বুধবার, ১ জুন, ২০২২

সৌরভ কি রাজনীতি থেকে ফয়দা তুলবেন/ অলোক কুন্ডু


যদি সৌরভ রাজ্যসভায় যায় তাহলে মন্ত্রী হবেন ডাইরেক্ট। এটা আমার ধারণা। এছাড়া সৌরভ কিছু প্রজেক্ট নিয়ে যাবেন। সৌরভ গেলে তার প্রজেক্ট প্রধানমন্ত্রী মেনে নেবেন। আমার ধারণা তিনি যদি বিজেপি যানই তবে তিনি নির্ঘাত হবেন দেশের ক্রীড়া মন্ত্রী। এই কারণে সৌরভ রাজ্যের খেলনগরী ডুমুরজলাকে পরিত্যাগ করে দিয়েছে আগেই। হাওড়ায় খেলনগরী হলে যে উন্নয়ন হতো সামান্য কজন পরিবেশবাদীদের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করবেন কেন?
তা পরিবেশ দপ্তরের অনুমতি নিয়েই আজ সবকিছু করতে হয়। হাওড়ার উন্নয়ন না হলে আমার কষ্ট হয় তাই আমি এখানে পরিবেশ উদ্ধারের নামে ওই আন্দোলন আমি কখনও সমর্থন করিনি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সৌরভের ভক্ত। রাজনীতিও করিনা। তাই এই বক্তব্য আমার স্পষ্টভাষণ। কারণ আমি ছাড়া আর সকলের ধান্দা আছে, এটা আমার কাছে পরিষ্কার। সৌরভ বিজেপিতে যাবে কি না জানিনা। তবে সৌরভ কোনও প্রজেক্ট দিয়েছে কিনা তাও জানা নেই আমার। তবে কেন্দ্রের কাছে প্রজেক্ট দিয়েছে বলেই আমার ধারণা। প্রজেক্টটা পেলে তবেই সৌরভ কোথাও যাবেন। বিসিসিআই থেকে এখনও ইস্তফা দেননি। দেবেন না কি দেবেন না এইসব রটনা মাত্র। তবে আমি জানতাম ডোনা শিল্পীদের কোটায় রাজ্যসভায় যাবে। সৌরভ ডাইরেক্ট পলিটিক্স করবে বলে আমিই দোটানায় আছি। কারণ সৌরভ দুমদাম সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাবলিক মোটেও নন‌। তবে সৌরভ যদি বিজেপিতে যান তবে এখানে এখন বিজেপির যে খুব লাভ হবে তা মনে করি না। কারণ এখানে ভোট কিন্তু অন্যভাবে হয়। সৌরভকে দেখে ভোট দিতে চাইলেও বিজেপি বাংলায় সেই ভোট জোগাড় করতে কখনোই পারবে না। কারণ বিজেপিতে পুরনো যেসব সদস্য আছেন তারা এত অহংকারী যে তারা কীভাবে সংগঠন তৈরি করতে হয়, সেটাই জানেন না। তারা সব সময় নতুন পুরনো এই আলোচনায় ব্যস্ত থেকেছেন গত পুরো নির্বাচনজুড়ে এবং ফেসবুকে রাজনীতি করেছেন। আদতে তৃণমূল থেকে যারা গিয়েছিল তারাই রাজনীতি বুঝতো যেমন তেমনি আবার তাদের বিশ্বাস যোগ্যতা একেবারেই ছিলনা। তবে সৌরভ একটা প্রজেক্ট নিয়েছেন এই বিষয়ে আমি একমত। হয়তো তা আগামী দিনের যুবক সম্প্রদায়ের কাছে আনন্দের হবে। সৌরভ মন্ত্রী এবং এমপি হবেন না এটা আমার বিশ্বাস। তবে বামেরা হচ্ছে সৌরভের আসল শত্রু, তারা কিছু করতেও পারবে না কিন্তু সমালোচনায় দেশ উদ্ধার করে দেবে। আমার ধারণা সৌরভ ভারতবর্ষে খেলাধুলোর বিষয়ে একটা আন্তর্জাতিক এমন কিছু করতে চলেছেন যা অনন্য বিষয় এবং তা হবে অন্য স্টেটে অথবা দিল্লিতে হবে এবং স্কুল শিক্ষায় খেলাধুলোও ডাইরেক্ট ঢুকতে পারে। খেলাধুলোর প্রভূত উন্নয়নের জন্যে সৌরভের এই প্রজেক্ট হতে যাচ্ছে। যা ইতিপূর্বে কখনও হয়নি। দেশের খেলাধুলোর খোলনলচে বদলে দিতে চান সৌরভ, এটা তার উদ্যোগ থেকে বোঝা যায়। আর এই জন্যে তার একটা পদ সৃষ্টি হতে পারে নয়াদিল্লি বা অন্য কোনও রাজ্যে। উত্তর প্রদেশেও হতে পারে তার সদর দপ্তর। সেই জন্য মধ্য কলকাতায় সৌরভের নতুন ফ্ল্যাট যাতে যখন তখন তিনি উড়ে যাবেন তিনি দিল্লিতে। মন্ত্রী নয় খেলরত্ন তুলে আনার জন্য তার প্রজেক্ট হবে হয়তো যা সরকারি এবং যা তার বর্তমান পদ থেকেও আরও বড়। সৌরভের প্রজেক্টে শিলমোহর পড়েছে বলেই সৌরভ হাওড়ার ডুমুরজলাটা তিনি ছেড়ে দিয়েছেন আগেই। যা হতে পারতো হাওড়ার উন্নয়নের এক দিগদর্শন, পশ্চিমবঙ্গেরও হলে আনন্দ পেতাম। সৌরভ কোনও ফালতু একটা চরিত্রের নাম নয়। আমার বিশ্বাস বিজেপি সরকার তার কোনও বৃহত্তম প্রজেক্ট অনুমোদন করেছেন যা আন্তর্জাতিক মানের। হয়তো বা স্কুল কলেজ থেকেই তৈরি হবে খেলোয়াড় যা ৭৬ বছরে ভারতে অবহেলিত। অথবা এমন কিছু যা যুবকদের উন্নয়নে কাজে লাগবে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত ভারতের কোনও বৃহত্তম অর্থনৈতিক কর্মসূচি। সৌরভ থাকবেন রাজ্যপাল পদমর্যাদার একজন নাগরিক হয়ে। খেলা বা যুবকদের উন্নয়ন করা ছাড়া বিজেপিরও কিন্তু গতি নেই। এইসব হতে যাচ্ছে বলেই দিলীপ ঘোষকে সেনসর করা হয়েছে। কারণ এই রাজ্যে যতটুকু বিজেপি উঠেছে তা দিলীপ ঘোষের জন্য। পড়েছেও দিলীপ ঘোষের জন্য। এইরকম একটা সৎ ও বোকা লোক ভারতে দ্বিতীয়টি নেই।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দেখেছে এখানে বিজেপির নিচুতলার সদস্যদের দিয়ে কখনও একখানা ভোট জোগাড় করা সম্ভব নয়। নেতাদের মধ্যে একমাত্র টিঁকে গেছেন একজন মাত্র, তিনি তৃণমূলে ফিরছেন না শুভেন্দু। বিজেপির সদস্যদের এটিকেটের জ্ঞানে দিশেহারা হয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, ভিক্টোরিয়ায়। তাতেই বঙ্গের বিজেপি ভোট অর্ধেক সরে গিয়েছিল। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাই ভালো করেই জানেন এখানকার বড় বড় বুকনির বিজেপি সদস্যদের হিম্মত। তাই তাদের এই সংগঠন নিয়েই কোনও বড় কাজ করে দেখাতে হবে। তাদেরও আগামী লোকসভায় সিট দরকার জিতে আসার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের জন্যে নয়, ভারতের জন্য দরকার সৌরভকে। সত্যিই তো যদি যোগ্য একটা সম্মান সৌরভ পান তবে তিনি তা ছাড়বেন কেন।
সৌরভ বিজেপির সদস্য পদ নিচ্ছেন না কিন্তু সরকারের কোনও প্রজেক্টের সফলতায় যুক্ত হলে তাকে বিজেপির লোক বলে শুনতে হতে পারে। এই জ্ঞানটুকু মনে হয় সৌরভের আছে। আমি বলবো সৌরভ বড় কিছু করতে চলেছে। যদি পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে হয় তবে বিজেপির সামান্য টিঁকে থাকা হবে এখানে। তবে ১৮ টা সিট আর ফিরে পাওয়া হবে না কখনও। কারণ বিজেপির লোকেরা ওই ১৮ টা সিট ধরে রাখার মতো ভোটের রাজনীতি করতে পারবে না। যারা মার খেয়েছে তাদের জন্য বিজেপি বাংলায় উঠেছিল, তারাই তো এখন তাদের এলাকায় ভালো করে থাকতে পারেন না। তাই সৌরভের প্রজেক্টের সঙ্গে বঙ্গের বিজেপির কোনও সম্পর্ক না থাকলেও সরকারের সঙ্গে অবশ্যই একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ©® অলোক কুন্ডু

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...