বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৯

১৯৭২ সালে সির্দ্ধাথশঙ্কর রায় সরকার বিপুল ক্ষমতা নিয়ে এসেছিল  পুলিশকে কাজে লাগিয়ে । সরকার পরে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে নিজের এম‌এল‌এ-কে অবধি ডেকে ধাতিয় ছিল । ভুষি কেলেঙ্কারি তে কেস দিয়েছিল। দু দল যুব কংগ্রেস ।
দু দল কংগ্রেস ,দু দল আইএনটিইউসি/এন‌এলসিসি এবং দু দল ছাত্র পরিষদ / শিক্ষা বাঁচাও কমিটি নিয়ে কলেজে কলেজে মারপিট, পাড়ায় পাড়ায় মারপিট, খুন-জখম , মিছিল । বামপন্থীরা দলে দলে ভিড়ে ছিল পুলিশের ভয়ে । স্কুল কলেজে মিউনিসিপ্যাল নির্বাচন বন্ধ করে দলীয় শাসন কায়েম হয়েছিল । প্রশাসন ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছিল । আমি তখন যুব কংগ্রেসের একটি গ্রুপে ছিলাম এবং এমারজেন্সির ফলেই যে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়ে যায়
তা কিন্তু নয় । পশ্চিমবঙ্গে অন্তত কংগ্রেসের কাজকর্ম জনগণের পছন্দের ছিল না ।
তার আগেই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে ছিল --ব্যাঙ্ক
জাতীয়করণ, কয়লাখনি জাতীয়করণ
এবং গরিবি হঠাও । তবু সারাদেশে কংগ্রেসের ভাঙন দল রুখতে পারেনি ।
সৌগত রায় কংগ্রেস থেকে জোটে গিয়ে
মন্ত্রী হয়েছিলেন ব্যারাকপুর থেকে জিতে ।
বহুগুনা চন্দ্রশেখরের মতো হেভিওয়েট
কংগ্রেস ছেড়েছিলেন । একবছর বাদে
চিকমাগালুর থেকে ইন্দিরা গান্ধী একা
কংগ্রেসের এম পি ছিলেন , হয়তো আর‌ও
দু চারজন থাকতে পারেন কিন্তু তা মনে পড়ছে না। এক প্রকার কংগ্রেস, ধুয়ে মুছে গিয়েছিল । কিন্তু এখানকার নির্বাচন
পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ হ‌ওয়ার ফলে যার শুরু
বাম আমলে হয়েছিল , ফলে আজ পর্যন্ত কংগ্রেসের অবস্থান এই কারণে এবং কিছু অন্য কারণে রাজীব গান্ধীর সময় ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস আর ফিরে দাঁড়াতে পারেনি এজন্য ---কংগ্রেসের থেকে বেশি দোষ নির্বাচন কমিশনের । এখন
প্রেক্ষাপট আলাদা প্রত্যন্ত গরিবের কাছেও হোয়াট‌সঅ্যাপ বা ফেসবুক আছে মানুষ এখন অনেক বুঝদার । ট্রোল হ‌ওয়া জিনিস তার পরিবেশনে মানুষ আনন্দ পায় ।
গরীব জানে সে কোনও দিন এসিতে থাকতে পারবে না , তার কোনও দিন ফ্ল্যাট হবে না , রেস্টুরেন্টে সে কোনও দিন ঢুকতে পারবে
না । তার কাছে রাজার হারের আনন্দের থেকে বেশি আনন্দ আর কিছুতেই নেই ।
এই নির্বাচনের যখন তিন মাস আগে বিজেপি ভ্যান পাঠিয়ে প্রতি জেলা শহরে ১৫/২০ মিনিটের -"পোস্টকার্ড ডালো ক্যাম্পেন" করে তাতে আমি দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করি শয়ে শয়ে মানুষ ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাদের ভোট বিজেপির বাক্সে দিয়ে দিয়েছিল । এই ক্যাম্পেন এত হঠাৎ ও চুপিসারে হয়েছিল যে আর কোনো দল এর টের‌ই পায়নি । তাতে বিজেপি যেমন জানতো তেমনি আমার মতো সাধারণ
মানুষ‌ও বলেছিলাম এক দেড় মাস আগে
৩০-৯-২-১ । কংগ্রেস ছাড়া আর কোনো
হিসেবে যদিও মেলেনি আমার , কিন্তু আমি আভাস তো নিজের মাথা থেকে বের করিনি , মানুষ চাইছিল। তাতে কেউ
বলছেন ধর্মীয় ভোট, কেউ বলছেন বাম ভোট । আশ্চর্য কেউ কিন্তু বলছে না কংগ্রেসের ভোট ও তৃণমূলের ভোট ।
এখন কিন্তু দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে তৃণমূলের
ভোট‌ও বিজেপিতে গেছে । সকলেই উপলব্ধি করতে পারছে যে ভোট একবারে ফেয়ার হয়নি , কারণ প্রচুর বুথের ভিডিও আসছে সেই মতকে আর‌ও জোরালো করে তুলছে । সে যাই হোক ভোটের হাওয়া পরিষ্কার বোঝা গেছে । আবার এদিকে ভোটের পর এত দ্রুত জায়গা বদল হচ্ছে যে জনগণ ঘাবড়ে যাচ্ছে আর‌ও বেশি । এই সময় একদিকে পুলিশের উপর আর সরকারের মুক্ত অবাধ ক্ষমতা নেই তারাও চাকরি বাঁচাতে তৎপর । প্রশাসনের ব্যাপক বদলি। হঠাৎ এস‌এসসি নিয়োগে তৎপরতা । বিদ্যালয় খুলে দেওয়া এইসব নিয়ে প্রচুর ট্রোল হচ্ছে । তবে উন্নয়ন
কি ? উন্নয়ন ছিলনা ? এইসব জটিল প্রশ্নে
মানুষ দ্বিধান্বিত। গ্রামে গ্রামে এত বিপুল
পরিমাণে ক্যাডার থাকায়‌ও কীভাবে তৃণমূলের অফিস হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে ?অফিস ফিরে পেলেও কেউ কী সাহসের সঙ্গে সেই অফিস রোজ খুলবে ?  এইসব জটিল প্রশ্ন ট্রোল হচ্ছে । ভদ্র পোশাক
পরেও , " মিমি ও নূসরাত" ঠিক এক‌ই কারণে তারা মিছিমিছি ট্রোল হচ্ছেন । দলকে দল একদল থেকে অন্য দলে চলে যাচ্ছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ধর্ণায় বসতে হচ্ছে ! সব মিলিয়ে ভোটার, জনগণ, পক্ষ বিপক্ষ সকলেই দিশেহারা । ঠিক এইরকম দিশেহারা অবস্থান হয়েছিল ১৯৭২-৭৭ এ এখানে । কে যে কাকে কী করবে সরকারের এম‌এল‌এরাও তখন বুঝে উঠতে পারতো না ‌।  এখন এইখানে জনগণ ভোটের পরে শান্তি চেয়েছিল । কিন্তু
চতুর্দিকে একটা কী হবে কী হবে ভাব ।
বেশি ভাগ ভোটার শান্তি চায় । প্রশাসনের
গতি প্রকৃতি দুড়দাড়িয়ে ৫ বছরের কাজ
১ বছরে করতে গেলে ভুলভ্রান্তি হতে পারে
এটা শাসকদের মনে রাখা উচিত । হটকারী
সিদ্ধান্ত বিজেপি যা নিচ্ছে এবং তারপর
রাজ্য সরকার‌ও হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে
সবকিছু ট্রোল হবে । ফেসবুক হোয়াটস‌অ্যাপ চলতেই থাকবে এবং নেগেটিভ প্রচার আর‌ও বাড়তে পারে ।
যেকোনও ঘটনা দু মিনিটের মধ্যে উত্তর থেকে দক্ষিণ বঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে । কারণ মানুষ আজ তীক্ষ্ণ বিচার বিবেচনা সে নিজেই করতে পারে , ফেসবুকের দৌলতে। এখনও দু পক্ষের সময় আছে হঠকারী সিদ্ধান্ত সামলে নেওয়ার । তা না হলে জনগণ সেই সিদ্ধান্ত ফেরাবে ব্যালটে ।
এর পরের ভোট আর‌ও টাইট হবে এবং
জনগণ রাজার পরাজয় দেখতে
ভালোবাসে ,এই আপ্তবাক্যটি মনে রাখা
জরুরি ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...