⛔ দলবদল কোনও আশ্চর্য বিষয় নয় : অলোক কুন্ডু
🚥 অনেকে শতাব্দীকে উদ্দেশ্যে করে শতাব্দীর সেরা চমক কেন বলছেন ? আমার মনে হয় তারা ভুল বলছেন। আবার যদি ধরে নি এই দল বদলের নাটক-টা পি.কের মাথার খেলা! আপনি হয়তো বলবেন, এটা কীভাবে সম্ভব !? এমনটাও তো হতে পারে। পি.কে নামক ব্যক্তির এটা একটা রাজনৈতিক স্টান্ট। আমি বলছি এটা হওয়ার চান্স আছে। আচ্ছা এই আচরণ কি তবে একটু অস্বাভাবিক লাগছে না ? এতজন একসঙ্গে তার ৯ বছর ধরে ক্ষমতা ভোগ করার পর এরকমটা দলে দলে বলতে যাবে কেন ? কারণ সমস্ত ভালো-খারাপের সঙ্গে তারও তো কিছু দায় দায়িত্ব থেকে যায়। এখানে শুভেন্দুর দল বদল একমাত্র রাজনৈতিক অভিলাষ হলেও অন্যদের কিন্তু তা মনে হয় নয়। কারণ অন্যরা অত নামী নন। এখন যদি শুভেন্দুও কখনও ফিরে যান তবে বলতে হবে এই যাওয়া আসা পুরোটাই তৃণমূলের গেম প্ল্যান মাফিক হয়েছিল। তবে শুভেন্দু ফিরে আসুন আর নাই আসুন অন্যদের এই যাওয়া আসা জনমানসে কোনও প্রভাব ফেলবে না।
কারণ এইসব নেতানেত্রীরা অনেকটা ইউটিউবের সিনেমার মতো জনপ্রিয়। শতাব্দী বীরভূমে গিয়ে ভোট করতে পারেন এ বিশ্বাস একেবারেই ঠিক নয় বরং শতাব্দী আর একটু সুবিধা পাওয়ার জন্য জেনেশুনে এইরকম করেছেন। কারণ শতাব্দী রাজনীতির যে কেউকেউ নন সেটা তিনিও ভাল জানেন। নৈবেদ্যর সন্দেশ একপ্রকার। বিজেপিতে এলেও তিনি শুভেন্দু নন আবার তৃণমূলে থাকলেও তিনি অনুব্রত নন।
🚥বিজেপিকে নাস্তানাবুদ করতে এই বঙ্গে-- কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, নকশালদের বিভিন্ন গোষ্ঠী, ত্বহা সিদ্দিকী, আব্বাস সিদ্দিকী, এসইউসিআই, বুদ্ধিজীবী এবং তৃণমূল কংগ্রেস প্রায় সমস্ত প্রতিষ্ঠান কখনও দলবেঁধে কখনও নিজেরা দিনরাত লেগে রয়েছে একথা আপনাকে মানতেই হবে। তবুও গ্রাম-গঞ্জতে বিজেপির ভিড়ের শেষ নেই। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে লড়াই কিন্তু বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। লড়াই এখন সমান সমান। যে কেউ জয়ী হতে পারে। কিন্তু এখানে এখন বিশাল প্রশ্ন যে কংগ্রেস, সিপিএম, আব্বাস সিদ্দিকীর দল বা মিম কার ভোট কতটা কাটে। এই ভোট কাটাকাটিতে কিন্তু বিজেপির কোনও ক্ষতি নেই। ক্ষতি তৃণমূলের ক্ষতি কংগ্রেসের ক্ষতি বামেদের। এই নির্বাচনে বামেদের বেশ কিছু দল একেবারে শেষ হয়ে যাবে। তাদের ভোট ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যে তলানিতে এসে ঠেকেছে। যদি আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে সামনে বা পেছনে কংগ্রেস ও বামেদের সমঝোতা না হয় তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাম ও কংগ্রেস। কারণ মুসলিম ভোট বিজেপির নেই তাই তাদের কোনও চিন্তার কারণ নেই তাদের সঙ্গে বাইরে ভেতরে জোটের আশা নিরাশাও নেই।
🚥 এইসময় পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকদের জোরদার কৃষক আন্দোলন চলছে। ভারতের বৃহত্তম আন্দোলন গুলির মধ্যে এখনকার কৃষক আন্দোলন যে ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দিগদর্শন হতে চলেছে তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। এতে কৃষকদের
লাভ লোকসান এখনও অজানা। এই আন্দোলনও বিজেপির বিরুদ্ধে আছে। এই মহা-বিরুদ্ধবাদকে সঙ্গে নিয়েই বিজেপির এই উত্থান তাই চমকপ্রদ বটে। বিজেপির উত্থান তাই একদল ভোটারের কাছে খুবই আশাব্যঞ্জক। তবে বিজেপি শক্তিশালী দল হলেও এই দলকে প্রচন্ড ভাবে বাধাগ্রস্ত হতে হচ্ছে কয়েকটি কারণে। এছাড়াও এই দলকে বিড়ম্বনায় ফেলতে বিজেপির দু-তিনজন নেতা আছেন এই দলে। তারা হলেন, দিলীপ ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়, সৌমিত্র খান প্রভৃতি। এদের আলতু-ফালতু বক্তব্য বহু সময় বিজেপিকে বিড়ম্বনায় ফেলে দিচ্ছে প্রতিটি দিন। তবে দিলীপ ঘোষ যে একাই এই দলটাকে উজ্জীবিত করে রেখেছেন তাও ভাবার মতো বিষয়। এত নেগেটিভ রাজনৈতিক বাতাবরণ হওয়া সত্ত্বেও বিজেপিকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছে শুভেন্দুর মতো হেভিওয়েট নেতা। শুভেন্দু চলে গিয়ে যে তৃণমূলের দিশেহারা অবস্থা হয়েছে তা কাদা ছোড়াছুড়ি দেখেই বোঝা যায়। শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে ১২ জন নেতা-নেত্রী রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছেন। যদি ফুটবল খেলার কথা ভাবেন তবে বুঝবেন শুভেন্দুর দিকে বল আটকে থাকার জন্য বিজেপি কিন্তু অন্যদিকে অনেকটা ফাঁকা ময়দান পেয়ে গেছে। এই ফাঁকা জায়গাটায় কংগ্রেস ও সিপিএমও নেমে পড়েছে, তাকে কাজে লাগাতে। শুভেন্দুর জন্য রাজনৈতিক ময়দানে তৃণমূলের যে কিছু অসুবিধা হচ্ছে সেটা বুঝতে পেরেছেন অধীর চৌধুরী, আব্দুল মান্নান। কারণ যে জায়গাটা আগে কংগ্রেস ও সিপিএম পাচ্ছিলেন না তা শুভেন্দুর জন্য আজ অনেকটাই ফাঁকা হয়েছে ঢিলেঢালা হয়েছে।
🚥 তবে এইবারে ততটা জমি কংগ্রেস ও বামেদের নেই। জনগণ এখন দুভাগে বিভক্ত। হয় বিজেপি নয় তৃণমূলের কাছে আছে ভোট ব্যাঙ্ক। মাঝে মুসলিম সম্প্রদায় মাঠে নেমেছে। তবে পুরোপুরি তারা নামলে সমীকরণ যে এক ঝটকায় পাল্টে যাবে সে কথা সকলেই জানেন। তত্বা সিদ্দিকী তৃণমূলের হয়ে জবরদস্ত ময়দানে নেমে পড়েছেন। ইতিপূর্বে তত্বাবধানে মিম করেও সুবিধা করতে পারেনি। মুসলমান সমাজ কখনই একদিকে নেই এবং ছিলও না কখনও। গত ৯ বছর ধরে মুসলিম সমাজ তিনদলে বিভক্ত হয়ে ভোট দিয়ে আসছে। বেশিরভাগ কেন, প্রায় ৭০% ভাগ মুসলিম ভোট দিয়ে আসছে তৃণমূলকে। আবার ৩০% ভাগ ভোটার এখানে তিনভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ছোট ছোট ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও নির্দলে দাঁড়িয়ে যান, তারাও কিছু ভোট কাটেন। কংগ্রেস, সিপিএম বা বামদলগুলি তো ভোট কাটার জন্য আছেই। এই মহামূল্যবান ভোট যে কত মহার্ঘ্যবস্তু তা রাজনৈতিক দলের অজানা নয়।
🚥 এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি কিন্তু আটকে আছে আগামী ২১.১.২১-এর জন্য। ওইদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দল অথবা জোট অথবা কোনোকিছু ঘোষণা করার কথা। কংগ্রেস ও বামেরা ইতিমধ্যেই আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। যদি মিম জোটে যুক্ত না হয় তবে কংগ্রেস ও সিপিএম আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে ফ্রন্ট করতে পারে। কিন্তু এখানেও বিষয়টা মূল আটকাচ্ছে, কে কাকে কটা সিট ছেড়ে দেবে--
এই মূল আলোচনায়। মিম ঢুকলে আব্বাসের সঙ্গে কংগ্রেস, সিপিএমের হয়তো বাইরে থেকে ঢাকার গুড়গুড় সমঝোতা হতে পারে। কারণ আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত কথা বলেছেন। কিন্তু তাদের আপত্তি মিম-কে নিয়ে। তৃণমূল গোটা ১৫-টা সিট আব্বাসকে ছেড়ে দিতে পারলে আর আব্বাস যদি রাজি হতো তাহলে তৃণমূলের জেতা অবশ্যই সহজ হতো। কিন্তু আব্বাস সিদ্দিকীরা কিছুতেই ৪০-এর কমে রাজি হননি এবং তত্ত্বা সিদ্দিকী আবার সেখানে আব্বাসের ব্যাপারে আপত্তি করেছে। কারণ আগে তত্বাই ছিল তৃণমূলের এবং পরে মিমে-র আসল লোক। মিম দেখলো তত্বার সেরকম কোনও সংগঠন করার ক্ষমতা নেই। আব্বাসের সঙ্গে প্রচুর ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে। তাই মিম এখন আব্বাসের দিকে ঝুঁকে গেছে। ভবিষ্যত বলবে আব্বাস মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন কিনা ? যদিও তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে মাঠে নেমেই আব্বাস সিদ্দিকীরা এখন থেকেই চার-ছয় হাঁকিয়ে যে খেলতে শুরু করেছেন এর রাজনৈতিক তাৎপর্য বোঝা খুব মুস্কিল। কারণ মুসলিম সমাজ আজ দ্বিধাবিভক্ত অনেকটা। তাদের সামনে এখন তৃণমূল ও ফুরফুরা সরিফের আব্বাস সিদ্দিকী জোর টানাটানি চলছে।
🚥 স্বাধীনতার এতবছর পরে পশ্চিমবঙ্গের একটি বৃহত্তর জনসাধারণ, মানুষের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে এই প্রথম বিপুলভাবে ঝুঁকলেও, বিজেপি কিন্তু ইতিমধ্যে ১৮ টি এম.পি সিটে এগিয়ে রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে দিলীপ ঘোষের আলতু-ফালতু বলার পরও এবং দলবদলুর বর্তমান এইরকম সুবিধাজনক বাজার না থাকা অবস্থায় কিন্তু বিজেপির উত্থান হয়েছে আগে থাকতেই। আর তা খুব খারাপ ছিল না। এখন এই শক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী ও অন্যান্যরা। এখানে উল্লেখ্য যে কেউ কেউ দল বদল করলেও পুণরায় তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন এবং যাবেন তাদের কিন্তু কোনও ফলোয়ার নেই। সঙ্গে মাস বা জনগণের ভূমিকা তাদের সঙ্গে নেই। শতাব্দীর ফেসবুকের ফলোয়াররা ভোটের ফলোয়ার নয় বরং তারা সকলেই তৃণমূলের ফলোয়ার। তাই সেখানেই শতাব্দী তার দুঃখ জানিয়েছেন। বাইরের কেউ সেখানে নেই। একরকম ঘরেই ফুঁপিয়েছেন শতাব্দী। শতাব্দী বীরভূমে গিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে ভোটার বার করে আনতেন এরকম বিশ্বাস বিজেপিও বুঝি করেনি কিন্তু তারাও সমৃদ্ধ হতেই চেয়েছিল কারণ দল ছেড়ে দিলে তার কাছ থেকে প্রাক্তন দলকে গালাগালি দেওয়ার একটা বড় সুযোগ থাকে। এই লোভ কিন্তু বিজেপিও সামলাতে পারেনি। যদিও মুকুল রায় যিনি তৃণমূলের সংগঠন তৈরি করেছিলেন তিনিই এখন এখানে বিজেপির সংগঠন গড়ছেন। কিন্তু মুকুল রায়ের একটা ভুল আছে তিনি তৃণমূলের যখন সংগঠন গড়ে ছিলেন তখন বামেদের হারের দশা। তৃণমূল কিন্তু এখনও লড়াইয়ে আছে। তবে বিজেপির কাছে একটা বড় সিগন্যাল যে ইতিমধ্যে কোনও সাহায্য ছাড়াই তারা
তৃণমূলকে অনেক সিটে হারিয়েছে। যেমনটা হয়েছিল ২০০৯-এ।
🚥বঙ্গ রাজনীতিতে এমনটা কখনও দেখেননি তো তাই কেউ কেউ অবাক হচ্ছেন। আসলে আগেকার যারা মানুষ দলবদল করেছেন তাদের সঙ্গে আপনি বর্তমানের লজঝড়ে নেতাদের একই পংক্তিতে বসাচ্ছেন বলে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে একটা সমস্যা হচ্ছে। আসলে নেতাদের দল বদল এখন দুবেলা চা খাওয়ার মতো। দল বদল না করলে মনে হবে তারা বুঝি চা পানের মতো কিছু একটা খাননি। এই যাতায়াত তাই আপনার অবাস্তব মনে হচ্ছে। কিন্তু তা হলেও আপনি তো এই জমানার লোক। ভালো করে ভেবে দেখুন আপনিও ওই একরকম মানসিকতার লোক। আপনার- আমার সঙ্গে দল-বদলুদের খুব একটা তফাত নেই। আপনিই তো বলছেন দলে থাকলে বা এলে তারা ভালো আর চলে গেলে খারাপ। আপনার দল থেকে কেউ যখন চলে যাচ্ছে তখন আপনি তাকে চোর বলছেন বা তার সমালোচনা করছেন আবার ফেরত এলে বলছেন ভুল করেছিল, ওর দোষ নাই লোকটা একদম খাঁটি। ভুল বোঝানো হয়েছিল। সুজাতা খান ও শতাব্দী রায় এখানে দুই দলের উদাহরণ হতে পারেন। আসলে আপনিও তো মশাই এইরকম ভাবছেন। ভাবছেন বলেই মনটা খারাপ ভাল উৎফুল্ল হচ্ছে আবার কষ্ট হচ্ছে ? আসলে দলবদলুরদের মতোই আপনারও একইরকম মানসিকতা অ্যাডজাস্ট হচ্ছে। শোনা যায় শীতের দেশের জীবজন্তুর এইরকম আপনার মতো তাপ উত্তাপ অ্যাডজাস্ট করার ক্ষমতা থাকে। আমি বলতে চাইছি আপনার মানসিকতার কথা। একে সোজাসাপ্টা ধান্দাবাজি বলে। কিছু মানুষ এই ডামাডোলের সময় চুপ করে চারপাশটা মেপে নিচ্ছেন। এরা হচ্ছেন সবচেয়ে ধান্দাবাজ।
🚥 দলবদল কিন্তু ভালো লক্ষণ। যতবার দল বদল হবে ততই জনগণের লাভ। দলবদল না হলে আপনার পাওনাগুলো সঙ্কটে পড়ে যাবে। যদি কেউ দলবদল করে তখন জনগণ সঙ্কট থেকে উদ্ধার পেয়ে যাবে এমনটা বলবো না কিন্তু কিছুটা স্বস্তি পাবে জনগণ। ইতিহাস তাই বলে। কিন্তু সকলেই যে দলবদল করলে আমাদের ভালো হবে এমনটা নাও হতে পারে। কিন্তু কখনই শতাব্দীর দল বদলকে নিয়ে ঠাট্টা করবেন না।
দল বদলের পেছনে তখনই রাজনীতি থাকে যখন নেতা হওয়ার যোগ্যতমরা তা করে থাকেন। কিন্তু যাদের নাম শোনেননি, অথবা তেমন দরের নেতা নন এমনকি কইয়ে বইয়েও নন, তারা কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে দল বদল করে এটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। শুধুমাত্র সারদা-নারদার জন্য দলবদল হয় যখন তখন তার আরও কারণ থাকে। শুধুমাত্র সারদা নারদার জন্য দলবদল একেবারে সরল ভাবনা। আসলে দলবদলের পেছনে অনেক রকম সুবিধা-অসুবিধা থাকে। শতাব্দীর এখন দুহাতে কোনও ইনকাম নেই তেমন। এম. পি. থেকে যা পান তার থেকেও খরচ ওনাদের অনেক বেশি, কারণ উনি একসময় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। তাই ওনার চালচলনের কারণে আভিজাত্যের যে খরচ সেটা একজন রাজনীতিবিদের থেকে বেশি। আবার শতাব্দী রাজনীতিতে হোলটাইমারও নন। বিশেষ করে বীরভূমে শতাব্দী যেখানে এম. পি. সেখানে সর্বশেষ কথা বলেন অনুব্রত মন্ডল। তবে অনুব্রত পার্টির প্রতি ভীষণ লয়াল এবং একজন পাকা রাজনীতিবিদ তিনি । তার ভাল-মন্দ বিচার এখানে করার কথা নয়। কিন্তু সেখানে শতাব্দী হঠাৎ ৯ বছর বাদে ফেসবুকে লিখতে গেলেন কেন ? আসলে যারা ঘরে না বলে বাইরে সেই পার্টির নামে বলে বেড়াচ্ছেন তারা পার্টির কাছে আরও পদ নয়। টাকা কড়ি খরচের হিসাব দেখতে ও পেতে চাইছেন। তারা যে সমস্ত খরচ করছেন তার হিসেব দেখার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু তারা তা এতদিন তা পারছিলেন না। তাই বাইরে অন্যভাবে বলছেন। কিন্তু তিনি তার দলের বিপক্ষে বলছেন কেন ? এর দুটো কারণ থাকতে পারে। একটা কারণ এর সবটাই একটা নাটক হতে পারে। একসঙ্গে এতজন মিলে সমালোচনা করেছেন ও আবার তারা কেউ কেউ ফিরে যাচ্ছেন। তাই আসা ও যাওয়া এইসব একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। হাওড়ায় এটা অনেক বেশি হচ্ছে। মনে হয় এটা বাজার ফিরে পাওয়ার এক ধরনের কৌশল হতে পারে। বিজেপিকে এইভাবে কোনঠাসা করার পরিকল্পনাও হতে পারে। যদি তাই হয় তবে এই রাজনীতির মধ্যে পি.কে-র ধুরন্ধর বুদ্ধি থাকতে পারে। হয়তো দেখা যাবে নির্বাচনের মুখে অনেকে বিজেপিতে যাবে এবং আবার ফেরতও চলে আসবে। শেষ পর্যন্ত এই অস্ত্র দিয়ে বিজেপিকে ধরাশায়ী করার কৌশল পি.কে-র আবিষ্কার বলেই মনে হয়। কারণ এই যাতায়াতে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবেনা বরং শতাব্দীর মতো একটা করে উন্নত পদ বা মর্যাদা তাকে তাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এতে তার ভাবমূর্তির জয় হবে এবং সারদা নারদা আর সেইভাবে নির্বাচনের কোনও ইস্যু হতে পারবে না। আমি বলবো কোনও ধুরন্ধর রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ছাড়া এইরকম চিন্তা ভাবনা করা দুরূহ ব্যাপার। অবশ্য আমরা জানি এই দলবদলে বা চলে যাওয়ার ও ফেরত আসার পেছনে কোটি কোটি টাকার খেলা চলে। সাধারণ জনগণের সেই জল মাপার বুদ্ধি একেবারেই নেই। তাই দলবদলে টাকার খেলার কথা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তাই ভাই আপনি দেখে যান। নির্বাচনের আগে লোক যাবে আর আসবে। যাবার জন্য তৈরি থেকেও যাবেনা এইরকম খেলা অবিচল চলতে থাকবে। কারণ এরা অজয় মুখোপাধ্যায়, প্রফুল্ল সেন নিদেনপক্ষে প্রণব মুখোপাধ্যায় নন।
⛔©® অলোক কুন্ডু
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন