রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

আমাদের জাতীয় সংগীত 🌏 অলোক কুন্ডু


⛔ শান্তিদেব ঘোষ তাঁর বিস্তৃত লেখালিখিতে বলে গেছেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত অনেকগুলি। 

⛔অলোক কুন্ডু

• • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • • •
• সম্প্রতি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত সম্পর্কে কোনও বক্তার মন্তব্যের পর আনপড় লোকেদের চর্চায় গেল গেল রব উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে শান্তিদেব ঘোষ সকলের পড়ে নেওয়া উচিত।
(এই লেখা শেয়ার করুন ক্ষতি নাই কিন্তু আমি লেখার আগে এ প্রসঙ্গে আর কেউ লেখেননি। তাই টোকাটুকি করবেন না) আমাদের মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা ও স্বদেশী আন্দোলনে দেশ মাতানো জাতীয় সঙ্গীতগুলি কিন্তু জাতীয় সঙ্গীতের স্বীকৃতি পায়নি। 

• শান্তিদেব ঘোষ তাঁর বিস্তৃত লেখালিখিতে বলে গেছেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত অনেকগুলি। 
মূলত ঠাকুর বাড়ির উদ্যোগে হিন্দুমেলার চল হয়েছিল। 

• ১৮৭৬ সালে, হিন্দুমেলার উদ্যোগে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের সমগ্র গান প্রকাশিত হয়েছিল, " জাতীয় সঙ্গীত " বইটি। 

•সেই পুস্তিকের জাতীয় সঙ্গীতগুলি লিখেছিলেন, দ্বিজেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, গুণেন্দ্রনাথ, গোবিন্দচন্দ্র রায় প্রভৃতি। ভারতমাতা সুরেন্দ্রবিনোদিনী, সরোজিনি-নাটক, নীলদর্পণ প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত হয় মোট ২৯ টি জাতীয় সঙ্গীত।

•শান্তিদেব ঘোষ বলেছেন, এইসব গানে অন্য দেশের সঙ্গে স্বদেশের তুলনা ও নিজের দেশের প্রাচীন হিন্দু গৌরবের কাহিনী বর্ণনা ক'রে ক্রমাগত দেশবাসীকে উদ্বোধিত করার চেষ্টা হয়েছিল। হেমচন্দ্র চন্দ্রের, "বাজ্ রে শিঙা এই রবে।" গোবিন্দচন্দ্রের, " কতকাল পরে ভারত রে। " সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের, " মিলে সবে ভারতসন্তান। " এই গানটি সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের প্রশস্তি ছিল। বঙ্গদর্শনে তিনি বলেছিলেন, " গানটি ভারতের সব জায়গায় ধ্বনিত হোক--"বিংশতি কোটি ভারতবাসী", ভারতবাসীর হৃদয়-যন্ত্র ইহার সঙ্গে বাজিতে থাকুক। শান্তিদেব ঘোষ আরও বলেছেন, সঞ্জীবনী সভা উপলক্ষে গুরুদেব যে গানটি রচনা করেছিলেন সেই, " একসূত্রে বাঁধা আছি। " গানটি স্বদেশী চিত্তের উন্মাদনা, সঙ্ঘবদ্ধতার শক্তি ও জীবন-পণের দৃঢ়তা সেই গানে সুন্দর প্রকাশভিবে পেয়েছে। স্বদেশ পর্যায়ের গানের মধ্যে, " একসূত্রে বাঁধা আছি। " গানটিই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা। তবে গুরুদেব তাঁর রচনার অনেক গুলো গান বাদ দিয়েছিলেন। বাংলা ১২৯১ সনের মাঘোৎসব উপলক্ষে গাওয়া গান, " শোন শোন আমাদের ব্যথা। " পরে জাতীয় সঙ্গীত বইতে স্থান পেয়েছে। 

•১২৯৩ (বাংলা) কংগ্রেস অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সঙ্গীত, " আমরা মিলেছি আজ মায়ের ডাকে।" রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দেমাতরম্-কে সুপ্রচলিত করেন। রবীন্দ্রনাথ, 

•১২৯২ (বাংলা)-এ। বঙ্কিমচন্দ্রের উপস্থিতিথে রবীন্দ্রনাথ সর্বপ্রথম সুর রচনা করে শুনিয়েছিলেন এবং পরে বাংলা ১৩০৩-এ রবীন্দ্রনাথ, কংগ্রেসের সভায় নিজে গান। এর পর থেকে বন্দেমাতরম্-এর ব্যাপক প্রচার হয়। 
আশ্চর্যজনক বিষয় বঙ্কিমচন্দ্রের সুরারোপিত বন্দেমাতরম এখন আর কোথাও শোনা যায় না। আবার বঙ্কিমচন্দ্র রবীন্দ্রনাথের দেওয়া সুরের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। ১৩১০-এ রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সঙ্গীত পর্যায়ের গান ( স্বদেশ)  অয়ি ভূবন-মনমোহিনী, কে এসে যায় ফিরে ফিরে, আজি এ ভারত লজ্জিত হে, জননীর দ্বারে আজি ঐ, নব বৎসরে করিলাম পণ, হে ভারত আজি নবীন বর্ষে। শান্তিদেব ঘোষ বলেছেন, এই কটি গুরুদেবের জাতীয় সঙ্গীত। ১৩১২ তে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে, " এবার তোর মরা গাঙে বাণ এসেছে। " গানটি সম্পর্কে রামেন্দ্রসুন্দর বলেছিলেন, এ গান শুনে গঙ্গা বক্ষে ঝাঁপাইয়া পড়িবার উন্মাদনা সৃষ্টি হইয়াছিল। 

•১৩১৮ সালে রচিত রবীন্দ্রনাথের নৈবেদ্য কাব্যে ভগবানের কাছে নৈবেদ্য উত্থিত করে এই গানের রচনা। পরবর্তীতে সেই গান, " জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে... " আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। 

⛔ ©® অলোক কুন্ডু। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...