গোলি মারলে খুব গায়ে লাগে, প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগে ৭ লাখ নিলে গায়ে লাগেনা / অলোক কুন্ডু
🙅 রাজনৈতিক দলে যারা ক্যাডার হয় তাদের মধ্যে ভদ্রঘরের ছেলেমেয়েরা যে থাকেনা এমন নয়। তারা যথেষ্ট থাকলেও সংখ্যায় তারা অবশ্যই কম থাকে। বেশিরভাগ থাকে নিম্নররুচির ছেলেমেয়েরা। যারা মারদাঙ্গা করতে পারবে। ভোট করতে পারবে। মার খেতে পারবে। এই যে হল্লাবাজের দল সমস্ত দলে ভিড় করছে তাদেরকে কিন্তু দরকার--রাজনৈতিক দলগুলোর। আমরা বাড়িতে বসে সমালোচনা করতে খুব পারি কিন্তু ট্রেনিং প্রাপ্ত প্রাইমারি ছেলেমেয়েদের বাদ দিয়ে থার্ড ডিভিশনকে শিক্ষায় হাজির করলে আমরা চুপ থাকি। এটা একটা উদাহরণ। গোলি মারোর থেকে আরও উত্তেজক সাম্প্রদায়িক হানাহানি। অপরকে মর্যাদা না দেওয়া। বাক্-স্বাধীনতা হরণ করা। এগুলো গোলি মারো-র থেকে ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ।
🙅 তবে হ্যাঁ বামপন্থীদের সঙ্গে যখন এইসব লাফাঙ্গারা ঘোরে-ফেরে তখন তারা বামেদের কন্ট্রোলে থাকে। যখন তারা বামেদের মিছিলে যায় তখন যেহেতু বামপন্থীদের স্লোগান একটা জায়গা থেকে কন্ট্রোল হয়ে থাকে তাই অন্য কোনও রকম অসভ্যতা করার সুযোগ থাকেনা। বামেদের মিছিল কন্ট্রোল করে সাধারণত কলেজের ছেলেমেয়েরা, তারা আগে থেকে মিছিলের মহড়া দেয়। কি বলতে হবে তারা ঠিক করে নেয়। কিন্তু অন্যদলের এইসব ব্যবস্থা একেবারে নেই। এমনকি শৃঙ্খলা পরায়ণ বিজেপি দলেরও যে একই অবস্থা হতে পারে তাও বাংলার লোক প্রত্যক্ষ করলো। তারাও গোলি মারতে বেশ এগিয়ে থাকলো। যাদবপুর ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েদের স্লোগানের কথা মনে আছে ? দিল্লির নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লোগানের কথা। আসলে যখন যারা দেয় তাদের মিছিল জমজমাট হয়। তারুণ্যের রক্ত বলে অনেকে উড়িয়ে দিতেও পারেন। আসলে এখন রাজনীতির গতিপথের সঙ্গে কিন্তু এইসব মানানসই। যেরকম রাজনীতি সেরকম স্লোগান।
🙅 আসলে পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে এখন ভদ্রলোকের বড় অভাব। তা ছাড়া এখন একদল লোক এই দল সেই দল থেকে অন্যদলে হু হু করে চলে যাছে। মূল কথা এদের দলে নিতে হবে এটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য বিজেপির। যৈ যাই বলুন না কেন, লোকের যাওয়া কিন্তু বেড়েছে বিজেপির দিকে। এমনটা কিন্তু নভেম্বর পর্যন্ত ছিলনা। বরং নভেম্বর পর্যন্ত বিজেপিকে ছেড়ে অনেকে চলে গেছে। এখন স্রোত একমুখী। কে জানে, আগের দিন যারা তৃণমূলের হয়ে গোলি মেরেছিল তারাই পরেরদিন বিজেপির হয়ে যে গোলি মারেনি এর কোনও গ্যারান্টি নেই। আসলে গোলি মারুক আর নাই মারুক যুগটাই তো এইরকম।
🙅 নেতা নেত্রীর মঞ্চের বক্তব্য আগে শুনে বলুন তাদের মুখের ভাষাটা কোন ধরনের। আমরা যারা ভদ্রলোক নিজেদের ভাবি, তাদের মাথায় বহুত চর্বি। কেননা এইসব গোলি মারো যারা বলছেন তাদের আমরা ছোটলোক বলছি কিন্তু গোলি মারোর উৎস সন্ধানে নীরব থাকছি। অবশ্যই দুটোই ইতর বিশেষ। নেতাদের কোনও বাকসংযম কখনো ছিলনা। সে আনিসূর রহমানই বলুন আর বিনয় কোঙার বলুন ও আরামবাগের বড় বামপন্থী নেতা প্রয়াত অনিল বসুর নামই বলুন। মঞ্চ থেকেই যে খারাপ নোংরা ভাষার উৎপত্তি হয় তা ইতিপূর্বে প্রমাণ হয়ে গেছে।
এখন তো রাজনৈতিক ফলার মাখার সময়। উত্তেজনা ছড়ানোর মতো স্লোগান দিতে, আমরা ভদ্রলোকরা কোনও দলের হয়ে এখন নামতে যখন পারছিনা তখন যারা তা পারছে তাদের কিন্তু মিছিল উৎসাহিত হয়ে মেনে নিচ্ছে। তাই এই উত্তেজক স্লোগান যারা দিচ্ছেন তারা এখন সেই সেই দলের সম্পদ, এই সার কথা আমাদের মেনে নিতে হবে। আমার এইসব উচ্চারণে অ্যালার্জি হলেও রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন হচ্ছে।
মিছিলের প্রয়োজনে হচ্ছে। তৃণমূলের লোকেরা দেবে, বিজেপির লোকেরাও দেবে। মঞ্চের লোকেরাও দেবে। তবে কি সাপোর্ট করছি? ঘুষকে সাপোর্ট করলে এটাকেও তো করতে হয় তাই না। আর আমার মতো ছাপোষা লোকদের সাপোর্টে কি এসে গেল ?
🙅 তবুও এক ধরনের বিড়াল তপস্যী থেকে যাবেন যারা সেই দল করে সেই দলের গোলি মারোকে সম্পূর্ণ সাপোর্ট করে যাবেন। আসলে
দল আগে এটা আমাদের বোধগম্য হয়না। আমরা ভাবি ঈস্ এইসব বাজে কথা গান্ধীর দেশে বলছে ? লোকেরা এইসব নিয়ে তিল থেকে তাল করে দিতে চান একমাত্র ভোটে জেতার জন্য। তার দল ভোটে জিতে গেলে আর এইসব তখন মনেও থাকেনা। কি অদ্ভুত মারা আমরা!!?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন