সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

সরস্বতী ভাবিনি / অলোক কুন্ডু

যে তবে নিষ্ঠাভরে
ছেঁড়া কাগজ কুড়োয় প্রতিদিন
উকুনে ভর্তি এলোমেলো চুল
বালিকার রূপেগুণে
বই বলে কোনো বস্তু
তারও হয়তো কোনোকালে ছিলো
সরস্বতী তার কাছে
খুব জোর প্রেত কিংবা ধনীর পুতুল 

কোনোদিন ভাবেনি কেউ
সেও এক সরস্বতী বালিকা
ফুটপাতে রাত হলে টেনে ধরে
নিখাদ শরীর কাপালিকে
কান্নাগুলো গোঙানির মতো
প্রতিধ্বনি হয় হাহাকারে
সমস্ত শরীর বেয়ে রক্তস্রোতে
মন্দ তাকে ছেঁড়া বই দেয় ।

মাঘ মাসে সেও যেন শেখে কিছু
সরষে ক্ষেতের কাছে
নরক জঞ্জাল থেকে
উপচে পড়ে কিট গ্রাসের সমুখে
মলিনতা দায়ী করে
কিশোরী থেকে যুবতী সময়
সমূহ আলোর কাছে
তবু কেন তাকেই সরস্বতী ভাবিনি
© অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

ইমোশনগুলো ট্যাগ হতে হতে
অলোক কুন্ডু

ইমোশনগুলো ট্যাগ হতে হতে
মেমরি কার্ডের ভাঁজে
কোটেশনগুলো এসএমএস হয়ে
জমতে জমতে পাথর ।
তিল ছিলো কি না তুলতুলে গালে
ডিজিটাল অনুভবে
অরিগামি "প্লেন" ততটা গিয়েছে
লাবডাব যত বুকে ।
জানলার কাঁচ ভিজেছিল কি না
ঝাপসা ঝাপসা নীরবে
ভাইব্রেড করা অনুভূতিগুলো
সাইলেন্ট ছিল মুখে
রেকর্ডেড যত রিপিট ভয়েস
হাতের মুঠোয় ঘেমেছে
মেসেজ বক্সে বরফ জমেছে
দূরত্ব কোনো শীতে ।

© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

আমার সুভাস / অলোক কুন্ডু

আমার সুভাষ রাত পেরিয়ে
স্বদেশ ছাড়লো যেদিন
সেদিন থেকেই স্বাধীনতা
বুঝি আমায় ঢেকেছে মুখ
আমরা বুঝিনি দলে দলে গেছি
নেতাজির ছবি বুকে
কদম কদম বাড়িয়ে দিয়েছি
প্রভাত ফেরির মুখে ।
যখন বুঝেছি দেরি হয়ে গেছে
ভুল হয়ে গেছে বেশ
উপঢৌকনে তেইশে জানুয়ারি
ভরিয়ে দিয়েছি ফুলে
রাশিয়ার জেল তাইহুক থেকে
জাপান কোহিমা ঘুরে
কমিশন তোমাকে লুটেপুটে
শুধু লালিপপ দিয়ে গেছে
বুকের বাতাসে শ্বাসপ্রশ্বাসে
এখনও প্রহর গণি
কদম কদম বাড়ায়ের কাছে
আজও তেমনি ঋণী
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

সেলাম সুভাষ নীতি / অলোক কুন্ডু

কারাগারে যত গেছেন সুভাষ
নদীতে বেড়েছে স্রোত
বিদেশী জিনিস "আগুনে পোড়াও"
বেড়েছে আমার বোধ
এদেশের এই " পাঁক-রাজনীতি "
তাঁকেও দেয়নি মাটি
দেশবন্ধুর স্নেহের সুভাষ
অপমানে তবুও খাঁটি  ।
যতবার পড়ি গান্ধি তোমাকে
বিষ যেন পান করি
সেই হলাহলে পুড়ে যায় আমার
জীবনের পরমায়ু
ভেতরে ভেতরে ব্রিটিশ ভজনা
সুভাষ নীতিতে জল
সুভাষ হঠাও ভারত বাঁচাও
-- এ তোমার বড় ছল
যতীন দাসের প্রাণত্যাগে
খাটো করেছিল --চুপ
ক্রিমিনাল বলে ধুয়ো তুলেছিলে
এমনি তোমার রূপ
সুভাষ নীতিকে পুড়িয়ে দিয়েছো
হায় রাম হায় রাম !
পূজনে আমার সুভাষচন্দ্র
এক বীর সুবহ- শাম ।
সেলাম যদি করতেই হয়
সেলাম সুভাষনীতি
গীতার শিক্ষা কাজ যদি না দেয়,
সে কেমন তবে গীতি ।
© অলোক কুন্ডু

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

POETRY OF ALOK KUNDU :: অলোক কুন্ডু-র কবিতা

কী তবে সৌন্দর্য কে বেশি তুমি  অলোক কুন্ডু

কার জন্য ভারমিলিয়ন দিগন্ত বিস্তৃত
কাকে বেশি ভালো লাগে কে বেশি সুন্দরী
সে কথা কি অন্তরের নিবিড়তা জানে
সৌন্দর্যের অপূর্বতা না নারীর গড়ন
কোনটা নারীর আর কোনটা তোমার
আসলে তুমি না কোনো সরস্বতী রূপ
কী তবে সৌন্দর্যনির্মাণ কে বেশি তুমি
চৈতী গানের সুরে যে মন কেড়ে নিত
সে কি তবে নান্দনিক আরও বেশি করে
দুপুরের রোদ চিরে কিশোরের চোখে
কিশোরীর জন্যে ওড়া রোদ চেরা ঘুড়ি
তার সে সৌন্দর্যখানি জানাতে পারিনি
সে অমূল্য রূপ যেন রূপকথাময়
কলেজ গেটের ধারে স্মার্ট সিগারেটে
জিনসের নীল রঙ ছিঁড়ে দিয়েছিল
ছেলেটার বুকে ঝুঁকে ইটালিক মেয়ে
সে কি তবে সব থেকে দুর্গম সুন্দরী  ?
না কি যার সাথে সবে কাল দেখা হয়েছিলো
পুরুষের খোঁজাখুঁজি তচনছ করা
নিবিড় তুলিতে কোনো আঁকেনিকো চোখ
চুল তার এলোমেলো প্রভাতকুসুমে
চন্দনবনের গন্ধ গায়ে মাখামাখি
কথা তার ঠিক যেন অবিরল নদী
বাইজেনটাইন আর্কিটেক্ট বেদুইন কে
কী তবে সৌন্দর্যবোধে কে সে তুমি
কার মুখে সেই থেকে আজও চেয়ে থাকি ।
© অলোক কুন্ডু

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর গদ্য

আসুন আমরা গান্ধীজিকে পাপ মুক্ত করি
নামাঙ্কিত মেট্রো স্টেশনে উঠে দাঁড়াই
============================

গতকাল ফেসবুকের একটি পোস্টে এক ব্যক্তি
যতীন দাসের অনশন বর্ণিত করে সুন্দর একটি
পোস্ট করেন  । যতীন দাস লাহোর জেলে ৬৩
দিন অনশন করার পর ৬৪ দিনের দিন
শহীদ হন । দেখলাম এক ব্যক্তি সবজান্তা লিখেছেন -
" গান্ধীজি যতীন দাসের উপবাসটি শুধুমাত্র
মানেননি " । সেই ব্যক্তি তাঁর নিজের মতের পক্ষে
কোনো আর তথ্য দেননি ( ভাবখানা খানিকটা
কাঁধ ঝাঁকানো ব্যাপার , আমার যেন মনে হলো )।
অনেকই মনে করেন গান্ধীজি নিশ্চুপ না থাকলে
মহান বিপ্লবী যতীন দাসকে এই রকম বেঘোরে
প্রাণ বিসর্জন দিতে হতোনা । এই বিষয় নিয়ে
ইতিপূর্বে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে ।
গান্ধীজির পত্রাবলিতে এই বিষয়ে
অনেক চিঠি আছে । সেই সময় যতীন দাসের
ঘটনায় সারা দেশ যেখানে উত্তাল সেখানে
গান্ধীজি ছিলেন আশ্চর্যরকম নির্বাক ।
কাগজে লেখা হয়েছে । গান্ধীজিকে সরাসরি
চিঠি লিখেছেন বহু নামি ব্যক্তি । গান্ধীজি
কখনও চুপ থেকেছেন । কখনো সংক্ষেপে তা
এড়িয়ে গেছেন । গান্ধীজির এই নিশ্চুপ
শান্তিকামী ভূমিকা নিয়ে কেউ কেউ
গান্ধীজিকে মহান সাজিয়ে ডক্টরেট হয়েছেন
--সেটা অন্য কথা । গান্ধীজির প্রত্যেকটি
উত্তরে তিনি যতীন দাসের সেই সত্যাগ্রহ
অনশন সমর্থন করেননি । কোনো কোনো
চিঠিতে গান্ধীজি প্রশ্নকর্তাকে চিঠিতে
জানিয়েছেন তার সঙ্গে যখন গান্ধীজির দেখা
হবে তখন এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত
আলোচনা তিনি করবেন । এটাও সত্য
বলে মানি যে গান্ধীজি--তুলসীদাসের রচনা ,
রামচন্দ্রের আদর্শ এবং তাঁকেই একমাত্র
তাঁর ভগবান মানা , গীতার উপদেশ ও
সমাজের তৎকালীন অসুচি মানুষের উন্নতি
তার জীবনের ত্যাগ তাঁর জীবনের অনেকটা
অংশে গভীর মানবতাবাদের ও ধর্মীয় অন্যায়
রুখতে জাতির কাছে প্রভাব ফেলেছিলো ।
তবু গান্ধীজিকে ফিরে দেখতে চাইলে দেখি ,
অন্য একটা সমস্যায় যখন অধুনা বাংলাদেশ
তিনি গিয়েছিলেন , গান্ধীজিকে বহু মানুষ
ঘিরে ধরে টিটকিরি করেছিল , তিনি তাতেও
নিশ্চুপ থেকেছেন । গান্ধীজির এই উত্তরহীনতা একদিনের ছিলনা । সুভাষচন্দ্রের
পক্ষে তার আশ্চর্য নীরবতা লক্ষ্য করার মতো ।
কিন্তু তবু যতীন দাসের জনমতের বিপক্ষে
গিয়ে তিনি তাঁর সারা জীবনের আদর্শে
কলঙ্ক লেপন করেছিলেন । কেননা তিনি
যতীন দাশের বিপক্ষে লিখেছিলেন
( পত্রাবলী ) -- 
" My silence has no connection whatsoever with Jatin 's CRIME
or INNOCENCE "
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU : অলোক কুন্ডু-র কবিতা

যে তুমি পূজারী রাজার / অলোক কুন্ডু

যে তুমি পুরোহিত রাজার
প্রতিমায় ফুল দাও জল দাও ঈশ্বরে
তোমার মন্ত্রপূত জল রাজার মাথায় দাও
প্রত্যেকটি মন্ত্র তোমার রাজাকে বাঁচাতে
প্রজার রক্ত মাখা হাত তোমার চরণ মাখে
তোমার প্রতিটি মন্ত্র উচ্চারণে
রক্ত চন্দন যেন রক্তের মতোই
তোমার চাদর মাখে প্রতিটি হিংসার উৎস
যে ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে রাজা
রক্ত তাকে সাবলীল জানে
কিন্তু তুমিতো রাজা নও
যে তুমি পূজারী রাজার মন্দিরে চিরকাল
তবে তুমি ভন্ড এক রক্তে মাখামাখি  ।
© অলোক কুন্ডু

POETRY OF ALOK KUNDU : অলোক কুন্ডু-র কবিতা

হিংসে ভাসাই / অলোক কুন্ডু

সমস্ত রক্তের দাগ মুছে আলপনা দিলে
নীরবতাগুলি ভালোবাসা হয় ধীরে ধীরে
কেউ যদি থাকো কাছেপিঠে এসো রঙ নাও
চালগুঁড়ি গেরিমাটি যা আছে আমার এই
লক্ষ্মীর পায়ের ছাপও কল্যাণ স্বরূপ
রাতের আকাশজুড়ে যত আঁকাআকি দেখি
অবিকল শূন্যতার কাছে রঙ মাখামাখি
পৃথিবীর সভ্যতার কাছে কতকাল আঁকা
দেওয়াল দিয়েছে প্রাণে আলপনা প্রলেপ
ফকিরের গানে ফেরে যে সরল সত্যিগুলি
আজ তাকে বুকের মধ্যে রাখি । রক্ত মুছি
রাস্তাজুড়ে এঁকে যাই কলমকারি শুভ্রতা ।
© অলোক কুন্ডু

বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর কতিতা :: উল্টোসোজা

উল্টোসোজা / অলোক কুন্ডু

উল্টো সোজা পশম উলের
বেবাক কাঁটায় দোদুল ফুলের
শীত এলে তার বাড়তো কদর
ঠিক যেন সেই ভিজে বকুল ।
বকুলতলায় ঝরলো পাতা
উড়লো ধুলো শুকনো পাতায়
সিল্যুট জিনসে কার বিনুনি
স্মার্ট ফোনেতে উল বুনে দেয় ।
দেদার এখন মুখের বিউটি
এডিট-ক্রপের সাহেব-বিবির
ডিস্কোথেকে দেখা মিলবে
পালোজা আর হল্টারেতে ।
বাহারি সব মুখোস পরে
ঘুড়ির মতোই ওড়াচ্ছে রাত
কেউ জানেনা কারো ভেতর
উলের কাঁটা জানবে টা কী ?
© অলোক কুন্ডু

মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর কবিতা ও লেখালিখি


অলোক কুন্ডুর লেখালিখি

স্বামীজির অ্যাডজাস্টমেন্ট ল
====================

যে সাতটি আচরণের উল্লেখ জরথ্রুস্ট করেছিলেন
সর্ব প্রথম । মেয়েদের সম্মানের কথাটাই ছিল তার
রেখে যাওয়া সাতটি আচরণের একটি । স্বামীজি
অনেক ক্ষেত্রে জরাথ্রুস্টের কথিত আচরণ মনে
প্রাণে বিশ্বাসও করতেন । আমাদের সর্বপল্লী
রাধাকৃষ্ণানও অনেক সময় জরাথ্রুস্টের
মতবাদকে উদাহরণ স্বরূপ ব্যাখ্যা করেছেন ।
স্বামীজি তার একটি লেখায় ধর্মীয় আচরণে
অনেক সময় পুরনো অবস্হানকে প্রয়োজনে
মেনে নেওয়ার কথাও বলেছেন । Adjustment
এর কথা বলেছেন। কারণ জরথ্রুস্ট ও তার অনুগামীদের তাদের নিজের দেশ ছাড়তে
হয়েছিল  ( যাদের আমরা পার্শি বলি )।
স্বামীজি এই দেশের অনেক ভাষা ও বহু
ধর্মের ভাবধারায় লালিত হয়েছিলেন ।
একের মধ্যে বহুত্বের প্রয়োজনে স্বামীজি
তাই অদ্বৈত্ববাদের বিপ্লবী হতে চাননি কিন্তু
ভারত তীর্থের উপযুক্ত করে তার কথা শুনিয়ে
গেছেন  । স্বামীজি এই সমাজ থেকে বেরিয়ে গিয়ে
ধর্মীয় বিপ্লবের দিকে পা বাড়াননি । মূর্তি
পুজোয় বিশ্বাসী রাজারাজদের আথিতেয়তা
নিয়েছেন সহজেই । কমিউনিস্টদের মতো
অটল থেকে নিজের মতকে অবিশ্বাসীও
করে যাননি এখন এটা সত্য বলে প্রমাণিত ।
স্বামীজি নিজে বেদান্তের উপাসনা করেছেন
আবার বেলুড় মঠে দুর্গা পুজোর আয়োজন
করেছেন গোঁড়া হিন্দুদের দুর্গা পুজোর বই
কিনে এনে সেই মতো আচরণ করেছেন ।
এমনকি পাঁঠাবলিও ধর্মের আচরণে যেহেতু
ছিলো তাই তিনিও সেটা বাদ দেননি । 
শ্রীশ্রীমায়ের ইচ্ছেতে বলি বাদ পড়ে । তিনি
এটাও জানতেন সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে
রামমোহন অধিক ও বিদ্যাসাগরকেও কিছু
কষ্ট পেতে হয়েছিল । স্বামীজি হিন্দু ধর্মের একটি
দিক অর্থাৎ অদ্বৈতবাদকেই প্রচারের অভিমুখ
করেছেন । স্বামীজি তবু যেন অনেকভাবেই
জরথ্রুস্টের ধর্মমতের কাছাকাছি ছিলেন ।
সামনে শ্রীরামকৃষ্ণ না থাকলেও নরেন্দ্রনাথ
স্বামীজি ঠিকই হতেন । শ্রীরামকৃষ্ণের থেকেও
শ্রীশ্রীমাকে তিনি সাক্ষাৎ দুর্গা ভাবতেন । তিনিও
শ্রীঅরিবন্দ ও সুভাষচন্দ্রের মতো স্বাধীনতার
জন্যে আকুল হয়েছেন । সুভাষচন্দ্রের সঙ্গে তার
একান্ত আলোচনা কেউ আজ জানতেই পারেনি
এই ভারতীয় সমাজের ধর্মীয় মনোভাব তিনি
পাল্টাতে পারবেননা তা তিনি টের পেয়েছিলেন
তাই তাকে কখনো দেখি তিনি অদ্বৈতবাদী
কখনও সমাজ সংস্কারে জরথ্রুস্টবাদী কখনও
বুঝেছেন তার এই গরীব-মুর্খ দেশবাসীর কি
করে প্রাণ সঞ্চারিত হবে । শ্রীরামকৃষ্ণের
মায়ের মন্দিরে বার বার গিয়ে কি তিনি তবে
ভারতবাসীর জন্যই চেয়েছিলেন সেই
ঐতিহাসিক চাওয়া  । স্বামীজির লেখা বক্তৃতা
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হয়তো আংশিক কিন্তু
স্বামীজির আচরিত ধর্মের কি প্রতিষ্ঠা হয়েছে
এই ভারতের কোথাও ? হয়তো সেইভাবে
হয়নি  । যদি স্বামীজি শুধুমাত্র ধর্ম নিয়ে
কোনো বিপ্লবী পদক্ষেপ নিতেন তাহলে
হয়তো  এই যে আমরা স্বামীজিকে এতটা
জানতে পেরেছি তা হয়তো কোনোদিনই
পারতাম না । স্বামীজি খুব বড় জোর
রামমোহন রায় হয়ে বেঁচে থাকতেন । 
আমি বলবো স্বামীজির আদর্শের ইচ্ছেগুলি
সঠিক ঠিকানা পেয়েছে ও দিশা পেয়েছে  ।
তার ADJUSTMENT LAW মনে হয়
ভারতীয়রা ধর্মীয়ভাবে মেনে নিয়েছে  ।

অলোক কুন্ডুর কবিতা

রীনা ব্রাউন ভালো থেকো /অলোক কুন্ডু

সাত নম্বর কয়েদির নির্বাসন
তোমাকে মানায় না কিছুতেই
তবু বলি ভালো থেকো
বাঙালির সেই তুমি প্রণয়বেলায় ।

ব্যাপক বিস্ময় ছিল সন্মোহন তোমার
মন্থন করেছিলে বাঙালির
রোমান্টিক সময়ের  প্রণয়বেলা
মিনার বিজলী ছবিঘর থেকে
উত্তরা পূরবী উজ্বলায় ।

তোমার অনিবার্য ক্লোজ আপে
অনায়াস চাউনির মুগ্ধতায়
রুপোলি দাতের দ্যুতিতে
ভেসে গিয়েছিলো
আটপউরে বাঙালির-প্রণয় জীবন  ।

ধুম লুকোনোর খেলা
রপ্ত ছিল আদিগন্ত সময়ের পরেও
বাঙালির গ্রেটাগার্বো খ্যাতি নিয়ে
ভালো থেকো ভালো থেকো ।

এই নির্বাসন এতকাল
কিছুতেই মানায়নি তোমাকে
হারানো সুরটুকু যে তুমি খুঁজেদিয়েছিলে
যাদের করুণা করেছিলে প্রেমে
তাদেরও পাকাচুল
তারাও অশ্রু মুছেছে মনে মনে ।
© অলোক কুন্ডু

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডু-র কবিতা মণিহার

মণিহার / অলোক কুন্ডু

যেদিন জিজ্ঞেস করেছিলো মেয়েটা
মুঠো করা হারটা লুকোনো হয়েছিল বৃথাই
তবু মেয়েটা একবার হারটা দেখতে চাইতেই
সে মুঠো খুলে দিয়েছিল প্রাণপণে
সর্ষে ক্ষেতের ধারে উঠেছিল ঝড়
সারা ক্ষেতজুড়ে হলুদ বর্ণের সকাল ।

আরও একদিন সরষে ক্ষেতের কাছে
আকাশ মেঘলা হয়ে আসতেই
মেয়েটার সঙ্গে আবার দেখা হয়েছিল
কিছুতেই নেয়নি সেই হার
সেই থেকে বুক পকেটেই পড়ে থেকে থেকে
মরচে পড়েছে কতকাল ।
© অলোক কুন্ডু

শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭

অলোক কুন্ডুর লেখালিখি

ভাজা পিঠে
========
আমার মামাবাড়ি আগে ছিল জোড়াশাঁকোর
বলরাম দে স্ট্রীটে।  ঠিক এই সময় আমার দিদিমা
একরকম পিঠে বানাতো ।  এই পিঠে একমাত্র
উত্তর কলকাতার লোকেরাই ভালোভাবে বানাতে
পারে । পরে  আমার মাও ওরকম পিঠে না হলেও
প্রায় কাছাকাছি ওই রকম পিঠে বানাতেন, এই
পিঠের নাম ভাজা পিঠে । ওই  পিঠের কাছে
কোনো পিঠেই পাতে পড়েনা । দিদিমার পিঠে
বানানো এখনও কিছুটা মনে আছে । যেমন
খুব অল্প চালগুঁড়োর গরম জলে মিশিয়ে সঙ্গে
বেশিভাগ মুগডাল ভাজা সিদ্ধ করে কাদার
মতো করে গরম কড়াইতে ডালডা + চিনি +
অল্প পাটালি গুড় + লব্ণ + খোয়া খির + খুব
অল্প খাবার সোডা এক চিমটে + খেঁজুরগুড়
+ অল্প বনস্পতি দিয়ে অনেকক্ষণ অল্প অল্প
গরম জল ঢেলে ঢেলে মিশ্রণ / মন্ড তৈরি করা
হতো । খুব অল্প ভাজা গরম মশলা দেওয়া
হতো । আর অন‌্য দিকে তৈরি হতো ছাঁই অর্থাৎ
নারকলে কুরো আর খেঁজুড় গুড়ের মিশ্রণ
( যেটা পিঠের মধ‌্যে পুর হিসেবে ব‌্যবহার করা
হতো )। বাইরের অংশটি অর্থাৎ মুগ ডালের
মাখা মন্ডটি লেচি করা হতো পটলের মতো
বা পিঠের মতো করে । জলের ছোঁয়ায় পিঠে
জুড়ে দিয়ে শুকনো করতে দিতে হতো । উপরে
মুগের মন্ড ভেতরে ছাঁই থাকতো । বলতে ভুলে
গেছি গোবিন্দভোগ চালকে শিলে বেটে নিতে
হতো ।  চালের কার্যকারীতা কিন্তু সামান‌্য ।
এইবার সমস্ত পিঠে হাতে গড়ার পর
এককড়া ভাসানো সরষে তেলে ভাজা হতো ।
এরকম পিঠে আর জীবনে খাইনি । এখন
আমার ছোট বোন কিছুটা পারে ।  তবে এই
পিঠে শুধুই খাওয়ার নিয়ম । যত বাসি হতো
তত খেতে ভালো হতো ।  তবে বলে নি আর
দু-একটা কথা ।  এই পিঠের রঙ হবে পোড়া-
ব্রাউনিজ এবং গা হবে খুব ফাটা ফাটা ।
ভাজার পরও পিঠের গা বা উপরভাগ মসৃণ
হলে জানবেন মিশ্রণ ঠিক হয়নি কোথাও
নিশ্চিত কমবেশি হয়েছে । যে কেউ এটা নিজের
মতো করে বানিয়ে দেখতে পারেন । এই  ভাজা
পিঠের কাছে আর কোনো পিঠেই  দাঁড়াতে
পারবেনা । © অলোক কুন্ডু

প্রয়াত তরুণ মজুমদার--অলোক কুন্ডু

#তরুণ_মজুমদার_চলেগেলেন অধিকার এই শিরোনামে--কয়লাখনির শ্রমিকদের জন্য ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। ছিলেন আজীবন বাম...