বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২

Cover Story of Mamata Banerjee

আজ আপনাদের জন্য পোস্ট করছি প্রচ্ছদে মমতা ব্যানার্জী। যে সমস্ত পত্রিকা মমতা ব্যানার্জীকে নিয়ে একসময়ে কভার স্টোরি করেছিল সেগুলো একটা একটা করে পিডিএফ পোস্ট করবো। আজ সহনাগরিক মঞ্চ পত্রিকা এটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১১-এর জুন মাসে।

বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২

লক্ষ্মীর ভান্ডার কি মুখ থুবড়ে পড়বে।





লক্ষ্মীর ভান্ডার / অলোক কুন্ডু

এই নিবন্ধটি "পশ্চিমবঙ্গ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার স্কিম" সম্পর্কিত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আপনি যদি আগ্রহী হন, তাহলে আপনি এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত পডুন।

২০২১-এ তৃণমূল সরকার ফিরে আসার পর, সরকারের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক পদক্ষেপ হ'ল লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পটির ঘোষণা করা। আদতে এই প্রোগ্রাম ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপের কথা শোনা যায় ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে, ওই দলের ইস্তাহারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই পদক্ষেপের এখন সরকারি আদেশনামা প্রকাশিত হয়েছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে এই প্রকল্পটি ঘোষণা করেছেন।

প্রকল্পটি যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝা যায় যখন আমরা দেখি ১৫ দিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্তটি নিয়ে তিনবার সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজের মুখে জানিয়েছেন এই Form-টি কোথাও কিনতে পাওয়া যাবেনা। জেরক্স করে পূরণ করাও যাবেনা। প্রতিটি ফরম হচ্ছে কম্পিউটার জেনারেটেড। ওই দপ্তরের সরকারি আধিকারিক ছাড়া এই Form-টি কেউ ডাউনলোড করতে পারবেন না। প্রতিটি Form-এ একজন নির্দিষ্ট আবেদনকারীর জন্য একটি নম্বর থাকবে। এটি যিনি তুলবেন তিনি ছাড়া ২য় কেউ পূরণ করতে পারবেন না। Form-টি নিয়ে নষ্ট করে ফেলে দিলে বা হারিয়ে ফেললে বা ছিঁড়ে ফেললে অথবা অন্যকে বিতরণ করলে আর কিছু করার থাকবে না। পুণরায় পাওয়া মুস্কিল হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন একজন নয় সংসারের সকল যোগ্য মহিলা এই সুযোগ পাবেন। এখানে আরও একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন।

১৬.৮.২১ থেকে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প যেখানে যেখানে হচ্ছে সেখানেই লক্ষ্মীর ভান্ডার ক্যাম্পও থাকছে। আর সেখান থেকে ডাউনলোড করার পর Formটি হাতে পাওয়া যাবে, ফরম্- টি হাতে নিয়ে নিজের জন্য দুটি জেরক্স করে নেওয়া উচিত কাজ হবে। এখনও পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় ক্যাম্প চালু হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন কারও চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই প্রয়োজনে ক্যাম্পের তারিখ বাড়ানো হতে পারে।

বাড়িতে Form-টি পূরণের সময় আসল Form-টিকে তুলে রেখে জেরক্স কপিতে আগে লিখে, প্র্যাকটিস করে নিলে ভালো হয়। যা কাটাকুটি হবে তা জেরক্সেই হবে। মনে রাখবেন Form-টির তিনটি পাতা আছে। ১৩/৮/২১-এ আপডেট করে Form-টি তিন পাতার করা হয়েছে। সুবিধার জন্য ইংরেজির সঙ্গে বাংলাতেও লেখা আছে। তবে আপনারা ইংরেজিতেই পূরণ করবেন।

যেখানে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হবে, সেখানে আগে নাম রেজিস্ট্রেশন করিয়ে একটি নম্বর নিতে হবে। তারপর ওই নম্বরটি একটি কাগজে লিখে নিয়ে যত্ন করে রাখতে হবে। আর সেখানেই "লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প"-এর নির্দিষ্ট একটি টেবিল বা ক্যাম্প থাকবে, ওইখানে গিয়ে Form-টি চাইতে হবে। এরকম শোনা যাচ্ছে, তা হলো ভিড়ের ঝুঁকি এড়াতে, বহু জায়গায়, আগেই কূপন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারিখ অনুযায়ী এসে বা কারও মাধ্যমে তারা ফরম্ তুলবেন আগে। পরে নির্দিষ্ট তারিখে জমা দেবেন।

ধরে নেওয়া যেতে পারে গ্রামেগঞ্জে বিডিও অফিসে ও শহরে মিউনিসিপ্যাল বরো অফিস অথবা মিউনিসিপ্যাল অফিসে হবে এই ক্যাম্প। স্থানীয় প্রশাসন মনে করলে এই ক্যাম্প তারা যে কোনও বড় স্কুলেও বসাতে পারে। হচ্ছেও তাই।

এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, রাজ্যের বহু এমন ঘর-গৃহস্থী আছে যাদের কোনও বেসিক/ প্রাথমিক আয় নেই। বেসিক বা প্রাথমিক আয় হলো যা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কোনও সংস্থা থেকে স্থায়ী ভাবে পাওয়া যায় এবং তার জন্য কোনও না কোনও ট্যাক্স দিতে হতে হয়।

সেই কারণে প্রাথমিক আয়হীন সেই সব পরিবারের মহিলাদের প্রধানকে অথবা পরিবারের নির্দিষ্ট মহিলাটিকে এই প্রাথমিক আয় বৃদ্ধিজনিত প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। যাতে ৬০ বছর পর্যন্ত তাদের সকলের একটি বেসিক আয় থাকে।

সরকারের এই প্রকল্পে, পরিবারের সকল (২৫ থেকে ৬০ বছর) মহিলাই আসতে পারবেন, অর্থাৎ আবেদন করতে পারবেন কিন্তু এখানে লক্ষবস্তু হচ্ছে পরিবারের উন্নয়ন, তাই পরিবারের হেড পাবেন আর্থিক আয়, তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সকলে পাবে। অর্থাৎ একটি বাড়িতে একটি পরিবারের আয়হীন একজন মহিলাই আবেদন করতে পারবেন যা বলা ছিল তার ব্যখ্যা হচ্ছে প্রতি হাঁড়িওলা পরিবার থেকে একজন, তার মানে এই নয় যে বাড়িতে তিনটি হাঁড়ি আছে মহিলা আছে ১০ জন, তাই ১০ জনই পাবেন। মনে হচ্ছে একই বাড়িতে তিনটি পরিবার থাকলে তিনজন পাবেন। অর্থাৎ যে পরিবারের কোনও বেসিক বা প্রাথমিক আয় নেই সেক্ষেত্রে ১ জন মহিলা এই সুবিধা পেতে পারবেন এবং আবেদন করতে পারবেন। এখন বলাই আছে তাদের মধ্যে সরকারের চাকরি করলে ও সরকারের যেকোনও পেনশন পেলে, তারা নাম লেখাতে পারবেন না।

বেসরকারি ক্ষেত্রের কথা বলা না থাকলেও বেসিক ইনকাম মানে একটা ভালো আয় আছে। প্রাথমিক ইনকাম থাকলে তা লুকিয়ে রাখা চলবে না। এখানে জেনে রাখা ভালো পরের বাড়ি বাসন মাজা ও কাজ করে উপার্জন করলেও, সেটা বেসিক ইনকাম বলে ধরা হয় না। রিকশা চালকের স্ত্রীর কোনও বেসিক আয় নেই।

মিড-ডে মিলের রাঁধুনিদেরও কোনও প্রাথমিক স্থায়ী আয় না থাকলে তারাও আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ অন্য কোথাও কাজ করলে যদি পিএফ বা গ্র্যাচ্যুইটি না থাকে তবে তিনি আবেদন করতে পারবেন। রোজের রোজগার আছে অথচ অনিয়মিত তারাও আবেদন করতে পারবেন। যদি ডেলি ওয়েজে কেউ কোথাও কাজ করেন বা বাজার বিক্রি করেন, বড় দোকানে কাজ করেন স্বামী, ফেরি করেন, কারখানায় ডেলি রোজে কাজ করেন, তারাও আবেদন করতে পারবেন। এখন কে কোথায় কাজ করেন কীভাবে আয় করেন, বাইরের লোকের তা জানা থাকেনা। এক্ষেত্রে স্বামী কিছু রোজগার করলেও সকল স্ত্রী কিন্তু হাত খরচ পান না। হঠাৎ কোনও খরচ করতে হলে এতদিন তিনি ধার করে ঋণ নিয়ে তা করতেন। মূল কথা গৃহকর্ত্রীর হাতখরচ সরকার এখন থেকে দেবে। কারও অনেক ইনকাম থাকলেও সরকারের ধরার ব্যবস্থা না থাকায় আবেদনকারীকে একটি ডিক্লেয়ারেশন দিতে হচ্ছে।

এমন অনেক পরিবার রয়েছে যাদের প্রাথমিক আয়ের কোনও সহায়তা নেই, তাই তারা তাদের দৈনন্দিন ব্যয়ের সংস্থান করতে পারছেন না। সেই সমস্ত মানুষের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিবার প্রতি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছেন এটা কিন্তু সরকারের আদেশনামায় আছে। এই স্কিমের মাধ্যমে, সরকার পরিবারের একজন মহিলাকে প্রাথমিক আয়ের সহায়তা প্রদান করতে যাচ্ছে। সরকারের তরফে স্বচ্ছ ও নির্ভুল আবেদন কারীকে ২০ শে অক্টোবরের মধ্যে একটি করে কার্ড দেওয়া হবে। ওই কার্ড হচ্ছে তার রক্ষাকবচ।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বাজেটের সুবিধাভোগীরা আগামী ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে শুরু করবেন। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ ছাড়া বা অক্টোবর ২০২১ ছাড়া প্রাপ্তিযোগ নাও হতে পারে। ব্যাঙ্কের টাকা আসতে আসতে সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবর, ২০২১ হয়ে যেতে পারে। সে কারণে চিন্তার কিছু নেই। যিনি একবার কার্ড হাতে পাবেন, তিনি এই টাকা মাসে মাসে পেতে থাকবেন। শুধুমাত্র প্রতি বছর তাকে জীবিত থাকার একটি নির্দিষ্ট ফরম জমা করতে হবে আইন অনুসারে।

মহিলা নাগরিকরা এই স্কিমের অধীনে, দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে গিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডার টেবিলে আবেদন করতে পারবেন, যা রাজ্য জুড়ে ১৬/৮/২১ থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কোথাও কোথাও এক সপ্তাহ দেরিতে হবে। যদি কোন উপভোক্তা ২০ শে অক্টোবর ২০২১ তারিখে, লক্ষ্মীর ভান্ডার কার্ডটি যদি দেরি করেও হাতে পান, তাহলেও তিনি সেপ্টেম্বর ২০২১ থেকে এই আর্থিক সহায়তা পাবেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার স্কিমের সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য, যোগ্যতার মানদণ্ড এবং কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তা নীচে দেওয়া হলো।

রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ্মীর ভান্ডার যোজনা চালু করলেন এই কারণে, যাতে গরিব পরিবারের ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী অন্তত এক জনকেও প্রাথমিক আয়ের সহায়তা প্রদান করা যায়। প্রাথমিক খরচ বলতে এখানে গৃহকর্ত্রীর হাতখরচ বুঝতে হবে। এই স্কিমের মাধ্যমে, ওবিসি ও সাধারণ শ্রেণির পরিবারকে প্রতি মাসে ৫০০/- টাকা এবং এস.সি/এস.টি পরিবারকে প্রতি মাসে ১০০০/- টাকা করে প্রদান করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১.৬ কোটি পরিবার এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। এই স্কিমটি রাজ্যের একটি পরিবারের মাসিক গড় খরচের ( ৫,২৪৯/-) হিসাবকে মাথায় রেখে প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে থাকা সিঙ্গল অ্যাকাউন্টধারী মহিলাদের সুবিধার আর্থিক পরিমাণ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা হবে। অবশ্য জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেও কাজ হবে।

এই বছর বয়সের মাপকাঠি ধরা হবে ১ লা জানুয়ারি থেকে। এখন সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট নিয়ে রাজ্য জুড়ে সমস্যা আছে। তাই সম্ভবত পরিবারের কারও জয়েন্ট অ্যাকাউন্টও গ্রাহ্য করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে ক্যাম্পে ভালো করে জেনে নিন।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যোজনার জন্য নির্দেশিকা এবং নিয়মাবলী পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করেছে। এই স্কিমের মাধ্যমে, সরকার দরিদ্র পরিবারগুলিকে একটি মাসিক সহায়তা ভাতা দিতে চলেছে। এই প্রকল্পটি গত ৩০ জুলাই ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ণ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগ থেকে আদেশনামা আকারে জারি করা হয়েছে। এখানে লক্ষ্যণীয় যে এই স্কিমটি তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহারের একটি অংশ ছিল।

প্রথম মাসের টাকা সেপ্টেম্বর ২০২১-এর পর থেকে ২০/১০/২১-এর মধ্যে ব্যাঙ্কে পৌঁছনোর কথা। পরিবারের একজন যোগ্য মহিলা এই স্কিমের আওতায়, মাসে মাসে একটি প্রাথমিক আয়ের সহায়তা পাবেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১.৬ কোটি পরিবার এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। বাঙালি মেয়েদের পুজোর বোনাস দিয়ে শুরু হবে এবারের দুর্গাপুজো।

এই উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে যেসব সরকারী ক্যাম্প আছে অথবা হবে, সুবিধাভোগীরা সেখানে গিয়ে বিনামূল্যে আবেদনের সুযোগ পাবেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যোজনার নিয়ম ও নির্দেশিকা: সরকারের তরফে স্বচ্ছ আছে এটা বলা হয়েছে। আবেদনকারী ১৬ আগস্ট ২০২১ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। তবে সরকার মনে করলে এই সময়সূচী বাড়াতে পারে। তারিখ বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে আপনি দেরি করবেন না।

যে সকল পরিবারগুলির মধ্যে কমপক্ষে একজন সদস্য কোনও ভাবে সার্ভিস ট্যাক্স অথবা ইনকাম ট্যাক্স ও বিভিন্ন কর প্রদান করে থাকেন তারা এই স্কিমের অধীনে আবেদন করতে পারবেন না, এটা স্পষ্ট। অর্থাৎ তাদের বেসিক ইনকাম রয়েছে। সাধারণ শ্রেণির মহিলারা ( জেনারেল কাস্ট ও ওবিসি) যাদের ২ হেক্টরের বেশি জমি রয়েছে তারাও এই প্রকল্পের অধীনে আবেদন করতে পারবেন না।

আবেদনকারীকে খেয়াল করতে হবে যে তার আধার কার্ডের নম্বর ও ব্যাঙ্কের নতুন নম্বর ( এই উপলক্ষে করা) যুক্ত হচ্ছে কিনা অথবা পুরাতন অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করা আছে কিনা। আবেদনকারীর সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট হতে হবে কিন্তু এই নিয়ে রাজ্যজুড়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে তাই জয়েন্ট অ্যাকাউন্টকে সরকার মান্যতা দিতে পারে, বিষয়টি ক্যাম্পে জানুন। তবে সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট থাকা ভালো। সরকার জানিয়েছিল কোনও রকম জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট গ্রাহ্য হবে না। অ্যাকাউন্ট না থাকলে নতুন করে নিন। জিরো ব্যালেন্স সিস্টেমে এই অ্যাকাউন্ট হবে। সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট থাকলে পরে জটিলতা থাকবে না।

আধার কার্ডে জন্ম তারিখ না থাকলে, তারও আপডেট করানোর দরকার। কারণ আবেদনকারীর জন্মতারিখ সব জায়গায় একই রকম হতে হবে। এছাড়াও সুবিধাভোগীকে তার আধার নম্বরটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আধার কার্ড না থাকলে এই আবেদন করা যাবেনা। পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দারাই কেবলমাত্র এবং যাদের বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তারাই কেবল এই স্কিমের অধীনে আবেদন করতে পারবেন। অবশ্য জন্মতারিখের প্রমাণ থাকলে এই মূহুর্তে আধার কার্ডের জন্ম তারিখের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। তবে ভোটার কার্ডের জন্মতারিখটি যদি সব জায়গায় ইতিমধ্যে ব্যবহার করে থাকেন, তবে সঙ্গে ভোটার কার্ডটির জেরক্স দেবেন এবং ফরমে ভোটার কার্ডের তথ্য দেবেন। দু জায়গায় দুরকম জন্মতারিখ থাকলে
এই মূহুর্তে এড়িয়ে চলুন।

যেসব মহিলা বা তাদের পরিবারের কর্তা সরকারি খাতে স্থায়ী চাকরি করছেন ও বিভিন্ন রকম পেনশন পান তারা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন না। কিন্তু যারা পরের বাড়ি কাজ করেন এবং কোথাও রোজের ভিত্তিতে কাজ করেন অথবা নৈমিত্তিক কর্মী আছেন, অথবা প্রাইভেটে কাজ করেন এবং তাদের স্বামীর কাছ থেকে কোনও হাতখরচ পান না, তিনিও আবেদন করতে পারবেন। মিড-ডে মিলের কর্মীরাও এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন স্থায়ী ইনকাম না থাকলেই হলো। স্বামী প্রাইভেটে চাকরি করলেও স্ত্রী অনেক সময় হাত খরচ পান না তাই তিনি অবশ্যই আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন পরিবারের কেউ বিধবা পেনশন পেলেও অন্যরা আবেদন করতে পারবেন।

এই স্কিমের অধীনে, এস.সি এবং এস.টি সম্প্রদায়ের প্রতিটি পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, এই স্কীমের সবচেয়ে বড় ট্যুইস্ট হলো এটা। সরকার এই স্কিমের জন্য ১২,৯০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে।

এই স্কিমের বাস্তবায়ন ১লা জুলাই থেকে শুরু হলো। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই কিছু যোগ্য উপভোক্তার ডেটাবেস রয়েছে যেমন সামাজিক নিরাপত্তা স্কিমের ৩৩ লক্ষ মহিলা সুবিধাভোগী। এই সুবিধাভোগীদের এই স্কিমের সরাসরি বেনিফিট ট্রান্সফারের অধীনে আনা যেতে পারে।

বাকি পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করবে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে রাজ্যের গ্রামীণ ও শহুরে অর্থনীতি শক্তিশালী ও মজবুত হবে বলে সরকার মনে করছে। সুবিধাভোগীরা সেপ্টেম্বর ২০২১ থেকে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:-

(১).জেরক্স সহ আধার কার্ড (২). জেরক্স সহ জাতি সনদ শংসাপত্র এবং তপশিলি জাতি উপজাতিদের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিজের নামে এস.সি/ এস.টি সার্টিফিকেট থাকতে হবে। আবেদনকারী জেনারেল কাস্টে বিয়ে করলেও নিজে এস.সি/ এস. এস.টির সুবিধা পাবেন। (৩) জেরক্স সহ নিজের একই নামের রেশন কার্ড (পদবী পরিবর্তন না হলেও চলবে) (৪). জেরক্স সহ স্থায়ী আবাসিক সার্টিফিকেট। (৫).জেরক্স সহ বয়সের প্রমাণপত্র। (৬). ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণী পৃষ্ঠার জেরক্স ও পাশবই, যেমন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট বিবরণের পৃষ্ঠা যাতে আই.এফ.এস কোড ও অ্যাকাউন্ট নম্বর আছে। (৭). পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি দুই কপি। (৮) নিজের বা পরিবারের কারও চালু মোবাইল নম্বর। যাদের স্কুলের পড়াশোনা নেই তাদের ক্ষেত্রে আধার কার্ডের জন্মতারিখটি গ্রহণ করা হতে পারে, ভ্যালিড। (৯) বয়সের প্রমাণ হিসেবে অ্যাফিডেভিট চলবে কিনা তা ক্যাম্প অফিস বলতে পারবে।

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করা নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েদের অ্যাকাউন্ট আছে। বাবার অ্যাকাউন্ট আছে। লক্ষ লক্ষ মহিলাদের নিজেদের কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। তাই বিরাট সমস্যা যে এই কদিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক পারবে কিনা এত এত মহিলাদের সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দিতে। এই সমস্যা রাজ্য সরকারও বুঝেছে। মনে হচ্ছে এই নির্দিষ্ট বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যেখানে সিঙ্গল থাকবে না, সেখানে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট চলতে পারে। আরও কয়েকটি সমস্যা হবে। যেরকম জয়েন্ট ফ্যামিলিগুলো স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছে একজন বয়স্কা মহিলার নামে কিন্তু আদতে সেখানে একই বাড়িতে দুটি বা তিনটি হাঁড়ি আছে এই ক্ষেত্রে দুই বৌমা আবেদন কীভাবে করবে ? কারণ বড় ছেলে সরকারি কর্মী। মেজ ও ছোট ছেলে কিছুই করে না। এইরকম জয়েন্ট ফ্যামিলির কি হবে ? এইক্ষেত্রে দুই বউমাই পাবেন।

আর একটি প্রবলেম হতে পারে তা হলো যাদের বয়সের কোনও শংসাপত্রই নেই। কেবলমাত্র ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ডের জন্ম তারিখ দিয়ে চলে যাচ্ছিল এতদিন। এখনও বহু মানুষ আধার কার্ডে জন্মতারিখ নথিভুক্ত করেননি, এই ধরনের জটিলতার জন্য। এ ছাড়া আর এক ধরনের জন্মতারিখ নিয়ে জটিলতা আছে যা গেঁতোমির জন্য সংশোধন করা হয়নি। কারণ আধার কার্ডের জন্ম তারিখের সঙ্গে তার ভোটার কার্ড ও অন্যান্য জন্ম তারিখের কোনও মিল নেই। এই কারণে একবছর বা ছয়মাসের তফাৎ থেকে গেছে নিজের বয়সের। আমি বলবো সব সময় আধার কার্ডের জন্মতারিখ মেনে নিলে সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে যাবে। কারও জন্মতারিখ নেই তার ক্ষেত্রে অ্যাফিডেভিড নিয়ে সমস্যা মেটানো যেতে পারে। টাকার লোভে কেউ যদি দু তিন জায়গায় দু তিন রকম জন্মতারিখ রাখেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনার সমূহ ক্ষতি করতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ লক্ষ্মী ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় আবেদন করার পদ্ধতি:- লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনটি নিয়ে বাড়িতে আনার পর সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি অর্থাৎ নিজের কাছে থাকা কাগজপত্রগুলি সংগ্রহ করতে হবে এবং এরপর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আবেদন ফর্মের অধীনে থাকা সমস্ত প্রয়োজনীয় বিবরণ পূরণ করা শুরু করুন। দয়া করে দুয়ারে সরকার থেকে দেওয়া নিবন্ধন নম্বর টি পূরণ করুন সবার আগে। আবেদন পত্র সংগ্রহ করার দিনে এই নম্বর ফরমে লিখে দিতে পারে, আগে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হয়ে তবেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ক্যাম্পে যেতে পারবেন (রেজিস্ট্রেশন করুন)।

স্বাস্থসাথী কার্ডের নম্বরটি ফরমে লাগবে। আগে থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে, এই আওতার অধীনে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রয়োজন হবে। তাই এই কার্ড না থাকলেও আবেদন করা যাবে। ফরম্ জমা দিয়ে আধিকারিককে জানাবেন আপনার স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হয়নি। তখন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হবে এবং ততক্ষণ আপনার লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনটি অস্থায়ী ভাবে জমা হয়ে পড়ে থাকবে। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলেও লক্ষ্মীর ভান্ডারে আবেদন জমা করা যাবে অথবা স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে সাহায্য করতে বাধ্য থাকবেন। এই বিষয়ে নিয়ম সরকার প্রতিনিয়ত আপডেট করে সংশোধন করছে।

আবেদনকারীকে তার দেওয়া সমস্ত জেরক্স কপিতে নিজেকে স্বাক্ষর করতে হবে। ফরমে স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষর না করতে পারলে টিপসই দিতে হবে।

ফরমে লাগবেঃ পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নম্বর। যাদের নেই ফাঁকা থাকবে। আধার নং। আবেদনকারী সুবিধা প্রাপ্তের নাম। মোবাইল নম্বর। ইমেইল আইডি না থাকলে দেওয়ার দরকার নেই)। জন্ম তারিখ। বাবার নাম। মায়ের নাম। স্বামীর নাম। ঠিকানা। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিবরণী। এই সমস্ত বিবরণ পূরণ করার পর এখন আপনাকে স্বয়ং ঘোষণা ফর্ম পূরণ করতে হবে। যাতে বলা আছে সবকিছু তথ্য আপনি সঠিক ও সত্য দিচ্ছেন। সঙ্গে একটি ক্যান্সেল লেখা চেকের ফাঁকা পাতা, যেখানে স্বাক্ষরের জায়গাটি ক্রস করে দেবেন, চেকের কোথাও সই-স্বাক্ষর করবেন না। একটি ছবি ফরমে মেরে দেবেন আর একটি ছবি ফরমের বামদিকে স্টেপল্ করে দিন। এইসব হলে আসল ফরম্যাট সাবধানে পূরণ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিন। অলোক কুন্ডু ©®।





বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২

কলকাতা ইসকনের উদ্যোগে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা

জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা, কলকাতা ইসকন।
কলকাতা ইসকনের উদ্যোগে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা

আমার ভাই আশীষ ও আমাদের স্ত্রী মিতাই আজ বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতার ইস্কন মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমাদের বাড়িতে আমাদের হাওড়ার কুন্ডুবাড়িতে ইস্রায়েল প্রভুজিরা উপস্থিত থাকার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত হন গৌর-তাইয়ের মূর্তিও। প্রায় প্রতি বছর ও উডদের ভগবানের ভজন-পূজন হয়ে আসছে গত বছরের একটি দিনঃ। উত্তর ইসন থেকে আনা প্রসাদ সামাজিক আমরা আত্মীয়-বন্ধুরা সকলে। 

এই সময়কালে ওদের সাঙ্গী হয়ে ময়দানের রথের মেলায় যাওয়ার সময় থেকে ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবের পদপ্রান্তে পুষ্পার্ঘ্য দিতে হবে। ভোগ যুগ। মেলাকে নিয়েছি। বহু কলকাতার গঙ্গাবক্ষে, কয়েক বছর আগে শ্রী কৃষ্ণের নৌকাবিহার যাত্রা পুজোলোওও বড়াকার জাহাজে যে পুজোপাঠের সময় উপস্থিত হয়েছিল সেখানে উপস্থিত হতে হতে হতে ধন্য হওয়া। সেই অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। 

এবছর ১২ জুন,২০২২ পুণরায় সেই নৌকাবিহার উৎসবেও ওদের সঙ্গী হয়ে যোগ দিয়েছিলাম কলকাতার গঙ্গাবক্ষে। একদিকে চলছে ভজন পূজন ওড়িসি নৃত্য অন্যদিকে গঙ্গার পাড়ের বিস্তৃত সৌন্দর্য। আমাদের বড় পরিবার। তাই আমার ভাতৃবধূ মিতার আগ্রহে আমাদের পরিবারের অনেকেই উপস্থিত হতে পেরেছেন এইসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে। ইসকনের ভাবগম্ভীর পুজোপাঠের এইসব ভক্তবাদী অনুষ্ঠানের মর্যাদাই ভীষণ আলাদা। এইসব অনুষ্ঠানগুলি আগাগোড়া খুব সুন্দর ও সুচারুভাবে সুশৃঙ্খলভাবে শুরু ও শেষ হয়। প্রতিবার প্রতিটি ক্ষেত্রে জলযোগ, ফল শরবৎ ও পেটভরে ভোগ খাওয়ার আয়োজন থাকে। নৌকাবিহার অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে দু একদিনের মধ্যেই আলাদা করে লিখবো বলে ভেবে রেখেছি। নৌকাবিহার উৎসবে গিয়ে ওখানেই ভাতৃবধূ মিতা আমার স্ত্রীকে জানালো ভগবান জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা মহোৎসবে কি তোমরা যাবে ? আমরা রাজি হয়ে গেলাম।

গতকাল ১৪.৬.২০২২ ছিল সেই স্নানযাত্রা উৎসব। যে উৎসব পুরীতে বহু যুগ থেকে চলে আসছে। এখানে বলে নেওয়া ভালো যে ভক্তিবেদান্ত স্বামী শ্রীল প্রভুপাদ প্রভুজি কলকাতায় ১৯৭০-এ ইসকনের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ১৯৭২ সর্বপ্রথম কলকাতায় ইসকনের রথযাত্রা শুরু হয়েছিল। এখানে আমাদের জানা দরকার যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উদ্যোগেই যাত্রাপালা ও রথযাত্রা বঙ্গে শুরু হয়েছিল। আর শ্রীল প্রভুপাদ মহোদয় হরে কৃষ্ণ হরে রাম এই মন্ত্রকে সঙ্গে নিয়ে সারা পৃথিবীতে তৈরি করলেন ইসকন মন্দির। সেখানে পূজিত হন রাধা ও কৃষ্ণ, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আর গৌর নিতাই।

ধ্যানজ্ঞানে শুধুমাত্র কৃষ্ণের নাম ভজনা করাই হল ইসকনের ভক্তদের মূল কাজ। হরে কৃষ্ণ হরে রাম এই মন্ত্র সঙ্গে সবসময় উচ্চারণ করা যায়। কলকাতার মিন্টোপার্ক অ্যালবার্ট রোডের ইসকন মন্দির খুলে যায় খুব ভোরে ৪.৩০ টায়। মাঝে বন্ধ থাকলেও আবার বিকেলে খুলে বন্ধ হয় রাত ৮.৩০ টায়। বর্তমানে এই মন্দিরটি উত্তমকুমার সরণিতে অবস্থিত। রাধাগোবিন্দ মন্দির হিসেবেই পরিচিত। এই গৌরবাণ্বিত শ্রীচৈতন্য ভক্তিবাদের স্রোত ধরে এখানে পূজিত হন ভগবান জগন্নাথ দেবও।

তাই আমরা রাজি হয়ে গেলাম। ভগবান শ্রীজগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নানযাত্রাকে পরিলক্ষিত করতে এবং সেই মাহাত্ম্য দর্শনের সাক্ষী থাকতে গতকাল (১৪.৬.২০২২) -এ দক্ষিণ কলকাতার গুরুসদয় দত্ত রোডের ইসকন হাউসে উপস্থিত হয়েছিলাম বিকালে। আসলে কলকাতার ইসকন হাউসটি হল ইসকনের কার্যালয়। মন্দিরটি কিন্তু বেলভিউ হসপিটাল ও বিড়লা স্কুলের কাছে। 

আমরা হাওড়া থেকে গাড়ি করে বিকাল ৫.০০ টার বেশ কিছু আগেই উপস্থিত হলাম ইসকন হাউসে। মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন এই স্নানযাত্রা সম্পর্কে। গিয়ে দেখলাম পর্যাপ্ত পুলিশ আছেন সেখানে। গেটে ঢোকার আগে জুতো পরিত্যাগ করে তিলক আঁকার লাইনে দাঁড়াতে হল। ভেতরে সুদৃশ্যভাবে প্যান্ডেল হয়েছে। চেয়ার ও ফরাস পাতা আছে। একসঙ্গে হাজার দেড়েক লোকের স্নান সেখানে। কিন্তু ভক্তদের সংখ্যা থেমে নেই সংখ্যায়। মাইকে বেজে চলেছে মন্ত্র উচ্চারণ। ভজন গান। মন্ত্র মানে শ্রীল প্রভুপাদের রেখে যাওয়া হরেকৃষ্ণ নামজপ। মাঝেমধ্যে ভজন সংগীতও তাই। দূরে কাছে সারিবদ্ধভাবে মেয়েরা ও ছেলেরা কৃষ্ণনামে গা দোলাচ্ছেন। নাচ হচ্ছে ছোট ছোট গ্রুপে। 

এরমধ্যেই আশীষ-মিতা আমাদের ডেকে নিয়ে গেল যেখানে দাঁড়িয়ে সমস্ত কিছু অবলোকন করছেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অনঙ্গ প্রভুজি।
পুরীর এক রাজার নাম তো অনঙ্গ ভীমদেব। যাইহোক আমরা নতমস্তকে সুদর্শন, সুগায়ক ও সুবক্তা অনঙ্গ প্রভুজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম ও ছবি তোলা হল ওনার সঙ্গে। দেখতে দেখতে অনেক ভক্ত ওনাকে প্রণাম করলেন। একটু পরেই উনি নিজেই সঙ্গীত পরিবেধন করবেন। মাইকে দূর থেকেই শোনা যাবে সেই গান। ভগবানকে শুদ্ধিজলে ও দুধ দিয়ে স্নান করাবেন সকল উপস্থিত ভক্তবৃন্দ। এ পরম সৌভাগ্য সকলের।

পুজোপাঠের মধ্যে ততক্ষণে তিন দেবতার অঙ্গসজ্জা শুরু হয়ে গেছে। নানা উপাচারে ভগবানের মহা স্নানযাত্রার বেদি রচনায় ইসকনের প্রভুজিরা ব্যস্ত। নির্দিষ্ট সময় মেনে মহিমান্বিত উপাচারের নানা উপাদানগুলি সৌন্দর্যের সঙ্গে বিগ্রহগুলিতে সঞ্চিত হচ্ছে ধীরে ধীরে। হাজারের বেশি ভক্তবৃন্দ দাঁড়িয়ে বসে হাত জোড় করে সুরে সুর মেলাচ্ছেন, তাদের মাথা দুলছে ভক্তিরসের আচার অনুষ্ঠানে, মাহাত্ম্যে কেউ কেউ চোখ বুজে আছেন। সম্মিলিতভাবে  মোবাইলগুলিতে ভিডিও ফুটেজ তৈরি হচ্ছে ভেতরে ভেতরে। গৈরিক বসনধারী প্রভুজিরা প্রখর দৃষ্টি রেখেছেন অনুষ্ঠানের ভাবগম্ভীর পরিবেশকে ত্রুটিমুক্ত করতে। ভক্তদের উল্লাস শুধুমাত্র হরেকৃষ্ণ হরে রাম উচ্চারণের গভীরতায়। সমগ্র পর্বটির লীলামাহাত্ম্যে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তারা। উপস্থিত আছেন পন্ডিত মানুষ থেকে সাধারণ চাকুরিজীবী বড় বড় ব্যবসায়ী থেকে কলকাতায় বসবাসকারী পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের বিশাল জনসমষ্টি। শ্রীকৃষ্ণের প্রবল ভক্ত তাঁরা। একই সঙ্গে জগন্নাথ দেবের ভক্তও তাঁরা। হরিনাম জপছেন কেউ কেউ। হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে স্নানযাত্রায় যারা অংশ নিয়েছেন তাঁদের সকলের কাছে শ্রীকৃষ্ণ ভগবান স্বরূপ তো বটেই স্বতন্ত্রভাবে তাঁর নামকীর্তণে এইসব ভক্তদের আনন্দ ও অশ্রু মিশে যাচ্ছে।

শিশু থেকে বয়ঃবৃদ্ধ সকলেই এই মহান স্নান পরিত্যাগ করতে চান না। যারা বিকাল থেকে এসে উপস্থিত হয়েছেন তাদের কেউ ইসকন হাউস সংলগ্ন "গোবিন্দা" রেস্টুরেন্টে গিয়ে সামান্য শরবৎ মিষ্টি চপ খেয়ে এলেন। যদিও তাদের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। অনেকেই এই পর্বে অপেক্ষা করে আছেন আগে সুশৃঙ্খল ভাবে ভগবানকে স্নান করাতে যেন তিনি পারেন। সুগন্ধি জল, দই, হলুদ, চন্দন ফুল মিশ্রিত সেই জলে ভগবান বহুক্ষণ ধরে স্নান করছেন। প্রভুজিরা ঝারার জল ঢালছেন জগন্নাথ সুভদ্রা বলরামের মাথায়। যেন স্নানের গরিমায় ভক্তদের মনোবাঞ্ঝা পূরণ হচ্ছে। সকলে হরিধ্বনি দিচ্ছে, উলু দিচ্ছে শাঁখ বাজছে।

ভগবানের স্নানের জন্য রীতি মেনে কয়েক ড্রাম দুধ এসেছে মাটির ছোট ঘড়া এসেছে কয়েক হাজার। কেউ যেন আজ বঞ্চিত না হন এই স্নানযাত্রার ভক্তিরসের আহ্বান থেকে। ভগবান এই মহাস্নানে আন্দোলিত। তিনি ভক্ত ও ইসকনের প্রভুজিদের এই চন্দন প্রদান, সুগন্ধি জলঢলায় দুধ ঢালায় মজা পাচ্ছেন সর্বক্ষণ। আজ বুঝি সমস্ত গ্রীষ্মের অবসানের দিন। একটা সময় থামলো গান ও ভগবানের পরিচর্যা শুরু হলো পর্দার আড়ালে। শেষে প্রথা মেনে গজবেশে মুকুট মণিমুক্তায় সজ্জিত হয়ে ভক্তদের দেখা দিলেন। ইতিমধ্যে ভগবান প্রসাদ ভক্ষণ করেছেন। কাউন্টারে স্লিপ দেখিয়ে ব্যাগভর্তি প্রসাদ নিতে চললো সকলে। ভজন হয়ে চলেছে। বের হচ্ছি যখন তখন প্রায় ৯.০০ বেজে গেছে। ভক্তরা চলে যাচ্ছেন কেউ কেউ। ঝেঁপে বৃষ্টি এলো। আমরা ভিজতে ভিজতে ভগবান জগন্নাথের এই লীলাভূমি থেকে বেরিয়ে পড়েছি। 

স্কন্দপুরাণে জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রার কথা উল্লেখ আছে। স্নানযাত্রার কথাও বলা হয়েছে, ওই দিন ভগবান জগন্নাথ দেবের শ্রীবিগ্রহকে যে বা যিনি দর্শন করবেন তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল লাভ করবেন। জৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় এই স্নানযাত্রা অনুষ্ঠানটি হয়। এই স্নান যাত্রার আর একটি দিক হল, এই সময়ে আমাদের কাছে স্নানের মতো উপকারী জিনিস আর কিছু নেই, জল হচ্ছে প্রখর দাবদাহ দূর করতে অসীম ক্ষমতার অধিকারী আর সেই জল আমাদের শীতল করে তোলে।

স্নানযাত্রার আসল সময় শুরু হয় সন্ধ্যার ঠিক পূর্ব মূহুর্তে। ওইদিন জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা, সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহ একটি বিশাল শোভাযাত্রা সহকারে পুরির মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বার করে স্নানবেদীতে এনে রাখা হয়। বিশেষ করে যারা প্রকৃত ভক্ত তারাই
প্রধানত এই সময় পুরীতে জগন্নাথকে দর্শন করতে আসেন। এই কারণে লক্ষ লক্ষ পূর্ণার্থীর সমাগম হয়।

স্নানযাত্রার দিন মন্দিরের উত্তর দিকের সোনার-কূপ থেকে জল এনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে সেই জলের আগে শুদ্ধিকরণ করা হয়। জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রায় শাস্ত্র মতে কিছু রীতি বলা আছে। জগন্নাথ দেব হলেন স্বয়ং নারায়ণ। জগন্নাথ শব্দের অর্থ হলো এই জগতের ঈশ্বর। ঈশ্বরের স্নানযাত্রায় আপনি উপস্থিত হলে আপনার অনিচ্ছুক পাপগুলির সহজেই খন্ডন হয়, এটাই বিশ্বাস। ধরে নেওয়া হয় যদি কেউ ভক্তিসহকারে একবার এই স্নানযাত্রা মহোৎসবের সময় বিগ্রহের স্নান দর্শন করেন অথবা জলে বিগ্রহকে স্নান করাতে সুযোগ পান তবে তিনি এই সংসারের বন্ধন থেকে সুনিশ্চিতভাবে মুক্তি লাভ করবেন। ঋষি জৈমিনি বলেছেন যিনি এই স্নানযাত্রা দর্শন করবেন তিনি সমস্ত তীর্থের স্নানের থেকে শতগুণ অধিক ফল লাভ করবেন।

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন জগন্নাথ দেবের কাঠের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আর সেইদিন থেকেই এই স্নান যাত্রার উৎসব অনুষ্ঠান চলে আসছে আজ পর্যন্ত। স্নানযাত্রাকে তাই জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব তিথি বা জন্মদিন হিসেবেও পালন করার রীতি। এইদিন জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাদেবীকে বিশেষভাবে তৈরি বেদীতে প্রথমে নিয়ে আসা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে বিশেষভাবে তৈরি করা এই বেদীকে স্নান বেদী বলা হয়। তোরণ পতাকা চাঁদোয়া নানা বর্ণের সহযোগে সমস্ত কিছু দিয়ে সুসজ্জিত করা হয় স্নানবেদীর চতুর্দিক। ১০৮ ঘড়া পবিত্র জলে মেশানো হয় গন্ধপুষ্প, হলুদ, চন্দন ও সুগন্ধি। বিগ্রহকে সাজানো হয় ফুল সুচন্দন গন্ধদ্রব্য দিয়ে। জ্বালানো হয় কর্পূর, চন্দনকাঠের গুঁড়ো, ধূপ। পঞ্চ ও ১০৮ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করাও হয়।স্নানযাত্রার পূর্বে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাদেবী কে রেশমি কাপড় দিয়ে আবৃত করা হয়। ১০৮ জলপূর্ণ সোনার ঘড়া দিয়ে বিগ্রহের অভিষেক সম্পন্ন হয়। স্নানযাত্রার পর জগন্নাথ দেবের মন্দির পনেরো দিন বন্ধ থাকে। পনেরো দিন পর নেত্রউৎসবে তার নয়ন খোলে বলে মনে করা হয়। পুরীকে মর্তের বৈকুণ্ঠ বা দ্বারকা বলেও বিশ্বাস করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেবের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। তাই রথযাত্রার পর্যন্ত তিনি বিশ্রাম নেন, আবার রথের দিন আত্মপ্রকাশ করেন এবং তখন  রাজবেশে সামনে আসেন। পুরীতে ১২ বছর অন্তর নব কলেবর হয়। জ্বর এলে লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন জগতের নাথ। শোনা যায় একটু সুস্থ হলে এই সময় করা হয় তাঁর অঙ্গরাগ। অর্থাৎ ভেষজ রং দিয়ে জগন্নাথ দেবকে রাঙানো হয় নতুন করে। এই পর্বে গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ থাকে। এই সময়ে তাঁকে রাজবৈদ্যের অধীনে একটি সংরক্ষিত কক্ষে রাখা হয়। এই অসুস্থতার পর্বটিকে বলা হয় 'অনসর'। এই পর্বে জগন্নাথের দর্শনও পাওয়া যায় না। কথিত আছে রাজবৈদ্যের পাঁচন খেয়ে জগন্নাথ আবার সুস্থ হয়ে উঠলে ভক্তরা আবার তাঁর দর্শন পান। 

এই অধিকারের পর জ্যৈমা থেকে আষাঢ়ী আমাবস্যা পর্যন্ত ভগবানকে জনসাধারণ রাখা থেকে ১৫ দিন। এই কয়দিন কেবলমাত্র তাঁর নিত্যপুজা শুধু করতে থাকে। পরো দিন পর ভগবানকে আবার নবসাজে মন্তব্য আনা হয়। আবার জগন্নাথদেবকে সবার সামনে জনসাধার দর্শনের জন্য আসা হয় ১৬ তাঁকে। কভিরাজি পাঁচন জ্বরে জগন্নাথের। তার পর হয় নবযৌবন পরদিন রথে চেপে মাসির ঘরবাড়ি উদ্দেশে রওনা হন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। স্নানযাত্রার পরে দেবতাদের বিগ্রহ গজান পোশাক পরানো হয়। কথিত আছে, জগন্নাথ গণেশভক্তদের কাছে তানতে গজান পোশাক পরেন তিনি। ©® অলোককুন্ডু 

মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্ম হয়েছিল মাদ্রাজের অদূরে তিরুনানি টাউনে । মিশনারী
পরিবেষ্টিত এই টাউনে প্রথম ৮ বছর । ১২ বছর
তিনি মিশনারী স্কুলে পড়েছিলেন । কখনো তিরুপতি কখনো ভেলোর কলেজ পরে মাদ্রাজ
খ্রিস্টান কলেজে । গরিব ছিলেন । নিজেই বলেছেন তিনি পারমার্থিক সত্ত্বার� মধ্যে তার
মানুষ হওয়া । গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবার । জন্মস্থান ছিল ধার্মিক পরিমন্ডল । এতএব খুব কাছ থেকে
দুটো ধর্মের প্রভাব তাঁর জীবনে পড়েছে । তিনি নিজে লাজুক হওয়ার কারণে একা থাকতে
ভালোবাসতেন । স্বামীজির প্রভাব । কাছের রামেশ্বরমের রাজা । দর্শন ও যুক্তি । প্রথম হিসেবে
মাদ্রাজ কলেজ থেক পাশ । ১৭ বছর বয়সে দর্শনের বই । তিনি বাইবেল পড়েও স্বামীজির আমেরিকায় দর্শন কংগ্রেস যোগদান । বাদের ভক্ত হন । তিনি তৎকালীন পাদ্রিদের সমসলোচনার কারণে হিন্দু ধর্মের বেদ বেদান্ত জ্ঞান নেন । পড়া শুরু করেন । তিনি যখন
মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ পরীক্ষায় বসলেন তখনই ঘটলো আশ্চর্য ঘটনা । সকল ছাত্রদের
একটি গবেষণা পত্র জমা দিতে হতো । তাঁর সেই গবেষণা পত্র এথিক্স অফ বেদান্ত 1908 তার কুড়ি বছর বয়সে লেখা নির্বাচিত হয়ে এবং সেই
প্রথম কোনো ছাত্রের রচনা হিন্দুদের ধর্মের একটি কঠিন দার্শনিক সমস্যার সমাধান করেন বই হয়ে প্রকাশিত হয় । তার উপনয়নের সময় সাতদিন দন্ডি ঘরে থেকে বেশ কটি উপনিষদ শেষ করেন ।
1912 তে মাদ্রাজ ও অক্সফোর্ড থেকে একই
সঙ্গে প্রকাশিত হয় এসেন্সিয়াল অফ ফিলজফি বইটি । 1909 মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রফেসর হন । 1917 তে প্রবন্ধ রবীন্দ্রনাথের জীবনাদর্শন ও ভারতীয় আধ্যাত্মবাদ । তিনি ধীরে ধীরে রবীন্দ্রনাথ । ফিলসফি অব RABIMFRA NATH THAKUর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে
1921 আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ যোগাযোগ কলকাতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ।
1926 দর্শন কংগ্রেস হাভার্ড ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি । ম্যাঞ্চেষ্টার হার্ভাড অক্সফোর্ড । 1931 26 ডিসেম্বরে কলকাতার
টাওন হলে রবীন্দ্রনাথের সংবর্ধনার সভাপতি তিনি যখন 1933 অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ হন তখন ওয়ালটিয়ারে রবীন্দ্রনাথ 1934 ।  অক্সফোর্ড ও বার্মিংহামে অধ্যাপনা । শ্রীকৃষ্ণের
শ্লোকের ব্যাখ্যাও তিনি যেমন করেছেন তেমনি
জৈন দর্শন এর কঠিন সূত্রের সমস্যা সমাধান করেছেন হিব্রু পার্শি জোরেস্ট্রিয়ান বৌদ্ধ ধর্মীয় রাষ্ট্র সংঘে থাকার সময় নারী মর্যাদা তিনি গান্ধীজির অস্পৃস্য নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন সোভিয়েত রাশিয়ার রাষ্টদুত া স্টালিন একমাত্র ভারতীয় সঙ্গে দেখা । ইউনেসকো । 25.2.1956 উপরাষ্ট্রপতি । কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের । বিশ্বের সকলের মঙ্গল কামনা অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা তিনি এই জগতকে বললেছ আপোষের জগত া ভালো মন্দ । 1942
গান্ধীজির ভারত ছাড়ো আন্দোলন লেকচার । 1954 সোভিয়েত পলিটব্যুরো মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈতনিক অধ্যাপক 1954 ভারত রত্ন । দুবার উপরাষ্ট্রপতি । ড় রাজেন্দ্র প্রসাদ । 1962 রাষ্ট্র পতি হয়ে অধ্যাপনার 2 হাজার নিয়ে 8 হাজার দান । তাঁকে তাঁর মৃত্যুর আগেই 1975 সালে ইউরোপের টেম্প্লেশন TEMPLETION  মাদার া 16.4 ১৯৭৫
মৃদু । অধ্যক্ষ অক্শফোর্ডের । ইনটুইটিভ স্বতঃলব্দ জ্ঞান ।

শনিবার, ৪ জুন, ২০২২

কে কে অক্সিজেন নিলে বেঁচে যেতেন/ অলোক কুন্ডু

২৯/৭/২০১৯-এ লিখেছিলাম। সমতলেও সকলের এই লেখা পড়া উচিত। শিল্পীদের মঞ্চে ওঠার আগে অক্সিজেন নেওয়া উচিত।

গাছপালাহীন উচ্চতম স্থানে অক্সিজেনের প্রভাব
©® অলোক কুন্ডু 

উচ্চতা ১৭,০০০ কিংবা ১৮,০০০ উঠে শ্বাস নিতে
কষ্ট না হলে ভালো কিন্তু লাদাখের লে-তে ১১,০০০ -এ উঠে সব থেকে সমস্যায় পড়েন
সাধারণ মানুষ । হোমিওপ্যাথি কোকা-৬ থেকে
পর্যাপ্ত অক্সিজেন যে পাওয়া যায় এবং সেই অক্সিজেন যে শরীরে সাতদিন স্টে করানো যায়
এরকম অকাট্য প্রমাণ নেই (একমাস আগে থাকতে খেলেও যে এর উপকার পাওয়া যাবে তার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই ) ,তবু যারা হিমালয়ে যান তারা বিশ্বাস করেন এবং প্রতিদিন দু-তিনবার কোকা-৬ খান । এই পর্যন্ত সব
ঠিক আছে । কিন্তু লাদাখের (লে ) সরকারি হাসপাতালের ট্যুরিস্ট ওয়ার্ডে ঘন্টায় ঘন্টায় অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে যে সমস্ত যুবক থেকে বুড়ো ভর্তি যারা হয়ে থাকেন তারাও নিয়মিত কোকা-৬ খেয়ে আসছিলেন বেশ কয়েকদিন , কিন্তু কোকা-সিক্স নয় অক্সিজেন থেরাপিই যে একমাত্র ওষুধ এটা প্রমাণিত হয়ে যায় হাসপাতালের ওই ১ থেকে ৯ নম্বর বেডে যারা
এসে সুস্থ হয়ে ফিরে যান । আমাকে সমতলে 
যে কখন‌ও কোনও ডাক্তার অক্সিজেন
মাপিয়েছে এরকম অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই ।
আসলে এখানকার বড় বড় ডাক্তাররাও তা জানেন না যে প্রতিটি রোগীর অক্সিজেন লেভেল মাঝেমধ্যে মাপা দরকার এমনকি সমতলেও । 
এই দরকারি বিদ্যা সমতলের ডাক্তারদের এত অজানা কেন তার কোনও কারণ দেখিনা । 
এটা এখন জেনেছি বলে আমার কাছে খুব আশ্চর্য লাগছে এই জেনে যে এখানকার কোনও ডাক্তারের কাছে মানব শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ মাপার সামান্য যন্ত্রটি থাকেনা , অথচ আপনি লাদাখের ওপিডিতে গেলে আগে আপনার অক্সিজেন লেভেল সবার আগে 
মাপবেই মাপবে । তারপর তার অন্য চিকিৎসা । আপনি এই অবধি পড়ে স্বাভাবিকভাবেই 
বলবেন এখানে দরকার পড়েনা তাই । তাহলে আমার উত্তর হলো এটাই আমাদের কাছে একটা মারাত্মক ফল্ট অথবা অজ্ঞতা । সমতলেও এই লেভেল মাপা অত্যন্ত আবশ্যিক। রক্তের অক্সিজেন বহন ক্ষমতা কম হলে প্রথমত
মানুষের ঘুম আসেনা , রাতের পর রাত জেগে কাটাতে হয় । তাই সমতলেও লাদাখের মতো
অক্সিজেন থেরাপির ব্যবস্থা একান্ত আবশ্যিক ।
প্রথমত রক্তের কোনও ঘাটতি থাকলে অক্সিজেন
বহন শরীরে কম হয় কিন্তু মাসে একবার দুবার
চার/পাঁচ ঘন্টা অক্সিজেন থেরাপি নিলে একটা
মানুষের কী কী উপকার হয় সেটা জানা দরকার
(১) মানুষটার হার্টের অসুখ হ‌ওয়ার চান্স অনেকটা কমে যায় (২) ভালো ঘুম হয় (৩) অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য যাদের সর্দিকাশি লেগেই থাকে সেই থেকে সে নিস্কৃতি পায় , বয়স্কদের নিউমোনিয়া হ‌ওয়াটা থেকে অনেকটা বাঁচানো যায় । (৪) শরীরে একটা তাজা ভাব আসে। এখন আপনি বলতেই পারেন সকালে মর্নিং ওয়াক করলে শরীরে অক্সিজেন যায় ।
কিন্তু নেড়া জায়গায় ভোরে উঠে যতই দৌড়াদৌড়ি করেন না কেন কিছুতেই অক্সিজেন আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন না বড় জোর আপনার ফিটনেস বাড়বে কিন্তু হাজার দৌড়ঝাঁপ করা মানুষের শরীর যদি অক্সিজেন ঠিকমতো বহন করতে অপারগ হয় তখন তার ফিটনেস কোনও কাজে আসবে না । যেমন ধরা যাক রক্তে শর্করা বা সুগার থাকলে অক্সিজেনের পরিমাণ বহন শরীর ঠিকমতো করতে পারবে না । এইসঙ্গে যদি
লিভার-প্যানক্রিয়াস কমজোরি হয় তবে ফ্যাট
ও প্রোটিন সেই ব্যক্তি উপযুক্ত পরিমাণে নিতে
পারবে না এবং তাই শরীরে অক্সিজেন প্রবাহিত
কম হবে । মোদ্দাকথা রক্ত কমজোরি হলে অক্সিজেন শরীরে কম যাবে । ৭৫ % অক্সিজেন
শরীরে থাকলে ভবিষ্যতে ব্যক্তির জীবনে নানা
অসুখ এসে পড়তে পারে । ৮০ থাকাটা অত্যন্ত
প্রয়োজনীও । এই অক্সিজেন লেভেল বলে দেয় মানুষের সর্দিকাশি, নিউমোনিয়া, হার্টের প্রবলেম ও ঘুমের ব্যাঘাত হয় কি না ? এখন স্থানীয় কোনও ডাক্তারকে ঘুম হয়না বললে তিনি এক সপ্তাহের একটা অ্যালজোলাম কোর্স করাবেন কিন্তু জীবনে বলবে না অক্সিজেন মাপার কথা । যাদের অক্সিজেনের দুর্বলতা আছে তাদের খাওয়াদাওয়াতে নজর দিতে হবে । সপ্তাহে তিন
দিন কলা ডিম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ।
কিন্তু যদি এর মধ্যে কার‌ও সুগার থাকে তবে তিনিও এই পুষ্টিকর খাবার খাবেন এবং সপ্তাহে
একবার সুগার টেষ্ট করে দেখে নেবেন । 
লাদাখে যারা প্রথম দিন যান তাদের হোটেলের
ঘরে চুপচাপ বসে আরাম করতে বলা হয় এই
কারণে যে , চারপাশের আবহাওয়ার সঙ্গে তার
শরীরকে মানিয়ে নিতে হয় তবুও বহু মানুষের কোনও কিছুই উপলব্ধি হয়না । মনে রাখতে হবে ১১,০০০ ফুট উচ্চতা লাদাখের , যেখানে স্বাধীনতার ৭৫ বছরে তেমন বনসৃজন হয়নি । একে শীতল মরুভূমি তার ওপর উচ্চতা এবং পর্যাপ্ত গাছ না থাকায় অক্সিজেনের সমূহ অভাবের মুখে গিয়ে পড়তে হয় সমতলের মানুষকে এবং কলকাতার চিকিৎসকদের সে বিষয়ে কোনও সচেতন করার প্রবণতা নেই 
এবং  বাংলার চিকিৎসকমহল খানিকটা অচেতন বলাই যায় । চিকিৎসকরা শুধু জানেন সুগার লেভেল কমাবাড়ার উপর অক্সিজেনের প্রভাব পড়তে পারে । বড় জোর এক সপ্তাহের ডায়োমক্সের
একটি কোর্স করতে বলেন । এখানে বলে রাখা
দরকার অক্সিমিটার মেশিনে অক্সিজেন সহজে
মাপা যায় । হ্যান্ডি মিনি অক্সিমিটার দিয়েও মাপা যায় আবার সামান্য বড় মিটার দিয়েও মাপা যায় । তবে ABG পদ্ধতিতে মাপতে গেলে রিস্টের কাছে ধমনী থেকে রক্ত নিয়ে মাপতে হয় । তবে
লে-তে এক কেজি ওজনের অক্সিমিটারেই শরীরের অক্সিজেন মাপতে দেখেছি । পকেটে
রাখা যায় অক্সিমিটার‌ও পাওয়া যায় । পরীক্ষার
সময় লাদাখে ৬০% বা তার কম অক্সিজেন শরীরে থাকলে অক্সিজেন থেরাপিতে মিনিমাম ১২ ঘন্টা
মানুষটিকে রাখতেই হবে । শরীরে সুগারের সমস্যা
না থাকলে একটা ডেক্সোরেঞ্জ ইঞ্জেকশন করে
ছেড়ে দেওয়া যায় যদি অক্সিজেন লেভেল থাকে
লাদাখে ৭০% কম । তবে ডায়ামক্স খেলে ( প্রতিদিন
২টি খাবার পর তিন দিনের কোর্স ) শরীরের নানা
স্থানে চুলকানি বের হতে পারে কোনও কোনও
ক্ষেত্রে । ৮০% অক্সিজেন লেভেল লাদাখে ( Good) 
থাকলেও কিছু অসুবিধা প্রথমদিন লাদাখে
দেখা দিতে পারে । যেমন ঘুম হবেনা , লুজ মোশান হবে , ঘাড় ব্যাথা করবে । এটা হল কমন
ম্যাটার । এছাড়াও যদি বমি হয় , বুকে সর্দি 
বসে যায় , জ্বর হয় ও হাত মুখ পা ফুলে যায়
তাহলে বুঝতে হবে রক্ত অক্সিজেন প্রবাহিত করতে পারছে না । সোজা হাসপাতালে যেতে
হবে । না শুয়ে না ঘুমিয়ে বসে বসে মুখে মাস্ক
লাগিয়ে সরাসরি ন্যাচরাল ভাবে অক্সিজেন
থেরাপির সাহায্য নিতে হবে । বেডে ২০০/-টাকা বেড ভাড়া দিয়ে ভালো একটা ব্যবস্থাপনার 
মধ্যে অবজারভেশনে কাটাতে হবে । এখানে
চারঘন্টা অন্তর অক্সিজেন রিমুভ করে আধঘন্টার
বিশ্রাম দিয়ে মাপা হবে দিনে দুবার চিকিৎসকের
পরামর্শ পাওয়া যাবে । বুকে সর্দি বসে না গেলে ১২-১৮ ঘন্টার অক্সিজেন কোর্স করলেই
অক্সিজেন লেভেল ৮৫-৮৮ লাদাখে, দাঁড়িয়ে যায় । সঙ্গে
ডায়মক্স ওষুধ দিনে দুবার ও দিনে চার /পাঁচ লিটার জল পান করতে হবে এবং ডিম কলা 
রুটি প্রোটিনেক্স ,হরলিক্স এক‌ই সঙ্গে খেয়ে 
যেতে হবে । মোদ্দাকথা লাদাখ যাওয়ার আগে 
কোকা-৬ নয় আপনাকে হিমগ্লোবিন পরীক্ষা করাতে হবে । এক সপ্তাহ আগে থেকে একটা
ডেক্সোরেঞ্জ ক্যাপসুলের কোর্স দিনে দুবার খাওয়ার পর খেয়ে যেতে হবে যতদিন না লাদাখ
ছেড়ে চলে আসছেন । অক্সিজেন বৃদ্ধির সঙ্গে
ডেক্সোরেঞ্জের একমাত্র সম্পর্ক । রক্তাল্পতা থাকলে ডাক্তার দেখিয়ে ডেক্সোরেঞ্জ ইঞ্জেকশন নিয়ে লাদাখ যান আর‌ও সমস্যা হলে হ্যান্ডি অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিতে হবে , লেতে
ওষুধের দোকানে পাওয়া যায় । পথে খারদুঙলা
(১৮,৩৮০) পাশে যদি অক্সিজেনের ঘাটতি হয় তবে কোনও চিন্তা নেই ওখানে মিলিটারিরা পারলে সারারাত সেবা দিতে তৈরি থাকেন । গাড়িতে বসে না থেকে মিলিটারিদের সাহায্য
নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ । তবে অক্সিজেন ঘাটতির ভয়ে ট্যুর ক্যানসেল করে দেওয়ার কোনও মানে হয়না । চারশো টাকায় পর্যন্ত
হ্যান্ডি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে পাওয়া যায়
তাও সঙ্গে নেওয়া যায় । মাঝারি অক্সিজেন সিলিন্ডার বহন কোনও ভয়ের ব্যাপার নয় ।
তাই ঘন্টা ১০/১২ অক্সিজেন নিয়েই বিভিন্ন 
ট্যুর পার্টি তাদের সদস্যদের হাসপাতাল
থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সঙ্গে সিলিন্ডার ভাড়া 
করে নিয়ে বেশ ঘুরে আসেন । লাদাখে অক্সিজেনের ঘাটতি কোনও সমস্যা নয় । 
বরং যদি সিসটেমগুলো জানা থাকে
তবে দ্রুত হাসপাতালে অ্যাডমিশন করানো 
বুদ্ধিমানের কাজ । ট্যুরিস্টকে ভয় দেখালে তাকে
অক্সিজেন আর‌ও পেয়ে বসে তাই অনেক মানুষ
ভীতির শিকার হয়ে যান । আমি বলবো লাদাখ
যাওয়ার আগে ১৫ দিন আগে থেকে ডিম সিদ্ধ,
কলা ও প্রোটিনেক্স খান । সপ্তাহে দুদিন
চিকেন-স্ট্রু দুপুরে একটু ফল , লেবু ,খেঁজুর,
বাদাম ছোলা ভিজিয়ে খান পরিমাণ মতো 
যতটা আপনি নিতে পারেন । সঙ্গে ডেক্সোরেঞ্জ
বা এইসব খাবারের প্রকোপ যাতে লিভারে না
পড়ে তার জন্য সরবিলিন সিরাপ দুবার খেলে
আপনার লাদাখে আপনি তরতাজা থাকতে পারবেন ( লাদাকে যাওয়ার পর সরবিলিন ছাড়তে হবে কারণ ওখানে গেলে পেট লুজ এমনিতেই থাকবে তাই সরবিলিন আর‌ও লুজ করাতে পারে তাই এটাও নিজের শরীরের মতো করে ব্যবহার করা উচিত)কিন্তু সমতলে এসে অক্সিজেন থেরাপি
সম্পর্কে সরকারের ভাবনা কী এটা আরটিআই
করে জেনে নিলে ভালো হয় --অলোক কুন্ডু ।

পুনশ্চঃ কতকগুলি অক্সিজেন ঘাটতির সিমটম 
কমন সিমটম (১) মাথা ও ঘাড় ব্যথা (২) ঘুম
না আসতে চাওয়া (৩) হঠাৎ পায়খানার প্রকোপ (৪) কান ভো ভো করা (৫) নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ 
এছাড়া অন্যান্য সিমটম : (১) চোখের নীচ ফুলে যাবে (২) হাতের আঙুল পায়ের পাতা
ও মুখ ফুলে যাওয়া (৩) হঠাৎ জ্বর, সর্দি (৪)
শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করবে । (৪) কানে আগে
থেকে কোনও ইনফেকশন থাকলে রস গড়াবে ।
পরীক্ষা : অক্সি মিটার দিয়ে পরীক্ষার সময়
জোরে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে হয় । বসে পিঠ সোজা করে পরীক্ষা করা উচিত । তর্জনীতে অক্সিমিটার ক্লীপের মতো এঁটে দেওয়া হয়।কিন্তু আঙ্গুল পরিষ্কার করে নেলপলিশ তুলে পরীক্ষা করার নিয়ম ।

কে কে-র অটোপসি রিপোর্ট কি সঠিক/ অলোক কুন্ডু

কে.কে-র অটোপসি রিপোর্টের বিপক্ষে আমার প্রশ্নপত্র
১. কারও ৭০% ফ্যাট জমে থাকলে সে অত লম্ফঝম্ফ করে গান করতে পারতেন কি। 
২. গান কি মুখ দিয়ে গাওয়া হয় চিকিৎসককূলের কাছে আমার সবিনয় প্রশ্ন। 
৩.চিকিৎসকদল যদি বলেন কৃতজ্ঞ থাকি, একঘন্টা যিনি শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গজুড়ে একটার পর একটা গান গেয়েছিলেন তার কি সহজে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে ?
৪.যদি অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছিল। হৃদযন্ত্রের অসুখ থাকলে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে এই দোষ শিল্পীর হৃদযন্ত্রের না কি যারা অক্সিজেনের ঘাটতি সৃষ্টি করেছিল ?
৫. কলেজের ছেলেরা হোটেলে গিয়ে একঘন্টা ধরে কেন সেল্ফি তুলতে গেল ?
৬. কে কে যখন ব্যাক স্টেজে প্র্যাকটিস করছিল এবং এক দৌড়ে দশ ফুট উঁচু মঞ্চে গিয়ে উঠলো এবং গান শুরু করে অভিবাদন নিল তখন তো একেবারে তরতাজা
এইরকম কেউ কি ইতিপূর্বে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যেতে পারেন।
৭.যে ব্যক্তি তিনঘন্টা পরে মারা যাবেন তিনি বাপের জন্মে কখনও ওইরকম পারফরম্যান্স করতে পারেন। তা যদি হতো তো সঙ্গে সঙ্গে হোতো এবং মঞ্চের মধ্যেই তো হওয়ার কথা। সাডেন হতে পারে ?
৮. হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ কি বলছেন ? তার হৃদরোগ হয়তো ছিলই কিন্তু যে ব্যক্তি অত লম্ফঝম্ফ করতে পারেন তার কীভাবে ৭০% ফ্যাট হয়। তিনি তো চলাফেরা করতেই পারবেন না। ৭০% ফ্যাট কি তবে সবটাই চিকিৎসকদের বানানো। ভাববার বিষয় কিন্তু।
৯. অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য শরীরে খিঁচুনি ধরতে পারে ও শরীরে শীত পেতে পারে কারণ সাডেন নিউমোনিয়া অ্যাট্যাক করতে পারে অক্সিজেন কমে গেলে। ( লাদাখে গিয়ে যাদের অক্সিজেন কমে যায় তাদের সঙ্গে সঙ্গে বিনা ঠান্ডাতেই নিউমোনিয়া ধরে নেয়।  এটা ওখানকার চিকিৎসকদের কাছ থেকে জেনে ছিলাম)
১০. এখন শিল্পী নিজের দোষে মারা গেলেন নাকি অক্সিজেন শ‍রীর নিতে না পারার জন্য মারা গেলেন।
১১. একজন ৭০% হার্ট ব্লকেজ রোগী কখনও বাপের জন্মে দৌড়তে পারবেন না। এই বিষয়টা চিকিৎসা শাস্ত্রে কি বলছে যদি ডাক্তারবাবুরা খোলশা করে বলেন।
১২. ফ্যাটি হার্ট নিয়ে বহুজন মারা গেছেন ইতিমধ্যে কিন্তু যিনি লাফালাফি করছেন এবং উদারা মুদারা তারার সাহায্য নিয়ে শরীরের অভ্যন্তর থেকে এক একটা নিখুঁত সুর স্বর তুলে আনছেন তাঁর কীভাবে ৭০% ফ্যাট জমে। 
১৩. গানের শুরুতে যিনি তরতাজা ছিলেন, যত সময় গড়িয়েছে তত কে.কে নিস্তেজ হতে শুরু করলেন। হার্টের সমস্যা হলে উনি তো গাইতেই পারতেন না। বলতেন আজ একটু আস্তে গাইবো আপনারা সহযোগিতা করুন। 
১৪. চিকিৎসকরা আপনারা যদি সন্দেহজনক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন তাহলে আমরা যাই কোথায়। মেনে নেওয়া ছাড়া তো করার কিছু থাকেনা। 
©® অলোক কুন্ডু

বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২

কে কে বাংলা তোমাকে নিশ্চিত মনে রাখবে

কপিলের শোয়ে এসে কপিলের মস্করার জবাবে কে.কে জানিয়েছিলেন তার নামকে ক্ষুদ্রতম দুটি অক্ষরে সীমাবদ্ধতায় কেন তিনি বেঁধে ছিলেন। কপিলের শোয়ে অনেক হাসিমস্করা হয়। ভীষণ একটা ভালো প্রোগ্রাম
এই টিভি শোটিতে হয়ে থাকে। কিন্তু কপিল কখনও কাউকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে হাত রেখে ইয়ার্কি খুব একটা করেনা। ব্যতিক্রম কে কে। এত সরলতা মাখা মুখ যেন কোনও নাক উঁচু ভাব তার মধ্যে থাকতে একদমই নেই।
তার মধ্যে যেন আড়ালের মগডাল নেই। সেলিব্রেটির ছুঁতমার্গ নেই কোনও। তাই হয়তো গান গাইতে গাইতে যখন তিনি অস্বস্তি বোধ করছেন, তার শরীর বিপন্ন মনে হয়েছে তখন তিনি জল খেয়ে ঘাম মুছে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন নিজেকে, ম্যানেজ করেছেন নিজেকে নিজেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ভক্ত থেকে উদ্যোক্তা কাউকেই তিনি ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে চাননি।  আসলে এই গুণাবলী সকলের থাকেনা। তার ওপর তার ছিল মার্জিত ব্যবহার। হয়তো এইরকম বড় পেমেন্টের প্রোগ্রামে এসে তাদের কিছু ফিরিয়ে দিতেও তিনি চেয়েছিলেন। নব্বইয়ের ছেলেমেয়েরাই তো তার বিশেষ গুণগ্রাহী, তাদের আব্দার অনুরোধের বন্যায় কতবার তো ভেসে বেড়িয়েছেন তিনি। আসলে মানুষটার মধ্যে কর্তব্যবোধ, একটা যেন ঋণী হয়ে থাকার কুন্ঠাবোধ বড় বিষয় ছিল। ভক্তদের কাছে তাদের মনোরঞ্জনের দাবী যে থাকে তাকে তিনি অপূর্ণ রেখে কখনোই চলে যেতে চাননি। পয়সা উসুল নয়, তাদের মনোবাঞ্ঝা পূরণ করতে তাকে হবেই, এই নাছোড়বান্দা মনোভাব তাকে উজ্জীবিত করেছে সন্দেহ নাই। তার এই কনর্সাটের পাওয়ারফুল শো-কে তাই তিনি তুঙ্গে নিয়ে গেছেন। জানতেন না এত লোক হবে। আবার হলে ঢোকার মুখে তিনি এত সংখ্যায় বিপুল ছাত্রদের উপচেপড়া ভিড় দেখে গাড়ি থেকে নামতেও চাননি। তাঁর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কি তবে বুঝতে পেরেছিল আজ এখানে ভয় আছে। বড় শিল্পীরা সঙ্গে লোকলস্কর নিয়ে পথে ঘোরেন। সঙ্গে থাকে তাবড় তাবড় শরীরের লোকজন। এইসব কেকে-র সঙ্গে ছিলনা একদম। দমদম বিমানবন্দরে নামার সময় কোনও ভিড়ের সামনাসামনি তাকে হতে হয়নি। ভক্তদের উন্মাদনায় তাকে পড়তে হয়নি। হোটেলে এসে নিজের গানের চর্চা করেছেন, সময়েই পৌঁছে গিয়েছিলেন নজরুল মঞ্চে। ভেবেছিলেন রাজ্য সরকারের হল, সেখানে সমস্ত ব্যবস্থাপনা দারুণ থাকবে। কোনও কিছুই গাঁয়ের মতো নয়-- এই নজরুল মঞ্চ। এক সময়ে কলকাতা ও মফস্বলের বিশাল বিশাল মাঠে মহম্মদ রফি থেকে কিশোর লতাকে সামলে দিয়েছে উদ্যোক্তারা। বহুকালের সংস্কৃতির জায়গা। কিন্তু যে আশাবাদী হয়ে এসেছিলেন তা তাসের ঘরের মতো এমন যে ভেঙে পড়তে পারে, তা কখনও তিনি ভাবেননি হয়তো। অত প্রবল ভিড়কে তাই প্রাথমিক ভাবে ম্যানেজ করতে চেয়েছিলেন গানের প্লাবন দিয়ে। উপচে পড়া ভিড়কে সামাল দিতে এবং তাদের মন জয় করার বাসনা তখন তাকে তন্ময় করে রেখেছিল শুধুমাত্র এমনটা নয়। গানের তালিকা ও অনুরোধগুলি তাকে শেষ করতেও তো হবে। শিল্পী যে একজন মানুষ তার যে ভেতর ভেতর টেনশন হয় তা আর কবে কে জানতে চেয়েছে। টেনশন মুক্ত হতে তাই নিজেকে যতদূর পেরেছেন উদ্দাম করেছেন। চূড়ান্ত স্থানে এমন করে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন যাতে চিরকাল তাকে মনে রাখে, কলকাতা।
সারা পৃথিবীজুড়ে এর থেকে বড় বড় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন। সব সামলে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু বুঝতে পারেননি কলকাতাতেই হবে তার শেষ কনসার্ট। চোখের জলে সাজানো গানগুলো যে তার মৃত্যুর পরেও সারা কলকাতার নিস্প্রদীপ ঘরে ঘরে একদা বেজে উঠবে, স্বপ্নেও কখনও ভাবেননি। তিনি ফাঁকি দিতে চাননি। কোনও ফাঁকি দেওয়া তার পক্ষে সম্ভবও ছিলনা সেদিন। তিনি ভাবেননি কলকাতার কনর্সাটে তার জন্য আর এক ডবল " কে অক্ষর" এমন ভাবে লুকিয়ে আছে যা তার নামের মধ্যেই বিদ্যমান। মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার নজরুল মঞ্চের কলঙ্কিত কনসার্টের পরই যে তিনি হঠাৎ করে মারা যাবেন একথা সেদিন কেউই ভাবেননি। কিন্তু ভেবেছিলেন বুঝি অন্তর্জামী। কি অব্যবস্থাপনার মধ্যে তাকে গাইতে হয়েছিল তার পরবর্তীতে প্রকাশিত ভিডিওগুলি দেখে সকলে আঁতকে উঠছেন। একটা অতিরিক্ত বিশৃঙ্খলা বললেও ভুল হবে।
গড়িয়াহাটের মৌচাক থেকে থিক থিক করছে ভিড়। হলের সামনে চলছে ধস্তাধস্তি, ইঁট-পাটকেল ছোঁড়া। হলের ভেতর ফায়ারএস্টেটুইঙ্গারের ধোঁয়া, প্রায় ৭ হাজার ফোন থেকে ভিডিও হওয়ার সময় যে তাপ বিকিরণ হয় তার একটা প্রবল অস্বাস্থ্যকর শক্তি। এ.সি নিভিয়ে দেওয়া, হাজার হাজার ওয়ার্ডের দৈত্যাকার লাইটের ঝনঝনানি যা শিল্পীর শারীরিক অস্বস্তি বাড়িয়ে ছিল শতগুণ। স্টেজের চারিদিক ও হলের সমস্ত মেঝে ভর্তি করে যুবক যুবতীদের বসে থাকা, উইং ঘিরে শতশত ছেলেমেয়েদের দাঁড়িয়ে থাকা। এইসব তো ছিল। তার সঙ্গে ছিল ছেলেমেয়েরা এপাশ ওপাশ দিয়ে ঢুকে পড়তে চাইছে, চরম অব্যবস্থাপনা। এইসব থেকে কখন বেরিয়ে যাবেন তাই শিল্পীর উদ্বেগের শেষ ছিল না। তার মনের অন্দলমহল মাপতে যাওয়ার কারও তখন ইচ্ছা নেই। এইসব কেউ জানতে চায়নি। একটা চক্রব্যুহে তিনি আটকে পড়েছেন, সম্পূর্ণ তিনি একা। একেবারে একা। ওদিকে সকলে তারা চাইছে আরও চাইছে। বাঙালি আজ লজ্জায় মর্মাহত লজ্জিত। বাঙালিদের মধ্যে যারা সুস্থ তারা সকলেই আজ ভীষণ ক্ষোভে, মর্মবেদনায় চোখের জল ফেলছেন। কে.কের বাড়িতে হয়তো আজ সকাল সকাল আলো নিভে গেছে। দিল দে চুকে সনম সেই কবেই তো দেখে ফেলেছিল বাঙালির এই প্রজন্ম। তবু আজ বন্ধুরা পাঠিয়ে দিচ্ছে পুরনো সেই গানটাও। কেকের গানে গানে হোয়াটসঅ্যাপ ভর্তি হয়ে গেলেও আজ কারও উপর কারও অভিযোগ নেই। নব্বইয়ে বড় হওয়া প্রজন্মের কাছে কেকের এই হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার আফসোসগুলি যেন বুকফাটা কান্নার মতো। কোনও কৈফিয়ত নেই। কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে তার মালয়ালী পিতামাতা যে নামকরণ করেছিলেন, আজ তাকে সংক্ষিপ্ত আকারে কে.কে করেছিল তার গানের জগতের স্টুডিওর প্রোডাকশন হাউস ও কতিপয় উৎসাহী ভক্ত। সত্যি সত্যি যে তার জীবনটাও অতি ক্ষণস্থায়ী হয়ে হঠাৎ কেকে-র মতো ছোট হয়ে যাবে, একটা অনিশ্চয়তা এসে শেষ করে দিয়ে যাবে তারাও তা কেউই জানতো না। 
১৯৬৮ -তে যে দিল্লিতে তার জন্মগ্রহণ ও গায়ক হয়ে ওঠা সেখানে তিনি আর কখনও ফিরতে পারবেন না। কালের বিচার কেন যে এত বেদনাদায়ক হয় কেউ তার উত্তর দেবে না আজ। দিল্লির মাউন্ট সেন্ট মেরি স্কুলে পড়াশোনা করার সময়ও কেউ জানতেন না যে এই ছেলেটাই একদিন বিরাট গায়ক হয়ে উঠবে। কিশোর কুমার এবং সঙ্গীত পরিচালক আর ডি বর্মনের মতো গায়কদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়ে তাদের মতোই পঞ্চাশের কোঠায় চলে গেলেন এক নিরুদ্দেশের যাত্রী হয়ে। কখনও কোনো সঙ্গীত প্রশিক্ষণ নেননি যে মানুষটি ভবিতব্য তাকে যে একদিন গানের জগতে নিয়ে গিয়ে ফেলবে এবং সেখান থেকেই যে  তিনি একদিন অদৃশ্য হয়ে যাবেন এই কথা কখনও কেউ ভাবেননি। একটার পর একটা প্রবাহের মধ্য দিয়ে তার যাত্রাপথের
উত্তরণ ঘটেছে। যুবক যুবতীরাই হয়ে উঠেছিলেন তার প্রধান ভক্তকূল। কিরোরি মাল কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক করার সময় , তিনি 'হরাইজন' ব্যান্ডের প্রধান গায়ক ছিলেন। একদা টাইপরাইটার বিক্রি করতে করতে চাকরি ছেড়ে একদিন গানকেই বেছে ছিলেন বাস্তবে বেঁচে থাকতে। আশ্রয় নিয়ে ছিলেন হোটেলে গান গেয়ে বেঁচেবর্তে থাকবেন। সেই গানই কি তবে তার জীবনের কাল হল। জিঙ্গেল গেয়ে সামান্য নাম করেছিলেন একসময়ে, সেখান থেকে প্লেব্যাক করতে করতেই তিনি
তারকা হয়ে উঠেছিলেন। কলকাতা মঙ্গলবার দেখলো সেই তারকার একক শোয়ে নজরুল মঞ্চের এধার থেকে ওধারে ছুটে বেড়াতে বেড়াতে হাততালির আদরগুলো
তিনি সারা শরীরে মেখে নিচ্ছেন। আর তা তিনি যত কুড়োতে লাগলেন তত তার কর্তব্যবোধ তাকে বের হতে দিল না সেই চক্রব্যুহ থেকে। শিল্পীর শারীরিক বিপর্যয়ের কথা কেউ সামান্য ভেবেও দেখলো না। যেন আগের জন্মে তিনি নজরুল মঞ্চের কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন। সমস্ত ঘাম রক্তের ঋণ স্বীকার করে গেলেন। কাউকে এতটুকু বলতে পারলেন না, অথবা বললেন না যে তিনিও মানুষ, তার শরীরটা আজ ভালো নেই। যদি বলতে পারতেন তবে এই জঙ্গি জনতার রায়ে, অচিরেই ফুৎকারে কে.কে হয়ে যেতেন একজন ভিলেন। আর ফাটকা খেলোয়াড় রূপঙ্কর দুনিয়ার সমস্ত আলো কেড়ে নিতেন। যেভাবে একা একা কে.কে বিমানবন্দরে নেমে ছিলেন তেমনি নিঃশব্দে তাকে কলকাতা ছাড়তে হতো। কেকে একজন ভালো মানুষ। সরল নিষ্পাপ তাই তাকে এই নিষ্ঠুর পরিণতির শিকার হতে হল। ©® অলোক কুন্ডু

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...