শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০

করোনা থেকে বাঁচুন: অলোক কুন্ডু

#অলোককুন্ডুরলেখালিখিওকবিতা #indianwriterscommunity #kolkatadiaries #kolkata #writer #lekhak #howrah #facebookpost
◆ অনেকে বলছেন পুজোতে বাড়বে, তার আগে থেকেই কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। আমার‌ই জানাশোনা কলকাতার একটা পুজো কমিটির তত্বাবধান করতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনে হসপিটালে। সর্দি কমাতে গিয়ে এখন স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিতে হচ্ছে বন্ড নিয়ে। পুজো করতে গিয়ে কয়েক লক্ষ খরচের ধাক্কায় পড়লেন। নিউমার্কেটে যেভাবে ভিড় হচ্ছে ওখান থেকে ১% ছড়ালেই যথেষ্ট। সর্দিকাশি নিয়ে রাস্তায় বার হলে অবধারিত ধরে নেবে। সর্দি নিয়ে ৮ দিন ঘোরার জন্য আমাদের পাড়ায় একজন নিউমোনিয়া হয়ে মারা গেল। সিগারেট যারা খান এরকম কাউকে ধরলে আর ছাড়ানো মুসকিল, এরকম‌ও মারা যাওয়ার উদাহরণ আছে আমার কাছে। হিমোগ্লোবিন কম থাকা মানুষকে ধরলেও তাই। এরপর কিডনি, সুগার, হার্টের প্রবলেম থাকলে আর তো কথাই নেই । ইয়ংদের সঙ্গে সঙ্গেই ঘুরছে। প্রতিটি জিনিসপত্রের সঙ্গে অনবরত ভাইরাস বাড়ছে। সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। তারা পজিটিভ হলেও হয়তো বেঁচে যাবেন
কিন্তু বাড়িতে কেউ থাকলে তার জন্য আমাদের ভাবা দরকার। ভাইরাস ভিড়বাসে, ভিড়ট্রেনে, যেকোন‌ও ভিড় থেকে ছড়াচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে। আমাদের হাওড়ার কদমতলার দেবলীনা তার পরিবারের যে বিভীষিকাময় বিপদের কথা জানিয়েছেন এবং ফিরে এসেছেন তা এক কথায়, মহা বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া। আমাদের শরীরের তেজে তা বোঝা যাবে না। কিন্তু জামাকাপড়, পা একটা ভাইরাস বহনের উপযুক্ত মাধ্যম। বাড়িতে ঢোকার মুখে যদি এক গামলা ব্লিচিং ও ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জলে পা ধুয়ে বাড়িতে ঢোকা যেত খুব ভালো হোতো। ফ্ল্যাটে হ‌ওয়া সম্ভব নয়। তাই মেঝে ওই জলে মুছে ফেলতে হবে। ভুল করেও গ্লাভস পরা উচিত নয়। চুল ভাইরাস ধরার প্রধান মাধ্যম। তাই সাবধান। এটিএম কার্ড, গ্যাসের ব‌ই, মানিব্যাগ, ঘড়ি, ছাতা,দরজা, বাথরুমের দরজা,কল, হ্যান্ড সাওয়ার, বেল্ট, পেন, মোবাইল, টাকা,পয়সা, দরজার হাতল, সিঁড়ির রেলিং, কলিং বেল, চাবি, রুমাল, স্যানিটাইজারের বোতলের গা, চশমা এগুলো সম্পর্কে সব সময় সতর্ক এবং সতর্ক। সন্দেহ বজায় রাখুন ডবল চেক করুন। প্রচুর ফেনাযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন ( ডেটল নীল উপযুক্ত), বাথরুমে একটা বড় প্ল্যাস্টিক স্প্রেতে স্যানিটাইজার রাখুন। আমাদের কম লোকজন তাতেই এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন লিটার স্যানিটাইজার
৭ কেজি ডিটারজেন্টে, ব্লিচিং ১ কেজি, সোডা ২ কেজি, পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট লেগেছে ৫০০ গ্রাম। হ্যান্ড‌ওয়াস ২ লিটার।
ডেটল নীল সাবান ৬ টি। যাইহোক, বাথরুমের যেখানে যেখানে হাত দিয়েছেন স্যানিটাইজ করুন। পায়ের হাঁটু পর্যন্ত জল ঢালুন। যতবার বাইরে যাবেন ততবার জামাকাপড় ছাড়ুন। সোডা বা ডিটারজেন্টে খার বেশি থাকে অ্যালার্জি না হলে ভাইরাস মারতে এইসবও হ্যান্ড‌ওয়াসে মিশিয়ে নিন, এতে খরচ কমে যাবে। জামাকাপড় হচ্ছে একটা মারাত্মক মাধ্যম, একে সাবধানে খুলে রাখুন এবং আবার সাবানে নিজের হাত ধুয়ে নিনি। স্যানিটাইজারকে রাস্তায় ও বাড়িতে ফেরার পর তিন তিনবার ব্যবহার করুন। যতটা নিশ্চিত হবেন ততটা ভালো যত সন্দেহ তত ভালো। হ্যাঁ একদম এপ্রিলের গোড়ায় আমাকে বাতিকগ্রস্ত বলেছিলেন অনেকে। বিশ্বাস করুন অফিসে বহুরকমের জার্ম থাকা ফাইলকাগজ ঘেঁটেছি তখন ওই হাতেই মুড়ি খেয়েছি। কারণ কাজে ফাঁকি দেবো! উঠে সাবান খুঁজবো ? প্রকৃতপক্ষে
হাত ধুতে যাওয়ার সময় পাইনি। দেখেছি প্রায় সর্দিকাশি লেগেই থাকতো। ফাইলের মধ্যেও প্রচুর এইসব দাগ থাকতো তো। প্যানক্রিয়াসের অসুখ বহুদিনের ইদানিং প্রচুর কিছু ধীরে ধীরে ধরা পড়েছে, হয়তো 
হাওড়ায় শিক্ষকদের  পেনশনের করতে গিয়ে হয়েছে। বহুবার ভাইরাল ফিবারে ভুগেছি। এখন বুঝতে পারছি পাড়ার খাটা পায়খানার ডাবা থেকে বল কুড়িয়ে কখনও সাবান দিয়ে হাত ধুইনি। অফিসেও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মতো সুযোগ পাইনি, আর অফিসে আমার নামে সাবান কিনে মেরে দিতো সেই টাকা। বাথরুমের ভেতর থেকে বাইরেতেও ভিজিটরের উত্তর দিয়েছে। আমার জন্য বহু মানুষ মজায় অফিস করেছে। আমার জন্য একটা পুরো অফিস ঘুমোতে পেরেছে শুধুমাত্র আমি ঘুমোই নি। ছেলেমেয়েদের সুখে মানুষ করেছেন। কিছু‌ই করিনি জীবনে। প্রচুর ওষুধ খেতে হয়েছে, এখন বুঝতে পারছি সব। কিন্তু প্রচুর ভুল কাজ করেছি। নিজেকে দেখিনি। করোনা এসে আমাকে অনেকটা সতর্ক করেছে। হাত ধুয়ে পা ধুয়ে বাড়িতে ঢোকা এমনিতে অভ্যাস ছিল তাই একবার হাত ধুয়ে কিছু খাওয়া এটা মামার বাড়ি থেকে পর্যাপ্ত শেখা। পা ধুয়ে বাড়িতে ঢোকায় অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু কাজের পরিস্থিতির জন্য নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অনেক ক্ষেত্রে মানিনি। যতজন মানুষ এসেছেন বন্ধু হয়ে এসেছেন তারা আমাকে ব্যবহার করেছেন। একমাত্র করোনাই শেখালো, নিজের কাজ করাটাও যে জরুরি এবং সঠিক সময়ে করা।  করোনা মনে করিয়ে দিল মামার বাড়িতে আমার বড়মাসিমার শেখানো জিনিসটাই তো ফেরত এসেছে। মাসিমা নেই। জলে পড়ে থাকতেন না। বিধবা ছিলেন ১৪ বছর থেকে কিন্তু প্রতিটি দিন কাপড় পরতেন টিনোপলে ধোয়া। নখ কাটা চুল কাটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হ‌ওয়া তো সেই ছোটবেলার পাঠ। রায়নার সুশান্ত এখনও আমার জামাকাপড় পরা নিয়ে বলে। এই করোনায় দেখেছি। বাজার করে এসে ইনারগুলো না কেচে রোদে দিতে তাদের কিন্তু করোনা ঢুকেছিল। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সারাজীবনের। ©® অলোক কুন্ডু

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...