⛔ এই মূহুর্তে বাম ও কংগ্রেস দল মুখে যতই বলুন না কেন, তারা ইতিমধ্যে বুঝতে পারছেন তাদের মাঠ ময়দানে লোক নিয়ে আসা খুব কষ্টদায়ক। প্রকৃতপক্ষে জনগণকে এই দুটি দল থেকে আর কিছু দেওয়ার নেই। কংগ্রেস ও বাম দল ভালো জানেন, না দিলে কেউ কাছে আসে না। একসময় স্কুল-কলেজের চাকরিতে এদের বহু ছেলেমেয়েরা ঢুকেছিল, তাই তারা মিছিল মিটিংয়ে আসতো ও পেছন থেকে দলকে সংগঠিত করতেও পথে নামতো। এখনও বামেদের কিছু সেখানে পড়ে থাকলেও কংগ্রেসের ময়দান এই মূহুর্তে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু তারা যৌথভাবে ব্রিগেড করলে মাঠ ভরিয়ে দেখাতে পারবেন যে তাদের ভোটাররা এখনও তাদের সঙ্গে আছে। এই বিগ্রেড ভরানোয় অবশ্যই বামেদের পুরনো সংগঠনের একটা মহিমায় ভিড় হলেও হতে পারে। তবে গ্রামে যখন ওই জনগণ ফিরে যাবে তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইটা লড়বে বিজেপিকে ভোট দিয়ে--এই বিষয়টা বামেরা কয়েক বছর ধরেই দেখতে পাচ্ছেন।
তৃণমূল এই বিষয়টাকে নিশ্চিত মাথায় রেখেছে, তাই তারাও চাইবে আগামী ২৮/২-এ ব্রিগেড ভরুক। তারাও তাই সাহায্য করবে, আর এখান থেকেই বাম+কংগ্রেস ও তৃণমূলের একটা যৌথ বুথ ম্যানেজমেন্ট তৈরি হতে শুরু হতে পারে।
⛔ সমস্ত করে-খাওয়া পার্টি, ব্যক্তি, বাম+কংগ্রেস ছেড়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হয়েছে। যার ফলে এই নতুন করে-খাওয়া জনগোষ্ঠী চাইবে তৃণমূল কংগ্রেসকে যেভাবেই হোক টিঁকিয়ে রাখতে। এই করে-খাওয়া জনগোষ্ঠী যত না তৃণমূল কংগ্রেসকে রাখতে চান, তার থেকে বেশি রাখতে চান নিজেদের অস্তিত্ব যেন টিঁকে থাকে। কবি থেকে আবৃত্তিকার, সঞ্চালক থেকে পাড়ার গাইয়ে, তোলাবাজ থেকে চাকরির আশায় পড়ে থাকা বেকার সকলেই আছেন এই দলে, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শেষবার দুয়ে নিতে এদের থেকে ভালো আর কেউ জানেন না। এদের সিংহভাগ এসেছেন বাম ও কংগ্রেস থেকে। একদম আনকোরাও এসেছেন। বামেদের কাছে সুবিধা পাওয়া কবি, সাহিত্যিক থেকে কন্ট্রাক্টর পর্যন্ত একেবারে দলবল সহ তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।এরপর তো আছেন-- বুদ্ধিজীবীরা। সবাই মিলে তৃণমূল কংগ্রেসে, তারা জোটবদ্ধ হয়ে আছে। নতুন এই করে-খাওয়া, ধান্দাবাজ জনগোষ্ঠীরা আর কাউকে কোনও ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতিতে ঢুকতে দেয়নি, কয়েক বছর। যা খেয়েছে, যা করেছে সব নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে। এতে করে তৃণমূলের ভালো থেকে খারাপ হয়েছে। বরং যে কোনও উপায়ে এইদল রটিয়েছে ওরা, তারা এবং এরা তৃণমূলের বিরোধী, চক্রান্ত করছে তৃণমূলের। একদিকে এরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গড়েছে নিজেদের মধ্যে এবং কীভাবে বিজেপিকে আটকানো যায় সেই কাজে নিযুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে নিজেদের পুরনো বাম ও কংগ্রেস বন্ধুদের সঙ্গেও রীতিমতো যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এদের নিরন্তর প্রচেষ্টা চলেছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার। হঠাৎ এদের কথা লেখার কি এমন দরকার পড়লো ? কারণ এরাই দেশকে, সমাজকে এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে চলেছে। নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে নিজেদের পছন্দ মতো লোককে তারা বন্ধু করেছে। চাকরি গুছিয়ে নিয়েছে, পাড়ার সংস্কৃতি দখল করে রেখেছে, কবিতা উৎসব থেকে লিটল ম্যাগাজিন উৎসবে এরা আর কাউকে ঢুকতে দেয়নি। এরপর আছে তৃণমূলের নেতাদের কানমানি। এরাই বাম আমলে সমস্ত কিছু দখল করে রেখেছিল। এদের জোটবদ্ধ কার্যক্রম ভেতর ভেতর তৃণমূলে আসার পর আরও বেড়ে উঠছে। কিন্তু বিরোধীরা যে সমস্ত তথ্য দিয়ে প্রতিদিন ময়দান জমাচ্ছে সেইগুলিও
এখানে আলোচনা আর করার দরকার নেই।
⛔ সকলের মনে হতে পারে, এরা তৃণমূলের কি এমন ক্ষতি করছে ? ক্ষতি তো অবশ্যই করেছে, কারণ এরা যেখানে সুবিধা পাচ্ছে সেখানেই ভিড়ে যাচ্ছে। পরন্তু এরা তৃণমূলের সভা-সমিতি থেকে
নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখেছে। পোস্টার মার্কিন। তৃণমূলের প্রত্যক্ষ সাহায্য না করেও এরা মৌচাক তৈরি করে ফেলছে। কিন্তু এদের আসল বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে এরা তৃণমূলে নিয়ে যেতে পারেননি। কারণ এদেরকে কখনও প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেস করতে দেখা যায়নি। কারণ ভবিষ্যতে যাতে এরা যেকোনও দলে নাম লেখাতে পারে, সেই পথও সমানভাবে খুলে রেখেছেন। এমনকি এদের অনেকেই গোপনে বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে, ফেসবুক গ্রুপেও নাম লিখিয়েও রেখেছেন। এরা তৃণমূলের তো বটেই অন্য দলের কাছেও রহস্যময় চরিত্র ও ক্ষতিকারক। এরা কিন্তু সবসময় গোপন সলাপরামর্শ করে থাকে, কেবলমাত্র নিজেদের অস্তিত্বরক্ষা করা ছাড়া এই সুবিধাবাদের আর দ্বিতীয় কোনও কাজ নেই। কিন্তু তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কের রমরমা জন্য তৃণমূল এই দিকটা একেবারেই খেয়াল করেনি। এদের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসেও বহু মানুষ যেতে পারেনি কিংবা এদের ঘৃণা করার জন্য ঘেন্নায় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সব সময় তারা সরে থেকেছে। এইসব থার্ড গ্রেডের লোকেরাই বেশি আছে সরকারী দলে। তাই ভালো লোকজন আর যায়নি, গেলে তৃণমূলের নীচ তলায় এত বদনাম হোতো না। এরা না হোমে না যজ্ঞের।
⛔ ভালো লোক, শিক্ষিত মানুষ, সহজ-সরল মানুষ স্বাভাবিক ভাবে বিজেপিতে চলে গেছে,
হিন্দুত্বের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও অনেকেই বিজেপিকে সঠিক পার্টি ভেবেছে। এইসব মানুষের কিন্তু এখন কোনও চাহিদা নেই। এই জনগোষ্ঠী কেবলমাত্র মনের স্বাধীনতা চেয়েছে। উচিত চেয়েছে। সম্মাননা চেয়েছে। সততা চেয়েছে। বাঁচতে চেয়েছে। বিজেপির উচিত হবে তাদের সম্মান জানানো। এই যে নীচুতলায় এইসব দীর্ঘদিন হয়ে চলেছে তা কখনোই কিন্তু কোনও দলের নেতারা জানতে পারেননা। কারণ যারাই বামে ছিল তারাই তৃণের লোকবল এবং এইসব রহস্যময় লোকের জন্য একদিকে ক্রমশ বিজেপির লোকবল বেড়েছে। তৃণমূলের আমলে কেউ হয়েছেন ক্লাবের সেক্রেটারি, কেউ মাতব্বর, কেউ কবিতার চর্চায়, কবি হয়ে গেছেন তো কেউ কেউ হয়েছেন গাইয়ে, ছোট সঞ্চালক থেকে বড় সঞ্চালক। কেউ পেয়েছেন সাতলাখ টাকা দিয়ে প্রাইমারির চাকরিও। বাম আমলের বহু অধ্যাপক, লেকচারার ও শিক্ষক কিন্তু গুছিয়ে নিলেও তারা মনেপ্রাণে বাম ছেড়ে চলে যাননি এখনও। আর যারা সম্মান, যত্ন, সততা, সভ্যতা চেয়েছেন তারা পড়েছিলেন একাকি হয়ে। এই ক'বছরে তারা কোনও দলে যাননি। তারা না বাম না তৃণমূলের। বাম ও নব্য তৃণমূলের লপরচপরে এই দল উপেক্ষিত হয়ে আছে অনেক কাল। একদিকে থেকে তাই বিজেপির নেতা-নেতৃত্ব
অন্যান্য দল থেকে এলেও নীচু তলার লোকেরা ৯/১০ বছর চুপচাপ বসে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে
এদের বিজেপিতে যেতে অসুবিধা হয়নি।
⛔ এই যে যারা তৃণমূলে সুবিধা পাচ্ছে কিংবা বামপন্থী দলেতে আছেন তারা সবাই মিলে চাননা কিছুতেই যেন বিজেপি আসতে না পারে। আর সব চেয়ে আশ্চর্যজনক এরাই ফেসবুকে ও হোয়াটসঅ্যাপে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসে আছেন। যার ফলে বামেদের ও তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস এইসব ঝামেলায় নেই। বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েকটি পকেটে তারা শুধুমাত্র রাজনীতিটুকু করে থাকে।
বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেসি নেতাদের যত শত্রুতা থাকুক না কেন নীচু তলার বিজেপি ও অবশিষ্ট কংগ্রেস কর্মীদের কোনও ঝগড়া নেই। সম্ভবত শেষ মুহূর্তে এরা সবাই বিজেপিকে ভোট দিয়ে দেবে।
⛔ বাম নেতারা যতই ভোটে নামুন আর জোট করুন, তারা জানেন তাদের পক্ষে ২০২১-এ জোট গড়লেও রাজ্যের ক্ষমতা অধিকার করা সম্ভব নয়। তাদের অত কষ্ট করে গড়া বাম দলের নেতা-মন্ত্রীরাও হাতে থাকেনি তাদের দলের আনুগত্যের মধ্যে। একটা সদস্য গড়ে তুলতে, পার্টি কর্মী থেকে লোকাল কমিটির মেম্বার হতে, কত কাঠখড় তারা পুড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু রাখতে পারেননি তাদের। নেতা করতে বাড়ির একগুষ্টি লোককে চাকরি, প্রফেসরি, পিএইচডি, শিক্ষক, ইউনিভার্সিটির সদস্য কতকিছু করে দিয়েছেন। তবু তারা থাকেননি। তাই বামেদের এখন ভোটারের হিসাব বাড়ানো ছাড়া, দু একটা পঞ্চায়েত দখল রাখা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। পার্টিতে বিমান বসু ছাড়াও এখনও বেশ কয়েকজন খাঁটি মানুষ আছেন যারা ১৯৬৯/৭০-এর মতন দলকে রক্ষা করে চলেছেন ও করে যাবেন। বামদল সবসময় অঙ্ক কষে দল চালনা করে। তারা বিলক্ষণ জানেন পার্টিচিঠি, পার্টিক্লাস, পার্টকর্মী কাকে বলে। এখনও তারা ভাল পার্টিকর্মী জোগাড় করতে পারছেন-- স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকে। এখনও পর্যন্ত ওরাই যে আসল বামপন্থা টিঁকিয়ে রেখেছেন তা সকলেই জানেন। সংখ্যায় কম হলেও তারাই একমাত্র এখনও দলের সম্পদ। তৃণমূল কংগ্রেস আসার পর গ্রামেগঞ্জে তাদের দলের জনভিত্তি ক্রমশ দুর্বল হয়েছে। তার একটি কারণ হলো গ্রামের শিক্ষিত গোষ্ঠী ভয়ে সিঁটিয়ে চুপ করে বসে গেছেন। এবিটিএ-র সদস্য থাকলেও তারা আর প্রকাশ্যে আসতে ভয় পান। তাদের গাড়ি বাড়ি সচ্ছলতা আসায় তারা সামাজিকভাবে লড়াইয়ের মাটি আঁকড়ে রাখতে পারেননি। এদিকে গ্রামীণ যে আদিবাসী গোষ্ঠী ছিল তাদের ভোট ব্যাঙ্ক সেখানে ফাটল ধরিয়েছে বিজেপি। দেখতে গেলে একমাত্র বিজেপির সঙ্গেই লড়াই চলছে তৃণমূলের। গ্রাম বা শহরে বামেরা তৃণমূলের সঙ্গে আর পাড়ায় পাড়ায় লড়াই করতে চায়নি, কারণ খুনখারাপি থেকে তারা পার্টিকে রক্ষার দায়িত্ব বেশি নিয়েছেন। দলের কর্মীরা খুন হয়ে যাচ্ছিলেন, কিছুটা পিছিয়ে এসে তারা রক্ষা করতে পেরেছেন সদস্যদের বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন। প্রয়োজনে তারা লড়বেন ও আত্মরক্ষা করবেন। তাই তাদের প্রধান ও মুখ্য উদ্দেশ্য নীরবতা। সেই লক্ষ্য থেকে তারা নীরবতা বজায় রেখেছিল। সেই পুরস্কার স্বরূপ তৃণমূল কংগ্রেস এখন শহরে-গ্রামে সিপিএম বা বাম নেতাদের ডেকে এনে তাদের পার্টি অফিস খুলিয়েছে ২০২০-তে। কিন্তু শর্ত একটাই ভোট তাদের দিতে হবে। বামপন্থীরা খুনজখমের কেস থেকে, বেআইনি অস্ত্র রাখার কেস থেকে, গাঁজা কেস থেকে এখন অনেকটা মুক্তি পেয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে কয়েকজন এগিয়ে এসেছেন ও সফলতা পেয়েছেন। সফলতা বলতে
পার্টি অফিস খোলা, বাইক রাশি করা অথবা ছোটখাটো সভা করতে পারা। এখন সেইসূত্রে
পার্টি থেকে, গ্রামে-গঞ্জে একটু আধটু মিটিং মিছিল করতে পারছে। গ্রামের কয়েকজন মুসলমান পরিবার এখনও তাদের সঙ্গে রয়েছেন। বামপন্থীরা শ্রমিক, কৃষক ও মুসলমান আদিবাসীদের বন্ধু বলে আজও সমান প্রচার করে থাকেন। এখনও ৭% ভোটার তাদের সঙ্গে রয়েছে বলে মনে করেন। কলেজ ইউনিয়ন, ইউনিভার্সিটি এখনও তারা অনেকটা হাতে রেখেছেন। সঙ্গে কংগ্রেসদলকে তারা পাশে পেয়েছেন।
⛔ যদিও মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া ছাড়া কংগ্রেসের কোথাও তেমন আর সংগঠন নেই। অফিসগুলো অনেক সময় খোলা হয়না। অধিকাংশ তৃণমূলের দখলে চলে গেছে। তবুও সর্বভারতীয় ধর্ম-নিরপেক্ষ দল হিসেবে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা এখনও আছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতিতে এখন সিপিএমের সংগঠনের সাহায্য নিয়েই কংগ্রেসের এখন টিঁকে থাকার মতো অবস্থা। বাম ও কংগ্রেসের জন্য সুখবর যে তারা আব্বাস সিদ্দিকীদের সঙ্গে হয়তো জোট করছেন। যদি তা করেন তবে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে চিহ্নিত করতে তাদের আরও সুবিধা হবে এবং ভোটও বাড়াতে পারবেন। বিশেষ করে বিজেপির যেমন একটাই শত্রু তা হলো তৃণমূল কংগ্রেস, কিন্তু বাম ও কংগ্রেসের দু-দুটো করে শত্রু। বাম-কংগ্রেসের প্রধান শত্রু কিন্তু বিজেপি। এখন বিজেপিকে আটকিয়ে তৃণমূলকে জেতানো ছাড়া বাম ও কংগ্রেসের হাতে নতুন কোনও ফর্মূলা নেই। এই গন্ডগোলের পথের জন্য, এই ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখার জন্য আজ গ্রামে ও শহরে বিজেপির লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাম+কংগ্রেসের
অবস্থা দিন কে দিন খারাপ হয়ে চলেছে। তারা যতদিন না তাদের শত্রুপক্ষ চিহ্নিত করতে না পারবেন ততদিন তারা আর মূল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন না। যেহেতু তাদের এটাই নীতি তাই কোনোভাবেই তারা বিজেপিকে ছেড়ে বন্দুকের নল তৃণমূলের দিকে ঘোরাতে পারবে না।
⛔ বহুবার বলেছি শুভেন্দু অধিকারী এখন একাই একশো। ওদিকে সেই ক্ষমতা রাখেন আব্বাস সিদ্দিকীও। স্পষ্টতই ভোটের বাজার এখন দিনকে দিন গরম হয়ে উঠছে এই দুই নেতার আক্রমণাত্মক বক্তব্যের গুণে। এখন পর্যন্ত বিজেপির কোনও সভা ফ্লপ হয়নি। বিশাল লোক সমাগম হচ্ছে তাদের প্রতিটি সভায়। নির্বাচন কমিশন সঠিক ভাবে ভোট করাতে পারলে বিজেপির পাল্লা অনেকটা ভারি এখন পর্যন্ত। কারণ সরকার বিজেপির অগ্রগতি বুঝতে পেরে প্রায় প্রতিটি দিন, একের পর এক দানছত্র ঘোষণা করছে।
⛔ এখন প্রশ্ন বিজেপি কি ঠিক মতো ভোট করাতে পারবে ? যতটা তারা ভাবছেন। কারণ সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন প্যাঁচপয়জার জানা আছে ভোটের ক্ষেত্রে, তাদের কন্ট্রোল করবে কিন্তু তৃণমূল। বামেরা দীর্ঘদিন সরকারী কর্মচারীদের আদর যত্নে এই কারণে লালনপালন করেছিল। যাতে ভোটের দিন বিপক্ষে রিপোর্ট কিছু না দেন। ভোটের বুথ যদি বাম কংগ্রেস ও তৃণমূল দখল করে রাখে এবং ভোটাররা ভোট স্বাধীনভাবে ২০১১ সালের মতো যদি না দিতে পারে তবে বিজেপির জেতা ছন্নছাড়া হয়ে যাবে। কোথাও জিতবে কোথাও ডাহা হারবে। কারণ বিজেপির বুথে এজেন্ট কিন্তু টার্গেট হবেন পাড়ার পাড়ায়। সংস্কৃতি কর্মী থেকে সরকারী কর্মচারী ও শিক্ষকদের কাছ থেকেই বিজেপির বেশি বাধা আসবে। বুথ এজেন্টকে যদি ভোটের দিন বুথ থেকে বার করে দিতে পারে, নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারে অথবা টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে, তাহলে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে রোখা মুস্কিল হবে। কারণ তাদের হাতে ভোটের প্রশাসনিক সমস্ত অস্ত্র আছে। আর বিজেপি ভোট করতে যাচ্ছে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে। দুটোর মধ্যে কোনও বোঝাপড়া নেই। বুথে বুথে সিপিএম কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের জোটবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ থেকে যাচ্ছে। সিপিএম যদি বিজেপিকে হারিয়ে দিতে পারে তাহলেই তাদের কেল্লাফতে। কংগ্রেস ও তাদের মূল লক্ষ্য বিজেপিকে হারাতে হবে, তৃণমূলকে নয়। কারণ তাদের আক্রমণ বিজেপির দিকে। এর ফলে যা হতে পারে তা হলো আগামী দিনে কংগ্রেস ও বামপন্থীরা আরও দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাবে এবং বিজেপির উত্থান ক্রমবর্ধমান হবে। বিজেপিকে জিততে হলে বুথ ম্যানেজমেন্ট করতে হবে নিশ্ছিদ্র। শেষ পর্যন্ত
তৃণমূলকে জেতানোর দায়িত্ব তুলে নিতে পারে বাম ও কংগ্রেস। কারণ এরপর আর তাদের লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। তবে বিজেপির দিকে এখন সাচ্চা জনগণ জড়ো হয়েছে তাই দেখার শেষ পর্যন্ত কি হয় ? নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস বাম ও কংগ্রেস কি তবে এক হয়ে নিজেদের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট করতে পারে! সেক্ষেত্রে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। সকলের লক্ষ্য বিজেপিকে হারাও। ©® অলোক কুন্ডু
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন