বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Sailen Manna Stadium,Howra

শৈলেন মান্না স্টেডিয়াম / অলোক কুন্ডু

পূর্বতন হাওড়া ময়দানের আয়তন ছিল বিশাল । দক্ষিণে এখন যেখানে রেল‌ওয়ে
হসপিটাল আছে তার গা থেকে নিয়ে একদিকে হাওড়া জেলা স্কুল পর্যন্ত । অন্যদিকে এখন যেখানে জেলা গ্রন্থাগার
সেখান থেকে বঙ্গবাসী সিনেমা পর্যন্ত ।
পরে যখন বিধান রায়ের মন্ত্রী সভার আমলে
হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট গঠিত হয় তখন
হাওড়া ময়দানকে দু টুকরো করে দক্ষিণ
প্রান্তে তৈরি হয় দুটি ফুটবল মাঠ নাম দেওয়া
হয় ডালমিয়া পরিবারের আর্থিক সাহায্যে
তৈরি ডালমিয়া পার্ক । হাওড়া স্টেট ব্যাংকের দিকে তৈরি হয় সিমেন্টের পাঁচ থাকের স্টেডিয়াম ও শ্রীমার্কেট । শ্রীমার্কেটে স্থান দেওয়া হয় পূর্ব বাংলা থেকে আগত উদ্বাস্তু পরিবারকে । পরে ডালমিয়া পরিবারের সাহায্যে পাঁচিল দেওয়া হয় ও পরের সংলগ্ন মাঠটিতে (পূর্ব প্রান্তিক )
লোহার শক্ত ব্যারিকেড করা হয় । দুটি টিকিট ঘর করা হয় । হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট লিগ
প্রথম ও দ্বিতীয় ডিভিশন চালু হয় । মাঠের
মাঝে নতুন একটি রাস্তা হয় কদমতলার
দিকে যাওয়ার যেটি এখন চালু আছে ।
হাওড়া ময়দানের বাকি অংশ পড়ে থাকে
আদি হাওড়া ময়দান নাম নিয়ে । তখন
বঙ্কিম সেতু ছিলনা । এখন যেখানে হাওড়া
কোর্টের কাছে সেতুর একটি ভাগ নেমেছে ওই পর্যন্ত ছিল হাওড়া থেকে কলকাতা
যাওয়ার পুরাতন রেল‌ওয়ে বাকল্যান্ড ব্রিজ
যা সত্তরের দশকে চালু ছিল । বঙ্গবাসী
সিনেমার সামনে দিয়ে ট্রাম ও বাস রাস্তা
হাওড়া জেলা স্কুলের সামনে দিয়ে হাওড়া
জেনারেল পোস্ট অফিসের গা দিয়ে ব্রিজ
উঠে যেত কর্পোরেশন অফিসের সামনে দিয়ে । চার্চ রোডের পূর্ব দিকে কবরস্থান
ছিল । হাওড়া গার্লস কলেজের মূল দরজাটি
ও সেন্ট টমাস স্কুলের দুটি দরজাই লাগোয়া
ছিল হাওড়া কর্পোরেশন অফিসের পাশে ।
ডালমিয়া পার্কে শৈলেন মান্না চুনি বললাম
পিকে ব্যানার্জিরা খেলে গেছেন । হাওড়ার
লিগ ম্যাচে রবিবার টিকিট কেটে ঢুকতে হতো । তিনদিকে দাঁড়িয়ে ও একদিকে
ডালমিয়াদের করে দেওয়া খোলা
স্টেডিয়ামটি এখনও আছে মাঠের পশ্চিম
প্রান্তে । তখন বাগনান উলুবেড়িয়া ডোমজুড়
আমতা জুড়ে ফুটবল খেলা চালু ছিল ।
এমনকি হাওড়ার বড় বড় কারখানার ও
হাওড়া পুলিশের ফুটবল টিম ওই মাঠে
লিগ খেলতো । বছরের কয়েকটা রবিবার
হাওড়ার টিমের সঙ্গে মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল হাওড়া ইউনিয়নের টিকিট কেটে
খেলা হতো । ব্যাপক ভিড় হতো । এছাড়া
ক্রিকেট লিগ‌ও হতো দুটি মাঠেই । পুরাতন
হাওড়া ময়দাননেও স্থানীয় ক্লাবের ও পাড়ার ছেলেরা নিয়মিত ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতো । অনন্ত ১০/১২ টা টিম সেভেন সাইড খেলতে পারতো ইঁটের গোলপোস্ট
বানিয়ে । পুরাতন হাওড়া ময়দানে বঙ্গবাসীর
দিকে সার্কাস ও পরে হাওড়া ব‌ইমেলা চালু
হয় । তবে হাওড়ার বড় বড় রাজনৈতিক সভা সব‌ই হয়েছে ডালমিয়া পার্কে । ইন্দিরা
গান্ধী থেকে রাজীব গান্ধী ডালমিয়া পার্কে
সভা করে গেছেন । অমৃতবাজার পত্রিকার
শতবর্ষের একমাসব্যাপী অনুষ্ঠান হয়েছিল
ডালমিয়া পার্কের পশ্চিম প্রান্তের মাঠে ।
১৯৭৬ সালে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা কুন্তল
ভৌমিকের উদ্যোগে শিবপুর হেলথ সেন্টারের যুব উৎসব হয়েছিল ডালমিয়া
পার্কের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত । ওই
সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন সিদ্ধার্থ শংকর
রায় মৃত্যুঞ্জয় ব্যানার্জি ও ধনঞ্জয় ব্যানার্জিরা । ডালমিয়া পার্ক বাম আমলে এটির সংস্কার হয়ে নাম হয় হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন স্টেডিয়াম । এই সময়ে
ডালমিয়া পার্কে অফিস দোকান ও স্টেডিয়ামর আরও দুই দিক গড়ে ওঠে ।
এই সময়ে ক্লাব হাউস ও আন্তর্জাতিক
খেলা শুরু হয় সাবেকি হাওড়া ময়দানে । এই মাঠে পঞ্চাশের দশক থেকে এখানে হাওড়া জেলা লিগ চালু হয় । আগে পূর্ব ও পশ্চিমে দুটি মাঠ একসাথে ছিল । প্রধান মাটটির গোল পোস্ট ছিল পূর্ব-পশ্চিমে ও সঙ্গের সাবেক লাগোয়া মাঠটি ছিল উত্তর-দক্ষিণে গোল পোস্ট । প্রতিদিন
লিগ খেলায় জমজমাট থাকতো । বর্তমান
সরকারের আমলে মোহনবাগান ও হাওড়া
একাদশের খেলার মধ্যে দিয়ে দু বছর আগে
পূর্বতন ডালমিয়া পার্কের নাম হয়েছে
শৈলেন মান্না স্টেডিয়াম । এই মাঠে খেলে
কলকাতা লিগ কাঁপিয় গেছেন অশোক চ্যাটার্জি সুদীপ চ্যাটার্জি অমিয় ব্যানার্জিরা ।
এখন সুদীপ চ্যাটার্জি ও অমিয় ব্যানার্জির
স্মরণে এইমাঠের দুটি ব্লকের নামকরণ
করা হয়েছে ।

বুধবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ক্যালেন্ডার শিল্পী জে.পি.সিঙ্ঘল ©® অলোক কুন্ডু ভারতের এক অনন্য পেন্টারের নাম জে.পি. সিঙ্ঘল । হাইপার রিয়ালিস্টিক পেইন্টিংয়ের এক বিরল চিত্রভাবনার চিত্রকর । ভারতের চিত্রকলা শিল্পকে যিনি অনেক দিয়ে গেছেন । কোনো প্রথাগত শিল্প শিক্ষা যার হয়নি । তবু কিন্তু ইন্ডিয়ান গ্রেট আর্টিস্টের তালিকায় নিজের নাম সংযুক্ত করে গেছেন তিনি । মীরাটে ১৯৩৪ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । স্বশিক্ষিত শিল্পীদের তালিকায় তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো । মুখ্যত ভারতবর্ষের ট্রাইবাল জনগণের জীবনযাত্রার সচল এক চিত্রপট তিনি সৃষ্টি করে গেছেন । এছাড়া দেব-দেবী ও গ্রামীণ নিসর্গ তার চিত্রকলার মূল বিষয় ছিল। মুখ্যত তিনি ক্যালেন্ডার শিল্পী হিসেবে উঠে এসেছেন এবং তার অসংখ্য ছবির বিষয়বস্তু অদলবদল করে সেই ছবি সারা পৃথিবীতে আজ‌ও দেদার বিক্রি হচ্ছে । কোনোটা তার নামে , কোনোটা বেনামে । পাইরেসি আটকাতে তার পুত্র -" জে পি সিঙ্ঘল ফাউন্ডেশন" খুলে তার পিতার ছবির সংরক্ষণ ও প্রদর্শনীর আয়োজনের মাধ্যমে সারা দেশের কাছে এক শিল্পীর আদর্শকে বাঁচাতে চাইছেন । রাজা রবি বর্মার পর‌ই ভারতের ক্যালেন্ডার শিল্পের বাজারে জে পি সিঙ্ঘলের ছবির চাহিদা চলে আসছে । যা তিনি দেখেছেন যা ভেবেছেন তাই অবিকল তুলে এনেছেন তার ক্যানভাসে । বিশেষ করে দেহাতি ও আদিবাসী রমনীর শরীর শৈলীতে তিনি যে কীর্তি রেখে গেছেন তার তুলনা পাওয়া মুশকিল । মোট ২,৭০০ ছবি তিনি ক্যালেন্ডার শিল্পের জন্য দিয়ে গেছেন যার ঘুরেফিরে বছর বছর প্রিন্ট হয়েছে প্রায় ৮০ কোটির বেশি । তিনি তার ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হন এবং ৩৫ বছর ধরে ছবি আঁকার জগতে প্রতিষ্ঠিত থেকে গেছেন । জীবনের ৭৮ বছর বয়সে প্রথম ও শেষ প্রদর্শনী হয় মুম্বাইয়ের জে জে স্কুল অফ্ আর্ট ও জাহাঙ্গীর আর্ট গ্যালারিতে ২০১২ তে । যেখানে তাকে আর্টিস্টের স্বীকৃতি দেওয়া হয় । কারণ তিনি জীবনে কারো কাছেই আঁকা শেখেননি । কলেজে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা । প্রথম জীবনে হিন্দি ম্যাগাজিন ধর্মযুগে স্কেচ আঁকিয়ে হিসেবে যোগদান । এরপর ১৯৫৯ থেকে ১৯৯০ মুম্বাই শহরে তার কর্মজীবন কাটে । কলা সমালোচক প্রিতিশ নন্দী বলেছিলেন ভারতে জে পি সিঙ্ঘল একমাত্র শিল্পী যিনি শিল্পে নারীত্বকে সঠিকভাবে আয়ত্ত করেছিলেন । ভাবলে অবাক লাগে তার সময়ে টিভির সীমিত প্রেক্ষাপট ছাড়া ডিজিটাল ও কম্পিউটার বা ফটোশপ টেকনোলজির সাহায্য ছাড়াই তার ছবিতে গ্রামের ধুলোবালি রোদ অবিকল ধরা পড়তো । এমনকি মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি তৈরি করে দিতে পারতেন অবিকল সেট-সেটিং । এমনকি সত্যম শিবম সুন্দরমের জিনত আমনকে কীভাবে চরিত্র অনুযায়ী মেক আপ হবে তার চালচলন কীরকম হবে সেই বিষয়ে রাজকাপূর পর্যন্ত জে.পি.সিঙ্ঘলের সরণাপন্ন হয়েছিলেন । সঞ্জয় দত্তর রকির মহরত যে প্রেক্ষাপটে হয়েছিল তার ডিজাইন থেকে ফটোগ্রাফি সবটাই ছিল এই বিখ্যাত শিল্পীর নৈপুণ্যের প্রকাশ । এম এফ হুসেন পর্যন্ত গজগামিনী ও মীনাক্ষীর সময় তার পরামর্শ নিয়েছিলেন । ক্যালেন্ডার শিল্পী হিসেবে ব্রুকবন্ড থেকে পার্লে , বাজাজ এইসব বড় বড় কোম্পানির ক্যালেন্ডার কখন‌ও অন্য শিল্পীর কাছে ছবি আঁকাতে যায়নি , আমৃত্যু জে.পি.সিঙ্ঘল ছিলেন তাদের প্রিয় মানুষ । কোনো আর্ট কলেজে না পড়ে নিজে নিজে যে এরকম ছবি আঁকা যায় ভারতে সিঙ্ঘল সেই হিসেবে এক ব্যতিক্রমী শিল্পী যা জন্ম জন্মান্তরেও মেলেনা । সাধনাতেও মেলা কঠিন । আদিবাসী রমনীর রূপ লাবণ্য যেন কোনো এক ঈশ্বরের অবদান । প্রচুর ছবি তার বেহাত হয়ে গেছে তবু তার ২৭০০ র কিছু বেশি ছবিতে সিগনেচার পাওয়া গেছে । এই শিল্পীকে প্রণাম আমার ।

রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Poetry of alok Kumar Kundu

(ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট )
হারের দুঃখ হাসিতেই অবিরল
অলোক কুন্ডু ©

আজকে জেতা সবার হৃদয় যেন
দলের জার্সি পরেই ছিলেন আগে
খেলোয়াড়ীর দিল দরিয়া হাতে
আদর দিলেন প্রতিটি পুরুষ কাঁধে ।

এই পৃথিবী দেখলো দুচোখ ভরে
দেশের প্রধান খেলার কাছে ছোট
স্নেহের হাতে মায়ের সান্ত্বনাকে
তুলে ধরলেন বিশ্বকাপের মাঠে ।

এই পৃথিবী দেখলো নতুন কিছু
হারের দুঃখ হাসির বিভিন্নতায়
জয় করলেন সারা পৃথিবীর মন
এই মহিলা শুধু প্রেসিডেন্ট নন ।

রাজকুমারদের মুষড়ে পড়া গালে
একে একে এঁকে দিলেন জিত
প্রেসিডেন্টের জলাঞ্জলি দিয়ে
ভূবনজুড়ে নামিয়ে দিলেন মেঘ ।

অঝোর ধারায় ফুটবল বুঝি কাব্য
দূরে বসেও আমাদের চোখে জল
বৃষ্টি ধারায় ফুটবল মাঠ‌ও ভাসছে
হারের দুঃখ হাসিতেই অবিরল ।

শুক্রবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৮

Poetry of Alok Kundu

একটি কাল্পনিক পতাকা উত্তোলন
অলোক কুন্ডু

এমন ভাবখানা দেখালেন যেন আপনি ও আপনারাই স্বাধীনতা এনেছেন
এমন বিরক্ত ভঙ্গিতে পতাকা তুললেন
যেন পতাকা নয় আপনারাই সিপাহি এদেশের ।

দড়িটা ঠিকমতো খুলছিল না বলে
প্রাইমারির মাষ্টারমশাই বেচারাকে
মনে করলেন আপনার বাড়ির চাকর
আপনার তাকানোয় স্বাধীনতা গুমরে উঠলো ।

কাদায় আপনার নতুন জুতো জোড়ায়
দাগ লেগে গেল বলে বেজায় বিরক্তিতে
ওদের দেওয়া চা মিষ্টি ছুঁয়েও দেখলেন না
ক্লাস ফোরের মেয়েটা ফিরিয়ে নিয়ে গেল ।

পতাকার মাঝে বাঁধা ফুলগুলো ছড়ায়নি কেন
এই কৈফিয়তে মাষ্টারের কান লাল তখন
মিহি গলায় তবু সম্মান দিতে কার্পণ্য ছিলনা কিছু
লা-ওপালার কাপ ডিস কিনে এনেছিলেন যত্নে ।

আপনার ধোপদুরস্ত পোশাক থেকে
সুগন্ধিগুলো ঠিকমতো ছড়াচ্ছিল কি না
আর সেই গন্ধে আশপাশ কেমন ম ম করছিল
তাও যাচাই করে নিচ্ছিলেন সুদক্ষ নিরিক্ষায় ।

জোড়হাত করে এতক্ষণ যে ছেলেমেয়েগুলো
দাঁড়িয়েছিল অবাক বিস্ময়ে গাইছিল গান
তাদের দিকে একবারও ফিরে তাকালেন না
আপনার বক্তৃতায় ১৯৪৭ থেকে ২০১৮ চলছে ।

তটস্থ দাঁড়িয়ে তখনও প্রাইমারির ছেলেমেয়েগুলো
আপনার বক্তব্যের উচ্চারণ ততক্ষণে
পেরিয়ে যাচ্ছে মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত
মাইক দেখে ঢুকে পড়া আগুন্তকদের কাছে ।

একটা তেরঙ্গা কাটা ঘুড়ি সভার কাছে আসতেই
ছেলেমেয়েগুলো লাইন ভেঙে দিল হুড়মুড় করে
উপস্থিত সকলকে অবাক করে কাটা ঘুড়ি তখন
পতাকার সাথে জড়িয়ে উড়তে শুরু করেছে  ।

আপনি তবুও বলে চলেছেন স্বাধীনতার মানে
বলে চলেছেন সংবিধান থেকে শিক্ষা
স্বাস্থ্য থেকে সিয়াচেন সম্প্রীতি থেকে সততা 
সভ্যতা না শৃঙ্খলা কোনটা বেশি দামি ।

প্রসঙ্গের অবতারণায় তালগোল পাকিয়ে দিচ্ছিল অভিভাবকদের মুখ থেকে মুখ
গোবেচারা মানুষ গুলো কীভাবে জানবে এইসব
আপনিও ঘেমে নেয়ে ততক্ষণে থামিয়ে দিয়েছেন

৭২ বছর ধরে শুনে যাওয়া সেইসব কথাগুলো
ততক্ষণে পতাকা থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়া কাটা ঘুড়ির মতো বাতাসে লাট খেতে লাগলো
ছেলের দল চিৎকার করে উঠলো--ভো কাট্টা ।
® অলোক কুন্ডু

বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৮

Poetry of Alok Kundu

(ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট )
হারের দুঃখ হাসিতেই অবিরল
অলোক কুন্ডু ©

আজকে জেতা সবার হৃদয় যেন
দলের জার্সি পরেই ছিলেন আগে
খেলোয়াড়ীর দিল দরিয়া হাতে
আদর দিলেন প্রতিটি পুরুষ কাঁধে ।

এই পৃথিবী দেখলো দুচোখ ভরে
দেশের প্রধান খেলার কাছে ছোট
স্নেহের হাতে মায়ের সান্ত্বনাকে
তুলে ধরলেন বিশ্বকাপের মাঠে ।

এই পৃথিবী দেখলো নতুন কিছু
হারের দুঃখ হাসির বিভিন্নতায়
জয় করলেন সারা পৃথিবীর মন
এই মহিলা শুধু প্রেসিডেন্ট নন ।

রাজকুমারদের মুষড়ে পড়া গালে
একে একে এঁকে দিলেন জিত
প্রেসিডেন্টের জলাঞ্জলি দিয়ে
ভূবনজুড়ে নামিয়ে দিলেন মেঘ ।

অঝোর ধারায় ফুটবল বুঝি কাব্য
দূরে বসেও আমাদের চোখে জল
বৃষ্টি ধারায় ফুটবল মাঠ‌ও ভাসছে
হারের দুঃখ হাসিতেই অবিরল ।

সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১৮

অলোক কুন্ডুর কবিতা Poetry of Alok Kumar Kundu

ওইটুকু অনীবার্য জেনো / অলোক কুন্ডু ©

প্রশংসা আমাকে ছুঁতে পারুক না পারুক
তাবলে প্রশংসার দাবিদার কখন‌ও ন‌ই
হাততালি কেবলমাত্র গোষ্ঠী তৈরি করে
যেখানে যেখানে অবিরাম হাততালি পড়ে
সেখানে বহুকাল মাড়িয়ে দেখিনি ।
যুক্তির বাইরে কোনো আনন্দ থাকেনা
আমার ভালো থাকাটা আর্থিক নয় গো
তোমরা যেখানে কবিতা পড়ে আনন্দ পাও
ওইসব মঞ্চ কিছু দিতে পারতো যদি
আমিও যেতাম ভরপুর আনন্দ বাজাতে ।
হাততালিগুলো বড় সাজানো মনে হয়
এক‌ই মঞ্চে হাততালি ভিন্নতর
তাই ওইসব নয় কাগজ কলমে থাকো
আনন্দের সমস্ত উপকরণ ওইখানে
ওই আনন্দে কার‌ও সাহায্য লাগেনা
ওখানে মুক্তির আনন্দ এত বিরাট যে
হাততালি পাওয়ার জন্য লোক লাগেনা
হাততালি পাওয়ার কোনো গোষ্ঠী নেই ওইখানে
মুক্তির আনন্দ কোথায় খুঁজতে যাবে বলো
তোমার নিরাপত্তা হলো লিখতে পারা
লেখা যেন কখন‌ও ক্রীতদাস না হয় ।
তোমার লেখা কখন‌ও যেন আজ্ঞাবহ না হয় তোমার ভালো থাকার অর্থ খাতা কলম
যাই মনে ভাবোনা কেন অনেকে কিন্তু ভালো নেই
স্বাধীনতার বাতাস বুকে খেলে যায় যেদিন
সেদিন আমি একটা কবিতা লিখতে বসি
একটা কবিতার জন্য বসে থাকি অনেক সময় ।
কিন্তু যে স্বাধীনতার কথা বলতে চাই
সেটা শুধু সাফল্যের নয় ওইটুকু দরকার
ওইটুকু স্বাধীনতা না পেলে কবির মৃত্যু হয়
চিন্তার স্বাধীনতা থেকে লিখতে পারার স্বাধীনতা
ওইটুকু বড় দরকারি ওইটুকু অনীবার্য জেনো ।

রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১৮

Poetry of Alok Kundu -Rain

বৃষ্টি/ অলোক কুন্ডু

কাল থেকে যত বৃষ্টিরা
এদিকের পথে এসেছিল
আজ তারা সব ঝমঝম্
যেন হ্যান্ডমেডজুড়ে জলরঙ ।

মেঘ জড় হওয়া সকালে
ছাতা যত তত রকমারি
কার‌ও কার‌ও ঘুম ভাঙেনি
কোনো ভোর এসে ডাকেনি ।

যত বৃষ্টির জলে লহরি
তত অর্গানে সুর ভাসছে
ফেসিয়াল মোছা বালিশের
আড়মোড়া মেঘমল্লার ।

যত জল ট্রাম রাস্তায়
কেউ ভিজছে কেউ পস্তায়
উত্তর জানতে চেওনা
বারান্দা যেন গান গায় ।

যতখানি মেঘ জমেছিল
আর‌ও বেশি তার ধারাজল
কারো বুকে জল জমেছে
এফ‌এমেতে স্বর মল্লার ।

কেউ কাঁচখানি সরাবেই
কারও চোখে ঘুম জড়িয়ে
একদিন আজ এইদিনে
চিঠি লিখেছিল কেউ কাউকে ।

সেই ভেজা চিঠি নৌকোয়
হুহু ধারাজল উজানীর
যতখানি যেতে পারবে
ভেজা ভেজা পিচ রাস্তায় ।

আজ‌ও বৃষ্টিরা অবিরাম
সাথে ট্রামগুলি ভিজছে
মেঘজড় হওয়া সকালেই
ধ্বনিতে রাগ-মল্লার ।

© অলোককুমার কুন্ডু

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...