■ মহাপ্রসাদের অপেক্ষায় / অলোক কুন্ডু
আত্মপক্ষ সমর্থন না করেই মনুষ্যত্বের স্বরূপগুলি ফুরিয়ে যেতে বসেছে
ফুরোতে ফুরোতে জেলখানার এক্সিট পয়েন্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি আর
তবু বাসি ঘটনাগুলির ঝাড়পোঁছ করলে মণিমুক্ত উদ্ধার করতে পারা যায় দু-চারদিন
মস্তিষ্ক চিন্তার বিস্ফোরণ বুঝতে পারে
তারপর আবার বদ্ধ জলাশয় সেই পানাপুকুর
ছিপ ফেলে চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়া।
কিন্তু কিইবা করার থাকে শূন্যস্থান নিয়ে !
বুদবুদের সৌন্দর্য বালকের কাছে মুক্তোর মতো
ফানুস উড়িয়ে দিলে একরকম অপ্রয়োজনীয় অহংকার জন্ম নেয়
বুদবুদ মিলিয়ে যায় ফানুসেরও শব্দ হয় না
তারপর এদিকে সেদিকে পটকায় অনিবার্য আগুন
পাতাল থেকে উঠে আসে আনন্দ হুল্লোড়ের হৈচৈ
জয়ের ধ্বনি শুনতে চাওয়া সেও তো নেশার মতো
বাহবাগুলো গুরুত্বপূর্ণ করে দেখাতে পারলে নেশা বাড়তে থাকে
আয়োজনের কৌতুকে ঢাক বাজতে শুরু করে
যা দুর্যোধনও বোঝেনি
কানের ভেতর ওই ধ্বনি ধীরে ধীরে ধ্বংসস্তুপ গড়ে তোলে
বুক চাপড়াতে থাকা গরিবের হা-হুতাসগুলো শতচ্ছিন্নের মতো ধুলিস্মাৎ
সিংহাসনের সিংহভাগ ছলচাতুরি খেলে যায়
দাবিসমূহকে ভেঙে চুরচুর করতে থাকে শক্তি
প্রতিবাদগুলো বোবা কালার মতো মুষড়ে যায়
সাজানো বাহবাগুলি ভেতর ভেতর তবু অস্ত্রের মতো ঝকঝকে।
বিপদ সংকেতের অর্থ বোঝা বিস্তর অবুঝ বিষয়
ক্ষমতার আস্ফালনগুলি তামাটে লজঝড়ে
ছেঁড়া কাগজের ওপর আঠা দিয়ে দিয়ে তৈরি
তারপর আরও ছেঁড়া কাগজ তারপর রাংতা
মুখোশধারী জানে সৌন্দর্য সৃষ্টি করা চাই
এমন সৌন্দর্যকে মুখোশই তো বলে
বুদবুদ -মুখোশ-পতাকার ওড়াউড়ি
এইসব কিছু গরিবের কাছে ক্ষণস্থায়ী আনন্দ
এই আনন্দের পরতে পরতে বিদ্রুপের ঝাঁজ
মৃতপ্রায় মগজের ঘিলু তখন জড় হয় মগডালে
যেখানে একইরকমের অনেক পতাকা পর পর সাজানো।
ফন্দিফিকিরের যত হাততালি জড়ো হয়
জয়ধ্বনির তেজে
নিঃস্ব পতাকায় আর বাতাস লাগতে চায়না
তবু একগুঁয়ে একরোখা আগ্রাসী মতামতের বাড়বাড়ন্ত
আচরণগুলি মহিমান্বিত হয় কাড়ানাকড়ার শব্দে
জানলা বারান্দা উপচে দেয় লাখো নকল হাতের নড়াচড়া
চতুর্দিকে ফটাফট ছবি উঠতে থাকে
রঙের চতুর বাহারে তখন রমরম করতে থাকে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল
কৌরবকূল দ্রোন শতশত হাজির ওইপথে
মন্দ ঢাকার প্রক্রিয়া এইভাবে হতে শুরু
মুখোশের সৌন্দর্য উপভোগ উৎসব পালনে
বাসনায় যুক্ত হয় ঢাক ঢোল কাঁসি জগঝম্প
শব্দবাজিতে হুলস্থুল হয় চতুর্দিক
দম্ভসমূহ নকল বারুদ সঞ্চয় করে বুদবুদের মতো
মুখোশের কারুকাজে অলঙ্কার ঝলমল করে
সোনালি রূপোলি রঙের কত না সম্ভার
ধেয়ে যেতে চাওয়া অনিবার্য ধ্বংসের দিকে
প্রতিটি বিষপাত্র জানে অমৃত কতটা
প্রজারা দলে দলে ওই মহাপ্রসাদের অপেক্ষায় এসে দাঁড়িয়েছে।
© অলোক কুন্ডু
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন