মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২

হাওড়ার শঙ্কর ও অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়

#অলোক_কুন্ডুর_কলম

আজ আনন্দবাজারে শঙ্করের অসিতকুমার
-------------------------------------------------------------
■ ব‌ইমেলায় গত তিনবছর আগে,শঙ্কর অর্থাৎ মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনার মনে আছে চৌধুরী বাগানের কথা ? আমার বাড়ি কোথায় উনি জিজ্ঞেস করাতে বলেছিলাম আমার বাড়ির ঠিকানা। আসলে পাশের লেন বিহারী চক্রবর্তী লেনে ছিল ওনার বাসা। খুব জোর ১০/১২ টা বাড়ি দূরে হবে শঙ্করের পুরনো ভাড়াবাড়ি। হেসে বলেছিলেন তুমি তো তাহলে আমার পাড়ার ছেলে ন‌ও। হাওড়া জেলা স্কুলের ফার্স্ট বয় ছিলেন অসিতবাবু । শঙ্কর হাওড়ার বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউশনের ছাত্র ছিলেন। দুজনেই প্রায় আমাদের পাড়ায়, মধ্য হাওড়ার চৌধুরীবাগান ও যোগমায়াদেবী লেনে থাকতেন আর শঙ্কর ওখানে বসেই লিখেছিলেন, "কত অজানারে", "চৌরঙ্গী"র মতো উপন্যাস। কত অজানারে-তে হাওড়ার ঘুঘনীওলা থেকে বিভিন্ন রাস্তার নাম উল্লেখ করতে ভোলেননি। স্বাধীনতার দিন যোগমায়া সিনেমায় দুবার পর পর ফ্রিতে সিনেমা দেখার লোভে সেদিন বিভিন্ন ক্লাব থেকে খাওয়া দাওয়ার যে আয়োজন করেছিল বিভিন্নজন, ইচ্ছে থাকলেও সেইসব জায়গায় খেতে যেতে পারেননি, শঙ্কর। যখনই সুযোগ পান হাওড়ার কথা লিখতে ভোলেন না। শিবপুরে মায়াপুরী সিনেমার পাশে জায়গা কিনে বাড়ি করেছিলেন। আমি একবার সেই বাড়িতে ওনার কাছে গিয়েছিলাম। একটা গাউন পরতে পরতে সদর ঘরে ঢুকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, " কোথা থেকে আসছো" আমি উঠে দা‍ঁড়িয়ে বলেছিলাম চৌধুরী বাগানের পাশে কালী কুন্ডু লেন থেকে আসছি। বলেছিলেন, "বসো বসো, হ্যাঁ তোমাদের অনুষ্ঠানে যেতে পারছিনা ভাই, আমি নিমাইদাকে বলে দিয়েছি ( নিমাইসাধন বসু)।" আমার বন্ধু সুধীরকুমার দে-র পত্রিকা নৈবেদ্য-র একটি সভায় নিমাইসাধন বসু এলেও শঙ্কর আসতে পারেননি তখন। এখন আর হাওড়ায় থাকেন না মণিশঙ্কর। আজ শঙ্কর, রবিবাসরীয়তে, আনন্দবাজার পত্রিকায় লিখেছেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের স্বনামধন্য প্রয়াত অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ( যিনি এক‌ই পাড়ায় শঙ্করের ভাড়া বাড়ি থেকে তিনটে বাড়ি দূরে থাকতেন, হাওড়ার যোগমায়াদেবী লেনে।) আর শঙ্করের সিনিয়র ছিলেন অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শঙ্করকে জবরদস্তি পরে গ্র্যাজুয়েট‌ও করেছিলেন। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় পরে হাওড়ার সাঁত্রাগাছিতে আমৃত্যু থেকে গেছেন, হাওড়া করপোরেশনের উদ্যোগে মূলত বর্তমান সরকারের চেষ্টায় হাওড়ার ক্যানেল ইস্ট রোডের একাংশের নাম হয়েছে তার নামে, সেই হিসেবে অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন শতবর্ষ হয়ে গেল। শঙ্কর কতরকম ভাবে তার বাল্যকাল ও যৌবনের হাওড়া শহরকে সাহিত্যে তুলে ধরেছেন আজ লিখলেন হাওড়ার বরেণ্য মানুষ অসিতবাবুকে নিয়ে। বাংলা সাহিত্যের দিকপাল, যাকে শঙ্কর বলেছেন "বিদ্যের জাহাজ"।আজ আবার অসিতবাবুর জন্য আমাদের সকলের কাছে শঙ্কর তুলে ধরলেন হাওড়াকে। ধন্যবাদ আপনাকে, শঙ্কর।
©® অলোক কুন্ডু

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...