মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭

Poetry of Alokkundu1302@gmail.com :: অলোক কুন্ডুর কবিতা

জহুরি / অলোক কুন্ডু

পরিপাটি করে হীরের কুচি সাজিয়ে
গয়না বানানো শিখিয়েছিল দুখিরাম
অনায়াস মুগ্ধতায় জেল্লাদার নেকলেস থেকে
ব্রেসলেট-বাউটি চোখ ধাঁধানো
জড়োয়া গয়নায় রূপ দিতে
এতল্লাটে নাম ছড়িয়ে পড়লেও
পলাশ , দুখিরামকে ছেড়ে যায়নি ।

দুখিরাম বলেছিল গয়না হোলো হুঁশ
খানিকটা পরের বউয়ের মতো - কর্পূর হ্যায়
" ঘর কা মুরগি ডাল বরাবর "- বলে হেসেছিল
ছোকরা পলাশ কথাটা ঠিক  ঠাওর করতে পারেনি
শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে শুনেছিল
নীরবে ছিলে কেটে গেছে সারারাত
দেড়াদামে সেগুলো বিক্রি করেছে দুখিরাম

মনকাড়া গোল্ডপ্লেটিং থেকে মিনাকারি
সবেতেই আদর ঢেলে দেয় সে
সোনালি জৌলসে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে
নারীর লাস্যের ঠিকানা যেন পলাশের জন্মগত
সৌন্দর্যবিদ্যার এই আদরে
পলাশ কি তবে যাদু জানে ?
জহুরির চোখ দুখিরামের 
হাসি লুকিয়ে রাখতে সেও জানে অবিকল ।

হাতসমান ঘোমটার আড়াল থেকে
ভাজামশলা আর তেঁতুল দিয়ে
ছোলাসেদ্ধ পিঁয়াজের আলুচোখা
মেখে দিয়ে যায় রোজ বিকেলে --দুখিরামের বউ
সোহাগি যতক্ষণ থাকে
ওর গয়নাগুলোও বাজে অবিরত
তখন পলাশের হাতের তালুতে
দুখিরামের গয়না আদর মাখামাখি করে শুধু ।

দুখিরামের অগোচরে একদিন
সোহাগি কানের কাছে মুখ এনে বলেছিল
এত আদর কোথা থেকে শিখলে ?
হীরের টুকরোর সঙ্গে
সোহাগির হাসি মিশে গিয়েছিল
সেই প্রথম সোহাগির মুখ দেখে ফেলা ।

লাখ টাকার হীরের নেকলেস রেখে
কতবার দুখিরাম হীরেপট্টিতে মহাজনের কাছে গেছে
এসে দেখেছে সব ঠিক আছে
আজও তেমনি দুখিরাম নেই
দরজা গোড়ায় সোহাগির চুড়ি বেজে উঠলো
নিঃশব্দে দরজা বন্ধ করে দিল
পলাশ এই প্রথম ছিলেকাটা বন্ধ করে দিল ।
© অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭

Poetry of Alok Kundu :: অলোক কুন্ডুর কবিতা

আকাশ ভেঙেছে / অলোক কুন্ডু

দু হাত দিয়ে গাল ধরেছে সে
ঠোঁটের কথা পড়তে চেয়েছে
তখন ছিলনা মোটেও শ্রাবণ মাস
তবুও যেন আকাশ ভেঙেছে ।

আজ কিন্তু সত্যি বৃষ্টি হলো
জল জমলো পিচ রাস্তার মোড়ে
দু হাত দিয়ে গাল ছুঁলোনা কেউ
ছাতার নীচে ঠোঁট শুকিয়েছে
© অলোক কুন্ডু

( Translated by Miss Lopamudra Dey ,JRF)

His two hands touched her cheeks
Trying to read her expensive lips
Then it was not the month of Shraban
But still the rain showered in.

Today it rained heavily
Water got collected at the pitched-road    
                                                     crossing
His hands did not touch her cheeks
Her parched lips waiting under the shade of
                                                             umbrella .

সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU ::: অলোক কুন্ডুর কবিতা

বাংলাটাংলা ও বাংলাটা ঠিক আসে না 
অলোক কুন্ডু

ইংরেজিতে সেরা ছিলেন প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী
আঁকেন লেখেন মলাট করেন
স্কেচ করে দেন তক্ষণি
কিন্তু তিনি ডিলিট পেতেন যদি পড়তেন ইংরেজি
তার মুখে ভাই শোনা যায়নি
কোনো দিনও বেতালি

বদলে দিলেন বাঙালির চোখ চিত্রনাট্যে বাংলাকে
বদলে দিলেন হাতের লেখা সৌমিত্র চ্যাটার্জীর
কাশবনেতে ছুটছে ট্রেন গর্বে তখন ফাটছে বুক
বাংলা ভাষার জার্মান হৃদয় সর্বত্যগী আগন্তুক ।

বাংলাতেই  লিখেছিলেন
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম
তিন পুরুষে মাতিয়ে গেছেন
বাংলাভাষার দারুন দিন
মজার ছড়া লেখার মতো
তাঁর মতো কার হাত ছিলো ?
ভুলেও তবু পাগলা গারদে
মাতৃভাষাকে পাঠাননি ।

ডিলিট তিনি পেয়েও ছিলেন চলচ্চিত্রের ভাষাতে
সেটাও ছিলো মাতৃভাষায় সেলুলয়েড ফিতেতে
অকপটে বলেও গেছেন সবার কাছে উল্লাসে
আয়ের উৎস তাঁরও ছিলো
বাংলাভাষায় বই লিখে ।

উচ্চারণে ' বাংলাটাংলা ' মাতৃভাষাকে অপমান ,
এহেন কথা শুনিনি কোথাও
কোনোদিনও তাঁর মুখে
একবারও বলেননি কখনো
ছেলে ইংলিশ মিডিয়াম
জানেন দাদা সত্যি বলছি বাংলাটা ঠিক আসে না
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU ::অলোক কুন্ডুর কবিতা

বৃষ্টি ভেজা কাগজের ফুল / অলোক কুন্ডু

বৃষ্টিভেজা কাগজের ফুল যেমন ছিলো তেমনি আছে ।
ইনবক্সে লিখেছিলে-- পাগল হয়েছো না কি
কাগজের ফুল কে বা কাকে দিয়েছে কবে শুনি ?
মেঘের পালক অশ্রুমাখা ঝিরঝিরে কোন জলে
সেদিনও বুঝি এমনি করেই বৃষ্টি হয়েছিল ।
ফুলের কথা ভুলেই ছিলাম প্রায়
কার জন্যে কোন মেলাতে
কিনেছিলাম তবে ?
এত বছর পর আর কী মনে থাকে !
সেসব যেন বৃষ্টি ভেজা ঝাপসা মতো কাচ
পুরনো এক বইয়ের মাঝে খুঁজে পাওয়া আজ
কী নামে যে ডাকি তাকে
মোটেও সে ফুল আকাশকুসুম নয়
তবে সে ফুল কুসুমকোমল হতেও পারে হয়তো ।
ভাবতে ভাবতে আকাশ খানায় ওলোট পালোট
বিকেল থাকতে সন্ধে ঘনিয়ে এলো ।
আর ঠিক তখনই
পাপড়িগুলির একটা করে খুলতে শুরু করে দিল
মধ্যে তার অলৌকিক এক আলো ।
ভাবতে আমি শুরু করি
কার জন্যে কোন মেলাতে কিনে ছিলাম এ ফুল আমি
ভাবতে ভাবতে বৃষ্টি ধরে গেছে
কোথায় যেন যাওয়ার বুঝি ছিলো
কোথায় বা যেতে চেয়েছিলাম
সবকিছু সেই ফুলকে নিয়ে এমনই আমি বেখেয়ালি
দাঁড়িয়ে আছি চারপাশেতে হাঁটু সমান জল ।
এমন সময় পাশের বাড়ির ক্লাস ফোরের তিন্নি বললো--
আমি জানি মনটা তোমার কেন এত খারাপ !
অবাক হয়ে জানতে চাইলাম অতটুকু মেয়ের কাছে
তিন্নি বললো -- পরে বলবো
আগে বলো ফুলটা আমায় দেবে ?
© অলোক কুন্ডু

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু

♥♡○ ওই মেয়ে  তুই  যাবি কি  না বল  ○♡♥

□●□ অলোক কুন্ডু  □●□

□●□●□●□●□●□●□●□●□
ওই মেয়ে  তুই  যাবি  কি  না বল ?
আকাশ  ভেঙ্গে বৃষ্টি উঠোনময়
এখানে আজ বৃষ্টি হল ,বাজ পড়লো
আরশি  ভেঙ্গে গেল বুকের  কাছে
জলমগ্ন নাউ ছেড়েছি 
মাঝ দরিয়ায় যদি যেতে চাস
বলবো মেঘের  কাছে
ঝরো ঝরো
বৃষ্টি বারোমাস l
ওই মেয়ে  তুই কোথায় আছিস বল
জলেতে আজ নাউ ছেড়েছি
চুল উড়িয়ে  আমার সাথে চল l
না হয় আছিস এলোমেলো
আটপউরে ঘাগরা পরে ,
সাজটা না হয় ইতস্তত
মাঝ দরিয়ায় অনেকটা আজ জল l
দূরদেশে ওই মেঘলা আকাশ
আজো তেমন অভিমানী
ডাকলো তবু যেন
ডাকলো বৃষ্টি দুপুর  বেলা
বাজলো নূপুর  রিনিঝিনি
আমার কি  আর  দোষ  আছে  তুই  বল ?
দীপদানিতে কাজল আছে
যেমন  খুশি  লাগাস  তবে
যেমন  খুশি  বাজাস  নূপুর 
মাঝ  দরিয়ায় চল  I
□●□●□●□●□●□●□●□●□●□●□
© অলোক কুন্ডু

বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭

Poetry of Alok Kundu :: অলোক কুন্ডুর কবিতা

আজও তত কষ্টের / অলোক কুন্ডু

চেষ্টা যত করি লেখা হয়ে ওঠে কম
আজকের লেখা কালকে বহরে ছোট
সকলের লেখা পড়তে পড়তে ভাবি
কিছুই তো লেখা হলনা সারাজীবন ।

প্রতিবাদে যদি লাভালাভ ভল্ট খায়
নীল লাল রঙ সবুজ গেরুয়া আরো
এই সব রঙ পতাকা বাহিত হয়ে
সব লেখাগুলো পড়ে থাকে জঞ্জালে ।

আমার কী লাভ এত কচকচানির
যারা পারে তারা খির খাক রাজসিক
বঞ্চনাগুলি শোকের মতো আছড়ায়
শত্রু কখনো পেছন ছাড়েনা জীবনে ।

হা-হুতাসগুলি বেলুনের মতো সৌখিন
বেদনাগুলোকে ছুঁয়ে দেখি বুঝি রোজ
মিছরির ছুরি দেখেও চেনা যায়নি
তবু পরের দুঃখ আজও তত কষ্টের ।
© অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭

Poetry of Alok Kundu :: অলোক কুন্ডুর কবিতা

সলমন উঁকি মারছে / অলোক কুন্ডু

জানলার সামনে বড় রাস্তা
ওপারে বন্ধ জুট মিলের লম্বা চওড়া দেওয়াল
রোজ দেওয়ালের ছেড়া পোস্টার থেকে
সলমন খানের বাইসেপ দেখে মেয়েটি কলেজ যায়
ঠিক তার সামনেই কে যেন
আজ একটা আটছয় বেডকভার শুকোতে দিয়েছে ।
বেড কভারের মাঝ বরাবর ছেড়া গর্ত
সলমনের হাসি মুখ উঁকি মারছে
মেয়েটা সলমনের উদ্দেশ্যে কিছু কথা ছুড়ে দিলো
পরশুর বৃষ্টিতে পোস্টারের একটা কোন খুলে গেছে
হাওয়ায় সলমনের হাসিটা আরও উড়িয়ে নিচ্ছে
এখনও ম্যায়নে প্যার কিয়ার সরল হাসি
নিজের চুলটায় একটা পনিটেল করলো মেয়েটা
গাডার সেঁটে দিল ঝটপট
চোখের নীচে কাজলটা একটু গাঢ় করে দিল
মুখটা একবার আয়নায় দেখে
একটা ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলো
পরক্ষণে জানলার কাছে গিয়ে হাসলো সলমনের দিকে
একটা উড়ন্ত চুম্বন হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে চলে গেল
লা লা করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে রাস্তায় - মা আসি 
  ইউনিয়নের দাদারা বলে দিয়েছিল
দোলের পর হোলী হবে জবরদস্ত
বাসস্টপে যেতেই একটা বাস পেয়ে গেল মেয়েটা
ভিজে বেডকভারের ছেড়া গর্ত দিয়ে
সলমন উঁকি মারছে
মেয়েটা বিড়বিড় করলো --বাই-টা টা ।

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...