সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

সরস্বতী ভাবিনি / অলোক কুন্ডু

যে তবে নিষ্ঠাভরে
ছেঁড়া কাগজ কুড়োয় প্রতিদিন
উকুনে ভর্তি এলোমেলো চুল
বালিকার রূপেগুণে
বই বলে কোনো বস্তু
তারও হয়তো কোনোকালে ছিলো
সরস্বতী তার কাছে
খুব জোর প্রেত কিংবা ধনীর পুতুল 

কোনোদিন ভাবেনি কেউ
সেও এক সরস্বতী বালিকা
ফুটপাতে রাত হলে টেনে ধরে
নিখাদ শরীর কাপালিকে
কান্নাগুলো গোঙানির মতো
প্রতিধ্বনি হয় হাহাকারে
সমস্ত শরীর বেয়ে রক্তস্রোতে
মন্দ তাকে ছেঁড়া বই দেয় ।

মাঘ মাসে সেও যেন শেখে কিছু
সরষে ক্ষেতের কাছে
নরক জঞ্জাল থেকে
উপচে পড়ে কিট গ্রাসের সমুখে
মলিনতা দায়ী করে
কিশোরী থেকে যুবতী সময়
সমূহ আলোর কাছে
তবু কেন তাকেই সরস্বতী ভাবিনি
© অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

ইমোশনগুলো ট্যাগ হতে হতে
অলোক কুন্ডু

ইমোশনগুলো ট্যাগ হতে হতে
মেমরি কার্ডের ভাঁজে
কোটেশনগুলো এসএমএস হয়ে
জমতে জমতে পাথর ।
তিল ছিলো কি না তুলতুলে গালে
ডিজিটাল অনুভবে
অরিগামি "প্লেন" ততটা গিয়েছে
লাবডাব যত বুকে ।
জানলার কাঁচ ভিজেছিল কি না
ঝাপসা ঝাপসা নীরবে
ভাইব্রেড করা অনুভূতিগুলো
সাইলেন্ট ছিল মুখে
রেকর্ডেড যত রিপিট ভয়েস
হাতের মুঠোয় ঘেমেছে
মেসেজ বক্সে বরফ জমেছে
দূরত্ব কোনো শীতে ।

© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

আমার সুভাস / অলোক কুন্ডু

আমার সুভাষ রাত পেরিয়ে
স্বদেশ ছাড়লো যেদিন
সেদিন থেকেই স্বাধীনতা
বুঝি আমায় ঢেকেছে মুখ
আমরা বুঝিনি দলে দলে গেছি
নেতাজির ছবি বুকে
কদম কদম বাড়িয়ে দিয়েছি
প্রভাত ফেরির মুখে ।
যখন বুঝেছি দেরি হয়ে গেছে
ভুল হয়ে গেছে বেশ
উপঢৌকনে তেইশে জানুয়ারি
ভরিয়ে দিয়েছি ফুলে
রাশিয়ার জেল তাইহুক থেকে
জাপান কোহিমা ঘুরে
কমিশন তোমাকে লুটেপুটে
শুধু লালিপপ দিয়ে গেছে
বুকের বাতাসে শ্বাসপ্রশ্বাসে
এখনও প্রহর গণি
কদম কদম বাড়ায়ের কাছে
আজও তেমনি ঋণী
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

সেলাম সুভাষ নীতি / অলোক কুন্ডু

কারাগারে যত গেছেন সুভাষ
নদীতে বেড়েছে স্রোত
বিদেশী জিনিস "আগুনে পোড়াও"
বেড়েছে আমার বোধ
এদেশের এই " পাঁক-রাজনীতি "
তাঁকেও দেয়নি মাটি
দেশবন্ধুর স্নেহের সুভাষ
অপমানে তবুও খাঁটি  ।
যতবার পড়ি গান্ধি তোমাকে
বিষ যেন পান করি
সেই হলাহলে পুড়ে যায় আমার
জীবনের পরমায়ু
ভেতরে ভেতরে ব্রিটিশ ভজনা
সুভাষ নীতিতে জল
সুভাষ হঠাও ভারত বাঁচাও
-- এ তোমার বড় ছল
যতীন দাসের প্রাণত্যাগে
খাটো করেছিল --চুপ
ক্রিমিনাল বলে ধুয়ো তুলেছিলে
এমনি তোমার রূপ
সুভাষ নীতিকে পুড়িয়ে দিয়েছো
হায় রাম হায় রাম !
পূজনে আমার সুভাষচন্দ্র
এক বীর সুবহ- শাম ।
সেলাম যদি করতেই হয়
সেলাম সুভাষনীতি
গীতার শিক্ষা কাজ যদি না দেয়,
সে কেমন তবে গীতি ।
© অলোক কুন্ডু

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

কী তবে সৌন্দর্য কে বেশি তুমি  অলোক কুন্ডু

কার জন্য ভারমিলিয়ন দিগন্ত বিস্তৃত
কাকে বেশি ভালো লাগে কে বেশি সুন্দরী
সে কথা কি অন্তরের নিবিড়তা জানে
সৌন্দর্যের অপূর্বতা না নারীর গড়ন
কোনটা নারীর আর কোনটা তোমার
আসলে তুমি না কোনো সরস্বতী রূপ
কী তবে সৌন্দর্যনির্মাণ কে বেশি তুমি
চৈতী গানের সুরে যে মন কেড়ে নিত
সে কি তবে নান্দনিক আরও বেশি করে
দুপুরের রোদ চিরে কিশোরের চোখে
কিশোরীর জন্যে ওড়া রোদ চেরা ঘুড়ি
তার সে সৌন্দর্যখানি জানাতে পারিনি
সে অমূল্য রূপ যেন রূপকথাময়
কলেজ গেটের ধারে স্মার্ট সিগারেটে
জিনসের নীল রঙ ছিঁড়ে দিয়েছিল
ছেলেটার বুকে ঝুঁকে ইটালিক মেয়ে
সে কি তবে সব থেকে দুর্গম সুন্দরী  ?
না কি যার সাথে সবে কাল দেখা হয়েছিলো
পুরুষের খোঁজাখুঁজি তচনছ করা
নিবিড় তুলিতে কোনো আঁকেনিকো চোখ
চুল তার এলোমেলো প্রভাতকুসুমে
চন্দনবনের গন্ধ গায়ে মাখামাখি
কথা তার ঠিক যেন অবিরল নদী
বাইজেনটাইন আর্কিটেক্ট বেদুইন কে
কী তবে সৌন্দর্যবোধে কে সে তুমি
কার মুখে সেই থেকে আজও চেয়ে থাকি ।
© অলোক কুন্ডু

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর গদ্য

আসুন আমরা গান্ধীজিকে পাপ মুক্ত করি
নামাঙ্কিত মেট্রো স্টেশনে উঠে দাঁড়াই
============================

গতকাল ফেসবুকের একটি পোস্টে এক ব্যক্তি
যতীন দাসের অনশন বর্ণিত করে সুন্দর একটি
পোস্ট করেন  । যতীন দাস লাহোর জেলে ৬৩
দিন অনশন করার পর ৬৪ দিনের দিন
শহীদ হন । দেখলাম এক ব্যক্তি সবজান্তা লিখেছেন -
" গান্ধীজি যতীন দাসের উপবাসটি শুধুমাত্র
মানেননি " । সেই ব্যক্তি তাঁর নিজের মতের পক্ষে
কোনো আর তথ্য দেননি ( ভাবখানা খানিকটা
কাঁধ ঝাঁকানো ব্যাপার , আমার যেন মনে হলো )।
অনেকই মনে করেন গান্ধীজি নিশ্চুপ না থাকলে
মহান বিপ্লবী যতীন দাসকে এই রকম বেঘোরে
প্রাণ বিসর্জন দিতে হতোনা । এই বিষয় নিয়ে
ইতিপূর্বে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে ।
গান্ধীজির পত্রাবলিতে এই বিষয়ে
অনেক চিঠি আছে । সেই সময় যতীন দাসের
ঘটনায় সারা দেশ যেখানে উত্তাল সেখানে
গান্ধীজি ছিলেন আশ্চর্যরকম নির্বাক ।
কাগজে লেখা হয়েছে । গান্ধীজিকে সরাসরি
চিঠি লিখেছেন বহু নামি ব্যক্তি । গান্ধীজি
কখনও চুপ থেকেছেন । কখনো সংক্ষেপে তা
এড়িয়ে গেছেন । গান্ধীজির এই নিশ্চুপ
শান্তিকামী ভূমিকা নিয়ে কেউ কেউ
গান্ধীজিকে মহান সাজিয়ে ডক্টরেট হয়েছেন
--সেটা অন্য কথা । গান্ধীজির প্রত্যেকটি
উত্তরে তিনি যতীন দাসের সেই সত্যাগ্রহ
অনশন সমর্থন করেননি । কোনো কোনো
চিঠিতে গান্ধীজি প্রশ্নকর্তাকে চিঠিতে
জানিয়েছেন তার সঙ্গে যখন গান্ধীজির দেখা
হবে তখন এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত
আলোচনা তিনি করবেন । এটাও সত্য
বলে মানি যে গান্ধীজি--তুলসীদাসের রচনা ,
রামচন্দ্রের আদর্শ এবং তাঁকেই একমাত্র
তাঁর ভগবান মানা , গীতার উপদেশ ও
সমাজের তৎকালীন অসুচি মানুষের উন্নতি
তার জীবনের ত্যাগ তাঁর জীবনের অনেকটা
অংশে গভীর মানবতাবাদের ও ধর্মীয় অন্যায়
রুখতে জাতির কাছে প্রভাব ফেলেছিলো ।
তবু গান্ধীজিকে ফিরে দেখতে চাইলে দেখি ,
অন্য একটা সমস্যায় যখন অধুনা বাংলাদেশ
তিনি গিয়েছিলেন , গান্ধীজিকে বহু মানুষ
ঘিরে ধরে টিটকিরি করেছিল , তিনি তাতেও
নিশ্চুপ থেকেছেন । গান্ধীজির এই উত্তরহীনতা একদিনের ছিলনা । সুভাষচন্দ্রের
পক্ষে তার আশ্চর্য নীরবতা লক্ষ্য করার মতো ।
কিন্তু তবু যতীন দাসের জনমতের বিপক্ষে
গিয়ে তিনি তাঁর সারা জীবনের আদর্শে
কলঙ্ক লেপন করেছিলেন । কেননা তিনি
যতীন দাশের বিপক্ষে লিখেছিলেন
( পত্রাবলী ) -- 
" My silence has no connection whatsoever with Jatin 's CRIME
or INNOCENCE "
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU : অলোক কুন্ডু-র কবিতা

যে তুমি পূজারী রাজার / অলোক কুন্ডু

যে তুমি পুরোহিত রাজার
প্রতিমায় ফুল দাও জল দাও ঈশ্বরে
তোমার মন্ত্রপূত জল রাজার মাথায় দাও
প্রত্যেকটি মন্ত্র তোমার রাজাকে বাঁচাতে
প্রজার রক্ত মাখা হাত তোমার চরণ মাখে
তোমার প্রতিটি মন্ত্র উচ্চারণে
রক্ত চন্দন যেন রক্তের মতোই
তোমার চাদর মাখে প্রতিটি হিংসার উৎস
যে ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে রাজা
রক্ত তাকে সাবলীল জানে
কিন্তু তুমিতো রাজা নও
যে তুমি পূজারী রাজার মন্দিরে চিরকাল
তবে তুমি ভন্ড এক রক্তে মাখামাখি  ।
© অলোক কুন্ডু

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...