শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০

Independence Day

■একটি কাল্পনিক পতাকা উত্তোলন
■ অলোক কুন্ডু

এমন ভাবখানা দেখালেন যেন আপনি ও             
আপনারাই স্বাধীনতা এনেছেন
এমন অংহকারি ভঙ্গিতে পতাকা তুললেন
যেন আপনারাই সিপাহি ছিলেন এদেশের ।

দড়িটা ঠিকমতো খুলছিল না বলে
প্রাইমারির মাষ্টারমশাই বেচারাকে
মনে করলেন আপনার বাড়ির চাকর 
আপনার তাকানোয় স্বাধীনতা গুমরে উঠলো ।

কাদায় আপনার নতুন জুতো জোড়ায়
দাগ লেগে গেল বলে বেজায় বিরক্তি এখন চোখেমুখে
ওদের দেওয়া চা মিষ্টি ছুঁয়েও দেখলেন না
ক্লাস ফোরের মেয়েটা ফিরিয়ে নিয়ে গেল ।

পতাকার মাঝে বাঁধা ফুলগুলো ছড়ায়নি কেন
এই কৈফিয়তে মাষ্টারের কান তখন লাল
মিহি গলায় তবু সম্মান দিতে কার্পণ্য ছিলনা এতটুকু
লা-ওপালার কাপ ডিস কিনে এনেছিলেন যত্নে ।

আপনার ধোপদুরস্ত পোশাক থেকে 
সুগন্ধিগুলো ঠিকমতো ছড়াচ্ছিল কি না 
আর সেই গন্ধে আশপাশ কেমন ম ম করছিল
তাও যাচাই করে নিচ্ছিলেন সুদক্ষ নিরিক্ষায় ।

জোড়হাত করে এতক্ষণ যে ছেলেমেয়েগুলো
দাঁড়িয়েছিল অবাক বিস্ময়ে গাইছিল গান
তাদের দিকে একবারও ফিরে তাকালেন না
আপনার বক্তৃতায় ১৯৪৭ থেকে ২০২০ চলছে ।

তটস্থ দাঁড়িয়ে তখনও প্রাইমারির ছেলেমেয়েগুলো
আপনার দুর্বোধ্য বক্তব্যের উচ্চারণ ততক্ষণে
পেরিয়ে যাচ্ছে মাঠের পর মাঠ ধানক্ষেত
মাইক দেখে ঢুকে পড়া আগুন্তক শ্রোতা‌।

একটা তেরঙ্গা কাটা ঘুড়ি সভার কাছে আসতেই 
ছেলেমেয়েগুলো লাইন ভেঙে দিল হুড়মুড় করে 
উপস্থিত সকলকে অবাক করে কাটা ঘুড়ি তখন
পতাকার সাথে জড়িয়ে উড়তে শুরু করেছে।

আপনি তবুও বলে চলেছেন স্বাধীনতার মানে 
বলে চলেছেন সংবিধান থেকে শিক্ষা
স্বাস্থ্য থেকে সিয়াচেন সম্প্রীতি থেকে সততা  
সভ্যতা না শৃঙ্খলা কোনটা বেশি দামি।

প্রসঙ্গের অবতারণায় তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে অভিভাবকদের মুখ থেকে মুখের জড়তা
গোবেচারা মানুষ গুলো কীভাবে জানবে এইসব
আপনিও ঘেমে নেয়ে ততক্ষণে ভেবেছেন কেমন দিলেন এদের।

৭৪ বছর ধরে শুনে যাওয়া সেইসব কথাগুলো 
ততক্ষণে পতাকা থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়া কাটা ঘুড়ির মতো বাতাসে লাট খেতে লাগলো
ছেলের দল চিৎকার করে উঠলো--ভো কাট্টা ।
©® অলোক কুন্ডু
( সঙ্গের ছবি: লাদাখ থেকে তোলা গতবছর)

বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০

অলোক কুন্ডুর কবিতা/ মহা প্রসাদের অপেক্ষায়

■ মহাপ্রসাদের অপেক্ষায় / অলোক কুন্ডু

আত্মপক্ষ সমর্থন না করেই মনুষ্যত্বের স্বরূপগুলি ফুরিয়ে যেতে বসেছে
ফুরোতে ফুরোতে জেলখানার এক্সিট পয়েন্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি আর
তবু বাসি ঘটনাগুলির ঝাড়পোঁছ করলে মণিমুক্ত উদ্ধার করতে পারা যায় দু-চারদিন 
মস্তিষ্ক চিন্তার বিস্ফোরণ বুঝতে পারে
তারপর আবার বদ্ধ জলাশয় সেই পানাপুকুর 
ছিপ ফেলে চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়া।

কিন্তু কিইবা করার থাকে শূন্যস্থান নিয়ে !
বুদবুদের সৌন্দর্য বালকের কাছে মুক্তোর মতো 
ফানুস উড়িয়ে দিলে একরকম অপ্রয়োজনীয় অহংকার জন্ম নেয়
বুদবুদ মিলিয়ে যায় ফানুসের‌ও শব্দ হয় না 
তারপর এদিকে সেদিকে পটকায় অনিবার্য আগুন
পাতাল থেকে উঠে আসে আনন্দ হুল্লোড়ের হৈচৈ
জয়ের ধ্বনি শুনতে চাওয়া সেও তো নেশার মতো 
বাহবাগুলো গুরুত্বপূর্ণ করে দেখাতে পারলে নেশা বাড়তে থাকে
আয়োজনের কৌতুকে ঢাক বাজতে শুরু করে
যা দুর্যোধন‌ও বোঝেনি
কানের ভেতর ওই ধ্বনি ধীরে ধীরে ধ্বংসস্তুপ গড়ে তোলে
বুক চাপড়াতে থাকা গরিবের হা-হুতাসগুলো শতচ্ছিন্নের মতো ধুলিস্মাৎ 
সিংহাসনের সিংহভাগ ছলচাতুরি খেলে যায়
দাবিসমূহকে ভেঙে চুরচুর করতে থাকে শক্তি
প্রতিবাদগুলো বোবা কালার মতো মুষড়ে যায়
সাজানো বাহবাগুলি ভেতর ভেতর তবু অস্ত্রের মতো ঝকঝকে।

বিপদ সংকেতের অর্থ বোঝা বিস্তর অবুঝ বিষয়
ক্ষমতার আস্ফালনগুলি তামাটে লজঝড়ে
ছেঁড়া কাগজের ওপর আঠা দিয়ে দিয়ে তৈরি
তারপর আরও ছেঁড়া কাগজ তারপর রাংতা
মুখোশধারী জানে সৌন্দর্য সৃষ্টি করা চাই
এমন সৌন্দর্যকে মুখোশ‌ই তো বলে
বুদবুদ -মুখোশ-পতাকার ওড়াউড়ি
এইসব কিছু গরিবের কাছে ক্ষণস্থায়ী আনন্দ 
এই আনন্দের পরতে পরতে বিদ্রুপের ঝাঁজ
মৃতপ্রায় মগজের ঘিলু তখন জড় হয় মগডালে
যেখানে এক‌ইরকমের অনেক পতাকা পর পর সাজানো।

ফন্দিফিকিরের যত হাততালি জড়ো হয় 
জয়ধ্বনির তেজে 
নিঃস্ব পতাকায় আর বাতাস লাগতে চায়না
তবু একগুঁয়ে একরোখা আগ্রাসী মতামতের বাড়বাড়ন্ত
আচরণগুলি মহিমান্বিত হয় কাড়ানাকড়ার শব্দে
জানলা বারান্দা উপচে দেয় লাখো নকল হাতের নড়াচড়া
চতুর্দিকে ফটাফট ছবি উঠতে থাকে 
রঙের চতুর বাহারে তখন রমরম করতে থাকে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল 
কৌরবকূল দ্রোন শতশত হাজির ওইপথে
মন্দ ঢাকার প্রক্রিয়া এইভাবে হতে শুরু 
মুখোশের সৌন্দর্য উপভোগ উৎসব পালনে
বাসনায় যুক্ত হয় ঢাক ঢোল কাঁসি জগঝম্প
শব্দবাজিতে হুলস্থুল হয় চতুর্দিক
দম্ভসমূহ নকল বারুদ সঞ্চয় করে বুদবুদের মতো
মুখোশের কারুকাজে অলঙ্কার ঝলমল করে
সোনালি রূপোলি রঙের কত না সম্ভার 
ধেয়ে যেতে চাওয়া অনিবার্য ধ্বংসের দিকে 
প্রতিটি বিষপাত্র জানে অমৃত কতটা 
প্রজারা দলে দলে ওই মহাপ্রসাদের অপেক্ষায় এসে দাঁড়িয়েছে।
© অলোক কুন্ডু

বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০

Vitamin-C written by Alok Kundu

#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা

#CoronavirusLockdown #COVID19PH #COVID19 #CoronavirusPandemic #coronavirus 

#ভিটামিন_সি

■ বিজ্ঞানী ইন্দুভূষণ চট্টোপাধ্যায় ১৯৩০-এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন বরিশালে। রসায়ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বরিশালে কিন্তু ৪৬ -এর দাঙ্গায় অর্ধেক পড়ে সেন্টজেভিয়ার্স ছেড়ে কলকাতা চলে আসেন। কলকাতায় দুবছর পর ওই রসায়ন  নিয়ে স্কটিশে ভর্তি হন। এখানেই গবেষণা অ্যাসকরবেটিক অ্যাসিড নিয়ে। তাঁর থিসিসকে মান্যতা দেন ভিটামিন-সি এর আবিষ্কর্তা স্বয়ং চার্লস গ্লেন কিং। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-রসায়নের গবেষক ও অধ্যাপক। ১৯৭৩ সালে সায়েন্স পত্রিকায় দেখিয়েছিলেন, যদি অক্সিজেনে শ্বাস নিয়ে বাঁচতে চান তবে খাবারে যথেষ্ট ভিটামিন-সি খান। তিনি এটাকে "স্লোগান" করে দিয়েছিলেন এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এই কারণে। কিন্তু আমাদের এমনই দুর্ভাগ্য যে, সেই কথা আমরা কখনও জীবন ধারণে মনে রাখিনি এবং পাত্তাও দিইনি। তাই আমাদের রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এই স্লোগান আজও দেওয়ালে লেখা হয়ে ওঠেনি। আমরা এমনই আহাম্মক। রাজনীতি ছাড়া কিছুই আমরা খেয়াল রাখিনা। ৯০ বছর বয়সে গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯-এই তিনি প্রয়াত হয়েছেন এই কলকাতায়। করোনা আসাতে টিভিতে রাতদিন ডাক্তারবাবুরা নিদান দিচ্ছেন এই মহা-টোটকার। এখন তাই শাকসবজিতে কতখানি ভিটামিন-সি পাওয়া যাবে এইসব বিচারের সময় আমাদের হাতে এখন আছে কি নেই সেকথা আলাদা, স্কুলের পড়া কবেই মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে। কাঁচা আমে ৬০% ভিটামিন-সি আছে। পাতি লেবু সহ সমস্ত লেবুতে‌ও অঢেল ভিটামিন-সি, অ্যাপোলোর আমলকি জুস অমিল ভিটামিন-সি'র দৌলতে। অক্সিজেন ঠিক রাখতে ভিটামিন-সি এখন ওষুধের দোকান থেকে আমরা কিনে এনে বাড়িতে রেখেছি। তবে অতিরিক্ত ভিটামিন-সি খেলে পেটের অসুখ হতে পারে বলে বিজ্ঞানের খাতায় লেখা হয়েছে। তাই সাতদিন খেয়ে গ্যাপ দিয়ে আবার খেতে পারেন। ©® অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০

#করোনায় অনলাইন শিক্ষা

#ধান_ভানতে_শিবের_গীত নয় 
#অলোক_কুন্ডু

লকডাউন বা বাফারজোন রেখে দিয়ে বা এইসব পুরোপুরি উঠতে হয়তো জুন পেরিয়ে যেতেও পারে। যদিও স্কুল আপাতত ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ আছে। তবুও বিশেষ করে এই বছর ছেলেমেয়েদের স্কুল পাঠাতে অভিভাবকদের একপ্রকার অনীহা আছে। তীব্র আপত্তি আছে। বহু ছেলেমেয়েদের বাবা মা এবছর কেরিয়ার চান না। তারা অনলাইনে শিক্ষায় প্রচণ্ড খুশি হয়েছেন। এখন "ভয়াবহতা" এই বিষয়টা যদি মাথায় রাখা যায় তবে ছাত্রছাত্রীদের ঘরে বসে পড়াশোনা করাটাই সম্ভবত সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া কোনোভাবে যদি একটি ছাত্রছাত্রী এই সংক্রমিত হয়ে পড়ে তবে একজন নয় হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীরা সমূহ বিপদের মধ্যে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে অনলাইন লেখাপড়ার গুরুত্ব এখন অপরিসীম। কোনও অবস্থাতেই এই ব্যবস্থাপনার বিরোধিতা করার সময় এখন নয়। শিক্ষক সংগঠন থেকে অনলাইনে শিক্ষা পৌঁছনোর হিসেবটি অনেক কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। শিক্ষক সংগঠন গুলির সম্যক ধারণাই নেই গ্রাম সম্পর্কে। তারা জানেনা কতজন মানুষের হাতে স্মার্টফোন আছে। প্রকৃতপক্ষে এটি ৬০% ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ১০০% সুযোগ পাচ্ছেন 
যেটা তারা মাত্র ১৫% বলছেন ছাত্রছাত্রীর হিসেবে। সরকার চাইলে এই শিক্ষা আর‌ও প্রসারিত করতে পারে। পাড়ায় পাড়ায় যাদের কম্পিউটার আছে তাদের ব্রডব্যান্ড কনেকশন দিয়ে বা অন্য কোনও ভাবে ক্লাবের মাধ্যমে অনলাইন পৌঁছে দিয়ে অনলাইন শিক্ষা গরীব ও পিছিয়ে পড়াদের কাছে পৌঁছে দিয়ে শিক্ষার আদানপ্রদান 
চালু রাখা যেতে পারে এটা এমন কিছু কঠিন কাজ নয়। লোকাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের, যাদের কম্পিউটার আছে  তাদের সাহায্য নিলে এই অনলাইন ব্যবস্থায় যে ফাঁকফোকর আছে তা ভরাট হয়ে যাবে। তারাও এখন অনলাইন শিক্ষা দেওয়া থেকে সাহায্য করার ব্যাপারে উদ্যোগী। উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে সাময়িক তাদের কাজে লাগালে তারাও এক একজন গরীব ও পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের তৎকালভাবে সাহায্য করতে পারবেন। শুধুমাত্র সরকারকে সঠিক পরিকল্পনা ও আয়োজন করতে হবে।  
এই নিয়েও জোর তর্ক শুরু হয়েছে যে, অনলাইনে প্রকৃত শিক্ষা হয় কিনা? যদিবা হয় তবে তা কি ক্লাস টিচিং মেথডের মতো কতখানি শিক্ষাশ্রয়ী হতে পারবে। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলি তবে কীভাবে হবে? যুক্তি পাল্টা যুক্তিতে ছাত্রছাত্রীদের গ্রহণযোগ্যতা চিরকাল‌ই চাপা দেওয়ার একটা চেষ্টা চলে থাকে। অনেকে এও বলছেন যে, গ্রামের ছেলেমেয়েদের কাছে অনলাইন শিক্ষা পৌঁছতে পারছে না। কিংবা প্রথম প্রজন্মের কাছে, শ্রমজীবী পরিবারেও ঠিক মতো পৌঁছনোর পথ নেই। আসলে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ‌তেই সম্ভবত অনলাইন টোটাল ব্যবস্থাপনা সমূহ পিছিয়ে আছে। 
মুম্বাই, তামিলনাড়ু, কেরল, হায়দ্রাবাদ,
বেঙ্গালুরু অনেকটাই এগিয়ে গেছে এখানে। স্মার্টফোনের অভাব কিন্তু গ্রামেও নেই। কিন্তু শিক্ষার কাজে সেই ফোন ব্যবহারের কার‌ও কোনও উদ্যোগ তো নেই। বরং কিছু অবাস্তব নমুনা তুলে বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে কিছু মানুষ চরম উদ্যোগী। স্মার্টফোন নেই বলে অনলাইন শিক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না এই বার্তায় যথেষ্ট অবিবেচনা রয়েছে। এ বিষয়ে মান্ধাতা আমলের এক ভ্রান্তি রয়ে গেছে আমাদের মনে। এটাও নিশ্চিত যে যাকে হাতেকলমে বোঝানোর মতো কেউ নেই, এইরকম পরিবারে, শ্রমিক এবং আনপড় অভিভাবক যেখানে দর্শক, সেখানেও অনলাইন শিক্ষায় সমূহ পাঠক্রম পৌঁছনো সম্ভব নয়। তবুও এই আপতকালীন সময়ে ঘরে বসে শিক্ষা নেওয়ার কাছে আর দ্বিতীয় রাস্তা আর কিছু খোলা নেই। পারলে সেই ছাত্রছাত্রীদের সার্ভে করে তার নেটে কার্ড ভরে দিক সরকার। এখন যদি লকডাউন অগাস্টের আগে না খোলে তাহলে কি শিক্ষা যেভাবে চলছে তাতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকবো ? নাকি অনলাইন নিয়ে তর্ক করে যাবো ? না, শিক্ষায় যেমন সন্তুষ্টির কোনও সীমা নেই তেমনি লকডাউন ভেঙে কবে সুস্থ জীবনে আমরা ফিরে আসবো, আগামী তিনমাসের আগে তার‌ কোনও আশা নেই। তাহলে প্রথমেই এখন আমাদের সিলেবাসকে কমপ্যাক্ট বা স্মার্ট করে নিয়ে বা ছোট করে নিয়ে আর একটি দ্বিতীয় পথ স্কুল শিক্ষায় আমরা অন্ততঃ খুলে ধরতে পারি। প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রেখে শিক্ষকদের তার বাড়ির কাছের মাধ্যমিক শিক্ষার কাজে লাগানো যেতে পারে। কারণ কনটেইনমেন্ট জোন থেকে বাইরে বেরিয়ে শিক্ষকদের স্কুলে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা আছে। তাহলে শিক্ষক অপ্রতুল হ‌ওয়ার আশংকা আছে। কীভাবে তা হবে তার ফর্মূলা জোগাড় করে নিতে সরকার উদ্যোগী হবে তার সরকারি ও বেসরকারি পরিকাঠামোর মধ্যে। সিলেবাসকে লকডাউনের উপযোগী করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে কিছু ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন হলে তাও করতে হবে। এখানে তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে ছাত্রছাত্রী এবং মূলত তাদের উপস্থিতি নিয়েই প্রধান সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন যদি স্কুল খোলে তবে তাদের ক্লাসকে বিন্যস্ত করতে হবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি এবং নবম থেকে দ্বাদশ দুটি ক্লাস্টারে মাধ্যমিক শিক্ষাকে ২০২০ শিক্ষাবর্ষে ভাগ করে বিদ্যালয়গুলিকে অক্টোবরের পুজোর ছুটির আগে ৩০/৪০ দিনের ক্লাস্টার ক্লাস করানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এক‌ই ক্লাসকে দুটি সিফ্টে ভাগ করা যেতে পারে। স্কুল সময়ের সামান্য পরিবর্তন করে দুটো সিফ্টেও স্কুল বসাতে পারা যায়। ক্লাসগুলিকে ২০/২৫ জনে ভাগ করে দিতে হবে। সকাল ৯.০০ টা থেকে ১১.৪০ পর্যন্ত ও ১২.২০ থেকে ৩.০০ পর্যন্ত। এখানেও রোজ ক্লাস করা যাবেনা সপ্তাহে দুই বা তিনদিন করে। তিনদিন স্কুল ছুটি থাকবে। সরকারি ভাবে ছেলেমেয়েদের টেস্ট করে একে একে স্কুলে ঢোকাতে হবে। স্কুলে কোনও টিফিন মিড ডে মিল হবে না। স্কুলে ও বাথরুম গুলিতে পর্যাপ্ত জল ও স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
সেখানে যাওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি করতে হবে। অভিভাবকদের লিখিত জানাতে হবে বাড়ি যাওয়ার পর ছাত্রছাত্রীদের পোশাক পরিবর্তন গা ও হাত ধোয়ার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার। স্কুলেও বেশ কিছু আপতকালীন মাস্ক রেডি রাখতে হবে। মাস্ক না পরলে স্কুলে আসা যাবে না। এই সামান্য সময়ে ছোট ছোট সাময়িক মূল্যায়ণ চালু রেখে পার্বিক মূল্যায়ণ বন্ধ রাখতে হবে। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মূলত শিক্ষা নিয়েই আলোচনা চলবে। ভূগোল বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলি আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। কিন্তু গণিতের জন্য ভালো ছেলেমেয়েদের জন্য আরও অনলাইন ব্যবস্থা করে শিক্ষাকে ফলপ্রসূ করতে হবে। পঠনপাঠন শেষ হলে অতিমারি কমে এলে সরকার ও বিদ্যালয়গুলির স্থগিত সিলেবাস ও পরীক্ষা এবং মূল্যায়ণ সূচি নতুন করে তৈরি করবে। যদি কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা কমতে থাকে তবে সেপ্টেম্বরে নভেম্বর ,ডিসেম্বর ও জানুয়ারি ২১ এই চারমাসে পাঠ্যসূচি সমাপ্ত করতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে শেষ ও চূড়ান্ত মূল্যায়ণ ও টেস্টগুলি শেষ করে মার্চের গোড়ায় ক্লাসগুলি পুণরায় ২০২১ এর শিক্ষাবর্ষে প্রবেশের সম্ভাবনা ও আশা নিয়ে সরকারের তরফে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা রচনা করতে হবে। এই প্রসঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলগুলিও যেমন স্কুল খুলবে সেইমতো ব্যবস্থা করবে। হস্টেল কর্তৃপক্ষ নিজে থেকে না চাইলেও স্কুল কলেজ খোলার সঙ্গে অবধারিত ভাবে ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল‌ও খুলবে। হস্টেলে ঠিক মতো বাথরুম ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যবস্থা না থাকলে যারা হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করবে তাদের আলাদা কীভাবে স্থানীয় ধর্মশালায় বা হোটেলে রেখে পড়াশোনা করানো যায় তা নিয়েও সরকারকে চিন্তা করতে হবে। আর যদি এমন হয় কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়ে যায় তবে সাইবার কাফেগুলি খুলিয়ে অথবা সাময়িকভাবে সাইবার কাফে নতুনভাবে সৃষ্টি করিয়ে তাদের তিনমাসের জন্যে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে অনলাইনেই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখা অনেক সাবধানতা অবলম্বন বলে ধরে নিতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের অনলাইনে শিক্ষায় আপত্তি থাকলেও এই অতিমারীর আবহাওয়ায় অনলাইন শিক্ষাই একমাত্র, নির্দিষ্ট ও বলিষ্ট ব্যবস্থা যা সাময়িক মনে হলেও আগামী দিনে ফলপ্রসূ হবে বলেই মনে করা যেতে পারে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়স্তরে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান শাখায় প্র্যাকটিসগুলি দেরি করে না হয় শেষ করা যাবে। হায়ার সেকেন্ডারির বাকি পরীক্ষা সেই স্কুলে অনলাইনে হলেও হতে পারে আর না হলে যেকটি পরীক্ষা হয়েছে তার উপরে রেজাল্ট বার করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে আমি সবশেষে বলবো এইবছর স্কুল খুলে ক্লাস করলেও ছাত্রছাত্রীদের পাওয়ার একটা বিশাল সমস্যা হবে। সম্ভাবনা নেই বললেই হয়। ছাত্ররা বিলকুল অনুপস্থিত থাকবে। তাই ধান ভানতে শিবের গীত না গাওয়াই ভালো। আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ই-পাঠশালা খোলার ওপর জোর দিয়েছেন। তার পরিকাঠামোর জন্যে আর্থিকভাবে সরকার সঙ্গতি প্রদান করতে উদ্যোগ নিয়েছে যখন তখন সব রাজ্য‌ই এই শিক্ষা মাধ্যমে নিজেদের যুক্ত করবে বলে আশা রাখি। পরিশেষে ই-পাঠশালার জন্যে র‌ইলো হাততালি। ই শিক্ষায় ঘরোয়া টিউশনির মাষ্টার মশাই ও দিদিমণিদের‌ও নিজেদের তৈরি করে নিতে হবে।
©® অলোক কুন্ডু
( এই লেখাটি একটি ম্যাগাজিনের জন্যে লেখা
তারা কবে ছেপে তা প্রকাশ করবে জানা নেই। তাই এই লেখার কোনও অংশ কেউ থিম ও কোনও ভাবে কোথাও লিখে দেবেন না। সংবাদ পত্রেতো নয় । লেখাটি মৌলিক রচনা। মনে রাখবেন )

বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

#Coronaviruslockdown

#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা

#coronavirus #CoronavirusLockdown
#COVID19 #COVID #COVID19PH
#CoronavirusPandemic
#CoronavirusOutbreak

■ সবজি মাছ মাংস ধোয়া নিয়ে প্রতিদিন চ্যানেলগুলিতে, এত তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে যে বাস্তবতার বাইরে গিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাচ্ছে । যারা এইসব হাতেনাতে করছেন তাদের সঙ্গে ডাক্তারবাবুদের ধারণা ও বোধবুদ্ধির আকাশপাতাল তফাৎ হয়ে যাচ্ছে। এতে উদ্বেক আর‌ও বেড়ে যাচ্ছে।

■ (১).বাজারে কাপড়কাচার সোডা কিনতে পাওয়া যায়,তাই এক কেজি কিনে রাখুন।
■(২).মনে রাখবেন সোডায় জল না লাগে। শুখনো পাত্রে রাখুন। 
■(৩).প্রথমে একবালতি জলে ৪/৫ চামচ সোডা ফেলে জলটায় হাত দিয়ে গুলিয়ে দিন। সবজির পরিমাণ বেশি হলে আর‌ও ৩/৪-চামচ দিতে পারেন। সবকিছু আপনার
বোধগম্যর নির্ভর করছে।
সমস্ত সবজির জন্য ওই একবালতি যথেষ্ট। ■(৪).প্রথমে যতটা বড় বালতি/গামলা নিতে পারবে ততটা ভালো হবে ধোয়াধুয়ি করতে। এক একেবারে সবজিগুলি ভিজতে দিন। ২ থেকে ৪ মিনিট রাখুন ওই দ্রবণে। শাকজাতীয় হলে ২ মিনিট রাখুন। শাক ছাড়া অন্য সবজিকে ওই জলে রগড়ে ধুয়ে নিন।
■(৫).একটা অন্য বড় গামলা বা সাদা বালতিতে প্লেন ঠান্ডা জলে আর‌ও ২ মিনিট ভিজতে দিন। অথবা দ্বিতীয়বার ধুয়ে তৃতীয়বারের জন্য আলাদা করে রাখুন।
■(৬).তৃতীয় শেষবারে সমস্ত সবজি ১০ মিনিট আর একবার প্লেন জলে ভিজতে দিন। 
■(৭).১০ মিনিট পর ধুয়ে তুলে রোদে ১০/১৫ মিনিট দিয়ে জল ঝরিয়ে একটা ঠান্ডা জায়গায় সবজিগুলো চরিত্র অনুযায়ী আলাদা আলাদা রেখে সারাদিন ধরে শুকিয়ে নিন। 
■(৮).এই কাজগুলো যখন করছেন তখন প্রতিবার আপনার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। সোডা নিজেই সাবান। স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে তাকেও স্যানিটাইজ করতে হতে পারে,
যদি আপনি একাই সবকিছু করেন।
■(৯).ঠান্ডা জায়গায় রাখা সবজিগুলোকে বিকালে প্রতিটি আলাদা জিনিসকে শুকনো ক্যারিব্যাগে ,পলিপ্যাকে ভরে ফ্রিজে তুলুন। ক্যারিব্যাগ গাডার দিয়ে এঁটে দিন। 
■(১০).এই পদক্ষেপ নিলে বিন্দুমাত্র করোনা আপনার ফ্রিজে ঢুকবে না‌। 
■(১১).ডিম হলে এক হাঁড়ি সোডার জলে ডুবিয়ে সঙ্গে সঙ্গে একটা সাদা জলের পাত্রে রাখুন আধঘণ্টা। পরে একটা ছোট কাপড়ে একটু স্যানিটাইজারে ভিজিয়ে নিন এবং প্রতিটি ডিমকে আলতো করে ওই কাপড়ে মুছে ঢাকনাওলা একটা পটে রেখে, বিকাল পর্যন্ত ফেলে রাখুন‌। বিকালে ফ্রিজে তুলুন।
■(১২).মাছ মাংস হলে খাবার সোডা ১-চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ভিজিয়ে তারপর তুলে নিয়ে ১ মিনিট করে গরম জলে ও ঠান্ডা আলাদা জলে দু-তিনবার ধুয়ে, জল ঝরিয়ে নুন হলুদ মাখান, হলুদ ও নুন একটু বেশি দিন। ঢাকনা দেওয়া বাক্সে ভরে বাক্সটিকে ক্যারিব্যাগে মুড়ুন।  
 ■(১৩).শাকপাতা হলে রগড়াবেন না আবার বেশিক্ষণ তাকে সোডার জলে রাখবেন না। পটল, বেগুন, আলু,ঝিঁঙে, ঢেঁড়স, উচ্ছে, ক্যাপসিকাম, গোটা লাউ এবং আরও কিছু সবজির বাইরে শক্তপোক্ত দেওয়াল থাকায় দু পাঁচ মিনিটে বাইরে থেকে ভেতরে কিছু যাওয়ার চান্স নেই। 
■(১৪).কাটা লাউ-কুমড়ো হলে ও শাকপাতা সবার আগেই সোডা জলে ধুয়ে নিন কারণ ওইগুলি কিছুটা ভেতরে টানতে পারে। আপনি যেহেতু ১০/১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখছেন না তাই আপনার কোনও চিন্তা নেই। 
■(১৫).পিঁয়াজ আদা রসুনকে ১ মিনিটের মধ্যেই তুলে নিন সোডার জল থেকে। যদি আপনি জলে না ধুয়ে রোদে দেন তবে একদিনে এইসব শুকিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তবে রসুন পিঁয়াজ ধুলে ওপরের খোসা ছেড়ে যাবে। সবার শেষে আদা রসুন পিঁয়াজ ধোবেন। এখন এইসব শুনে নেগেটিভ মনের ব্যক্তিরা হৈ হৈ করে উঠতে পারেন। তোয়াক্কা না করে স্পষ্ট ধুয়ে নিন এবং যে পদক্ষেপ আগে সবজির ক্ষেত্রে নিতে বলেছি সেইভাবে করে নিন। দুদিন পাখার নীচে পিঁয়াজ রসুন আদা শুকিয়ে নিন। ফ্রিজে না রেখে মেঝেতে বা ঝুড়িতে রাখুন। 

■(১৬).১১৫ দিনের বেশি সময় ধরে আমি এই পদ্ধতিতে আমার বাড়িতে অনুসরণ করছি।আমি ধূচ্ছি,রাখছি, ব্যবহার করছি, খাচ্ছি। আমি কখনও টিভি দেখে এইসব করিনি। এই ধোয়াধুয়ি নিয়ে গত এপ্রিল থেকে অনেকবার লিখলাম। কিন্তু এখন যেহেতু বাস্তবে না থাকা ডাক্তারবাবুরা নতুন করে এইসব নিয়ে জনগণকে নানামুখী মতামতে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছেন তাই বিষয়গুলির ওপর পুণরায় আলোকপাত করতে হলো। যাদের বাড়িতে প্রচুর জল আছে তাদের এইসব না মেনে ৩/৪ বার ধুয়ে নিন তাতেই হবে। তারপর শুকিয়ে পৃথক প্যাকেট করে ফ্রিজে রাখুন।  
 ■(১৭).ফ্রিজসুরক্ষিত থাকবে। 
■(১৮).পাঁউরুটি একসঙ্গে ৩/৪ পাউন্ড কিনে নিন। একদিন একটা বড় পলিপ্যাকে মুড়ে ফেলে রেখে দিন। দ্বিতীয় দিন হাতে স্যানিটাইজার লাগান এবং প্রতিটি পাঁউরুটির বাইরের প্যাকেটে স্যানিটাইজার স্প্রে করুণ অথবা পাঁউরুটি না ছুঁয়ে কাঁচিতে বাইরের প্যাকেট একদিকে কেটে ফেলে এবং সতর্ক হয়ে, না ছুঁয়ে বাড়ির কোনও একজনের সাহায্য নিয়ে, অন্য একটি বড় পলিপ্যাকে ঢেলে দিন। ঢালার সময় কেউ হাত দিয়েও একটা একটা করে পাঁউরুটি তুলে প্যাকেট বদল করতে পারেন। দুজনেই হাত ভালো করে ধুয়ে স্যানিটাইজ করুন। তারপর সেঁকে খান। পাঁউরুটির আসল প্যাকেটকে ডাস্টবিনে দিন, হাত ধুয়ে নিন। 
 ■(১৯).হাত ধোয়ায়, ডিটারজেন্ট বা লাইফবয় ব্যবহার করুন এইসব হ্যান্ড‌ওয়াসের থেকে অনেক শক্তিশালী ও সস্তা। ©® অলোক কুন্ডু

#CoronavirusPandemic

#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা

#coronavirus #CoronavirusPandemic
#COVID19 #CoronavirusLockdown 
#COVID2019 #COVID19PH 
#CoronavirusOutbreak

যাদের বাড়িতে ছোট বাচ্চা আছে ও রোগ সম্পর্কিত মানুষ আছেন তারা অবিলম্বে সাবধান হোন‌।

■ (১).বাড়ির যে মানুষ রাস্তায় যায়, ধরে নিতে হবে তিনি সংক্রমিত হয়ে আছেন‌। তিনি সংক্রমিত। তার বোধবুদ্ধি না থাকতে পারে কিন্তু তাকে বয়স্ক রোগী মানুষ ও বাচ্চাদের ধারে কাছে যাওয়া এবং ৬ ফুট নয় ১০ ফুট দূরত্ব থাকতে হবে‌।
■ (২).যারা পাশের বাড়ি থেকেও আসবেন, সুস্থ হলেও তিনি সংক্রমণ নিয়ে ঘুরছেন বলে ধরে নিতে হবে। তিনি নিজেকে করোনা মুক্ত মনে করলে খুব ভুল করবেন। 
■ (৩).যারা ছোট বড় চাকরি করেন তারা রাস্তায় বার হচ্ছেন। তারা মনে রাখবেন তারা রোগ বহন করছেন। অবশ্যই তারাই রোগ বহন করছেন। তারা সংক্রমণের বাহক। তারাই বাহক এটা তাকে বলুন।
■(৪).যারা তিনবার রাস্তায় বেরিয়ে তিনবার জামাকাপড়, মাস্ক, মোবাইল, জুতো,ঘড়ি, ব্যাগ,চশমা কাচছেন না তারা রোগ বহন করছেন এবং নির্ঘাত রোগ ছড়াচ্ছেন। তারাই বাহক। তাদের অনেকেই কাছাকাছি-পাশাপাশি কাকা,পিসি,মাসি,বন্ধুদের বাড়ি যাচ্ছেন অবিলম্বে এই যাতায়াত বন্ধ করুন। দয়া করে যাবেন না। এই যাতায়াত সর্বনাশা হচ্ছে। ভয়াবহ হতে পারে এবং এই থেকেই অজস্র মানুষ আজ হসপিটালে, চিকিৎসার অভাবে মারা পড়ছেন। এই সামাজিকতা করার সময় এখন নয়।
■ (৫).যারা ভাবছেন পাড়ায় বেরিয়েছিলেন তাদের মাস্ক লাগবে না, তাদের স্নান করতে হবেনা, জামাকাপড় ছাড়তে হবে না, চটি আলাদা রাখতে হবে না, মোবাইল স্যানিটাইজ করতে হবে না মুখ হাত ধুতে হবে না, ১০০% নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে না। তারা মস্ত ভুল করছেন, অন্যায় করছেন, দোষ করছেন। শাস্তিযোগ্য অপরাধ‌ই করছেন।
■(৬). অনেক ভাই-বোন আছেন যারা ভাই বোনদের বাড়ি যাতায়াত করছেন তারা এটা দয়া করে বন্ধ করুন। আপনারা রোগ ছড়াচ্ছেন, আপনারা সংক্রমণের চাষ করছেন, আপনার জন্য আপনার বাড়ির বাচ্চা ও বয়স্ক মানুষ যখন তখন সর্বনাশের দিকে চলে যেতে পারেন।
■(৭).আপনি বলছেন আপনি কোথাও হাত দেননি, কার‌ও খাবার খাননি, কার‌ও দরজা ধরেন নি, কার‌ও কলিংবেল ধরেননি, কার‌ও হাত ধরেননি, কার‌ও মোটরবাইক, গাড়িতে বসেননি, টাকাপয়সা ছোঁননি। আপনি এবং আপনারা হয় মিথ্যা বলছেন, কিংবা এই সমগ্র লকডাউন পিরিয়ডে সামান্য এইসব মেনেছেন বলে পুরো স্যানিটাইজেশান প্রক্রিয়াটিকে অথর্ব করে ছেড়ছেন যা ২০%
মেনেছেন কিন্তু আপনার মনে হয়েছে ১০০% করেছেন। এই ধরনের বেগড়বাঁই, অবুঝ এবং অমান্য করতে অভ্যস্ত আপনি কিন্তু রোগ ছড়াচ্ছেন এবং ছড়িয়ে অপরকে মারবেন।
■(৮).আপনি বাড়ি থেকে যতবার বের হবেন ততবার আপনাকে মাথা মুড়ে বের হতে হবে,মাস্ক নিতে হবে, হাতে ঘনঘন স্যানিটাইজ করতে হবে। কিন্তু আসলে আপনি এইসব একেবারেই ফাঁকি দিচ্ছেন। আপনি বলছেন আপনার কিছু হবেনা। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না আপনি কতখানি ক্ষতি করছেন। আপনি একজন মার্ডারার, আপনি খুনি। আপনি বাইরে থেকে রোগ এনে ছড়াচ্ছেন এবং লোক মারছেন। আপনি মারণ ভাইরাসের বন্ধু। কারণ আপনি অপরের টাকা পয়সা নিয়ে আপনার পকেটে ম্যানিব্যাগে রাখছেন। আপনি চটিজুতো ঘরে ঢোকাচ্ছেন। আপনি পাঁচমিনিট বাইরে বেরিয়ে বন্ধুর বাড়িতে যে গিয়েছিলেন সেখানে আপনার বন্ধুর চেয়ারে খাটে সোফায় বসেছিলেন তাতে করে যে সংক্রমণ আপনি আপনার বাড়িতে আনলেন না তার কিন্তু কোনও গ্যারান্টি নেই। আসলে আপনাদের সকলের ইমিউনিটি বেশি তাই আপনাদের কিছু হয়নি কিন্তু আপনারা ব্যাপকহারে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আপনারাই বাহক আপনারা আপনার এলাকায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন। আপনারা মাস্ক পরছেন না। আপনি স্পিডি স্প্রেডার।
■ (৯). আপনারা বাজারে গিয়ে অন্যদের থেকে ৬ ফুট দূরত্বে দাঁড়াচ্ছেন না, আপনাদের ভিড়ের মধ্যে যেতে এখনও কোনও হেলদোল নেই। আপনাকে বাজারে একটু সরে যেতে বললে আপনি তর্ক করছেন। ব্যাঙ্ক, পোস্ট‌অফিস,
দোকানে, বাজারে আপনি একজন জঘন্যতম ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে পরিচিতি করে তুলেছেন। আপনি রোগ ছড়াচ্ছেন।
■ (১০).আপনারা পাড়া-প্রতিবেশীর থেকে বেশি ক্ষতি করছেন আপনার নিজের বাড়ির লোকের প্রতি। এখন পর্যন্ত যতজন মারা গেছেন তাদের বাড়ির লোকেজন কিংবা তারা হয়তো নিজেরাই রোগ এনেছিলেন। যারা পুলিশ, যারা ডাক্তার, যারা করোনার সৈনিক তাদের কোনও দোষ দেওয়া যায় না। কারণ তারা আপনার মতো উজবুক, আপনার মতো অহংকারী, আপনার মতো সবজান্তা, অবিবেচক, আপনার মতো ক্ষুদ্রবুদ্ধির নাগরিক, আপনার মতো হাঁদাবোকা একজনের অবিবেচনার স্বীকার হচ্ছেন। আপনি মারছেন ডাক্তার, আপনি মারছেন পুলিশ, আপনি মারছেন সমাজসেবীকে, আপনি মারবেন মেথর, আপনি মারবেন একজন সুগারের রোগীকে, আপনি মারবেন কিডনির রোগীকে, আপনি মারবেন হার্টের রোগীকে, আপনি মারবেন আপনার আত্মীয়-স্বজনকে,আপনি মারবেন আপনার বাড়ির মা,বাবা, পিসিমা, ঠাকুমা, সরকারি কর্মচারী থেকে কাকা,কাকিমাকে পর্যন্ত। আপনি খুনি। আপনি পাড়াবেড়ানো বন্ধ করুন অবিলম্বে। 
■(১১).যারা রাস্তায় বের হন, তারা কখনোই অপরের বাড়ির চেয়ার-টেবিল, সোফা, খাটে বসবেন না, চা খাবেন না, চা খাওয়ার জন্য জোরাজুরি করবেন না,অপরের বাড়িতে ঢুকবেন না। নিজে সতর্ক থাকুন অপরকে বাঁচতে দিন। ©® অলোক কুন্ডু

রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০

#অমিতাভ_বচ্চন_ভালো_হয়ে_উঠুন

#অলোক_কুন্ডুর_লেখালিখি_ও_কবিতা

■ ভুল প্রশ্নের অবতারণা

■সেলিব্রেটি না কি হাই সেলিব্রেটি, নাকি পাড়ার লোককে সান্ত্বনা। আসলে আমাদের মনের দৈনতা বিতর্কের সৃষ্টি করছে। কেউ অসমান নন। এটা তো বাস্তব আমার থেকে অমিতাভ বচ্চনকে আর‌ও বেশি লোক ভালোবাসেন। এমনকি রঞ্জিত মল্লিকের থেকেও। আসলে এই চিরন্তন সত্য সব সময় সকলের মনে কাজ করবে। করোনা ছাড়াও অমিতাভ বচ্চন আর রঞ্জিত মল্লিক একসঙ্গে অসুস্থ হলে আগে পরে দশ বছর পরেও এক‌ই উত্তর। এই উত্তর খুঁজতে ভুল প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে। যুক্তিযুক্ত কথা বলতে হবে আমাদের। দুম করে কথার বোমা ফাটালেও তা অগ্রাহ্য হবে, এই চিরায়ত সত্য বিসর্জন কেউই দিতে পারবেন না। এটাই আমাদের মানবিক গুণ, এটা দোষ বলে রটালে পাত্তা তেমন পাবেনা। করোনা ছাড়াও আমরা কখনও কেউ অসুস্থ হলে আগেও খোঁজ নিতাম না কিন্তু অমিতাভ বচ্চন হলে নিতাম, রূপোলি মানুষ সাধারণ মানুষের এই তফাতে আমাদের গোড়ায় গলদ আছে এটা থেকে মুক্ত হয়ে সাম্যবাদের কথা এখানে প্রয়োগ করলে তা মানবে না কেউ। ভালোবাসা আত্মীয়তা বন্ধুত্ব‌ও এই আপেক্ষিক নীতির উপর‌ই প্রতিষ্ঠিত। এটা ভবিতব্য তাই এই রকম আলোচনা বিস্তার করে এই পরিবেশ কলঙ্কিত করা আমাদের কার‌ও উচিত নয়। অপরের আগ্রহ অপরের আনন্দ ও দুঃখের যেন আমরা কাটাছেঁড়া না করি এই আদর্শের মধ্যে থাকাই কাম্য।

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...