শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০

চিন ভারত যুদ্ধ

#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা

#চিন_ভারত_যুদ্ধ_হলে_চিন_অর্থনৈতিকভাবে_ক্ষতিগ্রস্ত_হবে...

ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদীজির গতকাল। লাদাখে গিয়ে সরেজমিনে দেখার কথা ছিল রাজনাথ সিংহের, তড়িঘড়ি বাতিল হয় সেই যাত্রা যখন বোঝা যায় চিনকে সপাটে ছয় মারার দরকার আছে এখনই। আপনারা ভেবে দেখুন সাম্প্রতিক গন্ডগোলের আগে, প্রথম দিন যখন আলোচনার কথা ছিল, তখন আমাদের ব্রিগেডিয়ার চিনের ডেরায় গিয়ে তিনঘন্টা বসে ছিলেন। বেলা ১১ টার মিটিং শুরু করে চিন বেলা ২ টোয়। যে দেশের শৃঙ্খলা শ্রদ্ধা করার মতো তাদের আচরণ আসলে প্রথম থেকেই ভারতকে কোনঠাসা করার। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন একযোগে চিনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছে এবং অস্ট্রেলিয়া যেদিন বিমান ও অস্ত্র কেনার বরাত দিয়েছে সেদিনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাদাখ গেল। এর মধ্যে কোনও কূটনৈতিক যোগ থাকলেও থাকতে পারে। ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রের সাইবার বিশেষজ্ঞরা দেখেছে যে এই কদিনে চার হাজারবার ভারতের সাইবার ক্রাইসিস তৈরি করার
চেষ্টা করেছে চিন। মহারাষ্ট্র সরকার, রেল, টেলিফোন ও আর‌ও সরকারি প্রকল্প মিলে যা বয়কটের সিদ্ধান্ত হয়েছে দূরদৃষ্টিহীন ভারতবাসীও ভেবেছিল ভারত কিছুই করতে পারবে না। আসলে ভারতে এখন যত আমাদের লপরচপর সব‌ই চিনের দয়ায়, এটা মনে রাখতে হবে। দিশেহারা অর্থনীতিকে চিনের কাঁচা পয়সা দিয়ে উন্নত করার চেষ্টা যতটা হয়েছে ততটা প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ হয়নি, এই সত্যের প্রচুর ইতিহাস আছে। প্রতিরক্ষা খাতে কীভাবে বরাদ্দ বাড়ানো যায় ভারতবাসী কখনও বোঝেনি। এতটাই গোঁয়ারগোবিন্দ নাগরিক এখানে। যেভাবে হোক ভর্তুকি দাও আর কিছু করে দেখাও তবে আমি ভোট দেব, এখানকার রাজনৈতিক দল ও নাগরিক এইভাবে চুক্তিবদ্ধ পরস্পরের। কিছুতেই শিক্ষার আমূল সংস্কার এখানে হবেনা।
কি কংগ্রেস রাজত্বে কি বিজেপি রাজত্বে সিদ্ধান্তের কোনও বদল নেই। সমালোচনা ছাড়া ভারতবাসীর আর অন্য কিছু বোঝেও না। মোদ্দা কথা ভারতের ৫০ টিও যুদ্ধ বিমান নেই। তাহলে উপায় কি যুদ্ধে তো লড়তে হবে? ভারতের একটা সুবিধা যে চিনের ঝা‍ঁ চকচকে শহরকে ভারতের ২০/২৫ টি বিমান তাক করে আছে। সুপারসনিক বোম না থাকুক দেশজ মিশাইল কিছু আছে। লড়াই দুপক্ষই লড়বে। ভারতের এবারে প্ল্যান কিন্তু চিনের জায়গা দখল করা সে কারণে ৪৫/৫০ হাজারের মতো ব্যাপক সেনা সমাবেশ করেছে ভারত। যুদ্ধ হলে ভারত চিনে ঢুকে যাবে। এক‌ই সঙ্গে পাকিস্তানকেও দুহাত নিতে চায় আমাদের বিমানবাহিনী, কারণ পাকিস্তানের এয়ারবেস যদি চিন ব্যবহার করে যুদ্ধের সময় তাহলে এক যাত্রায় পৃথক ফল হবেনা। অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ইজরায়েলের সাহায্য ধরে নিয়ে ভারত এগোতে চাইছে। কিন্তু ৫৯ টি অ্যাপ ও বেশকিছু টেন্ডার ও চুক্তি বাতিল করার ফলে ( ভারতের চৈনিক পন্থীরা এখন মুখে আঙুল ও লাগাম লাগিয়েছে। কারণ এরা ভেবেই নিয়েছিল ভারত কিছুমাত্র প্রতিবাদ করতে পারবেনা)‌। সত্যিই ভারতের হাতে তেমন যুদ্ধ বিমান নেই যা দিয়ে চিনের মোকাবিলা যায়। ইলকট্রোম্যাগনেটিক সেন্সর রেডিও, ৩০/৪০টি বিমান, ভালো মেশিনগান, রাশিয়ান ডেফিনিট টার্গেট মিশাইল এক্ষুনি আমাদের চাই বেশ কিছু। সবে এক সপ্তাহ আগে রাশিয়াকে বরাত দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধ তাড়াতাড়ি হবে নাকি হবে না। এইসব প্রশ্নের মধ্যে বলা ভালো যুদ্ধ হবে না। কারণ চিন দেখছে যত সহজে ভারতকে চেপে মেরে ফেলবে বলে ভেবছিল ঠিক ততটা সহজ হবে না। কারণ হংকং, তাইওয়ান, জাপানের হয়ে ভারত কিন্তু তখন চিরকাল সেখানে মদত দেবে। আসলে ভরতুকির জন্য যে আমাদের দেশের সমূহ ক্ষতি এটা আজকে মেনে নিতে হবে। ভর্তুকি দিতে থাকলে একটা সময় এইদেশের সমস্ত জনগণ কাজ বিমুখ হয়ে যাবে। চিনেও ভর্তুকি আছে সেই ভর্তুকি খুব সামান্য নাগরিক পায়। তাদের মধ্যে কিছু লোককে ঘরে বসে কিছু উৎপাদন করতে হয়
তবে ভর্তুকি পায়। ১০০ দিনের কাজের মতো ঘাস কাটা নয়। ভর্তুকি দিতে দিতে ভারতের কাছে আজ যুদ্ধ বিমান কেনার টাকা নেই। যুদ্ধ লাগলে কত তেল মবিল লাগে আমাদের কিছু জানা আছে, এই হৈ হৈ ভারতবাসী কিছু তার খবর রাখে? গত পরশু যে বড় লেখা লিখেছি সেখানেই বলেছি ভারতের জ‌ওয়ানদের হাতে পুরনো মডেলের রাইফেল আছে। যদি আমরা অন্তত একটা করে যদি রাশিয়ান রাইফেল কিনে দিতে পারতাম। চিন যুদ্ধ করবে কিনা জানিনা, সে যুদ্ধে চিন পর্যদুস্ত হবে কিনা জানিনা কিন্তু চিনের হাতে ২৫০- এর উপর বিমান আছে নিশ্চিত। ইজরাইল, আমেরিকার মতো ৫ রকম বিমান আছে। একসঙ্গে ১৩৫ টা বিমান ওড়াবার ক্ষমতা রাখে ওরা। নাকি ভারতের আকাশে দেওয়ালি জ্বালানোর ক্ষমতা রাখে‌। ইজরায়েল আমেরিকার ডায়গ্রাম ও টেকনোলজি নকল করে বিমানগুলো, আমেরিকাকে ভয় দেখানোর জন্য বানানো। একঘন্টায় সমস্ত ভারতে বোমা ফেলে দিতে পারে। অবশ্য এটা একটা কথার কথা। সম্ভব নয় এতটা। যুদ্ধ হলে আকাশেই হবে এখন। স্যুইচ টিপে মিশাইলের যুদ্ধ। এখন নাগরিক মারার যুদ্ধ করা যায়না। চিনের একটা এমন মডেলের বিমান আছে যাকে কোনও সেন্সার সিস্টেম দিয়ে ধরা যাবেনা কোথায় উড়ছে। এর মধ্যেই বোঝা যা যাচ্ছে তা হলো চিন সৈন্য সরাতে রাজি হলেও এখনই সরছে না,
ডোকলামেও ৭২ দিন ছিল। তৈরি আস্থানাও ভাঙবে না। কবে সরবে সেই তারিখ‌ও বলেনি। একটা ভালো খবর জাপান ভারত যৌথভাবে ভারত মহাসাগরে দুদেশের মহড়া সেরে নিয়েছে। এটা যে চিনকে জব্দ করতে 
করা তা পরিষ্কার। ভারতের লোকেরা অভিনন্দন না জানালেও ৫৯ টা অ্যাপ ব্যান করে দেওয়ায় জন্য আমেরিকার বিদেশ সচিব এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। লাদাখের ঘটনায় বিহার রেজিমেন্টের ১৭ জন সেনা কিন্তু কোনও কিছু শুনতে চায়নি এবং ঝাপিয়ে পড়েছিল সেদিন। সত্যিই ৪০/৪৩ জন চিনা সৈন্য ওদেরও মারা গেছে, যারা সকাল পর্যন্ত পড়েছিল। ওই ১৭ জন কিন্তু ফিরতে পারেনি। এর জন্য সমস্ত কৃতিত্ব ওই ১৭ জন শহীদের। তার আগেই ৩ জনকে মেরে দেয় চিন। আর‌ও শতখানেক দু তরফেই আহত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে ওই জায়গায় কোনও ক্যাম্প ছিল, তার কোনও প্রমাণ নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার থেকে কর্নেল পর্যন্ত যে এই ঘটনায় দায়ি এই সহজ কথা ওদের সম্মানের জন্য কেউ বলছেন না। মিলিটারির অগাদ সম্পত্তি তার এপাশ‌ওপাশ করে পয়সা লুটপাটের যে একটা কারবার দীর্ঘদিন চলে আসছে, তাকে সব সরকার‌ই ভয় পায়। এইসব বুঝতে পেরেই বেশ কয়েকবছর ধরে সামরিক বাজেটের ঘাটতি হচ্ছে এবং তেমন যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করা হচ্ছেনা। বাংলা-উড়িষ্যার বর্ডারে সমুদ্রে বহু মিশাইল পরীক্ষা হলেও তার পেছনে গাদা গাদা অর্থ ব্যয় হলেও এখন বোঝা যাচ্ছে ওইসব মিশাইল পাকিস্তানের বাঙ্কার ধ্বংসের থেকে বেশি কাজে দেবে না।
সবচেয়ে বড় কথা দীর্ঘ দিন ধরে খানিকটা যুদ্ধ লাগার ভয়েই, আমাদের সেনাবাহিনী 
সীমান্তে দেখেও দেখেনা। এই অবস্থায় সকলে তাই এই কারণে সরকারের দোষ ধরছে। এটাতো ঠিক যে চিন, রেডার, মিশাইল, বিমান নিজেই বিশ্বমানের তৈরি করতে পারে এবং যার খদ্দের হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার,
নেপাল শ্রীলঙ্কা মালদ্বীপ এরা। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান রুখে দাঁড়াতে, চিন কিন্তু যুদ্ধের থেকে কূটনৈতিক খেলায় এখন বেশি মেতেছে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর তাই সঠিকভাবে হয়েছে তা নাহলে ভারতীয় জনগণের কাছে তিনি মাথা তুলতেও পারতেন না আর কূটনীতিক যুদ্ধে পরিস্থিতি সামাল‌ও দিতে পারতেন না। বলা যায় বিরোধী দল কিন্তু তাকে ছেড়ে কথা বলতো না, এটা বুঝতে পেরেও তড়িঘড়ি গিয়ে সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়িয়ে ভালোই করেছেন। ভারত এখন চতুর্মুখী লড়াইয়ে নেমেছে‌। এক: ধার করে হলেও যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করা, দুই: সীমান্তজুড়ে সৈন্যদের দিয়ে পাঁচিল তৈরি করা তিন:যুদ্ধের প্রস্তুতি সমানতালে জারি রাখা, চার: সবথেকে কঠিন সিদ্ধান্ত হলো চিনা পণ্য বয়কট। 
এখন ভারতে চিন বহুরকমের ব্যবসা করে। ইতিমধ্যে আমেরিকা ঘোষণা করেছে চিনের ব্যাঙ্কের সঙ্গে লেনদেন করলে আমেরিকার ব্যাঙ্ককে শাস্তি পেতে হবে। হংকং থেকে যাতে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা বৃটেন নিজেদের সরিয়ে নেয় চিনের ভাবনা ছিল তাই লাদাখে দ্বিতীয় ফ্রন্ট খুলে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করে হংকংবাসীকে উচিত শিক্ষা দেবে। ভেবেছিল চিন। হংকংয়ে যে কালাকানুন চিন চালু করেছিল, তা হলো হংকংয়ের নাগরিকদের ন্যায়-অন্যায়ের বিচার হবে বেজিংয়ে। তাকে
আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া জাপান ও হংকংবাসী কিছুতেই মানছে না। হয়তো এইসময় আমেরিকার সৈন্য‌ও মোতায়েন হবে সমুদ্রের কাছে। ভারত মহাসাগরেও তা থাকতে পারে। আমাদের যুদ্ধাস্ত্রর খামতি আছে এটা পরিষ্কার কিন্তু এই মুহূর্তে জাপান, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইজরায়েল অস্ট্রেলিয়া ভারতের পক্ষে প্রতিবাদ করেছে, এই কূটনৈতিক সাহায্য কিন্তু অস্ত্রের থেকেও বড় দরকার ছিল ভারতের। করোনা নিয়ে এমনিতেই কোনঠাসা হয়ে পড়েছে চিন। তাই তারা নেপালকে দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক যুদ্ধে নেমেছে‌। ভূটানকে দিয়েও জল বন্ধ করিয়েছে। সর্বশেষ ভূটান ত্রিদেশীয় একটি রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেনি‌। বাংলাদেশে করোনার ওষুধ পরীক্ষার জন্য, চিন ৪০০ জন নাগরিককে বিপুল সাহায্যের ব্যবস্থা করেছে। যাতে ওই পরীক্ষা ভারতের ঘাড়ে এসে বাংলাদেশে করা যায় এবং পরীক্ষায় সফলতা পেলে ভারত থেকে শত শত নাগরিক তখন এমনিই বাংলাদেশে গিয়ে সেপ্টেম্বর মাসেই লাইন লাগিয়ে দেবে। এই বেইজ্জতির আগেই তাই ভারতের‌ও ১৫ অগাস্টে করোনার প্রতিষেধক নিয়ে আর একদফা কূটনৈতিক লড়াই শুরু হয়ে যাবে সন্দেহ নাই। কিন্তু এর মাঝেই চিন হুমকি দিতে শুরু করেছে ভারতের কৃত্রিম পণ্য বাধার ফল ভয়াবহ হবে বরং তারা চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা মেটানোর বেশি চেষ্টা করুক, ওখানেই বেশি মন দিক, সমস্যা মিটিয়ে নিক। এখনও পর্যন্ত ভারত ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। বয়কটের হিসাব মাত্র ২০% ভাগ। যদি চিনের মূলধনকে বাধা দেয় ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে কিন্তু এছাড়া উপায় কি ? আর চারখানা মোবাইল কোম্পানিকে ফিরিয়ে যদি দেয় তাহলে এক ধাক্কায় চিনের অর্থনীতি নীচে নেমে যাবে। ওপো,ভিভো,জায়মী,রিয়েলমির ব্যবসা লাটে উঠে যাবে। ইতিমধ্যে ব্যবসায়ী মহল চিনকে বোঝাতে শুরু করেছে বলেই ভারতীয় চিনা দূতাবাস, ওদের মিডিয়া, কাগজ ও সরকারের একটি অংশ ভারতকে অনুরোধ করেছে। অর্থনৈতিক যুদ্ধ করলে যে চিনের সমূহ ক্ষতি এটা এতদিন ভারতের শিক্ষিত নাগরিক বুঝতে পারেনি। এইদিক থেকে চিন কিন্তু ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলকে তটস্থ রেখেছে। যুদ্ধ হলে বিজেপির ক্ষতি কিন্তু যুদ্ধ নাহলে বিরোধীদের আর‌ও বেশি ক্ষতি। ©® অলোক কুন্ডু

#চিন_ভারত_যুদ্ধ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...