বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর কবিতা :: Poetry of Alok Kumar Kundu

কী বৃষ্টি তোমাকে ভেজালো বল তো
অলোক কুন্ডু

কী বৃষ্টি তোমাকে ভেজালো বল তো
এমন কি তোমার শাড়ির আঁচলও
কী সৃষ্টি তোমার ওই মুখের আদলে
যে আমিও ছাতা ভুলে যাই এই বাদলে

কী বৃষ্টি তোমাকে ভেজালো বল তো
যে তুমিও নীরবে একলাই ভিজবে
কী এমন শ্রাবণের জ্বর জ্বর দুগালে
যে আমাকেও ঠিক তেমনি ভেজালে

কী বৃষ্টি তোমাকে ভেজালো বলতো
যে আমিও ফুলছাপ ছাতা আর ধরিনি
এ দোষ আমার শুধু বৃষ্টিকে ধরোনা
এ দুঃখ ভাসে আজ শুধু বৃষ্টির জন্যে

কী বৃষ্টি তোমাকে ভেজালো বলতো ?
© অলোক কুমার কুন্ডু

রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর কবিতা বৃষ্টি-১৬

বৃষ্টি -১৬ / অলোক কুন্ডু

সিডিতে কোথাও বাজছে বৃষ্টি
বকুলতলায় কলকলে জল
এখনো কারো ঘুম ঘুম চোখ
ঝাপসা শার্সি কার আঁকে মুখ

তোমার পায়ের পাতা ভিজছে
আমার পাড়ায় ডুবছে শহর
দোপাটির রঙ শুধু জল চায়
পরী ভিজে যায় ভিক্টোরিয়ায়

সমস্ত মেঘ ডাকছে আমায়
ওরে অভাগা বাইরেতে আয়
তোমার ছাতায় বৃষ্টি পড়ছে
আমার পাড়ায় ডুবছে শহর ।

রিংটোন ঘিরে সুরের বৃষ্টি
মেসেজ রুমে সবুজ আলো
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে আরও আয়
মেঘসাজা হয়ে বেরিয়ে পড়ো ।

ফুলছাপ ছাতা নাই বা নিলে
বারান্দাটায় একটু দাঁড়াও
তোমার মুখে ঝাপটা জলের
আমার পাড়ায় ডুবছে শহর ।

শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর কবিতা - বৃষ্টি

বৃষ্টি / অলোক কুন্ডু

ফুটপাথ ধরে বৃষ্টির
বাহারি ছাতার বৈভব
মেঘ জড় হওয়া সকালে
ট্রামের ঘন্টা বাজছে ।

বৃষ্টির জলে রিমঝিম
অর্গানে সুর ভাসছে
ট্রাম থেকে কেউ নামছে
ফেসিয়াল ধুয়ে ধেবড়ে ।

কেউ কেউ দূরে ভিজছে
চুপকথাগুলো প্রশ্নের
কেউ উত্তর চেয়ে আজ
শ্রাবণের গান গাইছে ।

যতখানি মেঘ জমছে
ততখানি কেউ নীরবে
পিচরাস্তায় হাঁটুজল
কারো বুকে জল জমছে ।

কেউ কাঁচখানি সরাবে
কারও মুখে ঘুম জড়িয়ে
একদিন কেউ কাউকে
চিঠি লিখেছিল আজকে ।

সেই ভেজা চিঠি নৌকো
হুহু ধারাজল বাইছে
যতখানি যেতে পারবে
ডুবডুব পিচ রাস্তায় ।

ট্রামগুলি সাথে ভিজছে
আজও বৃষ্টি অবিরাম
মেঘজড় হওয়া সকালেই
বাহারী ছাতার মরসুম ।

© অলোককুমার কুন্ডু

সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭

poetry of alokkundu1302@gmail.com

ভারতবর্ষ কোথায় ছিলি বল / অলোক কুন্ডু

সারা গায়ে ময়লা যেন কয়লা
ধুলো কাদায় খড়ি উঠছে গায়ে
সঙ্গী তার কুকুর বিড়ালছানা
এক ভিখিরি মানুষ করেছিল
নিভিয়ে আলো জীবন প্রদীপ
জন্ম দিয়েই কবে চলে গেছে মা
সাবান দেওয়া শেখায়নি কেউ
লেখাপড়া কোনদিনই হয়নি
দেখতে বুঝি ভূতের মতো ঠিক
রাত বাড়লে ফেলা ভাতের সাথে
হোটেল থেকে দেয় একটু ঝোল
ভাগ করে নেয় পুষ্যিগুলো সাথে
কুকুরগুলোর মাঝে শুয়ে রাতে
পাহারা দেয় সারাপাড়ায় জেগে
হঠাৎ সেদিনে সরকারি লোক
গুণতে এলো স্বচ্ছ ভারত থেকে
জিজ্ঞেস করলো কী জাত তোর
এখন থেকে স্বচ্ছ ভারত মানবি
কেউ বললো হিন্দুর ছেলে জানি
কেউ বললো না ও মুসলমান
সকাল থেকে রাত অবধি হৈচৈ
তার মধ্যে ঘেউ ঘেউ ঘেউ মিঁউ
সারাপাড়া কাঁপতে থাকে চিৎকারে
সারাদিনে খালিপেটে জেরবার
ভিড় বাড়লো সকাল থেকে রাত
পুলিশ এলো খবর দিল টিভি
ভিড় থেকে এক ভিখিরি এলো
বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে কাঁদলো
অনেকক্ষণ  । মাথায় জটাজুট
বললো ভারতবর্ষ কোথায় ছিলি বল ?
© অলোক কুমার কুন্ডু

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে আনন্দকে

আনন্দে জাগরীর জাগ্রতকরণ / অলোক কুন্ডু
***************************************
একটি পোস্ট সংযম নষ্ট করেছে বলে আজ
দোষ পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । এই মিডিয়ায়
একক ভাবে একটি মাত্র ব্যক্তির দ্বারা তার মত
ছড়ায় । এই কারণে অন্যেরা সেয়ার না করলে
আর কাউকেই দায়ী করা যায়না । এই মিডিয়ার
বন্ধুত্বটাও অনেকটা আকাশকুসুম । অনেকেই
অচেনা তাই বিরক্তিকর পোস্টের দায় কেউ
যেচে নেননা । অপসংস্কৃতির পোস্টসমগ্র এই
মিডিয়া চেপেও যায় এবং তাকে প্রোমোটও
করেনা । কিন্তু মানুষের ব্যক্তিগত বঞ্চিত হওয়ার
বিষয় তার ব্যক্তিপোস্টে পড়লেও পড়তে
পারে । এখানে উল্লেখ্য যে সমাজ সংস্কারক
হিসেবে সব সময়েই খবরের কাগজ ও টিভির
একটা ভূমিকা থাকলেও থাকতে পারে । কিন্তু
এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা নগণ্য দেখা গেছে ।
তবুও সামান্য একটি  WAP/ FB থেকে
একেবারে একটা লঙ্কাকান্ড ঘটে যে যাবে এটা
ভাবতে কেউই পারেননি । যা হয়েছে তার
সমাধান মন্দির মসজিদের মধ্যে আলোচনা
করে মিটিয়ে নেওয়ার এ কোনো পথ নয় ।
তাছাড়া কোনো একটা এলাকার বিষয়ও নয় ।
আমার তো মনে হয় , কোনো ধার্মিক হিন্দু-মুসলিম
বা সাধারণ নিরীহ মানুষ কেউই এরকম
হল্লামার্কা হুলিগানি এবং আগুন লাগানো
কুরুচিপূর্ণ কাজে মদত দেবেননা এবং
পরোক্ষভাবে যুক্ত হতেও পারেননা । হীনকাজ
সমাজের বিঘ্ন ঘটায় । কিন্তু কোনো কুরুচিকর
পোস্টের বিরুদ্ধেও এই মিডিয়া সজাগ থাকে ।
যে শান্তি মানেনা তার শাস্তি একান্তই কাম্য ।
আজ আনন্দ -তে জাগরীর লেখা পড়ে মনটা
খারাপ হয়ে গেল এবং এই লেখাটা আমার
মনে হল অর্ধসত্য কারণ ফেসবুকে জাগরীর
থেকেও ভালো গদ্য  পাওয়া যায় । এই
মিডিয়া সারা পৃথিবীতে চলছে । সমাজের
ভিত নড়বড়ে হয়ে গেলে মানুষের বিভিন্ন
আচরণে অভিনয়মার্কা লোকদেখানো ব্যবস্থা
আগ্রাসী হয়ে পড়ে এতে কোনো গোষ্ঠীর দোষ
তবু মানা যায় এতে Wap এর কী দোষ ?
মানুষের সততার শিক্ষা কোথায় আছে । একটা
বালক একটা কিশোর যদি ঘরে-বাইরে সব
সময় লুম্পেনদের দেখে বড় হয়
পাড়ায় পাড়ায় মদের ঠেক দেখে বড় হয় তবে
সেই কিশোর তবে কোন শিক্ষা পাবে । চরিত্র
গঠনের শিক্ষা পাড়া পড়শি থেকে গড়ে ওঠে ।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আগ্নেয়গিরি চলছে বস্তুত
পক্ষে ২০১২-১৩ থেকে । কেন ? আপনার লেখায় সমাধানের পথ নেই । শান্তির বাণী নেই কেন ?
সবটা যে ঢঙে লিখেছেন একটা অস্পষ্ট কথন ।
একটা প্যারায় সংযম ও সহিষ্ণুতার কথা শুধুমাত্র
ভাষার মারপ্যাঁচে গ্যাস বেলুনের মতো ছেড়ে
দিয়েছেন --জাগরী । সত্যি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের
পর আর টানাটান গদ্য লিখিয়ে পেলামনা ।
জাগরী লিখেছেন -" যা ঘটে গেল তা থেকে
যদি না শিক্ষা নিই " আরে এই সাধারণ কথাটা
এই হীন লেখকেরও তো জানা আছে ।
ইতিহাসের ক্ষমা না করা দেখতে দেখতে আমরা
তো মরেই যাবো । এতদিন মিডিয়া ও কাগজ
কীভাবে চলছিল তাদের কোনটা কাজ । ঘটনার
পর দেশলাইয়ের ছবি দিয়ে কলম লেখা ? কাগজ
যথার্থ ভূমিকা নিলে হোয়াটস অ্যাপ বা ফেসবুক
থেকে কিছু হতে পারতো বলে আমার বিশ্বাস হয়না
যা হয়েছে সেটা নেট ছাড়াও হতে পারতো ।
প্রশাসন আগে নিরপেক্ষ হোক তাহলে ভালো
মানুষরা প্রসাশনকে সব আগাম খবর দেবে ।
নকশালদের গতিবিধি সাধারণরা পোস্টকার্ডে
লিখে পাঠাতো । ধর্ম তো এখানে সুলভ হাতিয়ার
যারা পাড়ায় মস্তানি করতে চায় কব্জায় রাখতে
চায় আরও বড় নেতা হতে চায় তারা চাইলে
জাগরী দেবীর হাত দিয়েও কিছু অন্যায় কথা
লিখিয়ে নিতেও পারেন ! লুম্পেনদের জাত
একটাই , তাদের ধর্ম হলো রাজনৈতিক দলে ভিড়ে
যাওয়া । জাগরী দেবী তাঁর লেখায় অতি নিরীহ
আকারে রাজনীতর দোষ দিয়েছেন এবং মূল দোষ
সোশ্যাল মিডিয়ার ঘাড়ে চাপিয়েছেন । এখন
পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক দলের
অস্তিত্ব নেই তেমন । তাই সমাজ সংস্কারক
হিসেবে বিরোধী কোনো দলের কথা জাগরী
জানলেন কীভাবে কী সেই প্যারামিটার ?
বিরোধীদের কোনো মতামতও তার লেখায়
নেই - এ প্রসঙ্গ জাগরী খুঁজেও পাননি ।
বিদ্যাসাগর রামমোহন দেশবন্ধু যতীন দাসরা
বহুকাল এখানে জন্মাননি । এমন কেউ নেই
যাঁকে দেখে সমাজ তৈরি হবে । বরং ফেসবুক
বহুভাবে সমাজ সংস্কারক রূপে কথা বলছে
তার অনেকটাই রাজনীতিহীন । এই যুগে যে
সব ছবি ক্লীপিং ও উদাহরণ নিয়ে জাগরী
আমাদের জাগ্রত করতে চাইছেন তা কীভাবে
আজকের দুনিয়ায় বন্ধ করা যাবে ? জাগরী তা
আমাদের থেকেও বেশি জানেন  । আসলে
জাগরী প্রভুত্বের প্রকাশ করেছেন । সোশ্যাল
মিডিয়া যা সম্প্রীতি ছড়িয়েছে আমার সেই আনন্দবাজার তা পারেনি । সেইসঙ্গে আনন্দের
প্রথম পাতা অসহিষ্ণুতায় ভরা । সংযমের দুই
পিঠ আজ আমার খবর কাগজের...

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...