মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬

অলোক কুন্ডুর কবিতা : দীপঙ্করবাবু একটু চা খাবেন

আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি ।
ডিজাইনার টালি আর মার্বেলের জৌলুস যেন চারদিকে লুটোপুটি খাচ্ছে ।
ছিলে কাটা হীরের মতো পরিচ্ছন্নতা
খেলছে এখানে ।
সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্পের আলোয়
ভেসে যাচ্ছে  চারিদিক ।
ডিজিটাল ডলবির মতো
দূরবর্তী কোন থেকে
সমস্বরে ভেসে আসছে
প্রাচীন শ্যাওলা বাঁধানো লিরিকস্ ।
যা আমি শুনতে শুনতে বড় হয়েছি ।
সেগুলো ক্রমশ বাড়তে বাড়তে
আমার কানের কাছে এসে থেমে গেল ।
শাঁক বাজানো সন্ধ্যার মুখেই
তিনটে লাশ এসে জড় হয়েছে এখানে ।
দেওয়ালে লেপটে থাকা
জানলার ডেস্ক বা কাউন্টারের ভেতরে
বসে আছে একটা লোক ।
ঝকঝকে প্যাডে লেখা একটা কাগজ
এগিয়ে দিল কেউ ।
জানলার ভেতরের লোকটা জিজ্ঞেস করলো - "লাশের নামের বানান ঠিক আছে তো ?
" কি আশ্চর্য ডাক্তারের শংসাপত্র না দেখেই
কেউ একজন চেঁচিয়ে পাশ থেকে
বলে উঠলো -" দীপঙ্কর নন্দী।
নিমেষেই দীপঙ্করকে লাশ হিসেবে
শনাক্তকরণ হয়ে গেল ।
পুরোহিত থেকে ডোম
করপোরেশনের কর্কশ লোকটা পর্যন্ত
একবারও কেউ দীপঙ্করবাবু বললো না ।
ডেথ- সার্টিফিকেটের নামটাও
ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে থাকলো যেন ।  স্টিরিওফোনিক সাউন্ড সিস্টেম থেকে
আবার সেই চিৎকার শোনা যাচ্ছে ।
রাম নাম সত্ হ্যায়....
বল হরি হরি বল ।
আমার চোখের সামনে
ধীরে ধীরে দীপঙ্করকে
চুল্লির ভেতরের ছাই করা উত্তাপের মধ্যে
ঢুকিয়ে দেওয়া হলো ।
আমি ওদিকে আর দেখবো না ।
বেশ দেখতে পাচ্ছি
দীপঙ্কর " হাওড়ার বাঁশতলা শ্মশানের " মঞ্চটায় টানা পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে
একটার পর একটা কবিতা আবৃত্তি করলো । আমি এতটা দূরে দাঁড়িয়ে আছি যে
ওখান থেকে
দীপঙ্কর আমাকে আর দেখতে পাচ্ছেনা ।
আবৃত্তি শেষ হতেই মঞ্চ থেকে দীপঙ্কর নামলো । আমি যেন স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি
সেই কর্কশ গলার লোকটা বলছে -
দীপঙ্করবাবু একটু চা খাবেন ?

(২৪.৮.২০১৬ / হাওড়া ) ॥

শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬

অলোক কুন্ডুর কবিতা : তিন কন্যার গান

ঝান্ডা ওড়াল যারা ক্ষণজন্মা তারা মেয়ে হাতে হাত ধরে ছিল তিন সাহসীনি । রিও-তে ওড়ালো তারা ত্রিবর্ণ পতাকা জাতীয় সংগীত বাজালো বুকের শপথে । ক্ষমতা সামর্থ্য আর মস্তানির তাকতে অনির্বাণ শিখা জ্বালে তিনকন্যা মিলে । বিশ্ব জেনেছে এদের দুর্বার আধিপত্যে সিন্ধু-সাক্ষী-দীপাদের গর্বিত লড়াই । রঙ দে গেরুয়া আর নীল সাদা সবুজে পৃথিবীও সাক্ষী তার সাত সমুদ্র পারে । পাঁচটি বলয় জুড়ে তিনকন্যার গান সেলাম সেলাম তোমরা বীর সেনানী । (২০.৮.২০১৬)

বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬

তার ঠিকানা রাণার জানতো / অলোক কুন্ডু

তার ঠিকানা রাণার জানতো
যেন জ্যোৎস্না জড়ানো রাত্রি
আবছা মোহানা দূরে দূরে মেঘ
অবিরত ধারা স্বৈরী ।
রাত তছনচ ভেজা চুনরি
হরিণী সুষমা অবিকল
মন উসখুস কথা চুপচাপ
কত উল্লাস জলে ভাসতো  ।
যত উচ্ছ্বাস ছিল মুগ্ধ
জল সুশোভন রূপ ঢালতো
আজও চাইছে কেউ গাইছে
বুঝি ভিজছে তার ওষ্ঠ ।
তাই বৃষ্টি এত অনুপম
যত দুখগুলি মুড়ে রাখছি
চোখ ভিজছে জল খেলছে
চাঁদ-তারারাও অবিরল ।
( তারিখ  : ১৭.৮.২০১৬)

মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬

আমাকে জাগিয়ো বৃষ্টির রাতে / অলোক কুন্ডু

চাঁদ তারাগুলি ডুবে যায় যদিতা

র নয়নের বর্ষায়কো

মল-নি তে আমাকে জাগিয়ো

বৃষ্টির রাতে তাই
ডিঙি বেঁধে রাখা উজানির স্রোত
এপারে কিছুটা এলে
ঘুম জাগানিয়া জলমেঘ যদি আসে
জ্যোৎস্না হারানো রাতে
ছায়ামাখা পথে হবো ভবঘুরে
মাঠঘাট ডুবে গেলে
তবু যেন ওই বৃষ্টি সহসা এলে
চেনা সাঁকোটাকে ফেলে
চরাচরে মেশা বালিয়াড়ি পথ
আবছা মোহানা যেখানে
মায়ার আলোয় চুল ধোয়া জলে
মন মাঝি খোঁজে ঘর
সেখানেই যদি উদাসীন কোনো
তামাটে রঙের ঠোঁটে
খুঁজে পাই যদি সুর
আমিও শুনবো গুর্জরী-টোড়ি ধুন
আমাকে জাগিয়ো বৃষ্টির রাতে
আধো চাঁদ ডুবে গেলে
তার চুপি আসা সেই ঢেউয়ে ভাসা
আমাকে জাগিয়ো তাই l


If the moon and stars sink


 Rainy eyes


 Wake me up in the mall


 So on a rainy night

 Stream of Ujani tied to the dinghy

 If something comes here

 If the water cloud wakes up

 The night of losing the moonlight

 I will be a wanderer in a shady way

 When the field sinks

 Yet as if that rain came suddenly

 Chena throws the bridge

 Sand dunes

 Where the faint estuary

 In Maya's light, wash your hair in water

 The mind is looking for a boatman

 If there is any indifferent

 Copper colored lips

 Find out if the tune

 I will also listen to Gurjari-Tori Dhun

 Wake me up on a rainy night

 When the half moon sinks

 Floating in the waves that came silently

 Wake me up


 © ® Alok Kundu

©® অলোক কুন্ডু

সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৬

শীত বৃষ্টির কবিতা / অলোক কুন্ডু

অকারণ জল দামাল হতেই বেঘোর শীতের ঝটকাতে সাদা ওয়াড়ের ভিতর জুড়ে কুসুম হলুদ তাপের মিল কোথাও কোথাও উড়ছে রাম কোথাও দেশি হেঁচকিতে কোথাও ফিরতে এখনও রাত কষছে মাটন ডেকচিতে এখনও কারো সন্ধে হলো এখনও শীতে জমছে হাত হঠাৎ শীতের শীতল করা উনুন জুড়ে উড়ছে তাপ হাতে গরম ভাজাভুজির কদর এত জানতো ভাইব্রেশনে সিলেক্ট করা ভোরের আকাশ কম্পমান

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...