
খান লগান করেছিলেন মনে আছে নিশ্চয়ই ।
প্রায় মরুভূমির দেশে দেখার জিনিস অনেক আছে । বিশেষকরে ভুজের ক্র্যাফট মার্কেট
সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত । এখানকার জিনিস ইউনেস্কোর ক্র্যাফট প্রদর্শনীতে স্থান করে
নিয়েছে । এখানকার বাঁধনি থেকে ভেজিটেবল ভাইয়ের সুতির কাপড় শাড়ি আজ ভারতের বাজার থেকে বিদেশের রপ্তানি হয় । শুধু শাড়ি কাপড় নয় এমনকি ঘাঘরাও নয় সোফা কভার থেকে বালিশের ওয়াড় ব্যাগ থেকে বটুয়া পর্দা থেকে জ্যাকেট শাল কোনো আইটেম‌ই তৈরি হতে বাকি নেই এই ভুজে। কিন্তু ট্যুরিস্টরা খুব একটা ভুজে যাননা । গেলেও রাত্রি বাস করে বেরিয়ে যান । কোঅপারেটিভ সিস্টেমে ভুজে
মেয়েরা ছেলেরা এই হাতের কাজ করে থাকে ।
সেখানে চানিয়াচোলি ছাড়াও অঢেল হ্যান্ডিক্র্যাফটের জিনিস পাওয়া যায় ।
শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে ভুজৌড়িতে গড়ে উঠেছে ঝাঁ চকচকে দোকান থেকে গেরস্তের
বাড়িতে ক্র্যাফট আইটেমের বাজার । আজরখপুরে ঘরে ঘরে তৈরি হয় আজরখ
হ্যান্ড প্রিন্টের সিল্ক তসর শাড়ি সুতির ড্রেস
মেটিরিয়াল । ভুজ বাজারের ফল পট্টির
ভেতরেও এই সব ক্র্যাফট ও প্রিন্টের রেডিমেড
কিছু দোকান আছে । কচ্ছে তিনদিন লাগবে
একদিন প্রাসাদ মহল মন্দির মিউজিয়াম এইসব দেখে নিতে । একদিন নুনের বিচ রান । একদিন ভুজৌরিও আজরখপুর । কেনেন বা না কেনেন জিনিসপত্র দেখাটাই আপনার ট্যুরকে সমৃদ্ধ
করবে । এই সবই ডলারে বিক্রি হবে কচ্ছের
রান উৎসবে । অক্টোবর থেকেই তার তাঁবু
পড়তে শুরু করেছে । জলের ট্যাঙ্কার তেলের
টাঙ্কার বাথরুমের ঝকঝকে দেখে শীতে বুঝতেই
পারবেন না এটা একটা মরুভূমির দেশ ।
এলাহি করে সাজানো শুরু হয়েছে রান উৎসবের
অস্থায়ী পার্ক, দোকান, এসি ঘর ,ঝকঝকে রাস্তা।
একমাস ধরে এইসব থাকবে তবে মূল উৎসব
সাতদিনের । তাতেই লক্ষ লক্ষ ডলার আমদানি
হবে । হ্যাঁ যা বলছিলাম তা হলো এই ভুজৌড়িতেই
তৈরি হয় গুজরাটি চানিয়া চোলি । কলকাতায়
ডান্ডিয়া নাচের মেয়েদের এই ড্রেস পরতে দেখলেও নবরাত্রিতে লোকাল মেয়েরা লাঠি
ছাড়াই নিজেদের পোশাকে নাচ গান করে থাকেন। যদি আপনি ভুজৌড়ি না যেতে পারেন
তাড়াতাড়িতে তাহলে ভুজের ফল মার্কেটের ভেতরে কয়েকটা দোকান পাবেন । তা নাহলে
আমেদাবাদের ল গার্ডেনের ফুটপাত মার্কেটেও
ভুজের হ্যান্ডিক্র্যাফট অঢেল পেয়ে যাবেন ।
ওখানে চানিয়া চোলি থেকে ব্লাউজ সবকিছু
একটু দরদাম করে কিনতে হবে আপনাকে আর
এইসব কাপড় কিনতে চাইলে বা আরও একটু ভালো নিতে চাইলে ভুজৌড়ি অথবা আমেদাবাদের মানিকচকের রানী কি হাজিরাতে অনেক গুলো হোলসেল ও রিটেল দোকান
আছে । এইসব ইন্টারনেটে পাওয়া গেলেও লোকাল মানুষকে বলে জায়গা উদ্ধার করা খুব
সহজ কাজ নয় । এতদিন এই তিনটি জায়গাকে একসঙ্গে করে কেউ প্রকাশ করেনি । আমি এইসব খুঁজে পেতে ভুক্তভোগী এবং অনেক
সময় খরচ করে এইসব জায়গায় গেছি । সঙ্গে আমেদাবাদের ল-গার্ডেনের ও রানী কি হাজিরা
মার্কেটের ছবি দিলাম । ©® অলোক কুমার কুন্ডু



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...