⛔ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কয়েকজন অনুগামী তাঁর ৪০ বছরের ১৫০ টি আঁকা ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনী করবেন বলে ভাবলেন, তখন প্রথমেই মনে পড়লো ফ্রেন্ড, ফিলোজফার বয়সে ৪ বছরের বড় প্রখ্যাত শিল্পী রবীন মন্ডলের কথা, তখনও দুজনেই তো পৃথিবীতে বহাল তবিয়তে আছেন। আসলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় হাওড়ায় থাকাকালীন রবীন মন্ডলের ড্রইংয়ের ভক্ত হয়ে পড়েন। তার আগে থাকতেই অবশ্য তাঁর আঁকাআঁকির সঙ্গে একটা পরিচিয় ঘটেছিল। খুব কাছ থেকে সৌমিত্র, শিল্পী রবীন-দার বাড়িতে বসে থেকে, আঁকা প্রত্যক্ষ করেছেন। নিজের খাতা ডায়রিতে আঁকা শুরুও করেন কম বয়স থেকে। জীবনে চারবার বাড়ি বদলাতে তাঁর অনেক খাতা, ডায়রি বিভিন্ন সময়ে হারিয়ে গেছে। জলরঙেও কিছু এঁকেছেন তার সবকিছু আর তখন কাছে নেই। পরে কয়লাঘাটে যে দোকানে রবীন মন্ডলের কাছে যোগেন চৌধুরী, প্রকাশ কর্মকার, শুভাপ্রসন্নরা আড্ডা দিতে আসতেন, সৌমিত্র, বিখ্যাত আর্টিস্টদের ওই ঠেকেও গেছেন বহুবার। ছবি সম্পর্কে তাই একটা আইডিয়া যে তাঁর কাছে ছিলনা তা কিন্তু নয়। আইডিয়া থাকলেও সৌমিত্রর ছবি আঁকা একদমই তাঁর নিজের মতো করে এঁকেছেন। এছাড়া তিনিও তো মাষ্টার আর্টিস্ট সত্যজিৎ রায়ের পাশে গিয়ে দেখেছেন সবকিছুই। নিজের বাড়ির ড্রইংরুমের দেয়ালে তাই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী রবীন মন্ডলের পেন্টিং টাঙাতে কখনও ভোলেননি, সৌমিত্র। তাঁর প্রয়াণের পরও কন্যা পৌলমী তা ফেলে দেবেন না। যখন গত ৯.১.১৪ তে আই.সি.সি.আর-এ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ড্রইং ও পেইন্টিংগুলি নিয়ে বড়সড় প্রদর্শনী হয়েছিল, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ, অরিন্দম শীল, যোগেন চৌধুরী ওয়াসিম কাপূর এবং আরও অনেকে। সেইসব ছবিগুলো জড় করে পি. সি চন্দ্র গ্রুপ পরে বই প্রকাশ করেছিল গত ১৫.১.২০১৯-এ "ছায়া ও ছবি" নামে। সৌমিত্র, তাঁর আঁকা গুলোকে বলেছিলেন, "আমার খেলা।" সাংবাদিকরা যখন ওই দুটি স্থানে তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, কীভাবে ছবি আঁকায় এলেন সৌমিত্র দা ? এদের মধ্যে শিল্পী ও শিল্প সমালোচক শঙ্কর মজুমদারও ছিলেন। আপনি তো সিনেমার নায়ক, নাটক করেন, অজস্র লেখালেখি করেন, কবিতা লেখেন, পত্রিকা বের করেন, সৌমিত্র হেসে বলেছিলেন, "দেখ, রবীন-দার সঙ্গে হাওড়ায় থাকতে আলাপ। ভীষণ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ওঁর মতো না পারলেও একটু আধটু সকলের মতো আঁক কাটাকাটি করতাম চিরকাল।" সৌমিত্র বক্তব্য রাখতে গিয়ে, প্রদর্শনীর উদ্বোধনে বলেছিলেন ," হাওড়ায় আমি ও রবীন-দা একই পাড়ায় থাকতাম। পরে রবীন দা আমার নাটকে অনেক হেল্প করেছিলেন। তবে আমার দুজন ইন্সপেরেশনের, একজন হলেন, রবীন দা আর অন্যজন হলেন বেঙ্গল স্কুল ঘরাণার শিল্পী চৈতন্য চট্টোপাধ্যায়। ওঁর ছবি আছে একাডেমি অফ ফাইন আর্টসের দোতলায়। ঠাকুর ভাসান হচ্ছে, ছবিতে অন্ততপক্ষে ৫০ জন চরিত্র আছে। কী নিখুঁত, কী অসাধারণ আবেদন সেই ছবিতে। সম্পর্কে আমার ভগ্নিপতি। ওঁর দুই ছেলে আমার তো ভাগ্নে, ওরা খুব ছবি আঁকতো। তারাও আমার অনেকটা ইন্সপেরেশন ছিল। ওরা দুজনে খাতায় আঁক কাটাকাটি করতে করতে চট জলদি ছবি এঁকে ফেলতো। ওদের দেখে দেখে কিছুটা চর্চা হয়েছিল তখন।" তাছাড়া চৈতন্য চট্টোপাধ্যায় শেষদিকে ওই রিয়েলিস্টিক আঁকার বদলে খাতায় কলম দিয়ে লেখা ও আঁকার সংমিশ্রণে অদ্ভুত ছবি আঁকতেন। তার প্রতিও সৌমিত্র আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। যদিও যোগেন চৌধুরী ও ওয়াসিম কাপূর ওই পেন্টিং ও ড্রইংকে সৌমিত্রর আর্টওয়ার্ক নামে অভিহিত করেছিলেন তাদের বক্তব্যে। রবীন মন্ডল, আজীবন বন্ধু সৌমিত্রর পেন্টিং সম্পর্কে অবশ্য কিছু বলেননি। কেন এঁকেছেন জিজ্ঞেস করাতে সৌমিত্র বলেছেন, নাটকের স্টেজ, চরিত্র ও ফরমেশন করতে আঁকাআঁকি করতেই হয়েছে। মেকআপের ছবি আঁকা আমার অভ্যাস। কোনির মেকআপের ছবি এঁকে অভিনয় করেছিলাম। তাছাড়া কসটিউম ডিজাইন নাটকের বড় একটা ভাবনা।" সৌমিত্র ফ্রন্টলাইনকে বলেছিলেন, " I did it for fun. আবার অন্যদের বলেছেন, " আঁকার শিক্ষা আমার নেই। আমার ছবি জড় করে প্রদশর্নী করার আইডিয়া একদমই আমার নয়। সেই সাহসও হয়নি। কয়েকজনের ইচ্ছাতে প্রদর্শনী হচ্ছে। বিশেরভাগ ছবি পেন দিয়ে কাল ও ডার্ক ফ্ল্যাট টোনের। মুখ অথবা মুখোশের মতো মুখ।" অবশ্যই এইসব কোনও কম্পোজিশন নয়, রিয়ালিস্টিক মোটেই নয়। সরঞ্জাম সহকারে ছবি আঁকার কথা বলেননি। মিশ্র মাধ্যমে ছবিকে দাঁড় করিয়েছেন। সৌমিত্র বলেছিলেন, "অধিকাংশ ছবি কেউ আমাকে পোস্টকার্ড পাঠালে, সেটাই ক্যানভাস করেছি। তাছাড়া আমি নাটকের লোক, ছবিতে তাই মুখোশের রূপান্তর ঘটেছে।" সৌমিত্র বলেছিলেন তাঁর ছবি : "অভাবিত। ভাবনা থেকে নয়। হঠাৎ আঁকা।" হাওড়ায় থাকার সময় রবীন-দার ড্রইং দেখেই তো বন্ধুত্ব করেছিলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তখন বরং রবীন মণ্ডলকে লোকে চেনে। সৌমিত্রর তখন কোনও খ্যাতি নেই। রবীন মন্ডলের পায়ের অসুস্থতাজনিত কারণে ছোটবেলায় তিনি স্কুলে যাননি। তাই হয়তো এতবড় শিল্পীকে আমরা পেয়েছিলাম। সৌমিত্র, রবীনদার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, "আমার আরও একজন ইন্সপেরশন আছেন, ক্যালকাটা পেন্টার্সের রবীন দা। হাওড়ায় থাকার সময় আমরা একই পাড়ায় থাকতাম। মনে আছে গান্ধীজি বক্তৃতা দিচ্ছেন, আমরা শুনতে গেছি। বক্তৃতা শুনতে শুনতে রবীনদা গান্ধীজির ছবি এঁকে ফেললেন। তাই যখন আমাকে বলা হ'ল যে আমার আঁকা ছবিগুলি নিয়ে একটা প্রদর্শনী করার তখন ওদের বললাম, আগে রবীনদাকে দেখাও এইসব। উনি রাজি হলে তবেই প্রদর্শনী করা যাবে। (৪.১২.২০)। ©® অলোক কুন্ডু।
শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০
বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০
যুক্তফ্রন্টের ভাবনায় কালো ছায়া: আলোক কুন্ডু
🌏•নির্বাচনে জেতা ও সরকার টিঁকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ফ্রন্টের সুবিধা অসুবিধা দুই থাকে। নমনীয় একজন বিচক্ষণ নেতার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বড় যে দল তাদের সহ্যশক্তি বেশি থাকা দরকার হয়ে পড়ে। সকলকে নিয়ে চলার ক্ষমতাই হ'ল যুক্তফ্রন্টের মহাগুণ। এই মূহুর্তে কেন্দ্র সরকার যেদিকে যাবেন যুক্তফ্রন্ট ছাড়া সরকার গড়া মুস্কিল। তবে আমি রাজ্যের যুক্ত ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা করবো।
⛔• আমি রাজ্য রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করবো। সারা ভারতের রাজ্যগুলিতে রাজনৈতিক পরিমন্ডলে এখন এত নেতা, এত দল হয়ে গেছে যে, কেউ দীর্ঘদিন একদলীয় ভাবে শাসন আর ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। একদলীয় রাখতে গেলে সেখানে পরিবারের লোকেরা ঢুকবেই। বন্ধুবান্ধব ঢুকবেই। সংঘাতের কারণ সেখান থেকেই প্রথম আসে। অন্ধ্রের এন. টি. রামা রাওয়ের এই একদলীয় শাসন কীভাবে ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে তা সকলেই জানেন। রামচন্দ্রন-জয়ললিতাও তাই। কিন্তু তাদের একটা সুবিধা ছিল তারা নিজেরা ছিলেন "গণনায়ক। " তবে এই ফরম্যাট দুবার হলেও তিনবার সফল হওয়া কঠিন। একদলীয় যুক্ত ফ্রন্ট সোনার পাথরবাটি অনেকটা। এখানে বড় দল সমস্ত ক্ষমতা ভোগ করতে চাইবে আর সেখান থেকেই সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি শুরু। ছোটদলকে জব্দ করার প্রবণতা যত বাড়তে থাকবে, ছোট দলগুলো সহ্যশক্তি তত হারাবে। আবার হঠাৎ করে ভুঁইফোঁড় নেতা ভোটে জিতে এলেও তাদের কিন্তু দশটা ভোট জোগাড় করার ক্ষমতা থাকে না পরন্তু তারা সরকারের কাছ থেকে জনগণের কাছ থেকে, ক্ষমতা চলে যাওয়ার ভয়ে, দ্রুত বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করে যায়। তাই এদের যুক্ত করে যদি একদলীয় যুক্ত ফ্রন্ট হয় সেখানেও বিপর্যয় আসতে পারে। কারণ এইসব ভুঁইফোঁড়দের কোনও আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়নি। এক প্রকার বিরোধিতা করার জন্য এরা একত্রিত হয়। বিরোধিতা শেষ হলে এরা বিরোধিতা করার অর্থ হারিয়ে ফেলে ক্ষমতা থেকে উপার্জন করতে শুরু করে দেন।
⛔• দক্ষিণের নায়করা ছায়াছবির মায়াময় জগতের সুযোগ তারা বহুদিন পেয়েছিলেন। যার ফলে তারা ক্ষমতাও ভোগ করেছেন অফুরন্ত। যা এখন আর সম্ভব নয়। এখন ১৯৭৭ এর বামেদের মতো ভেতরের তাগিদ থেকে ফ্রন্ট তৈরি হওয়ার পরিস্থিতি কোথাও নেই। কিন্তু মুসলিম সমাজ থেকে ফ্রন্ট তৈরি হওয়ার প্রবণতা থাকলেও এতদিন তৈরি হয়নি। সেই অর্থে বিজেপির ওপর হিন্দুত্ববাদের কাদা লেপটে দিলেও
অধিকাংশ হিন্দু তা মানেন না। কারণ হিন্দুদের মধ্যে বিভিন্ন দল করা লোক অনেক বেশি। কিন্তু মাদ্রাসা থেকে পীরের থানার থেকে যদি রাজনৈতিক দল তৈরির প্রবণতা তৈরি হয় তা কতটা এই ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে টিঁকে থাকবে হিন্দুদের সমস্ত মানুষকে বাদ দিয়ে তা তারাই জানে। আবার রাজনীতিতে হবেনা পারবে না বলে কোনও কথা নেই। এটা হলে একটা সংঘাত হওয়ার সংঘর্ষ হওয়ার কালো দিক লক্ষ্যনীয়।
⛔• হঠাৎ উঠে আসা নেতৃত্ব কখনও কোথাও টিঁকে থাকেনি কারণ হঠাৎ করে জনগণের ইচ্ছা জাগ্রত করা যত সহজ তাকে প্রতিপালন করা রক্ষা করা মূল উদ্দেশ্যে সফল করে তোলা ভীষণ কঠিন ব্যাপার। হঠাৎ করে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি বিপদগামী হতে পারে যদি না প্রজাপালন কি বস্তু জানা না থাকে। তাই জনগণের উদ্দেশ্যে সব সময় নিজেদের সীমিত ক্ষমতার কথা বলা প্রচার করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এখন মানুষ সব বুঝতে পারে। ভুল বুঝিয়ে দল বা ফ্রন্ট তৈরি করলেও বড়জোর দশবছর তারা টিঁকে থাকতে পারবেন। ফ্রন্ট বা নতুন দল তৈরি করলেও আসল কথা হ'ল তাদের "জনগণের দল" গড়ে তুলতে হবে। যদি পরিবারের ব্যবসা বাড়িয়ে নেয় কেউ। যদি পরিবার হঠাৎ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যায় দশ-বিশটা ব্যবসা-বাড়ি হয়ে যায় কারও। তবে সেই দল বা ফ্রন্টকে মানুষ চিনে নেবে সহজে।
⛔• যতই পুত্র চন্দনের নামে সামান্য বিস্কুট কারখানার নামে বা বেঙ্গল ল্যাম্প কেলেঙ্কারির নামে দিনের পর দিন বরুণ সেনগুপ্ত লিখে যান না কেন সকলেই জানেন জ্যোতি বসু সরকারকে সামনে রেখে কিছু মাত্র ঝেড়ে কামান নি। বরং নিজের ও পরিবারের অনেক স্বার্থত্যাগ আছে তাঁর মধ্যে। অজয় মুখোপাধ্যায়, প্রফুল্লচন্দ্র সেন, অতুল্য ঘোষ, প্রমোদ দাশগুপ্ত, বিধানচন্দ্র রায়, প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ, বিনয় চৌধুরী, অনিল বিশ্বাস তো এক প্রকার দারিদ্র্যের বা মধ্যবিত্ত জীবন প্রতিপালন করেছেন একমাত্র বিধান রায় ছাড়া। শখ-আহ্লাদ করে দম্ভ নিয়ে নিজের জীবনী লিখে সময় নষ্ট করেননি, এইসব নেতৃত্ব। এই বিষয়টা গভীর ভাবে লক্ষ্যনীয়। প্রধান নেতা সব সময় গান্ধীজি, নেতাজি, প্রমোদ দাশগুপ্ত, প্রফুল্ল সেন হবেন। নিজের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই তাদের। জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো আদর্শের হবেন। কানাইয়া কুমারের মতো দার্শনিক বক্তৃতা না জানলেও চলবে। তাঁরা সার্কাসের ট্রাপিজের খেলায় পারদর্শী হলেও সবকিছু ভুলতে হবে তাঁদের। যাদের কথা বললাম, এঁরা ২৪ ঘন্টার কর্মী ছিলেন। সরকারের কাজ বা দলের কাজ ছাড়া এদের কারও ব্যক্তিগত জীবন ছিলনা। যদিও এদের মধ্যে ফ্রন্ট অনেকে গড়েন, ফ্রন্ট গড়েও ভিন্ন কারণে টেঁকাতে পারেননি।
⛔• পশ্চিমবঙ্গে দুবার নির্বাচনে মানুষ গন্ডি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল ভোট দিতে। একবার ১৯৭৭ ও একবার ২০১১। ১৯৭৭ ছিল ২০১১-এর থেকেও চমকপ্রদ। শুধুমাত্র জনগণের রুখে দাঁড়ানোর শক্তি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২০১১-তে নির্বাচন কমিশন সর্বশক্তিমান হয়ে ঢাল হয়ে উঠেছিল। ভোট করিয়েছিল স্বচ্ছতার সঙ্গে। নির্বাচন কমিশন ডি. এম. / এস. পি-দের পা কাঁপিয়ে দিয়েছিল। কমিশনের উদ্যোগে জাল ভোটার নষ্ট হয়েছিল, লাখ লাখ রেশন কার্ড ধরা হয়েছিল, লাখ লাখ ডুয়ো ভোটার নিশ্চিহ্ন করেছিল কমিশন। ভোটার তালিকা পরিবর্তন করেছিল। ভোটার লিস্ট তাজা করে দিয়েছিল, সিস্টেমকে দিল্লি বসে একমাস ধরে মনিটরিং করেছিল। এমনকি ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকেই বুথের কাছে গন্ডগোল ঠেকিয়ে দিয়েছিল। যাদবপুরে সি. আর. পি. এফ. গুলি করে সি. পি. এম ক্যাডারকে মেরে দিয়েছিল পর্যন্ত। তাই ২০১১-এর মতো নিরপেক্ষ, অবাধ স্বচ্ছ নির্বাচন আজ ইতিহাস হয়ে আছে, এই রাজ্যে। ১৯৭৭ ও ২০১১ দুবারই কিন্তু নির্বাচনের আগে ফ্রন্ট হয়েছিল। ১৯৭৭-এ দেখা গেলেও ২০১১-তে মানুষ ফ্রন্টের ব্যাপারটি বোঝেনি। কারণ ২০১১ তে মানুষ মমতা ব্যানার্জীকেই একমাত্র নেতা মনে করেছিল। কিন্তু বিভিন্ন দলের বুদ্ধিজীবীরা দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে এসেছিলেন, এর গুরুত্ব কিন্তু খুব কম ছিলনা। বরং নন্দীগ্রাম লড়াইয়ে তারাই মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। বুদ্ধিজীবীরা যেহেতু দল ঘোষণা করেননি তাই তারা নিজে থেকে কোথাও নির্বাচনে লড়েননি। এস.ইউ.আই.সি খানিকটা স্পষ্ট করেছিলেন। কংগ্রেস ফ্রন্টে এসেছিল। ২০১১-এর নির্বাচনের আগে স্টেটসম্যান, আনন্দবাজার, বর্তমান, প্রতিদিন, ভোরের বার্তা, সকালবেলা, আবার যুগান্তর, এখন খবর, প্রাত্যহিক খবর, ৩৬৫ দিন মিলে প্রিন্ট মিডিয়ার জোট গড়েছিল। তেমনি ১৯৭৭ দেশের অধিকাংশ খবর কাগজ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গিয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৭-এর ফ্রন্ট ৩৪ বছর টিঁকে থাকলেও ২০১১-এর পর বুদ্ধিজীবীদের ভাল অংশ সরকারকে সমর্থন প্রত্যাহার করে। গণতান্ত্রিক আদর্শগত কারণে। কংগ্রেস বেরিয়ে যায় নীতিগত কারণে। এস ইউ আই সিও থাকেনি। সুনন্দ সান্যাল তরুণ সান্যালের মতো বিশাল মাপের বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন ত্যাগ করেন।
⛔• দুবারই বুদ্ধিজীবীরা জনমতের সঙ্গী হয়েছিল এবং রাজ্য সরকারের প্রভূত দোষ ছিল। তখন সাধারণ মানুষ অর্থাৎ আমজনতা ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। জনসংখ্যার অধিকাংশই তখন সরকার বিরোধী জনস্রোত তৈরি করেছিল। কিন্তু এই জনস্রোতকে বিধিবদ্ধভাবে জুড়তে একদিকে জয়প্রকাশ নারায়ণের উদ্যোগ অন্যদিকে ক্ষমতা ধরে রাখতে ধৈর্যশীল নেতা জ্যোতি বসুর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭৭-এর আগে থেকে যারা একসঙ্গে লড়েছিল তারাই জ্যোতি বাবুর মতো নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন। তাছাড়া জ্যোতিবাবুরা অন্তত তিনবার ঠেকে শিখেছিলেন। বুদ্ধবাবু কিন্তু শুধুমাত্র সততা দিয়ে বামফ্রন্টের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলেন না।
এমনকি আমার মনে হয় বুদ্ধবাবুর মধ্যে দাম্ভিকতা ছিল। যা জ্যোতিবাবুর ছিলনা। বুদ্ধবাবু চূড়ান্ত অহংকারী ছিলেন। নিজের এমন কোনও যোগ্যতা ছিলনা যাতে সরকারে নতুন চমকপ্রদ কর্মসূচি নেওয়া যায়। তাছাড়া তিনি দলের দাস হয়ে পড়েন। শুধুমাত্র বামপন্থী আচরণ বজায় রাখলেই হবেনা, কারণ কোনও একটা ওল্ড ম্যানিফেস্টো দিয়ে দেশ শাসন করা যায় না। পার্টি শাসন আর রাজ্য শাসন দুটো পরস্পর বিরোধী। বুদ্ধবাবুর সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক নেতা জ্যোতিবাবু না থাকায় অন্য দলগুলো তাকে অমান্য করতে শুরু করেন। ছোটখাটো দলও তেজি ঘোড়ার ভাব দেখানো শুরু করে। সবথেকে বড় কথা কো-অর্ডিনেশন কমিটি ও তাদের মস্তবড় অপদার্থ চেলা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যালয় পরিদর্শক সমিতি শিক্ষা প্রশাসনকে ধ্বংস করে দেয়। বিদ্যালয় পরিদর্শকরা স্কুল পরিদর্শনের দিন শিক্ষককে দিয়ে তার বাড়িতে/ বাসায় খাতাপত্র নিয়ে এসে স্কুল পরিদর্শন করে দুপুরে ঘুমের দেশে চলে যেতে থাকেন। মাত্র ১০% পরিদর্শনে স্বচ্ছতা দেখা যায়, ১০% পরিদর্শক তার নিজের কর্তব্যে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন বলে সরকার ক্ষয় বুঝতে পারেনি। পেনশন, অন্যান্য ফাইল, শিক্ষকদের নিয়োগের কাগজপত্রের ফাইল, বেতন আটকে রাখার প্রবণতা, ঘুষের কারবারে প্রশাসন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। বিদ্যালয় পরিদর্শকদের বামপন্থী দল এই ভেঙে পড়ায় হাত গুটিয়ে বসে থাকে। অথচ তাদের মধ্যে যারা কাজের লোক এবং হাজার হাজার শিক্ষক ও তাদের পরিবার ক্রমশ সরকারের বিক্ষুব্ধ হয়ে যায়। এমনকি বাড়ির কাছে ধামাধরাদের পোস্টিং দেওয়া, ফাঁকিবাজ ক্যাডার তৈরিতে সহায়তা এবং দুদিন অন্তর অফিসের মধ্যে পার্টি মিটিং, মিছিল সমাবেশে যোগদান, তাদের কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের কাজের থেকে বামপন্থী সংগঠন বেশি হয়ে দাঁড়ায়। কো-অর্ডিনেশন কমিটির ব্যবস্থাতে অন্যান্য অফিসেও একই কারবার হতে থাকে। এমনকি হাওড়া ট্রেজারির কো-অর্ডিনেশন সদস্যরা দুবার এই প্রতিবেদকের
প্রাপ্য লাখ টাকার বিল দুবার নষ্ট করে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখে। অন্যায়ভাবে হ্যারাসমেন্ট করা তখন সরকারীভাবে প্রথা হয়ে দাঁড়ায়। জনগণের কাজের সুরাহার থেকে কর্মচারীদের দিয়ে দলের বাড়বাড়ন্তে বামেদের মধ্যে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। জনগণ কাজ না পেয়ে ক্রমশ পিছিয়ে যেতে থাকে তাদের প্রিয় সরকারের কাছ থেকে। যাদের ভোট দিয়ে তারা এনেছিল তারাই বিরোধী হয়ে যায় পরে। বেশিরভাগ দায় কো-অর্ডিনেশন কমিটি ও বুদ্ধবাবুর পুলিশ প্রশাসনিক গাফিলতি মানুষকে বিদ্রোহী করে তোলে। সরকারি অফিসে গেলে কাজ পাওয়া যেত না মোটেই। দিনের পর দিন ঘুরতে ঘুরতে মানুষ মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গী হয়ে পড়েন। এটাকেই বলা হয় নেগেটিভ রাজনীতি।
⛔• যে কোনও দল চাইবে, নাগরিক তার মতো আচরণ করুক আর নাগরিক চাইবে সরকার তার মতো আচরণ করুক, এই দ্বন্দ্ব চিরকালের। এই যে টানাপোড়েন এই সেতু রক্ষা করেছিলেন জ্যাতি বসুর মতো মানুষ ছিলেন বলে। তাঁর শিক্ষা, তাঁর প্রজ্ঞা, তাঁর বিলাতি পড়াশোনা, তাঁর চিন্তা চেতনা মোটেই উর্বর মস্তিষ্কের ছিল না। তিনি ঠকে, অভিজ্ঞতা দিয়ে, ৭২-এর রিগিংয়ের থেকে শিক্ষা নিয়ে, জেলে গিয়ে, মাঠে ময়দানে বক্তৃতা করে, ঘরের খেয়ে বক্তৃতা দিয়ে, ব্যাপক জনসংযোগ তৈরির মাধ্যমে, শ্রমিক আন্দোলন, খাদ্য আন্দোলন, ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধির আন্দোলন, নকশাল আন্দোলনের ক্ষতিবহনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন জ্যোতিবাবু। তাই বামেদের জড় করার প্রধান সংগঠক তিনি না হলেও টিঁকিয়ে রাখার বড় গুণ তাঁর মধ্যে ছিল।
⛔• প্রকৃতপক্ষে এই মূহুর্তে আর.এস.পি. বলে একটা দলের কোনও অস্তিত্ব পশ্চিমবঙ্গে নেই। উঠে গেছে আর. সি.পি.আইও। বামপন্থী দলগুলোর অস্তিত্ব যা বাংলার গর্ব ছিল তা এখন বিহারে, পাঞ্জাবে, মহারাষ্ট্রে, গুজরাটে ও দক্ষিণ ভারতে বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছুটা উত্থান হয়েছে। কেরল একমাত্র টিকিয়ে রেখেছে বরাবর বামপন্থী মেজাজ। বামপন্থীদের হাজার ভুল হলেও এরা লড়াই করতে পারে। তবে এদের মধ্যে যে পচন সৃষ্টি হয়েছিল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। কেশপুর যার এপি সেন্টার ছিল। তা ২০১১-তে নন্দীগ্রাম আর নেতাই মিলে বিস্ফোরণের রূপ নয়। কিন্তু যদি আপনারা দেখেন দেখবেন বর্ধমানেও বামেরা গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল। ২০০৬ - বর্ধমানের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীকে বাড়িতে না পেয়ে বামেরা তার বউকে খুন করে দেয়। আমাকে বর্ধমানের এক কংগ্রেসি স্কুল শিক্ষক বলেছিলেন তার দাদা পঞ্চায়েত দাঁড়িয়ে ছিল তার বদলা হিসেবে ওই মাধ্যমিক শিক্ষকের বউদির কাপড় খুলে নিয়ে তিন কিমি দূরে ছেড়ে দিয়েছিল। ভদ্রমহিলা ব্লাউজ ও শায়া পরে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাড়ি ফিরেছিলেন। আর একটা ঘটনা বলি নিজে ভুক্তভোগী। ২০১২ পঞ্চায়েত নির্বাচন রায়না ছিলাম। তখন বামেদের ক্ষমতা নেই। একটা বুথের কথা বলছি এখানে। তাদের ১৪ জন ভোটার তখন মাত্র। সবাই সরে গেছে। নির্বাচনের আগের রাতে আমাদের ঘুম হয়নি আমাদের সঙ্গে থাকা পুলিশপার্টিরও নয়। কারণ সারারাত ওই ভোটারদের বাড়িতে ইঁট পড়ছে। অন্ধকারে দুবার গেছি পুলিশ নিয়ে। সকালে একবার। শেষে ১৪ জনকে সঙ্গে করে সিকিউরিটি দিয়ে ভোট দেওয়াতে হয়েছিল। তাদের রাজত্বকালে তারাও ঠিক অনুরূপ কান্ড করেছিল হয়তো। এটা বললাম কীভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা হয় গ্রামে তার একটা উদাহরণ। কিন্তু ২০১১ এর নির্বাচনের আগে সিপিএম এবং বামপন্থীরা স্কুল কলেজ কোঅপারেটিভ নির্বাচনে ব্যাপকভাবে হারতে থাকেন ২০০৫ থেকেই। এই লোকাল নির্বাচনগুলি হচ্ছে মাপকাঠি। একে অবজ্ঞা করলেই সেই দল ভুগবে। ২০০৬ থেকে এইসব ছোট নির্বাচনে আর ভীতি প্রদর্শন করে প্রতিরোধ করা হয়নি। কিন্তু ২০০৬, ২৩৫ করতে পেরেছিল তাদের ভোটিং মেশিনারি দিয়ে।এই বাজিমাত একবছর পর থেকে বামেদের ওই যুক্তফ্রন্টে কোনও কাজে লাগেনি। অনিল বিশ্বাস মশাই ওই ছোট ছোট নির্বাচনগুলি করিয়ে জনগণের নাড়ি পরীক্ষা করতেন এবং ওইসব স্থানে ভোট হতো জবরদস্তি ছাড়া স্বাধীনভাবে। এই অ্যাসিড টেস্ট করার পরই কিন্তু বিরোধীরা ২৩৫:৩৫ হয়ে যায়।
⛔• ১৯৭৭ তে ফ্রন্ট করে নির্বাচনে লড়ার কারণে কিন্তু বামেরা অনেকদিন টিঁকে ছিল। অনেকগুলো সাইনবোর্ডের দল সঙ্গে থাকলেও বিভিন্ন নেতা এসে মনোবল জোরদার করেছিল। দুর্নীতি ছিল না তা নয়।
তবে প্রথম প্রথম জনগণের জন্য ভূমিসংস্কার বামেদের সত্য সত্যিই অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়েছিল। জনগণের জন্য বহু আইন একমাত্র বাম আমলেই হয়েছিল তবু সরকারের সেই কল্যাণময় ভূমিকা সরকারি কর্মকর্তারা সঠিক ভাবে পালন করতে দেয়নি। সঙ্গে সঙ্গে সিপিএম অন্য দলেকে বাড়তে দেয়নি। যুক্ত ফ্রন্ট রাখতে গেলে অন্যকে বাড়তে দিতে হবে। একা ক্ষমতায় থাকবো অথবা আমি বা আমরাই সব এই নীতির জন্য বামপন্থীদের
নৌকো ডুবে গিয়েছিল।
⛔ ২০১১ তেও মনে হয়েছিল যুক্ত ফ্রন্ট করেই সরকারের অগ্রগতি হবে। কিন্তু তা হয়নি মোটেই।
আবার ২০২০-তে এসে পশ্চিমবঙ্গে একটা যুক্তফ্রন্ট
পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে চলেছে। তৃণমূলের মধ্যে ভাঙন হলে তবেই এই পরিস্থিতি হবে তা ১০০ ভাগ নাও হতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেস বাম ও কংগ্রেসকে কিছু সিটি ছেড়েও দিতে পারে, এটা যুক্তফ্রন্ট মনোভাবের অঙ্গ। আবার মুসলিম সমাজের থেকে যে একটি দল উঠে আসছে তাদের সঙ্গে তৃণমূল বা বিজেপি ফ্রন্ট ভেতর করতে পারে। একদল বলছেন, বিজেপি, শুভেন্দু ও মুসলিম সমাজের অলিখিত ফ্রন্ট হতে পারে। তবে মুসলিম সমাজের যে দল উঠে আসছে তারা আগে থাকতে কারও সঙ্গে ফ্রন্ট করবে না। তবে তারা অনেকগুলো জায়গায় ফ্যাক্টর হবে।
⛔• এখানে লক্ষ্যনীয় বিজেপি কতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারবে। কারণ ২০১৫ থেকে বিজেপি যত গালাগালি খেয়েছে কোনও দলের ভাগ্যে এত গালাগালি জোটেনি। কিন্তু এত গালাগালির পরও হাথরস নিয়ে সারা ভারতের বিপক্ষে থাকলেও তারা কিন্তু বিহারে জিতেছে। পশ্চিমবঙ্গে আসল লড়াই একমাত্র তাদের সঙ্গে। এখানে একটা বিষয়টা মনে রাখা জরুরি সেটা হলো কটা আসন বিজেপি তোলে আর কটা পায় মুসলিম সমাজের নতুন দল। এদের ওপর পশ্চিমবঙ্গের আগামী রাজনীতি নির্ভর করছে।
এছাড়াও শুভেন্দুর পেছনে যেসব নেতার সমর্থন আছে তাদেরকেও শক্তিশালী হিসেবে শুভেন্দু পেতে চায়। শুভেন্দু তৃণমূল থেকে বের হলে তার অনুগামীদেরও আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ে চাইবে। এই লড়াইয়ে যে তাকে সহযোগিতা করবে তার দিকেই শুভেন্দুর সমর্থন যাবে। এখন কে কার সঙ্গে থাকবে বা আছে খুব জটিল বিষয়।
( সঙ্গের ছবিটি প্রতিকী)
©® অলোক কুন্ডু
মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০
ডিসেম্বর-২০ সতর্কতার সময়: অলোক কুন্ডু
🌏 এখন কি তবে করোনা চলে গেছে? এই প্রশ্ন সরাসরি করলে থাপ্পড় খেতে পারি। খেতে পারি কেন খাওয়াই উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস করোনা শুধুমাত্র আমিই বহন করেছি অর্থাৎ আমিই সব সময় আলোচনা করেছি। কিন্তু ক্ষতিকর কতগুলো বিষয় পড়ে আছে সেদিকে আলোকপাত করা তবু কর্তব্য। সতর্ক থাকাও জরুরি।
⛔ 🙋 আমি রোজ দেখতে পাচ্ছি এক ভদ্রলোক মাস্ক পরে বাজার যান, রাস্তায় ঘোরেন। বিশাল ব্যবসা আছে শুনেছি। পয়সার অভাব নেই। মাস্কের দাম ১০ টাকা। তাও বেশিরভাগ সময় মুখের নীচে শোভা পায়। অর্থাৎ মাস্ক পরলেও তা না পরার সামিল। প্রকৃত মাস্ক পরার পয়সা থাকলেও তা কিনবেন না।
🙋 ধরুন আমার বা আমার পরিবারের "ফুল করোনা", "হাফ-করোনা" হয়ে গেছে তাই আমার আর রাখঢাক করার দরকার নেই। জনে জনে বলছি 👫👬👭 ও এমন কিছুই নয়। জ্বর এর থেকেও কাবু করে দিত গো। ভয় ! ধ্যাত্ ভয় আবার পায় কেউ ? দুহাতে করোনাকে ধুয়ে আছড়ে ধেসে দিয়েছি। ধুর মশাই আপনি যেমন। এত ভয়ের কি আছে ? এই দেখুন গো আমাকে ! ইতিমধ্যেই ভয়কে তো জয় করে ফেলেছি। ফেলেছি কিনা? একদম ঘাবড়াবেন না। দ্বিতীয় ভদ্রলোক যেই লেকচার শুনলেন, মনে মনে অমনি এমন দুরন্ত সাহস পেলেন যে গলায় ঝোলানো ৯০ বার কাচা ৫ টাকার আকাশি সার্জিক্যাল মাস্কটার চোদ্দো পুরুষ উদ্ধার করে দিলেন। নর্দমায় আশ্রয় হলো তার। পরে যে ছিলেন এটাই তো মাস্কটার ভাগ্য ভালো।
🙋 এখন সাহসী লোকের সংখ্যা বাঙালি তথা ভারতীয়দের মধ্যে খুবই বেড়ে গেছে। এতো খুব আনন্দের কথা। আমেরিকানরা বাঙালিদের থেকেও বিশাল সাহসী ছিল কিন্তু রোগও প্রচুর ছিল। আসলে খাদ্যাভ্যাসের জন্য আমরা যে সাহসী হয়েছি এটা আজ জানাজানি হয়ে গেছে। তবু খাদ্যাভ্যাসের জন্যই আমরা সাহসী কিনা সঠিক জানা না থাকলেও যথেচ্ছভাবে জীবন অতিবাহিত করা ব্রাজিল, আমেরিকায় করোনা বেশি মাথা চাড়া দিয়েছে।
🙋 তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করেও আমার কাছাকাছি ৫/৭ জন যে মারা গেলেন তারা ভেবেই নিয়েছিলেন তাদের কিছুতেই হবে না।
🙋 যারা মারা গেলেন নিশ্চিত তাদের অন্য অসুখ বিসুখ ছিল। কত ডাক্তারও তো মারা গেলেন। তাদের অসুখ কি তাঁরা তবে জানতেন না তবে ? তাদের মধ্যে তবে কি একটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার প্রবণতা ছিল। প্রচুর ছোটবড় রাজনৈতিক নেতাও মারা গেলেন। পুলিশও।
🙋 এখন পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে বোঝা গেল যে সেফ হোম বাড়িতেই সব থেকে ভালো তাই সরকারের সেফ হোম উঠে গেছে ভালো হয়েছে। এই "জনতা সেফ হোম"-এর জন্যও সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল। কারণ ওখানে সাহায্যকারীরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য মনোভাবের ছিলেন। বন্ধ হয়ে ভাল হয়েছে।
🙋 দোকানদাররা সব সময় শীত গ্রীষ্ম ( আমাদের দেশের) ১২ মাস ধুলোধোঁয়া খেয়ে খেয়ে তাদের ভয়াবহ করোনা আর কব্জা করতে পারেনি এটা প্রমাণিত। এরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য দলের কিন্তু এরা প্রমাণ করেছেন যে এদের সঙ্গে মাস্ক পরার হাত ধোয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে শুধুমাত্র দোকানদার নয়
প্রথমে যে বলেছিলাম ৫ ও ১০ টাকার মাস্ক পরিহিতদের কথা ওরাও তুচ্ছতাচ্ছিল্য দলের লোক কিন্তু দৈহিকভাবে শক্তিশালী।
🙋 তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ টিভি কাগজে মিডিয়াতে রৈখিক সমীকরণের গাণিতিক যোগের মোট পরিমাণ কমে যাওয়া। কমে যাওয়া নানা কারণে হতে পারে সতর্কতা ও শক্তিশালী ব্যক্তিদের রোগ ধরা, দুর্বল লোকেদের চিহ্নিতকরণ।
এই তিনটি বিষয়ে সরকার, ডাক্তারবাবু ও গোষ্ঠীর কোনও কাজ নেই। যদি কিছু হয় তা অলক্ষ্যেই হচ্ছে। এইটা দেখার কোনও পরিমাপ না থাকলেও এই সত্য অস্বীকার করে লাভ নেই।
🙋 আবার তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন না এটাও চোখে দেখছি। কেউ কেউ গাড়ি নিজে চালালেও প্রতিদিন স্যানিটাইজ করছেন। জুতো রোদে দিচ্ছেন। সতর্কতা কারও দেখা যায় কারও দেখা যায় না। তবু তুচ্ছতাচ্ছিল্য-এর কাছে সতর্কতা প্রথম দিন থেকে হেরে যাচ্ছে।
🙋সতর্কতা একটা শৃঙ্খলাবোধের বিষয়। এটা তার মধ্যে ছোট থেকেই আছে। সতর্কতা জীবনের একটা শিক্ষা। এই শিক্ষা মোটেই করোনার দান নয়। তবু সমস্ত সতর্কতাও ফেল করে যায় যখন জীবনে দুর্ঘটনা আসে। করোনা একটা বড় দুর্ঘটনা। সতর্কতা নিলেও করোনা হবেনা এই গ্যারান্টি নেই কারণ দীর্ঘ দিন সতর্কতা নিতে নিতে তা একঘেঁয়ে হয়ে যায়।
🙋আসলে যেখানে আমাদের সতর্কতা করার ছিল পয়সা থাকলেও না থাকলেও মাস্ক যেটা পরেছি তা আসলে না পরার সামিল। আচ্ছা তাহলেও হাত কি ধুয়ে দিতে যতটা করার ছিল, মনে হয় না। সকলে নয়। তবু না-এর দলের সংখ্যা গরিষ্ঠ। ১০% সবটাই মেনেছে ২০% হাত ধুয়েছে ৬০% লোক বাজার ধুয়েছে। আজ শুনলাম একটা বাড়িতে জুতো স্যানিটেশন হয়েছে কিনা এক মহিলা জানতে চাইছেন কারও কাছে, এই সংখ্যাও ২০% এর বেশি নয়। সকলে বলতেই পারেন তবু সকলের হয়নি কিন্তু।
হবেনা যারা ৩০ দিন বের হচ্ছেন। তাদের আর হবে না।
🙋 পড়ে গেল দুরূহ পরিস্থিতি। আমাদের এই সতর্কীকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে পথচলা ২০২১-এর জানুয়ারি পর্যন্ত গড়িয়ে যাবেই। এখনই সবচেয়ে দুরূহ সময় দেখা দিতে পারে। কারণ আমরা ভেবেছিলাম ইদ দুর্গাপুজো দেওয়ালী ও এটির পর ব্যাপক হারে করোনা ছড়াবে। কিন্তু আদপে তা হয়নি।
তাই আমাদের মনের সতর্কতা মার খেতে বাধ্য এবং তুচ্ছতাচ্ছিল্যের অগ্রগতি হতেও বাধ্য আমাদের মধ্যে।
এটাই পিক সময়। একঘেঁয়েমি ও ইঞ্জেকশনের আশায় আমরা আমাদের ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু স্পোর্টসে এমনকি ফুটবলেও ফিনিশিং পয়েন্ট ও বক্সেই মাথা ঠান্ডা রেখে অ্যাথলেটিক্স ও ফুটবলে এমনকি কম ওভারের ক্রিকেটেও শেষ ওভার, ফিনিশিং পয়েন্ট ও গোলপোস্টের অশেষ ক্ষমতা।
🙋 ফেব্রুয়ারিতে ইঞ্জেকশন আসছে ধরে নিয়ে এক সপ্তাহের লকডাউন ফিরিয়ে আনলে মনে হয় সবচেয়ে ভাল হোতো। নতুন ভাবে নতুন বছর শুরুর প্রক্রিয়া আনন্দের সঙ্গে শুরু হোক। ডিসেম্বর সবথেকে সতর্কতার সময়।
⛔ভ্যাকসিনের প্রতিকী ছবি
©® অলোক কুন্ডু
সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০
ডিসেম্বর ২০২০ সবচেয়ে সতর্কতার সময়: অলোক কুন্ডু
🌏 এখন কি তবে করোনা চলে গেছে? এই প্রশ্ন সরাসরি করলে থাপ্পড় খেতে পারি। খেতে পারি কেন খাওয়াই উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস করোনা শুধুমাত্র আমিই বহন করেছি অর্থাৎ আমিই সব সময় আলোচনা করেছি। কিন্তু ক্ষতিকর কতগুলো বিষয় পড়ে আছে সেদিকে আলোকপাত করা তবু কর্তব্য। সতর্ক থাকাও জরুরি।
🙋 আমি রোজ দেখতে পাচ্ছি এক ভদ্রলোক মাস্ক পরে বাজার যান, রাস্তায় ঘোরেন। বিশাল ব্যবসা আছে শুনেছি। পয়সার অভাব নেই। মাস্কের দাম ১০ টাকা। তাও বেশিরভাগ সময় মুখের নীচে শোভা পায়। অর্থাৎ মাস্ক পরলেও তা না পরার সামিল। প্রকৃত মাস্ক পরার পয়সা থাকলেও তা কিনবেন না।
🙋 ধরুন আমার বা আমার পরিবারের "ফুল করোনা", "হাফ-করোনা" হয়ে গেছে তাই আমার আর রাখঢাক করার দরকার নেই। জনে জনে বলছি 👫👬👭 ও এমন কিছুই নয়। জ্বর এর থেকেও কাবু করে দিত গো। ভয় ! ধ্যাত্ ভয় আবার পায় কেউ ? দুহাতে করোনাকে ধুয়ে আছড়ে ধেসে দিয়েছি। ধুর মশাই আপনি যেমন। এত ভয়ের কি আছে ? এই দেখুন গো আমাকে ! ইতিমধ্যেই ভয়কে তো জয় করে ফেলেছি। ফেলেছি কিনা? একদম ঘাবড়াবেন না। দ্বিতীয় ভদ্রলোক যেই লেকচার শুনলেন, মনে মনে অমনি এমন দুরন্ত সাহস পেলেন যে গলায় ঝোলানো ৯০ বার কাচা ৫ টাকার আকাশি সার্জিক্যাল মাস্কটার চোদ্দো পুরুষ উদ্ধার করে দিলেন। নর্দমায় আশ্রয় হলো তার। পরে যে ছিলেন এটাই তো মাস্কটার ভাগ্য ভালো।
🙋 এখন সাহসী লোকের সংখ্যা বাঙালি তথা ভারতীয়দের মধ্যে খুবই বেড়ে গেছে। এতো খুব আনন্দের কথা। আমেরিকানরা বাঙালিদের থেকেও বিশাল সাহসী ছিল কিন্তু রোগও প্রচুর ছিল। আসলে খাদ্যাভ্যাসের জন্য আমরা যে সাহসী হয়েছি এটা আজ জানাজানি হয়ে গেছে। তবু খাদ্যাভ্যাসের জন্যই আমরা সাহসী কিনা সঠিক জানা না থাকলেও যথেচ্ছভাবে জীবন অতিবাহিত করা ব্রাজিল, আমেরিকায় করোনা বেশি মাথা চাড়া দিয়েছে।
🙋 তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করেও আমার কাছাকাছি ৫/৭ জন যে মারা গেলেন তারা ভেবেই নিয়েছিলেন তাদের কিছুতেই হবে না।
🙋 যারা মারা গেলেন নিশ্চিত তাদের অন্য অসুখ বিসুখ ছিল। কত ডাক্তারও তো মারা গেলেন। তাদের অসুখ কি তাঁরা তবে জানতেন না তবে ? তাদের মধ্যে তবে কি একটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার প্রবণতা ছিল। প্রচুর ছোটবড় রাজনৈতিক নেতাও মারা গেলেন। পুলিশও।
🙋 এখন পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে বোঝা গেল যে সেফ হোম বাড়িতেই সব থেকে ভালো তাই সরকারের সেফ হোম উঠে গেছে ভালো হয়েছে। এই "জনতা সেফ হোম"-এর জন্যও সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল। কারণ ওখানে সাহায্যকারীরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য মনোভাবের ছিলেন। বন্ধ হয়ে ভাল হয়েছে।
🙋 দোকানদাররা সব সময় শীত গ্রীষ্ম ( আমাদের দেশের) ১২ মাস ধুলোধোঁয়া খেয়ে খেয়ে তাদের ভয়াবহ করোনা আর কব্জা করতে পারেনি এটা প্রমাণিত। এরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য দলের কিন্তু এরা প্রমাণ করেছেন যে এদের সঙ্গে মাস্ক পরার হাত ধোয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে শুধুমাত্র দোকানদার নয়
প্রথমে যে বলেছিলাম ৫ ও ১০ টাকার মাস্ক পরিহিতদের কথা ওরাও তুচ্ছতাচ্ছিল্য দলের লোক কিন্তু দৈহিকভাবে শক্তিশালী।
🙋 তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ টিভি কাগজে মিডিয়াতে রৈখিক সমীকরণের গাণিতিক যোগের মোট পরিমাণ কমে যাওয়া। কমে যাওয়া নানা কারণে হতে পারে সতর্কতা ও শক্তিশালী ব্যক্তিদের রোগ ধরা, দুর্বল লোকেদের চিহ্নিতকরণ।
এই তিনটি বিষয়ে সরকার, ডাক্তারবাবু ও গোষ্ঠীর কোনও কাজ নেই। যদি কিছু হয় তা অলক্ষ্যেই হচ্ছে। এইটা দেখার কোনও পরিমাপ না থাকলেও এই সত্য অস্বীকার করে লাভ নেই।
🙋 আবার তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন না এটাও চোখে দেখছি। কেউ কেউ গাড়ি নিজে চালালেও প্রতিদিন স্যানিটাইজ করছেন। জুতো রোদে দিচ্ছেন। সতর্কতা কারও দেখা যায় কারও দেখা যায় না। তবু তুচ্ছতাচ্ছিল্য-এর কাছে সতর্কতা প্রথম দিন থেকে হেরে যাচ্ছে।
🙋সতর্কতা একটা শৃঙ্খলাবোধের বিষয়। এটা তার মধ্যে ছোট থেকেই আছে। সতর্কতা জীবনের একটা শিক্ষা। এই শিক্ষা মোটেই করোনার দান নয়। তবু সমস্ত সতর্কতাও ফেল করে যায় যখন জীবনে দুর্ঘটনা আসে। করোনা একটা বড় দুর্ঘটনা। সতর্কতা নিলেও করোনা হবেনা এই গ্যারান্টি নেই কারণ দীর্ঘ দিন সতর্কতা নিতে নিতে তা একঘেঁয়ে হয়ে যায়।
🙋 ৯ মাসে পড়ে গেল দুরূহ পরিস্থিতি। আমাদের এই সতর্কীকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে পথচলা ২০২১-এর জানুয়ারি পর্যন্ত গড়িয়ে যাবেই। এখনই সবচেয়ে দুরূহ সময় দেখা দিতে পারে। কারণ আমরা ভেবেছিলাম ইদ দুর্গাপুজো দেওয়ালী ও এটির পর ব্যাপক হারে করোনা ছড়াবে। কিন্তু আদপে তা হয়নি।
তাই আমাদের মনের সতর্কতা মার খেতে বাধ্য এবং তুচ্ছতাচ্ছিল্যের অগ্রগতি হতেও বাধ্য আমাদের মধ্যে।
এটাই পিক সময়। একঘেঁয়েমি ও ইঞ্জেকশনের আশায় আমরা আমাদের ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু স্পোর্টসে এমনকি ফুটবলেও ফিনিশিং পয়েন্ট ও বক্সেই মাথা ঠান্ডা রেখে অ্যাথলেটিক্স ও ফুটবলে এমনকি কম ওভারের ক্রিকেটেও শেষ ওভার, ফিনিশিং পয়েন্ট ও গোলপোস্টের অশেষ ক্ষমতা।
🙋 ফেব্রুয়ারিতে ইঞ্জেকশন আসছে ধরে নিয়ে এক সপ্তাহের লকডাউন ফিরিয়ে আনলে মনে হয় সবচেয়ে ভাল হোতো। নতুন ভাবে নতুন বছর শুরুর প্রক্রিয়া আনন্দের সঙ্গে শুরু হোক। ডিসেম্বর সবথেকে সতর্কতার সময়। ©® অলোক কুন্ডু
রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০
নির্ভয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার দিন আগত : অলোক কুন্ডু
🌏 নির্ভয়ে ভ্যাকসিন নিতে হবে সেই দিন আগত। কিন্তু দয়া করে কেউ বলবেন ভ্যাকসিনের বদলে আমাকে ভোট দিন, প্লিজ বিরত থাকুন
➡️ দেখা যাচ্ছে নিউমোনিয়া বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন বের করতে আগে দশকের পর দশক চলে গেছে। সেইসব আবিষ্কারের পেছনে কখনও সমস্ত দেশ একযোগে, কখনও যৌথভাবে, কখনও একক উদ্যোগে উঠেপড়ে সবাই এগিয়ে আসেনি, করোনার জন্য যেভাবে সকলে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আবিষ্কারের উদ্যোগ এইভাবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কখনও শুরু হয়নি। একযোগে আমেরিকা রাশিয়া বৃটেন ভারত চায়না ইজরাইল আবিষ্কারে মনোনিবেশ করেছে। এটা ব্যবহার থেকে তাগিদ বেশি। বরং রাষ্ট্র নায়কদের বেশি উদ্দোগ যুক্ত হয়েছে। প্রত্যেকটি দেশের বিভিন্ন রসায়নাগারে বিজ্ঞানীরা ছয়মাস লাগাতার কাজ করছে। প্রকৃত গবেষণায় নিযুক্ত ছাত্ররাও সঙ্গী হয়েছে ব্যাপকভাবে। স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া গেছে আবেদনের বেশি। রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ট্রাম্প থেকে সমস্ত রাষ্ট্রনায়করা প্রতিনিয়ত চোখ কান খোলা রেখেছেন। তাদের স্বার্থ সবচেয়ে বেশি।
➡️ কারণ এতদিন দেখা গেছে শিশু ও বয়স্ক মিলিয়ে একমাত্র নিউমোনিয়াতেই লাখো লাখো মানুষের প্রাণ চলে যেত। তবু সেই নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন ভালোভাবে বাজারে আসতে বহু পরীক্ষা পর্ব চলেছে।
ফাইজার নিউমোনিয়া ওষুধের বাজার জাত করার বরাত পেয়েছে। তাদের পয়সায় তাদের তত্বাবধানে তৈরি হলেও তা খানিকটা সাইজে আনতে ২০১৯-এর জানুয়ারি পর্যন্ত চলে গেছে। অথচ এর আবিষ্কার হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু রোগী চিহ্নিতকরণ একটি বড় বিষয়। তবে নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও বছর বছর তার উন্নয়ন করা ও রিসার্চ ওয়ার্ক চালিয়ে যাওয়ার ফলে ওই ACIP থেকে ২০১০-এ যেভাবে ও যে বয়সীদের নিতে বলেছিল তার ২০১৪ থেকে ২০১৮ ACIP থেকে যা বলেছিল ২০১৯ -এর জানুয়ারি আরও নির্দিষ্ট করলো। এখন ২০২০ এর মার্চে ACIP থেকে আবার বলছে কেবলমাত্র ৬৫ বছরের পর PPSV23 নিতে আরও একবছর পর PCV13 নেওয়া হয়ে যাওয়ার পর। ছোটদের জন্য আগে ছিল PCV7 বছরে একবার এখন হয়েছে তিনবার। নিউমোনিয়া বহু রকম আছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটিকে বেছে নিয়ে ভ্যাকসিন। তারমানে এই নয়
যে অন্যগুলো হবে না। অবশ্যই সম্ভাবনা কম থাকবে।
যারা সিগারেট খায় ৬৫ বছর ও বিশেষ কয়েকটি অসুখ আছে তাদের নিতেই হবে। আবশ্যিক নেওয়া হয়ে যাচ্ছে যত দিন যাচ্ছে। যত রিসার্চ হচ্ছে। ২০২০ মার্চ পর্যন্ত ACIP থেকে আপডেট দেওয়া হয়েছে।
ফিজি সরকারি স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে রিসার্চ করে দেখেছে নিউমোনিয়া PCV13 নেওয়া থাকলে কোবিদ১৯ এ ভয়াবহ কিছু হওয়া সম্ভব নয়। হলেও
এই যাত্রা রোগী বেঁচে যেতে পারে। তবে পুণরায় যেকোন ভ্যাকসিন তিনি নিতে পারেন একমাস পরে। কিন্তু ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সার্স ও ফ্লু কয়েকবার নিলে শরীরের নিজস্ব ইমিউনিটি ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
তাই মহামারী না দেখা দিলে ফ্লু-এর জন্য আর কোনও ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত নয়। তবে যারা নিউমোনিয়া নিতে পারছেন না তারা ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন নিতে পারেন। যেকোনো একটি নেওয়া থাকলে করোনা থেকে সামান্য হলেও নিশ্চিন্ত হতে পারবেন। দুটো ভ্যাকসিন নেওয়ার দরকার নেই বরং দুটো নিলে আপনার শরীরে বেশি টক্সিন ঢুকবে।
➡️ কোনও ভ্যাকসিন একবার নিলে কোনোটার আয়ু সারাজীবন। কোনও ভ্যাকসিন বছর বছর দিতে হয়। কোনোটা আবার পিরিওডিক্যাল। কিন্তু এইসব বিচার, জিনগত পার্থক্যের বিচার, নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সামাল দিয়ে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি শূন্যতে নামিয়ে এনে ভ্যাকসিন বের করা একপ্রকার দূরূহ কাজ। ব্যয় সাপেক্ষ তো বটেই। বড় বড় ওষুধ কোম্পানিগুলি এইজন্য সারা বিশ্বে গবেষক খুঁজে বেড়ান। কখনও গবেষণা হয় ব্যক্তিগত পর্যায়ে। কখনও অধ্যাপক ও ছাত্রদের সহায়তায়। আর এইসব প্রাণদায়ী ওষুধ প্রচন্ড ঠান্ডার দেশ ছাড়া আবিষ্কারের একটা মুস্কিল পর্ব তো আছেই। কখনও কোনও গবেষণাগার গড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ভূমিকায়। এই বিশ্বে জীবনদায়ী ওষুধের অবিরত আবিষ্কার হয়ে চলেছে। এইরকম গবেষণা থেমে নেই। নোবেল কমিটি থেকে বড় বড় এইরকম কমিটির অবদান এইসব আবিষ্কারের ক্ষেত্রে একটি মানবতাবাদী ভূমিকা সব সময় পালন করে চলেছে। তাই কোবিদ ভ্যাকসিন আর ট্যাবলেট বিক্রি দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। সুগারের ওষুধ না খেয়েও লোক বেঁচে আছে থাইরয়েডের ওষুধ না খেয়ে বেঁচে আছে তাই কোবিদ ভ্যাকসিনকে সেই মতো তুলনা করা ভুল হবে। অনিবার্যতা আবশ্যিক ও নিতেই হবে কোবিদ ভ্যাকসিন। এখানে ব্যবসার কি হবে না হবে তা ভেবে জনগণের কোনও লাভ নেই।
➡️ ওষুধ শিল্পে ব্রিটেন ও আমেরিকা অগ্রগণ্য। সরকারের প্রচেষ্টার মধ্যে অবশ্যই বাণিজ্যিক একটি পরিকল্পনা থাকে। সরকার প্রচুর ট্যাক্স পায়। শেয়ার কেনাবেচা থাকে, ওষুধের বিক্রি বাবদ সরকারের লাভ, ডাক্তারের লাভ, রিপ্রেজেন্টেটিভদের লাভ, ওষুধের দোকানের লাভ ছাড়া ওষুধের প্রচলন প্রায় হয়না। বিক্রি বাটোয়ারর কোনও মানে হয়না যদি না তা বাজারজাত হয় যদি না ভালোভাবে বিক্রি হয় তবেই না রিপ্রেজেন্টেটিভদের চাকরি হবে কোম্পানি থেকে ব্যবসায়ী, এজেন্ট থেকে সকলে ফুলেফেঁপে উঠবেন। ওষুধের ব্যবসা মানুষকে বাঁচায় যেমন তেমনি সমাজকে, বেকারি থেকে বাঁচায়। এখন তো ডাক্তারদের মনোরঞ্জনের সমস্ত দান প্রতিদানে কোম্পানিগুলির প্রতিযোগিতা দেখার মতো।
➡️ তা হোক। কিন্তু প্রাথমিক উদ্দেশ্য থাকে মানুষ বাঁচানোর। মানুষকে বাঁচতে সাহায্য করা সভ্যতার
মূল কাজ। আর করোনার মূল উদ্দেশ্য মানুষের ক্ষয়ক্ষতি। এত বড় আকারে মৃত্যু ও আক্রান্ত ইতিপূর্বে হয়নি। যদিও রোগের আক্রমণ থেকে প্রাথমিক ভাবে বাঁচতে মানুষ কতকগুলি আবিষ্কার আগেই করে রেখেছিল। মাস্ক, হাতধোয়া ও দূরত্ব বজায় রাখা।
এর ফলও যথেষ্ট পাওয়া গেছে বৈকি। কিন্তু মৃত্যু পথযাত্রীকে বাঁচানোর দায়িত্ব আরও বড় এবং ভাবনার বিষয়। মারণ করোনা থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে তাই ভ্যাকসিনের দিকে চেয়ে আছেন সকলে।
হ্যাঁ আবার আবিষ্কার হয়ে গেলে রাজনৈতিক দলগুলোর অস্তিত্ব সংকটও হতে পারে কারণ অনেকেই চান এই রোগে আরও মানুষ মরলে তাদের দলের সুবিধা হবে তাতে।
➡️ তাহলে কবে ভ্যাকসিন আসছে। যেহেতু ভ্যাকসিন আবিস্কারের পরেও ব্যাপক রিসার্চ চলবে। মনে রাখতে হবে পোলিও টিকা প্রথমে যেটা বাজারে এসেছিল তার মধ্যে বিস্তর গন্ডগোল ছিল। মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল।
তাই ক্ষয়ক্ষতি শূন্য যাতে হয় সেই কারণেই পরীক্ষার পর্যায়গুলো আরও তন্ন তন্ন করে ভাবতে সময় লাগছে। আমাদের দেশে একসঙ্গে অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি আবিষ্কারের কথা শোনা যাচ্ছে। চায়নার আবিষ্কার একেবারে শেষ পর্যায়ে। আমেরিকাও আগে খাতা খুলতে পারে। সকলের টিকা প্রস্তুতি পর্ব একেবারে শেষের দিকে। ফেব্রুয়ারি থেকে মনে হয় ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। যদি আমেরিকান ভ্যাকসিন আগে বের হয় অথবা ব্রিটিশ তবে এরা অনেক নির্ভরযোগ্য হবেন। তা না হলে ফ্রিতে ভারতের ভ্যাকসিন ওই সময়েই শুরু হয়ে যাবে। নববর্ষের দিনে কিছু বার্তা শোনা যাবেই। প্রথমে করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে লড়ছেন যারা তারা জানুয়ারির শেষ থেকে নিতে শুরু করতে পারেন। তা না হলে প্রত্যেকই
তার প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চাইবেন। কার সব থেকে কার্যকরী তা বুঝতে দুবছর লেগে যাবে। যাদের বেশি কার্যকরী তারা ভালো ব্যবসা করুক এবং করবে। জনগণের ওইদিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। তাদের বাঁচতে হবে। কারণ ভ্যাকসিনের কার্যকরী ভূমিকা বুঝতে দুবছর থেকে দশবছর সময় লেগে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে যে কোনও মারণ রোগকে জব্দ করতে শুধু ওষুধ আবিষ্কার করলেই হবেনা। কতখানি কাকে কাকে দিতে হবে এটাও একটা ব্যাপার। সকলকে ঈশ্বর সমান ছাঁচে তৈরি করেনি যখন তখন ওষুধের প্রয়োগেও তফাত হবে কিছুটা। কিন্তু এখন যা দেবে তাই নিতে হবে। জ্বর, সর্দি, চুলকানি, পায়খানা এগুলো যেকোনো ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এটা মনে রাখতে হবে।
( ছবিটি প্রতিক অর্থে ব্যবহৃত)
©® অলোক কুন্ডু
শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০
ভিটামিন-ই এর উপকারিতা: অলোক কুন্ডু
দামে সস্তা ভিটামিন "ই" দুভাবে ব্যবহার করা চলে । নারকেল তেলের সঙ্গে একটা করে ভিটামিন ই হাতে নিয়ে চুলে মাখলে চুলের উজ্জ্বলতা অনেকটা বেড়ে যাবে এবং পড়াও কমে যাবে। Evion-200 ml. দাম খুব পড়ে না অন্তত চুলের সমস্যা যাদের আছে সপ্তাহে একদিন এটা করে দেখাও যায়। পাউচ ট্যাবকে সেফটিপিন দিয়ে ফুটো করে মাথায়দামে সস্তা ভিটামিন "ই" দুভাবে ব্যবহার করা চলে । নারকেল তেলের সঙ্গে একটা করে ভিটামিন ই হাতে নিয়ে চুলে মাখলে চুলের উজ্জ্বলতা অনেকটা বেড়ে যাবে এবং পড়াও কমে যাবে। Evion-200 ml. দাম খুব পড়ে না অন্তত চুলের সমস্যা যাদের আছে সপ্তাহে একদিন এটা করে দেখাও যায়। পাউচ ট্যাবকে সেফটিপিন দিয়ে ফুটো করে মাথায়
তেলের সঙ্গে ঘষে ঘষে মাখলে উপকার অবশ্যই । যাদের শরীরে ভিটামিন ইয়ের ঘাটতি হয় তাদের এটা প্রয়োজন । যাদের লিভার বড় বা ফ্যাট জমেছে বয়স্ক হলে পেটের ডানদিকে লাগলে অথবা গ্যাস অম্বলের সমস্যায় পেটের কষ্টে দুশো মিলিগ্রামের একটি করে ট্যাবলেট-পাউচ দুবেলা খাওয়ার পর একটি করে দুবেলা ৭/৮ দিন গ্যাপ দিয়ে মাস খানেক খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। যারা গরমকালে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন তারা খেয়ে ও মুখে মেখে দেখতে পারেন । স্কিনের সমস্যায় ভিটামিন ই প্রয়োজন , মুখ তাদের
উজ্জ্বল হতে পারে । যাদের রক্তাল্পতা তারাও
মাঝেমধ্যে খেয়ে দেখতে পারেন । মনে রাখবেন রক্তাল্পতা থাকলে লিভার তার বড়
হবেই হবে। জনডিসেও এই ওষুধের উপকারিতা আছে ।এমনকি বড় বড় চিকিৎসকরা হার্টের রোগীকে চটজলদি ভিটামিন ই দিয়ে
থাকেন । সুগারের জন্য এটি প্রযোজ্য এমনকি সুগার থাকলেও একমাস খেয়ে দেখতে পারেন এবং রক্ত পরীক্ষায় যদি দেখেন উপকার হয়েছে তাহলে ব্যবহার মাঝেমধ্যে করে দেখতে পারেন। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । চোখ ঠিক রাখতে এটি একটি অপরিহার্য ওষুধ ।
ওজন বাড়তে দেয়না । বয়স্কদের সুস্থ
রাখার একটি অপরিহার্য ওষুধ এবং তাই বহুরকম সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন ই বেশ ভালো পরিমাণ মিশ্রিত থাকে। তবে বেশি খেলে সমস্যা তৈরি হতে পারে । অ্যালার্জি বের হতে পারে গা বমি করতে পারে মাথাও ধরতে পারে চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন। অনেক খাবারের মধ্যে ভিটামিন ই পাওয়া গেলেও তা কতটা পরিমাণ মানুষ খান তার ওপর সবকিছু নির্ভর করে । ১৫/২০ মিলিগ্রাম প্রয়োজন লাগে প্রতিদিন সুস্থতার জন্য । কিন্তু আমরা কতটা খাই সে হিসাব কখনও করা যায় না । ভিটামিন ই একদিন বেশি হয়ে গেলে তার বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়াগুলি দীর্ঘদিনের
নয় । তবু ভিটামিন ই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই খাওয়া উচিত । যদি চিকিৎসকগণ নিয়মিত পরীক্ষা করে প্রতিটি নাগরিকের জন্য ভিটামিন ই কতটা প্রয়োজন তা প্রতি মাসে দেখে জানাতে পারতেন তাহলে ক্যানসার রোগী দেশে কুড়িভাগ কমে যেত বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন ।
তেলের সঙ্গে ঘষে ঘষে মাখলে উপকার অবশ্যই । যাদের শরীরে ভিটামিন ইয়ের ঘাটতি হয় তাদের এটা প্রয়োজন । যাদের লিভার বড় বা ফ্যাট জমেছে বয়স্ক হলে পেটের ডানদিকে লাগলে অথবা গ্যাস অম্বলের সমস্যায় পেটের কষ্টে দুশো মিলিগ্রামের একটি করে ট্যাবলেট-পাউচ দুবেলা খাওয়ার পর একটি করে দুবেলা ৭/৮ দিন গ্যাপ দিয়ে মাস খানেক খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। যারা গরমকালে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন তারা খেয়ে ও মুখে মেখে দেখতে পারেন । স্কিনের সমস্যায় ভিটামিন ই প্রয়োজন , মুখ তাদের
উজ্জ্বল হতে পারে । যাদের রক্তাল্পতা তারাও
মাঝেমধ্যে খেয়ে দেখতে পারেন । মনে রাখবেন রক্তাল্পতা থাকলে লিভার তার বড়
হবেই হবে। জনডিসেও এই ওষুধের উপকারিতা আছে ।এমনকি বড় বড় চিকিৎসকরা হার্টের রোগীকে চটজলদি ভিটামিন ই দিয়ে
থাকেন । সুগারের জন্য এটি প্রযোজ্য এমনকি সুগার থাকলেও একমাস খেয়ে দেখতে পারেন এবং রক্ত পরীক্ষায় যদি দেখেন উপকার হয়েছে তাহলে ব্যবহার মাঝেমধ্যে করে দেখতে পারেন। এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । চোখ ঠিক রাখতে এটি একটি অপরিহার্য ওষুধ ।
ওজন বাড়তে দেয়না । বয়স্কদের সুস্থ
রাখার একটি অপরিহার্য ওষুধ এবং তাই বহুরকম সাপ্লিমেন্ট ভিটামিন ই বেশ ভালো পরিমাণ মিশ্রিত থাকে। তবে বেশি খেলে সমস্যা তৈরি হতে পারে । অ্যালার্জি বের হতে পারে গা বমি করতে পারে মাথাও ধরতে পারে চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন। অনেক খাবারের মধ্যে ভিটামিন ই পাওয়া গেলেও তা কতটা পরিমাণ মানুষ খান তার ওপর সবকিছু নির্ভর করে । ১৫/২০ মিলিগ্রাম প্রয়োজন লাগে প্রতিদিন সুস্থতার জন্য । কিন্তু আমরা কতটা খাই সে হিসাব কখনও করা যায় না । ভিটামিন ই একদিন বেশি হয়ে গেলে তার বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়াগুলি দীর্ঘদিনের
নয় । তবু ভিটামিন ই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই খাওয়া উচিত । যদি চিকিৎসকগণ নিয়মিত পরীক্ষা করে প্রতিটি নাগরিকের জন্য ভিটামিন ই কতটা প্রয়োজন তা প্রতি মাসে দেখে জানাতে পারতেন তাহলে ক্যানসার রোগী দেশে কুড়িভাগ কমে যেত বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন ।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু
#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...
-
বড় চমক, বাংলা থেকে এনডিএর-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী ●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●● গত তিন বছর বিভিন্ন ইস্যুতে মমতা সরকারকে নিশানা করেছেন ব...
-
⛔ এটা ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৭-এর 'বর্তমান' খবর কাগজ। বরুণ সেনগুপ্ত'র আগাগোড়া ১০০% সমর্থন তখন। জিতেন্দ্রপ্রসাদ এসে সোমেন মিত্রকে নিয়ে...
-
#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা #CoronavirusLockdown #COVID19PH #COVID19 #CoronavirusPandemic #coronavirus #ভিটামিন_সি ■ বিজ্ঞানী ইন্দুভূষণ ...